নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইতিবাচক চিন্তার শক্তিতে বিশ্বাস করি এবং আমার কাজ এবং কথার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আমার ব্লগে আসার জন্য ধন্যবাদ। আসুন, একসাথে কাজ করে সফলতার পথে এগিয়ে যাই!
জনাব আবদুর রব শরীফ সাহেবের একটি পোস্ট পড়ে মনে হলো এবিষয়ে আমি কিছু লিখি। উনার পোস্টের শিরনাম যৌবনে চারটি বিয়ে করা কি সুন্নত? । আচ্ছা আসুন দেখি এটা আসলে ফরজ, সুন্নত নাকি নফল ? কোনটা ?
বহুবিবাহ—এই শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে নানা প্রশ্ন জাগে। মুসলিম সমাজে এই প্রথা নিয়ে যেমন আলোচনা-সমালোচনা আছে, তেমনি অমুসলিমদের মধ্যেও আছে অনেক ভুল ধারণা। কেউ বলেন এটা পুরুষের আধিপত্যের প্রতীক, আবার কেউ বলেন এটা রাসুলের (সঃ) সুন্নাহ। কিন্তু প্রকৃত সত্য কী?
কুরআনের দৃষ্টিভঙ্গি:
কুরআনের সূরা আন-নিসার ৩ নম্বর আয়াতে বহুবিবাহের উল্লেখ আছে। আল্লাহ বলেন:
وَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَىٰ فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ ۖ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا 1 فَوَاحِدَةً أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَلَّا تَعُولُوا 2
"আর যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, এতীমদের (সম্পদের ব্যাপারে) সুবিচার করতে পারবে না, তবে নারীদের মধ্যে যাদেরকে তোমাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে কর—দুই, তিন বা চার। আর যদি আশঙ্কা কর যে, তোমরা সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকে অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীকে (বিয়ে কর)। এটাই সঙ্গত, যাতে তোমরা সীমালঙ্ঘন না কর।" (সূরা আন-নিসা: ৩)
এই আয়াতে ‘সুবিচার’ (عدل) -এর শর্তটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সুবিচার বলতে শুধু ভরণপোষণ বা বাসস্থানের সমতা বোঝায় না, বরং স্ত্রীদের প্রতি সমান ভালবাসা ও মনোযোগ দেওয়াকেও বোঝায়। আর মানুষের পক্ষে একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সম্পূর্ণরূপে সমান অনুভূতি বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব। তাই অনেক ইসলামী পণ্ডিতের মতে, কুরআনের এই আয়াত মূলত একটি বিয়ের দিকেই উৎসাহিত করে। কারণ সুবিচারের শর্ত পূরণ করা খুবই কঠিন।
নবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর জীবনের প্রেক্ষাপট:
নবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর একাধিক বিবাহের বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তবে তাঁর জীবনের প্রেক্ষাপট বিবেচনা না করে শুধু এই দিকটি নিয়ে আলোচনা করা সঠিক নয়।
প্রথম বিবাহ: নবী (সঃ) ২৫ বছর বয়সে খাদিজা (রাঃ)-কে বিয়ে করেন এবং তাঁর জীবদ্দশায় অন্য কোনো বিয়ে করেননি। খাদিজা (রাঃ) এর মৃত্যুর পর তিনি অন্যান্য বিয়ে করেন।
সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণ: নবী (সঃ) এর অনেক বিবাহের পেছনে সামাজিক, রাজনৈতিক ও কৌশলগত কারণ ছিল। বিধবা নারীদের আশ্রয় দেওয়া, বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন, ইসলামের দাওয়াত প্রসারের মতো উদ্দেশ্যও এর সাথে জড়িত ছিল। তৎকালীন আরবের সমাজে বিধবাদের অবস্থা খুবই করুণ ছিল। তাদের আশ্রয় দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক দায়িত্ব ছিল।
উদাহরণ: নবী (সঃ) তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে সর্বোচ্চ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতেন। তিনি স্ত্রীদের সাথে কেমন আচরণ করতে হয়, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
ইসলামী পণ্ডিতদের মতামত:
বহুবিবাহ নিয়ে ইসলামী পণ্ডিতদের মধ্যে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কেউ কেউ বিশেষ পরিস্থিতিতে বহুবিবাহকে জায়েজ মনে করেন, তবে সুবিচারের শর্তের উপর জোর দেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি বিয়েই উত্তম। তবে সকলেই একমত যে, সুবিচার ছাড়া বহুবিবাহ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
আধুনিক সমাজের প্রেক্ষাপট:
বর্তমান সমাজে বহুবিবাহের প্রচলন কম দেখা যায়। আধুনিক সমাজে নারী-পুরুষের সমতা, নারীর শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় বহুবিবাহের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পেয়েছে। তবে কিছু সমাজে এখনো এর প্রচলন আছে। কিন্তু সুবিচারের শর্ত পূরণ না হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি হয়।
ইসলামে বহুবিবাহ একটি স্পর্শকাতর বিষয়। কুরআন ও হাদিসের আলোকে এই বিষয়ে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা জরুরি। শুধু আবেগ বা প্রচলিত ধারণার উপর ভিত্তি করে কোনো সিদ্ধান্তে আসা উচিত নয়। সুবিচারের শর্ত পূরণ করা কঠিন হওয়ায় একটি বিয়েই উত্তম। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং সুবিচারের নিশ্চয়তা থাকলে বহুবিবাহের অনুমতি আছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, ইসলাম একটি বাস্তবসম্মত ধর্ম এবং মানুষের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিধান দেয়।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:১০
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: কোরআন যখন অবতীর্ণ হয়, তখন আরব সমাজে দাসপ্রথা প্রচলিত ছিল—এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য। দাসপ্রথা ছিল সেই সময়ের একটি সামাজিক সমস্যা। তবে, ইসলাম কখনোই দাসপ্রথাকে সমর্থন করেনি। এর প্রমাণ কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে পাওয়া যায়, যেখানে দাস-দাসীদের প্রতি সহানুভূতি এবং তাদের মুক্তির কথা বলা হয়েছে। যদি ইসলাম দাসপ্রথার সমর্থক হতো, তাহলে কোনো দাসীকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়ার বিধান কখনোই দিতো না। এই বিধানই প্রমাণ করে যে ইসলামে দাসপ্রথাকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
বর্তমানে, বিশ্ব থেকে দাসপ্রথা প্রায় সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়েছে। তাই, এখন ইসলাম দাসপ্রথা সমর্থন করে কিনা, সেই প্রশ্ন অবান্তর।
অন্যদিকে, বহুবিবাহ একটি ভিন্ন বিষয়। এর স্বপক্ষে কোনো জোরালো যুক্তি নেই এবং এটি নিঃসন্দেহে সমর্থনযোগ্য নয়।
২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:০৬
কামাল১৮ বলেছেন: হাদিস এবং সিরাত থেকে জানা যায়,তার স্ত্রীরা ঝগড়ায় লিপ্ত হতো।এই জন্য কিছু আয়াত নাজিল হয়েছে।
তার সম্পর্কে আলোচনা করতে যেয়ে আমরা এটা ভুলে যাই যে তিনিও অন্যান্য মানুষের মতো একজন মানুষই ছিলেন।কাল্পনিক ফেরেস্তা বা জ্বীন ছিলেন না।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৯:১২
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: সহমত।
৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৫০
কামাল১৮ বলেছেন: এটা ঠিকই বলেছেন।ইসলাম সেই সময়ের জন্য।বর্তমানে দরকার মডিফাই ইসলাম।কিন্তু মুসলমানরা এটা করছে না।তারা মৌলিক ইসলামকেই আকড়ে ধরতে চায়।
০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:২৭
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আমার মতে, ইসলামকে আধুনিক জীবনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা উচিত। তবে এই ব্যাখ্যায় ইসলামের মূলনীতিগুলোকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৯
নতুন বলেছেন: আমাদের দেশে পুরুষেরা নিজে ৪ বিয়ে করতে না পারলেও ৪টার অনুমুতি আছে ভেবে তৃপ্তি লাভ করে।
বিয়ে করা, বিবাহ বিচ্ছেদ ও সহজ করা উচিত। কিন্তু বহুবিবাহ করা উতসাহ দেওয়ার মতন কিছু না।
বিয়ে শুধুই যৌন চাদিহা মেটানোর মাধ্যাম না। বরং একজন নারীকে জীবন সঙ্গী করা, পরিবার গঠন করা।
যারা তার স্ত্রীকে ভালোবাসে তাদের মাথায় কিভাবে ২য় বিয়ের ভূত চাপে বুঝিনা। স্ত্রীর সাথে ভালোবাসা থাকলে অন্য নারীর দিকে তো নজর যাবার কথা না।
তাই যারা অসুখী তাদের মাথাতেই বহুবিবাহের ভাবনা ঘুরপাক খায়।
০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:২৯
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: আপনার উত্থাপিত বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সমাজের একটি বড় অংশের মধ্যে প্রচলিত একটি ভ্রান্ত ধারণাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে। আপনার মতামত সম্পূর্ণ যুক্তিযুক্ত এবং সমাজের কল্যাণে এর প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
৫| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১:০৪
রাজীব নুর বলেছেন: শুধু মাত্র ইতরেরাই বহু বিবাহ করে এবং সাপোর্ট দেয়।
০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:৩০
শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: সবাই একই নয়। অনেকেই বহুবিবাহের বিরোধী। কিন্তু সামাজিক চাপ, অর্থনৈতিক কারণ বা অন্য কোন কারণে অনেকেই বাধ্য হয়ে বহুবিবাহ করতে পারেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৫৮
কামাল১৮ বলেছেন: এই আয়াতে দাসির কথা উল্লেখ আছে।অর্থ ইসলামে দাসপ্রথা জায়েজ।বর্তমান বিশ্বে মানুষকে দাসে পরিণত করা এক জঘন্য অপরাধ।কিন্তু ইসলাম এটা সমর্থন করে।আকাধিক বিয়ে করা অনৈতিক।