![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কামনা করি মানুষের ভিতর স্বপ্নরা আসা যাওয়া করবে। মানুষ তার স্বপ্ন পূরণের জন্য যুদ্ধ করবে।
সানজিদা জানালার পাশে বসে আছে । তীব্র রোদে রাস্তা ঘাট পুড়ে যাচ্ছে । তিন তলার উপর থেকে সানজিদা মানুষের মূখের ঘাম স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে । রোদের তাপ সানজিদার মূখে লাগার কথা কিন্তু লাগছে না । সানজিদার রাগের উত্তাপের কাছে এ রোদের উত্তাপ কিছুই না । তার রাগারই কথা । বিয়ে হয়েছে আজ ১০ বছর । শফিক তাকে কখনও খুব দামী শাড়ী কিনে দিতে পারে নি । ভালো একটা এলাকায় রাখতে পারেনি । এ এলাকটা মধ্যম শ্রেণীর মধ্য বিত্তরা থাকে । খুব একটা পস না । এই সব নিয়ে সানজিদার খুব একটা আক্ষেপ নেই । সে সারা জীবনে শফিকের কাছে মাত্র একটা জিনিষ চেয়েছিল , দিতে পারে নি । এমন অপদার্থের হাতে তার বাপ তাকে তুলে দিল ! সানজিদার রাগে ক্ষোভে মরে যেতে ইচ্ছে করছে । আবার বলে বড় অফিসার । এখন অনেক অফিসের পিয়নও অফিসের গাড়ীতে অফিসে যায় । হম । ভালো চাকরী করে নাকি! বাল করে । মাত্র ২০ লাখ টাকা খরচ করতে পারলো না?! মাত্র ২০ লাখ ! মাত্র ২০ লাখ । অপদার্থ, অর্কমার ঢেকি । সানজিদা নিজের মনে মনে যত বেশী গালা গাল দিচ্ছে তার মেজাজ ততই চড়ছে ।
শফিক কি করবে ঠিক বুঝতে পারছে না । লজ্জায় তার আত্নহত্যা করতে ইচ্ছা করছে । ছি: ছি: , সসানজিদা সারা জীভন তার কাছে বাড়তি কিছু চায় নি , মাত্র একটা জিনিষ চেয়েছে তাও সে দিতে পারলো না । সে ২০ লাখ টাকা যোগাড় করতে পারেনি । করতে পারলে সানজিদা একটু অহংকার করার রসদ পেত । মেয়েদের এমন কিছু থাকেই । তারও অহংকার হতো । সাথে আর্থিক লাভতো হতোই । শফিকের সব রাগ গিয়ে পড়লো প্রত্যয়ের উপর । প্রত্যয় জম্মের সময় বেশী সুস্থ হয়ে জম্মেছে । প্রত্যয় আর রাকিবের ছেলে একই সাথে জম্মেছে । রাকিবের ছেলেটার জম্ম থেকেই বাম কানের দিকে টিউমারের মত ছিল । ছেলেটা কয়েক বছর কষ্ট পেয়েছে, মাথার কাছে বলে সরাসরি অপরেশন করা যাচ্ছিল না, বয়সের দরকার । ঐ টুকু কষ্টেই কেল্লা ফতে । সরকারতো চিকিৎসা করিয়েছেই তার সাথে ২০ লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ৬ লাখ টাকা রাকিবের দিতে হবে । প্রত্যয়ও যদি এমন একটা সমস্যা নিয়ে জম্মাতো! না হয় কয়েখ বছর কষ্ট করতোই । সে আর সানজিদা এমন যত্ন নিত যে শারিরীক কষ্ট বুঝতইনা । তেমন হলে বৌয়েল কাছে আজ তার এত লজ্জায় পড়তে হতো না । শুয়রের বাচ্চা । শফিক কাকে গালি দিয়েছে সে নিজেও জানে না । হতে পারে তার ছেলে প্রত্যয়কে, হতে পারে নিজেকে, হতে পারে যে কাউকেই ।
সানজিদা ভাবছে এমন অপদার্থ লোকের ঘর করবে না । মাত্র একটা জিনিষ চাইছিল । আর চাইতে হবে কেন? এইটা এখন এডুকেটেড মাত্রই করে । যাদের টাকা আছে তারাই ১০ বছর বয়সের পর পরই ছেলে মেয়ের জেনেটিক কোড বের করে অষুধ দিয়ে ছেলে মেয়েদের বড় করে ফেলে । ১০ বছর বয়সে প্রথম, ১১ তে দ্বিতীয়, ১৩ তে যেয়ে শেষ ডোজদিলে ১৫ বছর বয়সে সে ২৫ বছর বয়সের মতন শারিরীক, মানসিক গঠন পায় । ১১ বছরে বয়সেই েহায়ার এডুকেশনে ভর্তি করিয়ে দেওয়া যায় । ১৬ তে অর্ণাস শেষ করে চাকরী বাকরী । সানজিদা চেয়েছিল প্রত্যয়কে ট্রিটমেন্টটা দিতে । লোপা তার খালাতো বোন । কাছাকাছি বয়সেরই । লোপার ছেলে আর প্রত্যয় একই বয়সী । লোপার ছেলেকে ট্রিটমেন্ট দেওয়া শুরু করেছে । কিন্তু প্রত্যয়েল টাকা যোগাড় করতে পারেনি অপদার্থটা । লোপার ছেলে তাড়া তাড়ি ডাক্তার/ইন্জিনীয়ার কিছু হবে । তাদের আর্থিক অবস্থা আরও ভালো হবে । কিন্তু তার নিজের. . . . . । প্রত্যয়ের ১০ চলছে । ট্রিটমেন্ট শুরু করলে আর ২৩ দিনের ভিতর করতে হবে , তা না হলে ১৬ বছর বয়সে যেয়ে করতে পারবে আবার । সানজিদা কি করবে বুঝতে পারছে না । তার কান্নাও পাচ্ছে না । চোখ শুকিয়ে গেছে । সে মানসিক ভাবে কত কি ভেবে রেখেছিল । এ ট্রিটমেন্টে েসময় প্রতি ৩ শ জনে একজন মারা যায় । কোন ব্যাপারই না । বাচ্চাদের গ্যাসট্রিক, বুক ধরপড়ানি, মাথা ঘুরা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয় । সে প্রত্যয়ের যত্ন নেওয়ার জন্য বই কিনে নিজে নিজে সেবার নিম শিখেছে পর্যন্ত । তাড়াতাড়ি বড় হলে তাদের চেয়েও প্রত্যয়ের লাভ বেশী । একটু শারিরীক সমস্যা সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে তাতে কি? গ্যাসট্রিকতো এমনিতেও হয় । সানজিদা সব শিখে নিয়ে ছিল । ছেলেটা হয়থ ডাক্তার হতো । জীব বিজ্ঞানে ভালো । কিন্তু অপদার্থটা শেষ মুহূর্তে জানিয়েছে টাকা যোগাড় করতে পারে নি । এখন সানজিদার সব কিছুই হবে দেরীতে ।
©somewhere in net ltd.