নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন শ্রমিক

জার্জীস আহমেদ

স্বপ্ন শ্রমিক

জার্জীস আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানুষকে বোঝানো জলের মত সহজ, শর্ত সাপেক্ষে...

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:২২

গতদিনের হেফাজতের জমায়েতের আঁচ সর্বত্র। রাস্তায়, চা স্টলে, বাসে। বেশীর ভাগ মানুষ জোয়ারেই ঝোঁকে। আলোচনার ঝোঁকটা সেই দিকেই। বাস বাড্ডা পর্যন্ত আসতে না আসতেই তুমুল তর্ক। কেউ হয়তো শাহবাগের পক্ষে বলেছে, তার সাথে উত্তপ্ত তর্ক জুড়ে দিয়েছে অনেকে। এক চাচা বলেই বসলো ইমরান নাকি হিন্দু।



আমি অন্যদের চেয়ে কন্ঠ সরব করলাম। ভাই, আমার সমস্যাতো নাস্তিক-আস্তিক না। আমার সমস্যা এখন পর্যন্ত বাসা ভাড়া দিতে পারছি না। আমার সমস্যা ৮মাসের শিশুর মুখে বিষাক্ত ফরমালিন খাবার তুলে দিতে হচ্ছে। জরুরী প্রয়োজনীয় কিছু কিনতে পারছি না। ছেলের ক্লাস ভর্তির টাকা এখনও বাকি রেখেছি। এ শহরে এত ধর্মপ্রাণ মানুষ, আমি এত ঠকছি ক্যান বলেনতো। একটু অসর্তক হলেই প্রতিটি জিনিষ কিনতে ঠকি। মাছ, মাংস, কাপড়, জুতা ঘড়ি.. যা-ই কিনতে যাই, প্রচন্ড সতর্ক থাকতে হয়। মনে হয় ঐসব জিনিষের ব্যবসার উপর ২০ বছরের যদি অভিজ্ঞতা থাকতো তাহলে ঠকতাম না। কাউকে বিশ্বাস করা যাচ্ছে না। হে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ভায়েরা আপনাদের ধর্ম তখন কোথায় উড়ে যায়?

দেখি কেউ কথা বলে না।

আমি আরো বললাম, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি আমার সমস্যা, হলমার্ক কেলেঙ্কারী আমার সমস্যা, পদ্মাসেতু না হওয়া আমার সমস্যা, যানজট আমার সমস্যা।

কয়েকজন হেসে ফেলল।

মানুষ আসলেই বোঝে, আগের চেয়ে অনেক বেশী বোঝে। আমাদের মত শিক্ষিত মানুষদের চেয়ে সাধারন মানুষের জাজমেন্ট জলের মত পরিস্কার। শুধু প্রয়োজন দুটো শর্ত। দেখুন বন্ধুরা শাহবাগ কিন্তু দুটো গুরুত্বপুর্ণ জিনিষ শিখিয়েছে আমাদের ।

শিখন নাম্বার এক:

মানুষের প্রাণের দাবি ছুড়ে দিলে মানুষ জোয়ারের মত এসে হাজির হয়।

শিখন নাম্বার দুই:

যখন দেখে মঞ্চের পাশে দাঁড়ানো লোকটাও খুনি, লুটপাটকারী, টেন্ডারবাজ, তখন তারা দ্বিধায় পড়ে। ধীরে ধীরে সরে পড়ে। আমি জানি আমার এই মতের সাথে অনেকে একমত হবেন না। বলবেন, সুবিধাবাদী মধ্যবিত্ত ভেগেছে। ঐতো বললাম, মানুষের জাজমেন্ট অত জটিল নয়, সরল। লুটেরাদের সাথে দেখলে বিশ্বাস করতে চায় না। বিশ্বাস করা উচিতও নয়।

ঐ বাসের আলোচনা থেকে আমার দৃঢ় বিশ্বাস মানুষ সহজেই বুঝবে। শুধু দুটো শর্তে।

প্রথম শর্ত:

তুমি স্বচ্ছ হও। লুটেরা, খুনী, ধর্ষকদের সঙ্গ ছাড়।

দ্বিতীয় শর্ত:

মানুষের জরুরী সমস্যাগুলো তুলে আসল শত্রু চেনাও। ধর্ম নাস্তিকতা প্রসঙ্গ এমনিতেই গৌন হয়ে যাবে।

এটাই সহজ পথ। এরজন্য নতুন কোন রিসার্চের প্রয়োজন নেই। লেলিন অনেক আগেই এসব পরিস্কার করে লিখে গেছেন।

‌‌‌'ধর্মীয় প্রশ্নকে বিমূর্ত, আদর্শবাদী কায়দায়, শ্রেণীসংগ্রামের সাথে সম্পর্কহীন 'বুদ্ধিবাদী' প্রসঙ্গরূপে উপস্থাপিত করার বিভ্রান্তিতে আমরা কোন অবস্থায় পা দিব না।'- লেলিন (সমাজতন্ত্র ও ধর্ম)

এটাই পথ। এর বাইরে যারা ঘুরবেন তারা সারা জীবনই ঘুরপাক খাবেন।

তবে সবাই যে বুঝবে এমন নয়। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র আপা, আমার ফেসবুক বন্ধু, বাইরে থাকেন, শাহবাগ নিয়ে ব্যঙ্গ করছেন। উনি ছাত্রদল নেত্রী ছিলেন, উনি বুঝবেন না। নারী হয়েও বুঝবেন না নারীনীতি, গার্মেন্টস শ্রমিকেরা বাইরে বের না হলে কিভাবে ঘুরবে দেশের চাকা? এদের বোঝার দরকারও নেই। বোঝাতে হবে দেশের শ্রমজীবি জনসাধারনকে। পাড়ায় পাড়ায় রুমী স্কোয়াড করতে হবে। মঞ্চ দরকার নেই। মুখে মুখে। চা স্টলে, ফ্লেক্সিলোডের দোকানে, ওষধের দোকানে, সব্জীওয়ালার কাছে। দায়িত্ব সকলেরই। যে অফিস থেকে ক্লান্ত হয়ে ফিরবেন সে ওষধ কিনতে গিয়ে বোঝাবেন। এভাবেই অর্গল ভাঙ্গবে। গনমানুষের একটা পার্টিও বিকশিত করতে হবে। এরকোন বিকল্প নেই।

আমরা ছাড়া কে বাঁচাবে এদেশকে। শাসকশ্রেণীর দলের লোকদের দায়িত্ব কেবল লুটেপুটে খাওয়ার।

কিভাবে মানব বলুন, এদেশের মুক্তিসংগ্রামে যাদের কোন ভুমিকা নেই সেইসব আগাছারা আমার পতাকা ছিঁড়বে, শহীদমিনার ভাঙ্গবে..

অসংখ্য রুমী স্কোয়াড হবে অসংখ্য আলোকবর্তিকা। আধার ঠিকই দুর হবে। শাসকশ্রেণী ও মৌলবাদ আলো সহ্য করতে পারে না।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৩৩

এস বাসার বলেছেন: শাসকশ্রেণী ও মৌলবাদ আলো সহ্য করতে পারে না।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৩৩

এস বাসার বলেছেন: শাসকশ্রেণী ও মৌলবাদ আলো সহ্য করতে পারে না।

৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৩৭

মতিলাল বলেছেন: ইমরান নাস্তিকদের উসতাদ

৪| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৪৬

কালের কলস বলেছেন: চারদলীয় জোট সরকারে দুই জামাতী মন্ত্রণালয়ের দূর্নীতির খতিয়ান খুঁজছিলাম। কোথায় পাই?

৫| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:০৫

সালমা শারমিন বলেছেন: ভাই, ঘুরে ফিরেতো এক জায়গাতেই আসলেন। আপনার সমস্যা নাস্তিক-আস্তিক না। কিন্তু আমার সমস্যা নাস্তিক আস্তিক। এবং আমি জানি আমার মত অনেকেরই সমস্যা নাস্তিক-আস্তিক। ঐ যে কত প্রকার দূর্নীতির কথা বললেন মানুষ যদি সত্য ইসলাম ধর্ম চর্চা করতো তাহলে কি এই দূর্নীতি গুলো হত? ইসলাম হচ্ছে প্রকৃত জীবন ব্যাবস্থা। এটা মানার চেষ্টা করেন। আপনি আপনার সৃষ্টি কর্তার কোন উদৃতি দিতে পারেননি? আসছেন লেলিনের উদৃতি দিতে। আপনি দেখছেন কোন সমাজ, কোন রাষ্ট্র লেলিনের নিতি মানতে ? সয়ং যে দেশে লেলিনের জন্ম সে দেশেই তো লেলিন চর্চা হয় না। বছরে ১০ বার বাস ভাড়া বাড়ে আপনার তাতে সমস্যা নেই? সুরন্জিত চোরা চুরি করেও পার পেয়ে যায় আপনার সেটা নিয়ে সমস্যা নেই? ইদানিং মেয়েরা অহরহ গনধর্ষন এর শিকার হয় সেটা নিয়ে সমস্যা নেই? যত অভাব বেশি হবে সাধারন মানুষের দূর্নীতি চর্চা তত বাড়বে। আর সমাজের মাথারাতো সেটা করেই যাচ্ছে।রুমি স্কোয়াডের কথা বললেনতো। রুমি স্কোয়াডে কি দাবি নিয়ে অনষন করা হচ্ছে? জামাত শিবির নিষদ্ধের দাবিতে? তাও আবার দেখলাম লুকিয়ে লুকিয়ে খাচ্ছে। কেন আপনিনা বললেন আপনার আস্তিক-নাস্তিক ব্যাপার না। তাহলে আপনি এই দাবিতে কেন আন্দোল করেন না যে ফরমালিন মুক্ত খাবার চাই, দূর্নীতি মুক্ত নেতা চাই। ধর্ষন মুক্ত সমাজ চাই।ব্যভিচার মুক্ত সমাজ চাই।ইসলামের আইন চাই। লেলিনের কথা মানবেন আল্লার কথা মানতে কেন এত সমস্যা?

৬| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৫০

Palol বলেছেন:
শাসকশ্রেণী ও মৌলবাদ আলো সহ্য করতে পারে না।
...............................................................
আস্তিক নাস্তিক যাদের সমস্যা তারা দেশের প্রকৃত সমস্যা আড়াল করতে চায়। এতে আওয়ামী লীগ বিএনপি জামাত ও হেফাজতের লাভ হয় বটে কিন্ত সাধারণ মানুষের ক্ষতি অপূরণীয়। বাংলাদেশিদের অহংকার করার মত একটিই ঘটনা তা হল জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা যুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধ মানেই আওয়ামী লীগ নয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ দেখতে চাই।

৭| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৩৩

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: জনগনকে যৌক্তিক কোন কিছু বুঝানো আসলেই খুব সহজ। তাঁরা নিজের চোখে দেখছে, নিজেরা বিচার করে দেখছে। সমস্যা হ্ল দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের, তাদের এখনও এই বোধদয় হচ্ছে না যে সাধারণ জনগন এখন অনেক সচেতন। নয়ছয় করে, যা তা দিয়ে তাদের বুঝ দেয়ার দিন শেষ। জনগন সব দেখছে শুনছে এবং এর প্রতি উত্তর তারা যথাসময়ে দেবে।

জয় বাংলা, জয় জনতা।

৮| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৫৫

মিঠাপুর বলেছেন: ইসলামের নামে কুৎসা রটনা কারী এবং তা পত্রিকায় প্রচারকারীদের বিচার চাই।

এবং

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই।

৯| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:২০

জার্জীস আহমেদ বলেছেন: সালমা শারমিন, সবকিছুর দাবিতেই আন্দোলন করার কথা লিখেছি আমি। সুরঞ্জিতের টাকা চুরিসহ। নারী নিপীড়ন, বাসভাড়া বৃদ্ধি, জনদুভোর্গ... সবকিছুর বিরুদ্ধে। আমার মনে হয় এ জায়গায় আমরা একমত। কিন্তু আমরা যেন একসাথে আমাদের প্রধান শত্রু শাসকশ্রেণীর বিরুদ্ধে না দাঁড়াই সেই জন্য আমাদের ভিতরে উদ্ভট বিভাজন.. বাঙালী/বাংলাদেশী, স্বাধীনতার ঘোষক/স্বাধীনতার নায়ক, ধর্ম বিশ্বাস/অবিশ্বাস..

একটা দরিদ্র দেশের মানুষ আমরা। আসুন আগে আমরা বাঁচি, আমাদের সন্তানদের বাঁচাই। এ বাঁচার লড়াইয়ে যেসব সমস্যা শাসক শ্রেণী আমাদের সামনে প্রধান করে তুলে ধরছে দেখবেন সেসব সমস্যার সিংহভাগ দুর্বল হয়ে গেছে।
আমি নারীদের খুব সম্মান করি। আপনাকে সম্মান করছি। সম্মান করে বলছি আমার চোখে ধর্ম আমার ছেলেবেলার গ্রাম, গ্রামের মসজিদের ইমাম। সে ভীষন সরল ছিল। এত সুন্দর করে নামাজের কথা বলতো। ছিপারা পড়াতো। মজা করতো আমাদের সাথে। এখনকার ধর্মের মতো বিভিষিকাময় নয়। আমি ঐখান থেকে বের হয়ে আসতে পারছি না। আমি কেন যেন এখনকার মাওলানাদের সহীহ কোরআন তেলাওয়াতের চেয়ে আমার মা চাচীদের বারান্দায় বসে সুর করে কোরআন পড়ার মধ্যে প্রাণ খুজে পায়।
লেলিনের দেশে লেলিন চর্চা হয় না... আপনার এ অভিযোগ আমার পছন্দ হয়েছে। আসলে এসব নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। আসলে কি হয়না? কেন হয়না?
আপনি যে পড়েছেন লিখেছেন এজন্য ধন্যবাদ। পড়া, লেখা এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করাটাই জরুরী। মতের সাথে না মিললে হত্যা করার পরিকল্পনাটা ঠিক নয়। ব্লগগুলোই হবে আমাদের শান্ত আলোচনার টেবিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.