নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আজ আমি সে মায়াবী নই, ডাইনীর আয়না সে নাই আজ , ডাইনী মরিয়া গেছে, যাদুর প্রথম কথা, শেষ কথা ভুলে গেছি আমি সব, সামান্য মানুষ হয়ে গেছি।

আইকুল ইসলাম

নিজের স্বপ্নের দিকে ছুটে চলা এক ক্লান্ত পথিক

আইকুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাণীভূক উদ্ভিদ

২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৩

এ পর্যন্ত প্রাণীখেকো অনেক উদ্ভিদের লোমহর্ষক বিবরণ জানা গেছে। এ নিয়ে কৌতূহলেরও শেষ নেই। থেমে নেই উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের গবেষণাও। এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের গবেষণায় পতঙ্গভূক উদ্ভিদ সম্পর্কে অনেক বিস্ময়কর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তথ্যগুলো যেমন বিস্ময়কর, তেমনি বৈচিত্রময় এবং আকর্ষণীয়।

কলমির আকারের পতঙ্গভূক উদ্ভিদের নাম মারসোনিয়া।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা সীমান্ত থেকে দক্ষিণে ভার্জিনিয়া পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে এই গাছ। এগুলোর পাতা ও ফুলের সৌন্দর্য রীতিমতো উল্লেখযোগ্য। শক্ত ডাটার ওপর বসানো ফুল-পাতা খাড়াভাবে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকে। এসব গাছের পাতা খসখসে এবং কীট-পতঙ্গ আকর্ষণের জন্য ফলগুলো বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। শিকার ধরার জন্য পাতাগুলো নুইয়ে থাকে। পতঙ্গ পাতায় পড়লে পাতাসহ পতঙ্গ চলে যায় কলমীকৃতির কান্ডের মধ্যে। যার ভেতরে থাকে থকথকে তরল পদার্থ। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা হুকার ডিমের সাদা অংশে এবং মাংশের ছোট টুকরা দিয়ে দেখেছেন, এগুলো থকথকে তরল পদার্থ দ্রবীভূত করে নেয়। উদ্ভিদ নিঃসৃত এই রস মানুষের পাকস্থলী নিঃসৃত এনজাইমের চেয়েও শক্তিশলী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারোলিনার তীরভূমিতে ভেনাস ফ্লাইট্র্যাপ নামের এক জাতীয় গাছ দেখা যায়। এদের জোড়া জোড়া পাতা দুদিকে ছড়িয়ে থাকে। এদের খোলা জোড়া পাতায় যখন কোনো কীট-পতঙ্গ এসে বসে তখন প্রচন্ড গতিতে খোলা পাতা দুটো জোড়া লেগে যায়। সেই ফাঁদে পতঙ্গ পিষ্ট হয়। পাতা দুটি খুলে গেলে দেখা যায় পতঙ্গের দেহাবশেষ পাতায় লেগে আছে। পতঙ্গের দেহ নিঃসৃত পুষ্টির বস্তুটুকু গ্রহণ করে এই মাংসাশী উদ্ভিদ।

ব্রিটেনের ড্রসেরা নামের এক জাতীয় গাছ আছে, বাংলায় বলা হয় সূর্যশিশির। এদের অসংখ্য প্রজাতি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এদেরই এক প্রজাতীর পাতার গায়ে থাকে সরু সরু চুলের মতো আঁশ। প্রতিটি আঁশের ডগায় শিশিরের মতো জমে থাকে রসের বিন্দু। কীট-পতঙ্গ এই পাতায় রসে এসে বসলেই আঠায় আটকে যায়। তখন পাতাটা আঁশসুদ্ধ পতঙ্গের চারপাশে গুটিয়ে যায়।
মধ্য ইউরোপের এক জাতের গাছের নাম পিনগুই কিউলা। এদের এক একটি কান্ডের ডগায় ৬/৭ টি পাতা ছড়িয়ে থাকে। পাতার ওপর দিকে থাকে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাঁটা। কাঁটার ওপর থাকে বিন্দু বিন্দু রস। পোকা-মাকড় পাতার গায়ে বসলে পাতার দুটি ধার ক্রমশ মুড়তে থাকে এবং শিকার ফাঁদে আটকা পড়ে। এদের ফুলগুলো দেখতে আকর্ষণীয়।
পানিতে ভাসমান এক প্রকার গাছ আছে, যাদের ডাকা হয় ওয়াটার হুইল নামে। যার প্রজাতির সংখ্যা ২১০। এগুলো আসলে শিকড়বিহীন জলজ আগাছা-শ্যাওলা। সবুজ রং- এর পাতাগুলো দেখতে ঠিক শিকড়ের মতো। পানিতে বসবাসরত বিভিন্ন পতঙ্গ এই থলের প্রবেশ মুখের ওপর বসলেই পাতার মুখ ভেতরের দিকে গুটিয়ে যায়। শিকার ফাঁদে আটকা পড়ে।
উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া ও ওরিগন রাজ্যে ক্যালিফোর্নিয়া কলসী নামে এক ধরনের উদ্ভিদ দেখা যায়। গাছটি দেখতে অবিকল ফণা তোলা গোখরা সাপের মতই তাই ইহাকে গোখরা লিলি নামেও ডাকা হয়।প্রাপ্যতার দুর্লভতার কারণে এটি একটি অসাধারণ হিসেবে বিবেচ্য।
দক্ষিণ আমেরিকান কলসি উদ্ভিদ মালয়েশিয়া মাদাগাস্কার ভারত ও শ্রীলংকার গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলাভূমিতেও বিভিন্ন প্রজাতির কলসি উদ্ভিদ দেখা যায়। কলসি উদ্ভিদে ফাঁপা বিশেষ ধরনের পাতা রয়েছে যা একটি জগ কিংবা কলসির মত পানি ধারণ করে রাখতে পারে। কলসির মত দেখতে এ পাতাগুলোই শিকার ধরার ফাঁদ হিসেবে কাজ করে। এদের গঠন ও আকৃতি থেকেই এদেরকে নাম দেওয়া হয়েছে কলসি উদ্ভিদ।
সাধারণত অনুর্বর জলাভূমিতে, পাহাড়ের খাঁজ, এক কথায় যেসব জায়গায় নাইট্রোজেনের খুব অভাব সেখানেই এগুলো জন্মে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন- এদের দেহে নাইট্রোজেনের অভাব পূরণ করার জন্য এরা প্রাণীজ নাইট্রোজেন সরাসরি সংগ্রহ করে।আর তাই এই গাছগুলো মাংসাশী বৃক্ষ নামে পরিচিত। কিন্তু মানুষখেকো গাছ সম্বন্ধে আমাদের যে ধারণা আছে তা সম্পূর্ণ ভুল এবং যুক্তিহীন। গাছগুলো বর্ণনা থেকেই স্পষ্ট বোঝা এগুলো মানুষ খাবার মতো সামর্থ্যই রাখে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.