![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ৪৩ বছর নিয়ে বই লিখেছেন সাংবাদিক হাসান শান্তনু। বইটি প্রকাশ করেছে প্লাটফর্ম। নতুন প্রকাশিত বই, একুশে গ্রন্থমেলা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে দ্য রিপোর্টের পক্ষ থেকে তার মুখোমুখি হয়েছেন পাভেল রহমান
মেলায় আপনার কী বই আসছে?
একুশের বইমেলায় ‘৪৩ বছরে গণমাধ্যমের অর্জন-বিসর্জন’ নামের একটি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশ করেছে প্লাটফর্ম প্রকাশনী। বইমেলার ২০ নম্বর স্টলে এটি পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভাস প্রকাশনীর স্টলে (স্টল নম্বর ৪২৪) পাওয়া যাচ্ছে আমার আরেকটি বই ‘গণমাধ্যম নিপীড়ন (১৯৭২-২০১২)’।
প্রথম বই গণমাধ্যম বা সাংবাদিকতা বিষয়ক কেন?
সাংবাদিকরা অন্যের ইতিহাস লেখেন কিন্তু তাদের সংগ্রাম, নিপীড়নের ইতিহাস লেখেন না। তাই প্রথম বইটিতে স্বাধীন বাংলাদেশের ৪০ বছর সাংবাদিকদের নির্যাতন-নিপীড়ন, মামলা-হামলা, হত্যাকাণ্ড, বিভিন্ন সরকারের সময় পত্রিকা-টিভি চ্যানেল বন্ধ করার ঘটনাগুলো লিখেছি। আমার দ্বিতীয় বই ‘৪৩ বছরে গণমাধ্যমের অর্জন-বিসর্জনে’ও তুলে ধরেছি সাংবাদিকদের নৈতিকতার অধপতন, অবক্ষয় এবং পাশাপাশি সত্য প্রতিষ্ঠার ৪৩ বছরের সংগ্রাম নিয়ে। নতুন কেউ সাংবাদিকতায় আসতে চাইলে যে সব দিক জানা জরুরী, সেগুলোও আছে। কীভাবে সাংবাদিকরা ডাহা মিথ্যাকে সত্য বলে চালিয়ে দেন, এর কৌশলটা কী- সেগুলোও আলোচনায় আছে। এ দেশে নষ্ট সাংবাদিকতার কীভাবে জন্ম হল, কারা এর জন্মদাতা, এখনো যেভাবে নষ্ট সাংবাদিকতা চলছে, সেগুলোও আছে বইটিতে।
‘৪৩ বছরে গণমাধ্যমের অর্জন-বিসর্জন’ বইয়ের পেছনের গল্পটি যদি জানান-
বইটি লেখার পেছনে কোনো গল্প নেই, বরং পুরোটাই বাস্তবতা। সাংবাদিকতা মহৎ পেশা। মহত্বের টানে অনেক তরুণ এ পেশায় যুক্ত হন। যুক্ত হওয়ার পর অনেকে দেখেন মহত্বের কথা যতটা বলা হচ্ছে, কোথাও কোথাও ততটার উপস্থিতি বা চর্চা নেই। কারণ নিরেট দলবাজি, মালিকের নগ্ন স্বার্থের কারণে কোথাও কোথাও বাস্তবতা ভিন্নরকম থাকে। গণমাধ্যম জগতের এই বাস্তবতা নিয়ে কোনো বই নেই, আলোচনা নেই। এ বইয়ে সে সব আলোচনা আছে। এরকম আলোচনা করার কারণ, তরুণরা জেনে-বুঝে সাংবাদিকতায় আসুক।
শুনেছি বইটি প্রকাশ করতে অনেক প্রকাশক নাকি রাজি হননি?
বেশ কয়েকজন প্রকাশক আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। কারণটি জানি না। দেশের নামকরা ৯টি প্রকাশনী থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, এরকম বই প্রকাশ করা বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে অসম্ভব। একটি প্রকাশনী এ বইয়ের পাণ্ডুলিপির জন্য আমার পেছনে প্রায় এক বছর পর্যন্ত লেগেছিল। আরেকটি প্রকাশনী সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বইটির দুটি অধ্যায় বাদ না দিলে তারা সেটি ছাপাবে না। আমার প্রথম বই ‘গণমাধ্যম নিপীড়ন ১৯৭২-২০১২’ প্রকাশ করে নানা ঝামেলায় পড়েছিল বিভাস প্রকাশনী। তবে সবকিছু ছাপিয়ে আনন্দের সংবাদ হচ্ছে- মুক্তচিন্তার, মননশীল প্রকাশনা সংস্থা প্লাটফর্মের মালিক হেলাল উদ্দিন হৃদয় বইটি প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই মধ্যে বইটি প্রকাশিত হয়েছে।
৪৩ বছরে সাংবাদিকতায় বিসর্জন প্রসঙ্গে যদি বলেন-
যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিকদের মিথ্যা কথা বলা, লেখার অধিকার আছে! সেখানকার ‘ইউনাইটেড স্টেটস ইনফরমেশন এজেন্সি’ প্রকাশিত ‘আনফেটারড প্রেস’ বইয়ের ৩৫ নম্বর পৃষ্ঠায় সাংবাদিকদের মিথ্যা লেখা, বলার অধিকারের কথা উল্লেখ আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমকে এ ‘অধিকার’ দেয়ার কারণ হচ্ছে- ‘তা না হলে সরকার খবরদারি করবে। বলবে, গণমাধ্যম মিথ্যা বলছে। তাতে সরকারি খবরদারির আরেকটা অজুহাত তৈরি হবে, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করবে। এর বদলে পাঠক সিদ্ধান্ত নিক, কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা।’ এ দেশের মূলধারার গণমাধ্যম মিথ্যা বলার অধিকার চায় না, সত্য বলার স্বাধীনতাটুকু নিশ্চিত করতে চায়। এই স্বাধীনতার জন্যও সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ নয়, বিভক্তি আছে তাদের মধ্যে। এই বিভক্তিই আমাদের মোটা দাগের বিসর্জন। ‘৪৩ বছরে গণমাধ্যমের অর্জন-বিসর্জন’ বইটিতে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে।
বইটির জন্য কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
সবে তো বইমেলা শুরু হয়েছে। এখনো জন্ম নেওয়ার গন্ধ টাটকা আছে। তবে মেলার তিন দিনেই বেশ সাড়া পেয়েছি। ভালই বিক্রি হচ্ছে বইটি।
সামগ্রিকভাবে আপনার চোখে এবারের বইমেলা?
একুশের বইমেলা বাঙালীর আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এ আবেগকে কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ মেলা সম্পর্কে অজ্ঞতাযুক্ত মন্তব্য করেন, যা আমাদের বিভ্রান্ত করে। যেমন- মেলার আয়োজক বাংলা একডেমির ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত অনেক বই আছে। গত কয়েক বছর মেলা চলাকালে একাডেমির স্টলে ইংরেজি বইগুলো রাখা হতো না। কারণ কেউ কেউ অভিযোগ করেন, বাংলা ভাষার আন্দোলনের ফসল বাংলা একাডেমিতে ইংরেজি বই রাখা নাকি অন্যায়!
তাদের ভাবটা এমন, যেন বিদেশী ভাষার সঙ্গে আমাদের বিরোধ! বায়ান্ন সালের ভাষা আন্দোলনের বিরোধটা ভাষার সঙ্গে ভাষার ছিল না। আন্দোলনটা ছিল মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আর ভাষা আন্দোলনের ফসল ‘বাংলা একাডেমি’র দুটি শব্দের মধ্যে একটি বিদেশী- মানে ‘একাডেমি’ ইংরেজি শব্দ। অমর একুশের গান ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’র দুটি শব্দের মধ্যে একটি ইংরেজি। অর্থাৎ কোনো ভাষার সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই।
আনন্দের সংবাদ হচ্ছে, এবারকার বইমেলায় বাংলা একাডেমি তাদের প্রকাশিত ইংরেজি ভাষার বইগুলো বিক্রি করছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা সম্প্রসারিত হওয়ায় ঠাসাঠাসির অভিযোগও আর করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় এবারকার মেলার সঙ্গে ছিল আর্ন্তজাতিক সাহিত্য সম্মেলন। এরকম সম্মেলনের স্বার্থক আয়োজনের জন্য সরকারকে সাধুবাদ। সব মিলিয়ে এবারের মেলা ভিন্ন আঙ্গিকেই চমৎকার।
(সূত্র: দ্য রিপোর্ট, ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫- Click This Link)।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
প্রকাশকেরা কি ভুল করেছিল?