নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাবা ইয়াসীন মারুফ

নিজেকে সাধারণ ভাবতেই আমার বেশি ভাল লাগে। সকল সাধারণের প্রতি আমার আকর্ষণ প্রবল। অসাধারণ সব কিছুকে আমি এড়িয়ে চলি।

ইয়াসীন মারুফ

সেই ক্লাস ফাইভে থাকতে লেখালেখির ভুত মাথায় চাপল। ঐ সময়টাতে রকিব হাসানের লেখা গোয়েন্দা কাহিনী পড়তাম আর নিজেকে শখের গোয়েন্দা হিসেবে কল্পনা করতাম। অত ছোট বয়সে গোয়েন্দা হওয়া তো আর বাস্তবে সম্ভব না। কিন্তু গল্পের বই পড়ে ব্যাপারটাকে কিছুটা হলেও বাস্তব মনে হত। নিজেকে গোয়েন্দা কল্পনা করে গল্প লিখার চেষ্টা করতাম।\n\nহতে চেয়েছিলাম শখের গোয়েন্দা, কিন্তু লিখতে লিখতে খেয়াল করলাম শখের গোয়েন্দা হওয়ার চেয়ে শখের লেখক হওয়াটা আমার জন্য তুলনামূলক সহজ। বরং এতে করে শুধু গোয়েন্দা না, আরও অনেক কিছুই হওয়া সম্ভব (কল্পনায়)। তখন থেকেই লেখালেখির উপর কমবেশি পড়াশোনা করা শুরু করলাম। অজানা বিষয়গুলো সম্পর্কেও জানার আগ্রহ ছিল বরাবরের মত। এজন্য বিশ্বকোষ এনকার্টা এবং ব্রিটানিকা ঘাটাঘাটি করতাম। পাশাপাশি লেখালেখির চর্চাটাও সমানে চলতে থাকল। আমার এখনও স্পষ্ট মনে আছে, আমার লেখা প্রথম গল্পটা ছিল একটা রহস্য গল্প। নাম ছিল \'নীল সাগরের ঢেউ\'। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় গল্পটা লিখেছিলাম। বয়স তখন বেশি হলে বার কি তের বছর। তখনও আমি বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত সব লেখকদের সাথে পরিচত হইনি। তাই লেখালেখি জীবনের প্রথম গল্পটায় খুব বেশি সুবিধা করতে পারিনি। লেখার ধাঁচটা কেমন হওয়া উচিৎ তখনও বুঝে উঠার সুযোগ হয়নি। ক্লাস এইটে উঠার পর প্রথম গোয়েন্দা কাহিনী ছেড়ে মৌলিক সাহিত্যের হাতেখড়ি শুরু হল। হুমায়ূন আহমেদ, জাফর ইকবাল, শরৎ চন্দ্র, রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর, ডাঃ লুৎফর রহমান, শীর্ষেন্দু, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, মুনির চৌধুরী, প্রমথ চৌধুরী, সমরেশ মজুমদার ইত্যাদি বাংলা সাহিত্যের সব বড় বড় সব লেখকের বই পড়তাম। বিদেশী ভাষার লেখকদের মধ্যে জুলভার্ন, ডেল কার্নেগী, এডগার অ্যালান পো, এইচ জি ওয়েলস, স্যার আর্থার কোনান ডয়েল, চার্লস ডিকেন্স, মার্ক টোয়েন, মেরী শেলী, হাওয়ার্ড পাইল, জোনাথন সুইফট, জে কে রাওলিং ইত্যাদি লেখকের ক্লাসিক সব বইও পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। \n\nআমি শুধু গল্প, নাটক, উপন্যাস পড়ে এর মধ্যকার গল্পের মজাটাই নিতাম না। সেই সাথে সেই সব কাহিনীর লেখকদের লেখার ধরণ, শব্দ চয়ন এবং কাহিনীর বিন্যাসও খুব মনোযোগ দিয়ে লক্ষ করতাম। এভাবেই একসময় নিজের জন্য লেখার নির্দিষ্ট একটি গঠনপ্রণালী নির্ধারণ করি। লেখার যে ধরণ দেখে মানুষ সহজেই অনুমান করতে পারবে এটা আমার লেখা। \n\nকোন লেখা এখন পর্যন্ত ছাপাইনি। আমি ঠিক করেছিলাম যতদিন পর্যন্ত আমি নিজের লেখা পড়ে সন্তুষ্ট না হব ততদিন পর্যন্ত লেখা ছাপাব না। সেই সময়টা মনে হয় খুব শীঘ্রই আসতে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটা উপন্যাস লিখছি। নাম দিয়েছি \'রক্তরেখা\'। এই লেখাটা ছাপানর ব্যাপারে আমি আশাবাদি। আশা করছি আগামী বই মেলায় লেখাটি বই আকারে প্রকাশ করতে পারব।

ইয়াসীন মারুফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

লেখালেখির ভুত

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯

ক্লাস ফোর কি ফাইভে পড়ি তখন। ঐ সময়টাতে খুব বেশি তিন গোয়েন্দার বই পড়া হত। ক্লাসের পড়া না পড়ে সারাদিন তিন গোয়েন্দার বই নিয়ে পড়ে থাকতাম। পড়তে পড়তে একটা সময় তিন গোয়েন্দার প্রতি নেশা ধরে গিয়েছিল। যেখানে সন্ধার সময় আমার আম্মা আমাকে পিটিয়েও পড়ার টেবিলে বসাতে পারতেন না সেখানে দেখা গেল আমি মাগরিবের পরপরই পড়তে বসে যাচ্ছি। আম্মা কিছুতেই ব্যাপারটা ধরতে পারলেন না। অনেক গবেষণার পর একদিন তিনি আবিষ্কার করলেন যে আমি পাঠ্য বইয়ের মাঝখানটায় তিন গোয়েন্দার বই রেখে পড়ছি। তারপরের ঘটনা আর নাই বা বললাম।



এরপর থেকে শুরু হল স্কুলে তিন গোয়েন্দার বই নিয়ে গিয়ে পড়া। স্যার যখন ব্ল্যাক বোর্ডে ব্যস্ত থাকতেন ঠিক তখনই কিছু নেশাগ্রস্থ বালক ব্যাগের ভেতর থেকে তিন গোয়েন্দার বই বের করে গোগ্রাসে গিলতে থাকত। আমিও তাদেরই একজন ছিলাম। এজন্য প্রায়ই স্যারের হাতে মার খেতে হত।



এই তিন গোয়েন্দার বই পড়তে পড়তেই একসময় মাথার মধ্যে গোয়েন্দা কাহিনী লিখার ভুত চেপেছিল। আমার একার না। আমার বন্ধু মিতুল আর আনন্দেরও। আমরা তিন জনেই প্রতিদিন বাসা থেকে কিছু না কিছু লিখে আনতাম। এনে একজন আরেকজনকে দেখাতাম। তারপর মন ভরে একজন আরেকজনের লেখার ভুল ধরতাম। তিন জনেই বুঝাতে চাইতাম যে নিজের লেখাটা বেশি ভাল হয়েছে। এভাবে চলত আমাদের লেখালেখি। একদিন মিতুলের লেখা গল্প পড়তে গিয়ে কেন যেন মনে হল গল্পটা আগেও কোথাও পড়েছি। ভাল করে পড়ে যা বুঝলাম, লেখাটা তিন গোয়েন্দার বই থেকে কপি করা। তখন আমি আর আনন্দ মিলে মিতুলের চৌদ্দ গুষ্ঠিকে উদ্ধার করলাম। সেসব ঘটনা মনে পড়লে আজও অনেক হাসি পায়।



আমার ঐ সময়কার লেখালেখির কিছু কিছু এখনো আমার কাছে আছে। সময় পেলে খাতার পাতা উল্টে পাল্টে দেখি আর আনমনে হাসি। সবই ছিল অর্থহীন লেখালেখি। কিন্তু ছেলেবেলায় এসব অর্থহীন কাজকর্মের মাঝেও কেমন যেন একটা অর্থ খুঁজে পেতাম। তখন দু'চারটা লাইন লিখতে পারলেই গর্বে বুকটা ফুলে উঠতো। এখন আর তেমন কিছু অনুভব করি না। তবে ছেলেবেলার সেই সময় গুলোকে খুব মিস করি। সেই সময় মাথায় লেখালেখির ভুত চেপেছিল বলেই আজ দু'চারটা লাইন গুছিয়ে লিখতে পারি। আমার অন্য দুই বন্ধু এখন লেখালেখি করে কিনা জানিনা। তবে আমি এখনো সমানে লেখালেখি করি। মাঝে মাঝে বুঝে, আবার মাঝে মাঝে না বুঝে। কখন যে কি লিখি নিজেও জানিনা। :D

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৫

বোকামন বলেছেন: হা হা হা (শেষ লাইনটি পড়ে)

হ্যা ভাই, দিনগুলো খুব মনে পড়ে .....

সুন্দর লিখেছেন আপনি ....

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৫১

ইয়াসীন মারুফ বলেছেন: ধন্যবাদ।
:D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.