![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক.
খালেদা জিয়ার পা ছুঁয়ে যে সাংবাদিক ধন্য হয়েছিলেন, যুদ্ধাপরাধীদের সর্দার গোলাম আযমের 'দোয়ায়' যিনি দেশের বড় সাংবাদিক, এরকম কয়েকজনও এখন এ দেশের বড় আওয়ামী সাংবাদিক! এসব 'কনভার্টেট আওয়ামী' সাংবাদিকদের ভাবটা এমন, যেন তাঁরা মাহবুব উল আলম হানিফের চেয়েও বড় আওয়ামী লীগার!
এরকম মন্তব্যের কারণ হচ্ছে, দৈনিক যায়যায়দিনের আমাদের দুই সহকর্মীকে আটক করে বোমাবাজির একটা মামলায় ফাঁসায় পুলিশ। ঘটনাটা গত ১০ জানুয়ারি রাতের। সংবাদটা যায়যায়দিনের কার্যালয় থেকে সেদিন রাতে, পরদিন দুপুরে জাতীয় নানা দৈনিক, টিভি চ্যানেলের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। অথচ কয়েকটি পত্রিকা, টিভি চ্যানেল সংবাদটি ছাপেনি, প্রচার করেনি। ঘটনাটা 'স্পর্শকাতর' হওয়ায় পুলিশকে সামান্য চটিয়ে 'কনভার্টেট আওয়ামী লীগার'রা সরকারকে 'বিব্রতকর' অবস্থায় হয়তো ফেলতে চাননি!
অথচ যায়যায়দিনের যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, তাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁদের একজন গাড়ি চালক জনি, অন্যজন মালী আল-আমিন। তাঁরা রাজনীতির মারপ্যাঁচের খেলা বোঝেন না। সারাদেশ, জনগণকে অবরুদ্ধ করে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি সম্পর্কে তাঁদের জ্ঞান নেই। আর যায়যায়দিন নীতিমালায় প্রগতিশীল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে প্রগতিশীল গণমাধ্যমগুলোর সারিতেই যায়যায়দিনের অবস্থান। এ পত্রিকা সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করে, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে। এরকম পত্রিকার দুই কর্মীকে আটকের পর আলোচ্য পত্রিকা, টিভি চ্যানেলগুলোর চুপ থাকার অর্থটা খুঁজে পাচ্ছি না! সহযোগী একটা দৈনিকের দুজন কর্মীর বিপদে এভাবে চুপ থাকাটা সাংবাদিকতার কোন ধরনের নীতিমালা?
একজন সংবাদকর্মী হিসেবে এসব প্রশ্ন ওঠানোর সুযোগ আমার নেই। কারণ, আজ এক পত্রিকায়, কাল অন্য পত্রিকায়, পরশু আরেক পত্রিকায়- এভাবে যাযাবরের মতো কর্মস্থল সাংবাদিকদের। কথাগুলো বলে বিবেকের কাছে কিছুটা 'ভারমুক্ত' হলাম মাত্র! ক্ষমতা দখল করতে পারলে গণমাধ্যমকে 'অকল্পনীয় স্বাধীনতা' দেয়ার দাবিদার বিএনপি-জামায়াত বা ২০ দলীয় জোট নেতাদেরও এখানে একটা দায় আছে। তাঁরা যায়যায়দিনের কর্মীদের গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টাতে অন্তত একটা বিবৃতি দিতে পারতেন! তাঁদের অবস্থাটা হচ্ছে, রিয়াজ রহমানের মতো কারো উরুতে আঘাত না লাগলে তাঁরা বিবৃতি দেবেন না! জোটের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, দেশের সাধারণ জনগণ আসলে মানুষ নন! কেউ আগুনে দগ্ধ হয়ে মরলে আর পুলিশি নির্যাতনের শিকার হলে তাদের কী যায়-আসে তাতে! যে কোনো উপায়ে তাঁদের দরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা!
দুই.
আল আমিন, তোমাকে বলছি, তুমি কারাগারের থাকলেও তোমার পরিচর্যা, শ্রম, ঘামে যায়যায়দিনের বাগানে ফুল ফোটেছে। রঙ্গন, টকটকে লাল বিদেশি গোলাপসহ নানা ফুল। গোলাপগুলোতে তেমন গন্ধ নেই। যে রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ সমাজগুলো থেকে দলবাজির দুগর্ন্ধ ছড়ায়, সেখানে কয়েকটা গোলাপ গন্ধ না ছড়ালেই বা কী! ঘটনাটাকে নিছকই 'নিয়তি' হিসেবে মেনে নিয়ে ভালো থেকো।
©somewhere in net ltd.