নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Run for mankind...

মোবারক হোসেন রুবেল

অগ্নিশিখা জ্বালিয়ে দা্উ দাউ দাউ করে জ্বলুক। অন্নগুলো কেড়ে নাও ক্ষুধার জালা বুঝুক।

মোবারক হোসেন রুবেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

পেঠে ভাত নাই, মাথার উপর কড়া রোদকে শিশু হৃদয় তখন প্রশ্ন করা শিখেনি।

১০ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:৪৬

তখন হয়তো চতুর্থ কিবা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। আমাদের পাশ্ববর্তী এলাকায় সরকারি অনুদানে নতুন একটা গ্রাম হবে। তাই শহর থেকে এক বা একাধিক চোর বাটপার আসবেন সেটা উদ্ভোধন করতে।



শ্রদ্ধেয় প্রধান শিক্ষক আগের দিনেই আমাদের জানিয়ে দিলেন যে, ঢাকা থেকে এমপি (মেম্বার অব প্রতারক) আসবে। সকাল ৭ টার ভেতর যেন ভালো পোষাক পড়ে স্কুলে উপস্থিত হই।



আমাদের প্রাইমারী স্কুলের নির্দিষ্ট কোন ইউনিফর্ম ছিল না। যে যেভাবে পারে স্কুলে আসতো। কেউ সেন্ডেল ছাড়া, কেউ হাফপ্যান্ট পরে কেউবা আবার নতুন সেন্ডু গ্যাঞ্জি।



এক প্রকার খেয়ে না খেয়ে সকাল ৭টা ভেতরেই আমরা স্কুলে হাজির। ৮ টার দিকে যাত্রা শুরু করে গন্তব্যস্থলে পৌছলাম ৯ টার দিকে।



স্যারের নির্দেশে তপ্ত রোদে মরীচিকার সাথে মিতালী করে নদীর পাড়ে গরম বালির উপর ঘন্টা তিনেক দাঁড়িয়ে রইলাম। আমার মনে পড়ে মরুভূমিসম বালুর গরমে বেশ কয়েকবার অধৈর্য্য হয়ে আমি লাইনচ্যুত হবার চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু স্যারের নির্দেশ বলে কথা।



পেঠে ভাত নাই, মাথার উপর কড়া রোদকে শিশু হৃদয় তখন প্রশ্ন করা শিখেনি।



অবশেষে বিকাল ৩টায় তিনি আসলেন, স্পিড বোটে করে। বোট থেকে নেমেই এমপি মহোদয় গরম বালুর উপর পা দিয়েই ব্যাংগের মতো লাফাইলেন। বাচ্চা হৃদয় তা দেখে ব্যাপক হাসিই পাচ্ছিল।



শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা, গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা সত্ত্বেও থেমে নেই মন্ত্রী-সাংসদদের স্বাগত জানানোর আয়োজনে কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীদের রোদে দাঁড় করিয়ে রাখার চল। কেন? একটা এলাকায় বা শিক্ষাকেন্দ্রে এমপি/মন্ত্রী আসবেন তাই বলে স্কুলের বাচ্চাদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে কেন?



সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে আজ শনিবার এমন ঘটনা ঘটেছে।



বিদ্যালয়টিতে আজ নতুন ভবন নির্মাণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ আবদুল মজিদ মণ্ডলের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা। বেলা ১১টা থেকে এ অনুষ্ঠান শুরুর কথা ছিল। কিন্তু প্রধান অতিথি দেরিতে আসায় অনুষ্ঠান দেরিতে শুরু হয়।



সাংসদকে বরণ করতে স্কুলটির প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীকে সকাল ১০টা ৪০ মিনিট থেকে ১১টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত কড়া রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করেন প্রধান শিক্ষক আবদুল কাদের মিয়াসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক।



ইচ্ছা হয় আবারো পূনর্জন্ম নেই। বাচ্চাদের মতো আবার স্কুলের আঙ্গিনায় হাফপ্যান্ট পরে প্রবেশ নেই। তারপর শিক্ষক নামধারী ঐসব পাষন্ডদের সকল প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলি। তাদের কথামতো কড়া রোদে না দাঁড়িয়ে তাদের মুখের উপর কড়াঘাত করি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.