![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-কোথায় যাচ্ছিস বাবা?
-এইতো পড়া আছে।
-তোর জন্য তো চা দিয়েছি!
-যখন দিতে বলি তখন তো দাও না,
আর এখন খাবনা বলে দিচ্ছ!?!!
(রাগান্বিত কন্ঠে)
-আমি একটু ঘুমিয়ে ছিলাম বাবআআ।
তাই তোকে তখন
চা করে দিতে পারিনি।
-হয়েছে, সারা দিনইই
তো ঘুমিয়ে কাটাও।
মা বাকরূদ্ধ।
অভিমানী ছেলে ব্যগটা কাঁধে চাপিয়ে হনহন
করে হেঁটে বের হয়ে গেল।
অন্যদিকে মা দীর্ঘশ্বাস
অনেকটা চেপে রেখেই অশ্রুসিক্ত
চোখে ছেলেকে বিদায় দিল।
হয়তো ছেলে তার নিজের
অগোচরেই মাকে অনেকখানি কষ্ট
দিয়ে গেল!
...
শীতকাল শেষ। বসন্তের ৪র্থ দিন
আজ। সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে।
তবে ঠিক মূষুল ধারে নয়।
তাছাড়া শৈত্যপ্রবাহের
ফলে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহ
বিঘ্নিত হচ্ছে। হৃদস্পন্দন
অতিমাত্রায় উন্নিত হয়েছে। হাত
দুটো প্রায় অসার। খুব বেশিই
ঠান্ডা লাগছে আজ।
রাস্তার দুই ধারে সোডিয়াম
বাতি গুলো জ্বলে উঠল।
হাল্কা বৃষ্টি হচ্ছে। হাত
দুটো পকেটে গুঁজে কাঁদামাখা পিচ্ছিল
পথ ধরে হাঁটা শুরু করল অনিক।
হঠাৎই এক অবিশ্বাস্য
শক্তি তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে দেয়।
...
-ভাই আস্তে!
-আআআ!!!!
-কেমন লাগছে আপনার?
-মাথায় একটু ব্যাথা লাগছে।
আমি কি হাসপাতাল এ??
-জ্বি।
একটা গাড়ি আপনাকে ধাক্কা দেবার
ফলে আপনি অজ্ঞান হয়ে যান
এবং আপনার মাথায় আঘাত পান।
তারপর
আপনাকে এখানে নিয়ে আসা হয়।
অনিক এখন ক্লান্ত,পরিশান্ত।
বিন্দুমাত্র শক্তি অবশিষ্ট নেই তার।
নিজেকে শুধু অপদার্থ, বেহায়া,
কুলাঙ্গার, অপরাধী মনে হচ্ছিল
তার নিজেকে। সে এখন শুধু মাত্র
একটি কথাই ভাবছে, তার মায়ের
কথা। বোধহয় সে খুব একটা ভুল
ভাবছে না। হয়তো তার মায়ের
প্রচ্ছন্ন অশ্রুপাতের পরিনাম সরূপ
তার এই দুরবস্থা। কে জানে?!!
হয়তোবা এর চেয়েও খারাপ কিছু
হতে পারতো অনিকের।
হয়তো শুধুমাত্র মায়ের অমূল্য
ভালোবাসার জোরেই সে আজ
বেঁচে গিয়েছে। কিন্তু মায়ের দু
ফোটা চোখের জল ই তার
জীবনকে শেষ করে দিতে যথেষ্ট
ছিল।
আমরা আমাদের
গর্ভধারিণী মায়ের সাথে অনেক
সময়ই অনেক ছোটো ব্যাপার
নিয়ে বিভিন্ন ভাবে কষ্ট
দিয়ে থাকি। কিন্তু তখন
আমরা ভুলে যাই যে, মায়ের
একটা দীর্ঘশ্বাস আমাদের জীবন
কেঁড়ে নিতে যথেষ্ট। তাই এই
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলোর
প্রতি আমাদের সতর্ক থাকা উচিৎ।
এবং মায়ের প্রতি কখনও হীন
মনে করা বা অবহেলিত কর্ণপাত
করা উচিৎ নয়।
অভিশাপ!
শব্দটি সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত।
কিন্তু এটা যদি মা কর্তৃক হয়
তবে তা পৃথিবীব্যাপী সর্বোচ্চ
শাস্তি হবে বলে আমি মনে করি।
তাই আমাদের যথাসম্ভব
সতর্কতা অবলম্ব করা উচিত। ধিক্কার
জানাই অনিকের মত কৃতঘ্ন
সন্তানদের।
আল্লাহ্ যেন আর কাউকেই অনিকের
মত দুর্ভাগ্য দান না করুক, তাই
প্রার্থনা করি।
তবে একটা কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়
যে,
যদি পৃথিবীতে কোনো নিরাপদ,
শান্তিময়, অতুলনীয়, স্বর্গতুল্য স্থান
থেকে থাকে তবে তা অবশ্যই
মায়ের কোল। তাই সবার
আগে মাকে ভালোবাসতে শিখা উচিৎ।
©somewhere in net ltd.