নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সম্প্রতি করোনা ভাইরাস নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্মান্ধদের অতিরঞ্জিত কথাবার্তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ধর্মীয় জ্ঞান সল্পতার দরুন তারা ইসলামকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। অনেকে বলছেন,'১০০ টাকা থেকে মাস্ক কেনা থেকে ৫০ টাকা দিয়ে টুপি কিনে মসজিদে যান। তাহলে করোনা ভাগবে।' আবার অনেকে বলছেন,'করোনা হচ্ছে কুরআন, রোজা এবং নামাজ। এই তিনটি শক্ত করে ধরলে করোনা থাকবে না।' ধর্মান্ধদের এহেন অতিরঞ্জিত কথা সে যাই হোক সেটা ইসলাম না। আবার অনেকে বিভিন্ন দুয়া শেয়ার করে করোনা দূর করতে চাচ্ছে, সে যাই হোক। ধর্মান্ধ ও জ্ঞান সল্পতা কোনো জাতির মঙ্গল বয়ে আনে না। এই ধর্মান্ধ ও জ্ঞান সল্প মুসলিমদের এমন প্রচার প্রচারণায় এক শ্রেণি স্বার্থান্বেষী নাস্তিকরা তাদের সুযোগ লুফে নিচ্ছে। ধর্মান্ধরা যাই করুক না কেন, সেটা ইসলামের মধ্যে হতে হবে সেটা কথা না। ইসলামি ইতিহাস, কুরআন ও হাদিস আমাদের কি বলছে সেটা খেয়াল করতে হবে।
কেবল দুয়ার দ্বারা মহামারি প্রতিরোধ করা সম্ভব না। সেটা হলে মুসলিমরা কোনোদিন মহামারিতে আক্রান্ত হত না। তবে মহামারি প্রতিরোধে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ পূর্বক দুয়ার মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত আশা করা যেতে পারে। সমস্যা মোকাবেলায় সাধ্যমত প্রস্তুতি গ্রহণ করতঃ আল্লাহর রহমত আশা করা যায়। যেমন ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, লোকজন হজ্জ করতো কিন্তু সাথে পাথেয় নিয়ে আসতো না। আবূ মাসঊদ বলেন, ইয়ামানের কতিপয় লোক হজ্জে যেতো কিন্তু সাথে পাথেয় আনতো না এবং তারা বলতো যে, আমরা আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করেছি। অথচ মক্কায় পৌঁছার পর তারা ভিক্ষা করতো। ফলে মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করলেন, “তোমরা হজ্জের সফরে সাথে পাথেয় নিয়ে যাবে, আর জেনে রেখো তাকওয়াই হলো উত্তম পাথেয়। (২ : ১৯৭) [১৭৩০]সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ১৭৩০
কুরআনে অন্যত্র উল্লেখ আছে, "সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে। ... "(সূরা জুমুআ ৬২ : ১০)
উপরোক্ত আয়াতদ্বয় ও হাদিস থেকে বোঝা যাচ্ছে সাধ্যমত চেষ্টা করার পর আল্লাহ উপর তাওয়াক্কুল বা তাঁর রহমত আশা করা উচিৎ।
সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
হযরত ইয়াকুব আ.-এর একটি ঘটনা সূরা ইউসুফে বর্ণিত হয়েছে। চারদিকে দুর্ভিক্ষ। ইয়াকুব আ.-এর সন্তানেরা খাদ্য-শস্য সংগ্রহের জন্য মিসরে যাচ্ছেন। তারা ছিলেন বারো ভাই। ইয়াকুব আ. বললেন, তোমরা যখন শহরে প্রবেশ করবে তো বারো ভাই এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। কারণ, সবাই তো ইউসুফ আ.-এর ভাই। রূপ-সৌন্দর্যে তাঁর মতো না হলেও কিছু মিল তো থাকবে। এ রকম বারোজন যুবক যদি একসাথে এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করে তাহলে মানুষের বদনজর লেগে যেতে পারে। ইয়াকুব আ. বললেন, তোমরা এক দরজা দিয়ে প্রবেশ না করে বিভিন্ন দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। এই কথাটা আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে উল্লেখ করেছেন। এটা হচ্ছে সতর্কতা। এ উপায় বাতলে দেওয়ার পর ইয়াকুব আ. একথাও বললেন যে, ‘‘তবে এর দ্বারা আমি আল্লাহর ফয়সালাকে রদ করতে পারব না। আমি তো একটি উপায় নির্দেশ করলাম। কিন্তু আল্লাহ তাআলা যদি তোমাদের তাকদীরে কোনো ক্ষতি লিখে রাখেন তাহলে উপায় অবলম্বন করে সেই ক্ষতি থেকে তোমরা বাঁচতে পারবে না। ফয়সালা তো একমাত্র আল্লাহ তাআলারই। তিনি যার সম্পর্কে ইচ্ছা কল্যাণের ফায়সালা করেন, যার সম্পর্কে ইচ্ছা অকল্যাণের ফায়সালা করেন। তার ফায়সালাকে কেউ কোনোভাবেই রদ করতে পারবে না। এজন্য আমি তার উপরই ভরসা করছি এবং তাওয়াক্কুলকারীদের তার উপরই তাওয়াক্কুল করা উচিত।’’ তো আল্লাহর নবী আলাইহিস সালাম উপায় অবলম্বন করেছেন এবং আল্লাহর উপরে ভরসা করেছেন।
তাওয়াক্কুল বা রহমতের আশা আপনি করতে পারেন সর্বাত্মক চেষ্টা করার পর। যেমন ধরুন আপনার কিছু আবাদি জমি আছে, কিন্তু সেখানে কোনোকিছু রোপিত নেই তবে ওখান থেকে রহমত আশা করা বোকামি। আপনি ফসল রোপণ করে সার দিয়ে দিয়ে আবাদি জমির সর্বাত্মক পরিচর্যা করার পর আল্লাহর রহমত আশা করতে পারেন।
হাদিসে বর্ণিত দুয়ার দ্বারা করোনা প্রতিরোধ করা কেন সম্ভব নয়? এটা হয়তো অনেকে প্রশ্ন করবেন। তবে উত্তর একটাই; সম্ভব নয়। কেননা, রাসুল স.-এর একজন প্রিয় সাহাবি। যিনি জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্তদের মধ্যে একজন, তিনিও কিনা মহামারি প্লেগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। উমার রা. তাঁকে চিঠি লিখলেন, ‘আপনি পত্র পাওয়ামাত্র মদিনায় আমার সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। সকালে পেলে সন্ধ্যের আগে রওনা করবেন, রাতে পেলে সকালের মধ্যেই। জরুরি কাজ রয়েছে’।
তিনি পত্রপাঠমাত্র উপস্থিত লোকদের সামনেই বললেন, আমি জানি তাঁর জরুরি কাজ কি! তিনি এমন এক ব্যক্তিকে বাঁচাতে চাইছেন- যিনি পৃথিবীতে চিরকাল বাঁচার জন্য জন্মান নি। আবু উবায়দা রা. চিঠির উত্তরে লিখলেন, যেন তাঁকে অপারগ বিবেচনায় ক্ষমা করা হয়।
সেই মহামারির কবলে পড়ে অনেক মুসলিম মারা গেছেন। সাহাবিগণ যেখানে রক্ষা পাননি সেখানে আমরা রক্ষা পাব কি করে!
নূহ আ.-এর জাতির প্রতি লক্ষ্য করুন। যখন মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তাদের উপর আযাব পতিত করলেন, তার পূর্বে নূহ আ.-কে নৌকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়ে প্রস্তুত থাকতে বললেন। কেননা, যখন কোনো জাতির উপর গজব পতিত হয় তখন সে জাতির কেউই সেটা থেকে রক্ষা পায় না। এরূপ বহু ঘটনা রয়েছে যে, আযাবের পূর্বে মুমিন বান্দাদের ঐ এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। আ'দ ও সামূদ জাতির ঘটনাও পর্যবেক্ষণ করুন।
১৮ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৪৭
যুবায়ের আলিফ বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
২| ১৮ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১০:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন:
১৮ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১১:১২
যুবায়ের আলিফ বলেছেন: এদের জন্য ফেসবুকে ঢোকাও মুশকিল।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৪২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: প্রতিটি পাড়ায়,মহল্লায় এবং গ্রামে দলমতের উদ্ধে উঠে টিম গঠন করা দরকার , এই টিম সাধারণ জনগণকে সচেতন করবে। আর কোন প্রবাসী থাকলে উনাকে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিতে হবে ।