নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বদলে যাও, বদলে দাও...

আকাশ ইকবাল

আকাশ ইকবাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারুণ্যের জয় হোক

১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:১৯



শুরু করা যাক গত বছর পাহাড় ধস ট্রাজেডি থেকে। পাহাড় ধস ট্রাজেডির সময় আমরা দেখেছি, কিভাবে আমাদের দেশের সচেতন তরুণ সমাজ পাহাড়ী ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে! এর আগে হাওড় এলাকায় বন্যার সময়ও আমরা দেখেছি, কিভাবে আমাদের দেশের সচেতন তরুণ সমাজ হাওড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ত্রাণ নিয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর ২০১৭ সালের বছর জুড়ে সব চেয়ে আলোচিত ঘটনা উত্তরবঙ্গে বন্যায় কবলিত হয়ে ৩২টি জেলার প্রায় ৮০ লক্ষেরও বেশি মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছিলো। এই ঘটনায়ও আমাদের দেশের সচেতন তরুণ সমাজ যে যার অবস্থান থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রান নিয়ে হাজির অবস্থান নিয়েছিলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এলাকায়। যেখানে দেশের সরকার প্রথমে নিরব ভুমিকা পালন করছে, সেখানেই তারুণ্যের বুকে মানবতার উচ্ছাস বয়ে যাচ্ছে। যেখানে দেশের সরকার সবার আগে ত্রান নিয়ে হাজির হওয়া দরকার সেখানে তরুণ সমাজ আগেই পৌঁছে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজ-বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক থেকে শুরু করে রাজপথে ভিক্ষা করে জীবন চলা সেই মানুষটিও বন্যায় কবলিত মানুষের জন্য তাঁর অবস্থান থেকে দাঁড়িয়েছিলো। সম্প্রতি সময়ের সব চেয়ে আলোচিত ঘটনা রোহিঙ্গা সংকট। কিন্তু রোহিঙ্গারা আমাদের দেশের না। মিয়াননারের। কিন্তু তার পরও আমার দেশের তরুণ সমাজ মানবতার মূল্যে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। যেখানে পুরো বিশ্ব রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিরব ভুমিকা পালন কলেছিলো শুরুতে সেখানে আমার দেশের তরুণ সমাজ সোচ্ছার ছিলো। রোহিঙ্গারা আমাদের দেশের নাগরিক না হলেও তারা আমাদের মতো রক্ত মাংশে গড়া মানুষ। সব চেয়ে বড় কথা হলো তাদের উপর অন্যায় করা হচ্ছে, নিজেদের ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে, গণহত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, লুটপাট কি না করছে? রোহিঙ্গারা পড়েছিলো খাদ্য সংকটে, পড়েছিলো আশ্রয়হীনতায়, এছাড়া বিভিন্ন রোগ ভালাই আক্রমণ করছে। নাফ নদীতে ভেসে আসছে রোহিঙ্গার লাশ। যেখানে বিশ্ব বিবেকহীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে সেখানে আমার দেশের তরুণ তাদের রক্ষায় ছুঁটছে। বন্যা, পাহাড় ধ্বস, হাওড়ে ক্ষয়ক্ষতির সময় যেমন ত্রান সংগ্রহ করেছিলো ঠিক একই ভাবে রোঙ্গিাদের জন্যও ত্রাণ সংগ্রহ করে যে যার অবস্থান থেকে পাশে দাঁড়িয়েছে। তরুণ সমাজের একটাই কথা, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের উপর আক্রমণ চালায়, হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ অত্যাচারসহ গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছিলো তখন আমাদের পাশের বন্ধু রাষ্ট্র ভারত মানবতার মূল্যে আমাদের এক কোটি জনগণকে আশ্রহ দেয়। আজ রোহিঙ্গা সহজ, সরল মানুষদেরও অন্যায় ভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে। তুলে দিচ্ছে নিজস্ব ভিটে থেকে। আজ আমরা যদি বিবেকহীন ভাবে চুপ করে থাকি, আমাদের দরজা যদি বন্ধ করে রাখি, সাহায্যে এগিয়ে না যাই তাহলে আমরা তো বিবেকহীনদের কাতারে পড়ে যাবো। আমরা চাইনা সেই কাতারে পরতে। মানুষের একটি নিদিষ্ট রাষ্ট্র থাকলেও বাঁচার প্রশ্নে কোন রাষ্ট্র নেই। মানুষ বিপদে পড়ছে আমরা তাদের আশ্রয় দিবো। মানুষের জন্যই এই পৃথিবী।
আমার দেশের তরুণ সমাজ শুধু এই সব কিছুতে সীমাবদ্ধ নয়। শুধু শহর বন্দরে নয় বর্তমানে গ্রামে গঞ্জে, পাড়ায় মহল্লায় তরুণ সমাজ গড়ে তুলেছে সামাজিক সেবা মূলক সংগঠন। এই সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া। আবার অনেক সংগঠন আছে যারা সামাকি উন্œয়ন, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ও ক্রীড়া উন্নয়ন মূলক সকল কাজে সমাজে অবদান রাখছে। কিছু কিছু সংগঠন আছে যারা শিক্ষা নিয়ে কাজ করে। সমাজে পিছিয়ে পড়া গরীব অসহায় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করে, কোন কোন সংগঠন প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করে। বিশেষ করে দেশ ব্যাপি রক্ত নিয়ে কাজ করার যে আগ্রহ তা দেখে সত্যিই মুগ্ধ। আগে এক সময় মানুষ রক্ত দিতে চাইতো না। হঠাৎ রক্ত পাওয়াও মুশকিল হয়ে উঠতো। আর এখন মহুর্তে¦র মধ্যে রক্ষ পেয়ে যাচ্ছে। হাসপাতালে আমার মা-বোনের অপারেশনে জরুরি রক্ত প্রয়োজন, কোন সমস্যা নেই। রাত যতক্ষণই হোক রক্তের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। শহর থেকে শুরু করে গ্রাম গঞ্জের পাড়ায় মহল্লায় গড়ে উঠছে পাঠাগার। মানুষের মাঝে জ্ঞানের জগতকে প্রসারিত করে বই। বই ও বই পড়ার আনন্দকে মানুষের মাঝে প্রসারিত করে জ্ঞান অর্জন করার জন্য গড়ে তুলছে পাঠাগার। কেউ কেউ সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে কাজ করছে। কেউ কেউ ক্যামেরার লেন্সকে ব্যবহার করে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি, বৈষম্যের বাধা ভেঙ্গে সামনে এগিয়ে যাওয়া এবং ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চা, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরার কাজ করছে। কোথায় কোথায় গড়ে তুলছে ফিল্ম মুভমেন্ট সোসাইটি। বিশ্ব বিখ্যাত পরিচালকদের তৈরি ফিল্ম , সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে নিজেদের তৈরি কিছু শর্ট ফিল্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও করছে।
বর্তমান তরুণ প্রজন্মের বেশির ভাগ তরুণ রাষ্ট্রের ইতিহাস সম্পর্কে ভালো জানা নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমাজ গঠনের ইচ্ছা থেকে কেউ কেউ শিশু-কিশোর ও তরুণ-যুবকদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, চেতনা, বিশ্বাস ও ভিত্তি ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে। ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির বাহিরে বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক সংগঠন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির বিপক্ষে কাজ করে যাচ্ছে।
তরুণদের সমাজ সেবামূলক কাজ আমরা প্রায় দেখতে পাই। বিশেষ করে ঈদ, পুজো কিংবা বড় দিনের উৎসবের সময়। দুঃস্থ, গরিব, অসহায় মানুষের পাশে কিভাবে দাঁড়াচ্ছে। শিক্ষার অধিকার কোটিপতি বাপের সন্তানদের যেমন আছে ঠিক একই ভাবে রিক্সাচালক কিংবা মা-বাবা মরা সন্তানদেরও আছে। কিন্তু অর্থের অভাবে স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না। যদিও তার শিক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার তার দায়িত্ব পালন করছে না। কিন্তু সচেতন তরুণ সমাজ তার পাশে দাঁড়াচ্ছে।
সেবার এই কাজগুলো সামনে আসলে মনে হয়, বাংলাদেশ সত্যিই আজ সোনার বাংলায় পরিণত হচ্ছে। কিন্তু একটা জায়গায় এসে বার বার থমকে যাই। সেটা হচ্ছে ছাত্র রাজনীতি। আমাদের দেশের বর্তমানে যে ছাত্র রাজনীতি আমরা দেখতে পাচ্ছি এমন ছাত্র রাজনীতি কি আমরা চেয়েছিলাম? তাহলে কেমন ছাত্র রাজনীতি চেয়েছি? কেমন হওয়া উচিত? ছাত্র রাজনীতি তো আসলে সবার কল্যাণের জন্য হওয়া উচিত৷ প্রথমত শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে। তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য। ছাত্রদের কণ্ঠস্বর আমরা তাদের মাধ্যমে শুনতে পাবো, এটাই সত্যিকারের ছাত্র রাজনীতি। কিন্তু সত্যিকার অর্থে আমরা কি দেখতে পাই? হ্যাঁ পাই। মাত্র কয়েকটি বাম ধারার ছাত্র সংগঠনের মধ্যে। কিন্তু একটা বিহৎ ছাত্র সংগঠন বর্তমান ক্ষমতাশীল দল ও প্রধান বিরোদী দলের ছাত্র সংগঠন। এই ছাত্র সংগঠনগুলোর কার্যক্রম দেখলে মাঝে মাঝে মনে হয় ছাত্র রাজনীতির চাইতে না থাকাই ভালো।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১০

বিজন রয় বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম।

শুভকামনা রইল।
শুভব্লগিং।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.