![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
https://www.facebook.com/Iambakerbhai
অনেক চেষ্টা করেও ছবিটি আপ করতে পারলাম না, অবশেষে লিংকটি দিয়ে দিলাম। দেখে আসতে পারেন।
আপাত দৃষ্টিতে একজন মহিলা, যিনি নিজের জন্য কাজ করছেন। গতকাল প্রথম আলো অনলাইনে ছবিটি দেখে থেমে গিয়েছিলাম, এই থেমে যাওয়া আমার প্রথম নয়। আগেও মা দের এমন ছবি দেখে থমকে গিয়েছি বহুবার। প্রথম আলোর বর্ণনা মতে, "বয়সটা ষাট পেরোলেও কারও ওপর নির্ভরশীল নন রাবেয়া বেগম। ইট ভেঙে যে টাকা পান, তা দিয়েই চলেন তিনি। ছবিটি রাজশাহী নগরের উপরভদ্রা এলাকা থেকে তোলা", ছবিটি তুলেছেন শহীদুল হক।
ছবিটিকে আপনার নানাভাবে নিতে পারেন, যে তুলেছে সে প্রথম আলোর লোক হলে তারও কারণ ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু বাস্তবতা আজ অন্যরকম। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে কেন জানি সবাই আগের সুতোগুলোকে কেটে দিয়ে মুক্ত হয়ে আকাশে উড়তে চাচ্ছি। যে নারীর জন্য আজ আমরা এই পৃথিবীর সুখ অর্জন করছি, যে মা জন্মের পর দুধ খাইয়েছিল বলে আজ বেচে আছি, যে মা এতোটা বছর কষ্ট করে লালন করল তাদের ছেড়ে যেতে আমাদের কোন কষ্ট না। আগে জানতাম মেয়েরা বিয়ের পর মাকে ছেড়ে শ্বশুর বাড়ি যায়, তবে এখন কি হচ্ছে? দেশের এতোজন "মা" এর কি ছেলে সন্তান নেই, না আজ দেশে ছেলেই নেই।
ব্যাপারটা খারাপই লাগে, যখন কোন মায়ের ক্রন্দনরত ছবি পত্রিকায় আসে, যিনি সন্তান থাকতেও বৃদ্ধাশ্রমে আছেন, যাকে নিজের গলার শেষ অলংকার দিয়ে নিজের দাফনের কাপড় কিনতে হবে। জানি সব কিছুর মুল্যই উর্ধমুখী, তাই বলে এতোটা হবার কথা নয়।
ধরে নেই সবার ঘরেই সন্তান আছে। নিজের সন্তানের জন্য নানা খরচ। আপনার যদি একটি যুবতী মেয়ে থাকে তবেতো কথাই নেই, তার নিজস্ব কিছু খরচ আছে, ছেলে হলে তার অযথা হাত খরচ। আর যদি কিছুই না থাকে তবে তো আপনারাই সব, মাত্র দুজন মানুষ। জীবন ও বাস্তবতা অনেক কঠিন, এটা ভারতীয় সিরিয়ালের অংশ নয়, যেখানে মায়েরাও স্বর্নাঙ্কলার পড়ে থাকে, গালে পুরু মেক আপ থাকে। আমি দেশের অনেক মাকে দেখেছি, সে হিসাবে আমাদের ৯৫% মা একটা বয়স পর সাধের অলংকারটাও পড়েও শুধু কোন অনুষ্ঠানে যাবার জন্য তাাও কিছুটা জোর করে। এরা সারাটা জীবন মাছের মাথাটা অন্যের পাতে দিয়ে এসেছে তাই জীবনের শেষ সময়ে মাছের মাথা খাবার ইচ্ছেও করেন না। জানিনা এটা সত্য কিনা, না আবারও কার জন্য মিছে অভিনয়।
আমাদের মা, সারাজীবন স্বামী সন্তানের জন্য এতোকিছু করে গেলেন, নিজের জন্য কিছুই রাখেন নি এই ভেবে নাড়ী ছেড়া ধন তাকে ফেলে যাবে না। আর একজন মা সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে না খেয়েও হাসিমুখে থাকতে পারেন শুধু যদি সন্তান ভালবাসে। এরা আমাদের জন্ম থেকেই এই মুখটির জন্য সব কষ্ট সহ্য করে চলেছে, আপনার কিছু না থাকলেও আপনি পাশে থাকলে এরা কি পরিমান কষ্ট সহ্য করতে পারবে তা মাপার ক্ষমতা নেই আমাদের।
এরা আমাদের কাছে কোন টাকা নয়, একটু ভালবাসা চায়। যার কারণে আপনি আমি আজ এই অবস্থানে। আসুন না তাদের একটু সন্মান করি, একটু ভালবাসি। আমরা নিজের বউকে নিয়ে থাকব, সন্তান থাকবে। আজ যদি আপনার একজন বিকালঙ্ক সন্তানের জন্ম হয়, বা হঠাৎ করে বিকালাঙ্ক হয়ে পড়ে তবে কি তাকে ফেলে দিবেন?
তবে কেন যে আপনাকে এতো ভালবাসা দিয়ে আগলে রাখল তাকে কেন সন্তানের একটু ভালবাসা দিতে পারব না। আমার চেনা খুব কাছের একজন আত্বীয় আছেন, যার মেয়ের বয়স ২৪+, কিন্তু জন্ম থেকেই বিকালঙ্গ ও পাগল ও বাকশক্তি হীন। আমার সেই আত্বীয়টি আজও বাসা থেকে চাকরির জন্য ১৮কিমি দুরে যাবার জন্য ভোরে বের হয়ে যান, আসেন রাত ৯টার পর, অথচ চাকরি ৮-৫টা। ফিরে আবার নিজের মেয়েকে নিয়ে বের হন, গ্রামের যখন সবাই ঘুমে ব্যস্ত তখন তিনি মেয়েকে পিঠে নিয়ে জুড়িয়ে নেন সারা দিনের ক্লান্ততা। এলাকার অনেক মুর্ব্বির কাছে শুনেছি, তাকে কখনো কখনো ভোরেও মেয়েকে কাধে নিয়ে দেখা যায়, এমনকি রমযানে রাত তিনটায় তাকে মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে দেখেছেন অনেকেই। সেই মানুষটির প্রতি আমার শ্রদ্ধা অন্যরকম।
একজন বাবা যদি নিজের সন্তানকে ২৪+ বছর এভাবে নিয়ে চলতে পারেন তবে একজন সন্তান কেন নিজের মায়ের দায়িত্বটুকু এড়িয়ে যাবে?
আমরা বিয়ের পর নিজের বউয়ের জন্য এতি কিছু করি, সন্তনের জন্য জীবন দি্তে পারি অথচ মায়ের জন্য এতোটুকু করতে পারি না।
কথা পারি কি না তা নয়, আসুন প্রতিঞ্জা করি, মায়ের শেষ নি:স্বাস পর্যন্ত তার দায়িত্বের অবহেলা নয়। যে মানুষটি বেচে থাকতে সুখ পেল না, তার দাফনে তেমন কিছু নেই। মায়ের কবরে চোখের জল ফেলে কাদা না বানিয়ে, বেচে থাকতে তার কষ্টে একফোটা জল ফেলি, কষ্টগুলো নিজের করে নেই।
২৭ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫১
আজকের বাকের ভাই বলেছেন: আপনার মন্ত্যবের জন্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:২৩
ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল বলেছেন।