নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বদলে যাও, বদলে দাও...

আকাশ ইকবাল

আকাশ ইকবাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মকেন্দ্রিকতার শিক্ষা

২৩ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১১:৪৫

শিশু-কিশোরদের আত্মকেন্দ্রিকতার শিক্ষা থেকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। কারণ এই শিক্ষা শিশু কিশোরদের কিংবা শিক্ষার্থীদের স্বার্থপর ও বিচ্ছিন্ন করে তুলছে। আর শিশু-কিশোরদের এই শিক্ষা থেকে রেরিয়ে আনতে হলে পরিবারের ভূমিকা থাকা উচিত। এমন একটা শিক্ষা আমাদের এই গোটা সমাজ জুড়ে ছড়িয়ে আছে- ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম’. পরিবারগুলোতেও শেখানো হয় আগে নিজে বাঁচো। বড় হয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করে ভাল চাকরি-বাকরি করে নিজের পরিবারের কথা চিন্তা কর। এভাবে স্বার্থপরতা শিশুমনকে ক্রমাগত গ্রাস কওে দিচ্ছে। পরিবারে যে ছেলেটি একটু পরপকারী, তার সম্পর্কে আজকালকার মা-বাবারা বলতে শুনা যায়- আমার এই ছেলেটা একটু বোকা! নিজে না খেয়ে অন্যকে খাওয়াচ্ছে। নিজের দামী পোশাকগুলোর মধ্যে একটা রাস্তার ফকিরকে দিচ্ছে। ফকির কি এই পোশাক গায়ে দেয়ার যোগ্য? টাকা হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে রাখতে পারছে না। আর যে ছেলেটা নিজের স্বার্থের ষোল আনা বোঝে তার স্বীকৃতি মেলে বুদ্ধিমান হিসাবে। তাকে নিয়ে বাবা-মারা গর্ব করে। কিন্তু মা বাবারা এটা বুঝার চেষ্টাা করে না, ঐ বুদ্ধিমান ছেলেটি যখন বড় হয়ে বিয়ে করে, সংসার হয়, তখনো নিজেরটাই দেখতে থাকে। অনেক সময় মা বাবার প্রতি দায়িত্বও অস্বীকার করে। ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। যার সাক্ষস প্রমাণ আজকাল কার বৃদ্ধাশ্রম গুলো।
সামর্থবান পরিবার গুলোর দিকে চেয়ে দেখুন, পরিবারে স্নেহ মমতার বন্ধন হারিয়ে যাচ্ছে। বাবা-মা পত্যেকে যে যার মতো। সন্তানের দিকে নজর দেওয়ার সময় টুকু নেই। অথবা সন্তানদের এমন ভাবে ভোগে-সুখে বড় করে তুলছেন, যা চাইছে তা তো দিচ্ছেনই, যা চাইছে না তাও দিচ্ছে। চরিত্র কি? এটা শেখায়নি, শিখিয়েছে জীবনে কিভাবে খাও দাও ফুর্তি কর। যার ফলে বড় হয়ে সেই শিশুরা বড় ধরণের অন্যায় করতেও ভয় পায় না। কারণ তাঁর পেছনে সমর্থন দেয়ার মতো পরিবার আছে। যার সাক্ষস প্রমাণও আজ আমাদের চোখের সামনে পড়ে।
প্রতি নিয়ত, প্রতি ঘন্টায় দেশে নারী নির্যাতন, খুন, ঘুম, হত্যা চলছে। এই খবর গুলো মাঝে মধ্যে না সব সময় আমরা পাচ্ছি। এখন আইন, বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে অপরাধিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শাস্তি দিয়ে কি আমরা এই অপরাধ গুলো সমাজ থেকে দূর করতে পারছি? সরকার পারছে? শাস্তির বিরোধীতা আমি করছি না। কিন্তু শাস্তি দিয়ে একে মোকাবেলা করা যাবে না। যে সমাজ ব্যবস্থা, যে সামাজিক সাংস্কতিক পরিবেশ এই চরিত্র জন্ম দেয় তাকে ধ্বংস করতে হবে। মূল জিনিসটা কে না পাল্টালে, সরকার আইন করে শুধু কিছু অপরাধীকে শাস্তি দিতে পারবে, কিন্তু অপরাধ রোধ করতে পারবে না। পারছে না।
কেন মানুষ ধর্ষক হয়ে উঠবে? খুনি হয়ে উঠবে? অপরাধ করবে? আমরা জানি, একটা মানুষ তার চরিত্র বৈশিষ্ট নিয়ে জন্ম গ্রহন করে না। অন্য প্রাণী তার বৈশিষ্ট নিয়ে জন্মে। অন্যান্য প্রাণীরা প্রকৃতির অধীনে চলে, জীবন ধারণ করে। কিন্তু মানুষ তেমন নয়। মানুষ সামাজিক প্রয়োজনের জন্য প্রাকৃতিক জীবনকে প্যাটার্ন করে। তাই সমাজ পরিবেশ থেকেই মানুষের চরিত্র গরে ওঠে।
আজ যে শিশুটা বিধ্যালয়ে পড়ছে, তার বিকাশের উপযোগি পরিবেশ কি আছে? আমরা কি লেখাপড়াকে তার কাছে আনন্দ সহকারে উপস্থাপনের কোনো আয়োজন করেছি? একটা অর্থহীন প্রতিযোগিতাকে ফেলে আমরা তার কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছি ভারি ব্যাগের বোঝা। দশজন কে পিছনে ফেলে কিভাবে সামনে এগোতে হবে তাই শেখাচ্ছি তাকে। সর্বক্ষণ যেন পড়াশুনা ঠেসে খাওয়াচ্ছি। অনেকটা রবিন্দ্রনাথের ‘তোতাপাখি’র ” সেই গল্পের মতো। তোতা পাখিকে শিক্ষিত করতে চায় রাজা। সারাক্ষণ বৈ বৈ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাওয়ানো হচ্ছে পাখিটাকে। রাজা জিজ্ঞেস করলেন পেয়াদাদের- শিক্ষা কেমন হচ্ছে? বলল, খুব শিক্ষিত হচ্ছে। দিন রাত বিদ্যে ভরে দিচ্ছে তার মধ্যে। একদিকে বিদ্যে ভরে দেয়া হচ্ছে অন্যদিকে রোগ হয়ে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে পাখিটি। একদিন তোতা পাখিটি মারা গেল।
আমরা অনেক বিদ্যা অর্জন করছি। অনেক ডিগ্রি অর্জন করছি। কিন্তু মানবিকতা মনুষ্যত্ববোধ সৃজনশীল মানুষ তৈরি করতে পারছি না। এরজন্য দায়ী যেমন আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, রাষ্ট্র, সমাজ ও সরকার ঠিক একই ভাবে দায়ী আমাদের পরিবারগুলোও।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:০০

চাঁদগাজী বলেছেন:


পড়ালেখার কারণে শিশুরা কিভাবে আত্মকেন্দ্রিক হচ্ছে? উদাহরণ দেন।

২| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


শিশুদের জন্য কি ধরণের পরিবেশের দরকার? আপনি লিখুন!

৩| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:২২

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: মানুষ হচ্ছে আশরাফুল মাখলুকাত।কিন্তু সে যখন ঘৃন্য কাজে নিজেকে সপে দেয় তখন সে পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট হয়ে যায়।
আজ সারাবিশ্ব জুড়ে কেবল ধর্ষণের খবর দেখতে পাই।এখানে ধর্ষক ও ধর্ষিতা দুজনের মধ্যে যে ব্যক্তি ধর্ষণ করে তাকে হাই লাইট করা হয়,জনসম্মুখে তুলে ধরা হয়, এতে কি হয়?
কিছুই হয় না। তার সম্মানের হানি ঘটে না কারন সে তো চরিত্রহীন।আর তার এই চরিত্রহীনতা পেছনে দায়ী তার বাবা মা।কারন তারা তাঁদের সন্তানদের ভালোমন্দ বোঝানো আইন বোঝানো মনে করে না।ফলে সন্তান হয় পথভ্রষ্ট।আর রাষ্ট্রীয় আইনের যদি কথা বলি, এ কেমন আইন? চৌদ্দ পনেরো বছরের কারাদন্ড! তাকে ফাসিতে ঝোলানো উচিৎ।এক্ষেত্রে আল কোরআন বলে, ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড দেয়ার কথা।কারন একটা মেয়ের সম্ভ্রম হানি তার জন্য মারাত্মক যন্ত্রনাদায়ক।

আর হ্যা সে মেয়েকে দেখে বাকীদেরো শিক্ষা নেয়া উচিৎ।আর সেই শিক্ষা হবে নিজের ইজ্জত রক্ষা আর তার জন্য তাকে অবশ্যই এমন জামা পরিধান করতে হবে যা হবে অচাকচিক্যময়।

ভালো থাকুন।

৪| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ৭:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: আত্মকেন্দ্রিক ব্যাপারটা আমার খুব অপছন্দ।

৫| ২৪ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪৪

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: পরিবারগুলোকে কিভাবে সচেতন করা যায় বলে মনে করেন?

৬| ২৫ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১:৩১

আকাশ ইকবাল বলেছেন: ধন্যবাদ সবাইকে। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে নতুন একটি অঅর্টিকেল পোস্ট দিবো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.