নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশ্বাসও ভেঙ্গে যায় সময়ের পরিবর্তনে
অনিকেত কামাল
সীমাহীন ভালোবাসা অার বিশ্বাসের অঙ্গীকার নিয়ে ইতিকে বিয়ে করেছিল শুভ। সামাজিক মযর্দা , যোগ্যতা অার অাভিজাত্যের কমতি ছিলনা উভয় বংশে। শুভ ছিলেন কলেজ শিক্ষক। একটি অনভিপ্রেত ঘটনার রেশ ধরে শুভ চাকরী ছেড়ে দেয়। পরে একটি গ্রুপ অব কোম্পানীতে চাকরী নিয়ে শুভ কক্সবাজার চলে যায়। মাসে একবার করে বাড়ীতে যায়। ভালোবাসার স্বর্গীয় সংসারে সৌরভ নামে চন্দ্রমুখো একজন সন্তান অাসে। অসম্ভব সুন্দর কাটছিল দিনগুলো। লেখালেখির অভ্যাস ছিল শুভর। শুভ একটি গল্প লিখে ম্যাগাজিনে ছেড়ে দেয়। মোবাইল নম্বর ও নাম ইতির ব্যবহার করে। এরপর ইতির প্রচুর ফোন অাসতে থাকে। ইতি শুভকে না জানিয়ে অারেকটি মোবাইল নং নেয়। ধীরেধীরে অনেকের সাথে ফোনিং সম্পর্ক গড়ে উঠে ইতির। মন দেয়া নেয়ার মধ্যদিয়ে শুভর শুন্যতা ভালোই কেটে যাচ্ছিল ইতির। ইতি ভাবে একটু অাধটু কথা বললে কি অার এমন ক্ষতি। নারী তো ফুলের মতই। ফুল যেমন সুবাস দিয়ে সবাইকে মোহিত করে কিন্তু ফুলের অমৃত একটি ভোমরের সাথে অালিঙ্গন করে। তেমনি অামিও অামার অমৃত অমুল্য নারীত্বের শ্রেষ্ঠ সম্পদ শুভকে উপহার দিয়েছি। অপ্রিয় হলেও সত্য মানুষের মনটা কখনো কখনো শাসন বারনের নিয়ম মানে না। কারো কারো প্রতি এতটাই অাবেগের দুর্বলতায় সিক্ত হয়ে ভিন্ন সাধের সান্নিধ্য পরশ পাওয়ার ব্যকুলতায় নিজের অজান্তে হারিয়ে যায় ইতি অন্য জগতে। বেতারের তার ধরে অনুভবের স্বপ্ন সুতোয় অন্যপ্রান্তে কথা বলা মানুষটির মাঝে হারিয়ে যায় ইতি। ইতি অারো স্বাধীনতা চাই ব্যাপক স্বাধীনতা। যেখানে মন যা খুশ তাই করতে চাই। মনে মনে সিদ্ধান্ত নেই। বড় অাপা ঢাকায় থাকেন ওখানে গিয়ে উঠে একটা চাকরী নিব। পরে শুভকে জানাব। করলো তাই। শুভ একটু অাপত্তি করলেও ইতির যুক্তি অার বিশ্বাসের কাছে মাথা নত করল। ইতি বুঝালো তুমি কক্সবাজার হতে ঢাকায় প্রতি সাপ্তাহিক ছুটিতে অাসতে পারবে অার অামি তো অাপার বাসায় থাকছি তাছাড়া অামাদের বাবু সৌরভ অাছে। বড় কথা সৌরভকে অাদর্শ মানুষ করতে হলে অামাদের শহরে থাকতে হবে। মাস তিনেক যেতে না যেতেই ইতি বুদ্ধি বের করল ধানমন্ডি হতে গুলশান অফিসে যাতায়াত করতে বেশ কষ্ট হয়ে যায়। শুভ ইতির বিশ্বাসের উপর সবকিছু ছেড়ে দেয়। কিন্তু বিশ্বাসও কখনো কখনো অবিশ্বাসের বালুচড়ে হারিয়ে যায়। এবার সম্পূর্ন বদলে যেতে থাকে ইতি। অাসলে সত্য কথা কি! যে মন অনেক মনকে স্পর্শ করতে চায় সে মনের মানুষের শরীরটিও অনেক মানুষের শরীর অালিঙ্গন করতে চায়। কেননা মন অার শরীর মানুষের বিচ্ছিন্ন কোন অংশ না। দিন বদলায়, সময় বদলায়, বদলায় মানুষের মন । অার এমনই বদলে গিয়েছিল ইতি যেটা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। সত্যি একদিন ডির্ভোস লেটার পাঠিয়ে দেয় ইতি শুভকে । শুভ কাগজটার বুকে চোখ রেখে বলে হায়রে ভালোবাসা,প্রতিশ্রুতি,বিশ্বাস,সংসার,সন্তান। হায়রে নারী, নারী তোমাদের মন ,কি বিচিত্র মনের অদ্ভুত লিলা। নিজেকে সান্ত্বনা দেবার কোন ভাষা বা যুক্তি শুভ খুজে পাইনা। জীবন যৌবনের দুর্নিবার অাকর্ষন লোভ লালসার লোভনীয় হাতছানি। একের মাঝে পরিতৃপ্তের হাসি কজনই বা দেখতে পারে। ইতি এতবড় খারাপ এত জঘন্য বিশ্বাস ঘাতিনী তুমি। অাপন সন্তানের দিকে
তাকিয়েও কি তোমার বিবেক কথা বলেনা। তুমি তো নারী জাতির কলঙ্ক।যে স্বর্গ সুখের হাত ছানিতে তুমি অামাকে অার তোমার নাড়ী ছেঁড়া অাদ সন্তানকে ছেড়ে চলে গেলে সে স্বর্গ সুখই অভিশাপ হয়ে তোমাকে যন্ত্রনার নীলে নীলকন্ঠ করে দিবে। নিষ্পাপ শিশুর কান্নায় স্রষ্টার অারশ অাদালত কেঁপে উঠছে নিশ্চয়। বেঁচে থাকতেই একদিন তুমি জলন্ত অগ্নি শিখায় জ্বলবে। চোখের অঝোর ধারায় সে অাগুন নিভাতে পারবে না। অনুতাপ অার অনুশোচনার বিদগ্ধ যন্ত্রনায় ছটফট করতে করতে একদিন তোমাকে চলে যেতে হবে। তোমাকে ফিরে অাসার অনুরোধ করছি না। অামাদের অবুঝ সন্তানের দিকে তাকিয়ে যদি তুমি ফিরে অাসতে চাও এসো। অথবা তুমি সৌরভকে অন্তত নিয়ে যাও। ওবুঝতে শিখলে পরে পাঠিয়ে দিও। অামি কোন অন্যায় অপরাধ কিংবা ভুল করতে পারি কিন্তু বল ইতি নিষ্পাপ শিশুটি তোমার কাছে কি অপরাধ করেছে। ফিরতে তোমাকে একদিন হবেই কিন্তু সেদিন তোমার সন্তানও তোমার মুখে...। তুমিযা করলে এ কলঙ্কের কালিমা মৃত্যু দিয়ে শোধ করতে পারবে না। চাঁদের কলঙ্ক পূর্নিমার জ্যোস্নাও ঢাকতে পারেনা। তেমনি তোমার এ কলঙ্ক ইতিহাসের কোন ঘটনায় ঢাকতে পানবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১২
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: অভিশাপ দিতে নেই।