নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সঙ্গহীন পথিক

সঙ্গহীন পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই শীতের সময়ে

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৩

-হ্যালো?!

-হ্যালো,

ভাইয়া এতো সকালে ফোন

দিলেন যে?

-তুমি এখনও ঘুমাচ্ছো?? যাবে না?

-অওওওও।

ভাইয়া আমি টোটালি ভুলে গিয়ে

-২০ মিনিটের মধ্যে আমার বাসায়

চলে আসো। তাড়াতাড়ি এসো।

-ওকে, ডোন্ট ওয়ারী। আমি আসছি।

বলে ফোনটা রেখে দিলাম।

চটপট

বিছানা থেকে উঠে আলো জালা

চোখ পরল ঘড়িটার দিকে।

ঘড়িতে সময় তখন ০৫:০৩।

আমি খুব দ্রুত রেডি হলাম।

বাসা থেকে বের হতেই এক

হিমশীতল সমীরণের পরশে আমার

উষ্ণ দেহ মুহুর্তেই নিষ্প্রাণ

হয়ে গেল। আমার দেহের

প্রতিটি কোষ যেন নির্বোধের

মতো স্থির হয়ে গেছে। রক্ত

প্রবাহে অবরোধ শুরু হয়ে গেল।

মস্তষ্ক বিকল প্রায়।

না! আমি এখনও বেঁচে আছি। বড্ড

বেশিই শীত পড়ছে আজকে। অরন্য

ভাইয়ার ফোনের পর ১৭ মিনিটেই

ভাইয়ার বাসায় পৌঁছোলাম। অরন্য

ভাইয়া,রিফাত ভাইয়া ও

প্রিন্সের সাথে বের হয়ে গেলাম

সাথে অনেক গুলো কাপড়ের

প্যাকেট ও কম্বল।

ওউ এই মানুষ গুলোর

ব্যাপারে তো কিছুই বল্লাম না।

আচ্ছা কারওয়ান বাজার

যেতে যেতে বলব।

-------------------------

-------------------------

হিটার চলার কারনে গাড়ির

ভেতরটা বেশ উষ্ণ।

গাড়িতে আমরা চার জন ও

ড্রাইভার চাচা। কারওয়ান

বাজারে যাচ্ছি। রাস্তাঘাট

প্রায় শূণ্য। কিন্তু রাস্তার পাশের

ফুটপাত গুলোতে অজস্র ছিন্নমূল

মানুষ ঘুমোচ্ছে।

ও হ্যা, অরন্য ভাইয়া আমার খুব

কাছের এক বড় ভাইয়ে নাম।

মেডিকেল এ পড়ে। রিফাত

ভাইয়া তার ই বন্ধু, বি.বি.এ পড়ছে।

প্রিন্স আমার বয়সী এবং ক্লাস

নাইন-এ পড়ে। আমরা খুব ভাল বন্ধু।

হঠাৎ ই ড্রাইভার চাচা ব্রেক

কষলেন। আমরা কারওয়ান বাজার

চলে এসেছি। গাড়ি থেকে সবাই

নেমে পরলাম।

আমি বড্ড মনভোলা একটা ছেলে।

আমরা এখানে কেনো এসেছি তাই

নি। আমরা এখানে গরীব-দুস্থ,

শীতার্থ, অসহায় মানুষদের জন্য

শীতের গরম কাপড় নিয়ে এসেছি।

এদের মাঝে বিলিয়ে দিতে।

প্রতি বছর ই আমরা কিছু

শিক্ষার্থী মিলে ঢাকার

বিভিন্ন স্থান থেকে শীতবস্ত্র

সংগ্রহ করি এবং তা ঢাকা ও

ঢাকার

বাহিরে নিয়ে পৌছে দিই সেই

সকল মানুষের

কাছে যারা বেঁচে থাকার জন্য

অতি অসহায় অবস্থায় অদম্য শীতের

সাথে করুণ যুদ্ধ করে। প্রকৃতি যেন

তাদের সাথে অবিরাম

লীলাখেলায় ব্যস্ত। তাই তাদের

কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘবের আশায়

আমরা এই বিশেষ কাজে অংশ গ্রহন

করে থাকি। এর

মাধ্যমে নিজেদের ক্ষুদ্র আয়ুর

জীবনের মাঝে কিঞ্চিত হলেও

সার্থকতা খুজে পাই। এ যেন এক

অব্যক্ত অনুভূতি।

-------------------------

আমরা দ্রুত কাজ শুরু করে দিলাম।

মাঝে মাঝে আমি কিছু ছবি ও

তুলে নিলাম। সবাইকে যথাসাধ্য

সাহায্য করতে আপ্রাণ

চেষ্টা করলাম। যখন অসহায়

মানুষগুলো আমাদের সাহায্য

সাদরে গ্রহন করছিলো তখন তাদের

মুখে জোৎস্নার মতো এক উজ্জল

আলোর ন্যায়

হাসি দেখা যাচ্ছিলো।

এটি জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহুর্তো গুলোর

মাঝে অন্যতম। সবাইকেই খুব প্রফুল্ল-

উৎফুল্ল দেখা গেলো। আমাদের

কাজ যখন প্রায় শেষ তখন সুবৃহৎ

দিগন্তে সুর্যের একগুচ্ছ আলোক

রশ্মির ঝলকানি লক্ষ করলাম। এ যেন

নতুন দিনের নতুন

বাধা পেরিয়ে এগুবার

দীপ্তমূর্তি।

আমরা সেই চারজন, খুব আনন্দের

সহিত বাসার দিকে হাঁটতে শুরু

করলাম।

===-------________------===

আমি সেই সকল আত্মকেন্দ্রিক

মানুষকে আরো একবার স্মরণ

করিয়ে দিতে চাই যে,

আমাদের বিছানার কম্বলের

বাহিরে আমাদের মতো আরো বহু

সাধারন মানুষ আছেন।

যারা হয়তো আমাদের মতো একটু

শীত করলেই কম্বলের স্তুপে আশ্রয়

নিতে পারেন না। তারা এই হাঁড়

কাঁপানো শীতের

সাথে প্রতিনিয়ত লড়াই

করে যাচ্ছে। তাদের

মাঝে বেঁচে থাকার এক অদম্য আগ্রহ

বিদ্যমান। তারাই প্রকৃত বীর। এদের

থেকে বাধা পেরোনোর অটুট

আত্মবিশ্বাস অর্জনের

শিক্ষা নিতে পারি আমরা।

আমাদের উচিত তাদের সম্মান

করা এবং যথাসাধ্য সাহায্য করা।

তাহলে জীবনের স্বার্থসাধন হবে।

জানি অনেকেই হয়তোবা এসব

মানুষদের কে অবহেলার চরম সীমায়

পতিত করবেন। কিন্তু আমি সবার

প্রতি দৃঢ় আস্থা রাখি কারন :-

ইংরেজ কবি আলেক্সান্ডার পোপ

বলেছেন : "Hope springs eternal in the human

breast" → মানুষের চিত্তে আশার

জাগরণ চিরন্তন; এর শেষ নেই।

→সঙ্গহীন পথিক

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.