নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কচি সাহিত্যিক

বনের ধারে সে অপূর্ব মায়াময় বৈকালগুলি মিছামিছিই নামবে চিরদিন।

যীনাত

দিনরাত্রি পার হয়ে, জন্ম মরণ পার হয়ে, মাস, বর্ষ, মন্বন্তর , মহাযুগ পার হয়ে চলে যায়...তোমাদের মর্মর জীবন-স্বপ্ন শেওলা-ছাতার দলে ভরে আসে, পথ আমার তখনো ফুরায় না...চলে...চলে...চলে...এগিয়েই চলে... অনির্বাণ তার বীণা শোনে শুধু অনন্ত কাল আর অনন্ত আকাশ... সে পথের বিচিত্র আনন্দ-যাত্রার অদৃশ্য তিলক তোমার ললাটে পরিয়েই তো তোমায় ঘর ছাড়া করে এনেছি!... চল এগিয়ে যাই।

যীনাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প: উপসংহার

১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ সকাল ১১:৫০

বেশি না দু’একদিন হবে বিয়েটা হয়ে গেছে। নব দম্পতির সাথে বসে তুমুল আড্ডার ঝড় তুলে মানের চাপা অশান্তিটা তাড়িয়ে দিলাম। ভালই চলছিল কৌতুক আর ঠাট্টাগুলো। কিন্তু হঠাৎই হাতে রাখা মোবাইলের গেমটা জটিল হয়ে ওঠায় চুপ হয়ে সেদিকে মন দিলাম। আমার সাথে আড্ডা দিতে দিতে ক্লান্ত নববধুটি উদাস হয়ে গেছে ততক্ষণে।

নাহ, গেমের জটিলতার সমাধান হচ্ছে না। তবু আবার আড্ডা শুরু করার উৎসাহ পেলাম না। খেয়াল করলাম, পরিবেশটা একেবারে শান্ত হয়ে গেছে। বাইরের রোদটা নরম হয়ে এসেছে। আর হালকা বাতাসে মৃদু ঝংকার তুলছে রুমে ঝোলানো উইন্ডসেমটা। চোখ তুলে সামনে বসা আর দুটো মানুষের দিকে তাকালাম। একটা ছোট দৃশ্য- কিন্তু আমার কাছে বড়ই মনে হল।

মেয়েটি তার পছন্দের ব্যক্তিটিকে রেখে অপরিচিত একজনের সাথে বেশ সন্তুষ্টচিত্তেই আবদ্ধ হয়েছে। নির্ভরতার সাথে নিজের সাজানো হাতটা তুলে দিয়েছে আরেকজনের হাতে। আমি দেখলাম সেই মেহেদী রাঙানো হাতের চুড়িগুলোর একটার পর একটা খুঁটিয়ে দেখে চলেছে মেয়েটির সঙ্গীটি। আমি যে তাকিয়ে আছি সেটা আর লক্ষ্যও করল না। দ্রুত চোখ নামিয়ে নিলাম মোবাইলের স্ক্রীনে। এক হাতে চুড়ি নিয়ে অন্য হাতের এই সুমিষ্ট খেলার তাৎপর্য বোঝার মতা অবশ্য আমার নেই। তবু কিছু কথা মনে খেলে গেল। চুড়িগুলোর দিকে মনোযোগী দৃষ্টির গভীরতা দেখে মনে হল ওখানে যেন সৃষ্টিজগতে সকল রহস্যের সমাধান আছে। আর লেখা আছে তাদের বর্তমান থেকে ভবিষ্যত। আমার মনে প্রশ্ন খেলে গেল আমার জন্য অস্থির হওয়া ব্যক্তিটির জন্য মনটা অশান্ত থাকে, সমাধান না পেয়ে চুপ সমাধান না করে নিশ্চুপ উপসংহার টানি। সমাধান পেতে হলে কে জানে সবাইকেই হয়ত এই পথ ধরতে হবে।

চিন্তায় ছেদ পড়ল।

-অ্যাই, তোমার এই চুড়িটা ফেটেছে কখন বলত। খুলে ফেল।

নাহ, আমি ভেবেছিলাম আমি না পাই অন্যরা তাদের সমস্যা, অশান্তিগুলো সমাধান পেয়েছে অন্তত। কিন্তু দেখলাম সমাধান পেতে মাঝ পথে কী ভীষণ ঝামেলা। হতাশ মনে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম।

কী আশ্চর্য! আকাশের কালো মেঘগুলো জড় হচ্ছে সব। মিষ্টি রোদেলা বিকেলে এই দৃশ্য! হতাশা কাটাতে চাইলাম। নিশ্চয়ই বৃষ্টি হয়ে কালো মেঘের ঘনঘটা দূর হবে নয়ত দমকা বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যাবে সব কালো; সব ফাটল আর দুঃচিন্তা।

শব্দ পেয়ে ঘাড় ঘুরালাম- গোমড়া মুখের চুড়ির মালিক বারান্দা দিয়ে চুড়িটা ফেলে দিল। পড়ে যেতে থাকা থাকা চুড়িটার দিকে তাকিয়ে রইলাম। টুপ করে লেকের পানিতে হারিয়ে গেল ওটা। উৎফুল্ল হয়ে উঠলাম- সমস্যার সমাধান না হলে কী হবে, সমস্যার শেষ তো হয়ে গেছে, তাই না?

৮-১২-২০০৭

রাত ০২:৩০

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ সকাল ১১:৫৭

নূরে আলম বলেছেন: সমস্যার সমাধান না হলে কী হবে, সমস্যার শেষ তো হয়ে গেছে, তাই না?
৫+

২| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১২:১৫

মেহরাব শাহরিয়ার বলেছেন: হমমম , সেটাই

৩| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১২:১৭

ফারজানা১৬ বলেছেন: মজা পেলাম পড়ে।

৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১:০৫

শাওন বলেছেন: ভালো লাগল ।

৫| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১:০৫

বিবর্তনবাদী বলেছেন: সত্যিই মেয়েরা অদ্ভুত ... কত সহজে সমস্যার সমাধান (!!) করে ফেলে...

৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ২:৪৮

মাহবুবা আখতার বলেছেন: সমস্যাটা ঠিকমত বুঝতে পারি নাই। তবে আপনার ভাষা সুন্দর।
আরেকটু স্পষ্ট করেও বোধহয় লেখা যেত।
ভালোই লাগল।

৭| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:০৮

রাশেদ বলেছেন: মেলা দিন পরে দেখলাম আপনাকে।

৮| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:৪১

মুনিয়া বলেছেন: ''সমস্যার সমাধান না হলে কী হবে, সমস্যার শেষ তো হয়ে গেছে, তাই না?''-
চিন্তার খোরাক আছে লেখায়...

৯| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ ভোর ৫:৪১

যীনাত বলেছেন: নূরে আলম ,মেহরাব শাহরিয়ার,ফারজানা১৬ -কে ধন্যবাদ।

১০| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ ভোর ৫:৪৫

যীনাত বলেছেন: শাওন,আপনাকেও ধন্যবাদ।

১১| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ ভোর ৫:৫৫

যীনাত বলেছেন: বিবর্তনবাদী, একটু সমস্যা করেছেন। আমার মনে হয় অনেক মেয়েই জানে যে তার কাছে সমাধান নেই। তখন সে অনেকটা আমার মত নিশ্চুপ থাকে; যতদিন না সমস্যাটা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এটা ঠিক সহজ সমাধান নয় একধরণের সহজ পরাজয়।

১২| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ ভোর ৫:৫৯

যীনাত বলেছেন: মাহবুবা আখতার, আপনাকে ধন্যবাদ। এখন থেকে সহজ ভাষা ব্যাবহার করতে চেষ্টা করব।

রাশেদ, ব্যস্ততার জন্য ব্লগে আসতে পারিনা।
মুনিয়াকেও ধন্যবাদ।

১৩| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ ভোর ৬:৩৩

ফারহান দাউদ বলেছেন: শেষ কি আছে? বৃত্তের শেষ বলে কিছু নেই(কথাটা আমার না)।

১৪| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:৪৭

যীনাত বলেছেন: ফারহান দাউদ, কথাটা যারই হোক-সুন্দর এবং যথাযথ।ধন্যবাদ।

১৫| ০৫ ই মে, ২০০৮ সকাল ১১:৪৯

সোনারমানুষ বলেছেন: এটাও ভালো লাগছো। প্লাস দিলাম।

০৫ ই মে, ২০০৮ দুপুর ১২:৫১

যীনাত বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.