![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাননীয়/বরাবর,
প্রধান মন্ত্রী /স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়/অাইন মন্ত্রনালয়
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ইউনানী অায়ুর্বেদিক বোর্ড,
ঢাকা বাংলাদেশ।
বিষয়ঃ- ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্নকারী চিকিৎসকদের ডাক্তার লিখার অধিকার প্রসঙ্গে।
জনাব,
যথা বিহীত সম্নান পূর্বক নিবেদন এই যে, অামরা বাংলাদেশ ইউনানী ও অার্য়ুবেদিক বোর্ড স্বীকৃত চিকিৎসকবৃন্দ। অামরা চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স সম্পর্ণকারী চিকিৎসগণ গভীর অাক্ষেপ ও বেদনার সহিত উপলদ্ধি করছি অাইনগত স্বীকৃতির অভাবে অামরা সামাজিক মর্যদায় কিছুটা হেয় প্রতিপন্ন। ইউনানী থেকে পাস করলে হাকীম অার অায়ুর্বেদিক হতে পাস করলে কবিরাজ লিখতে পাবরে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, কবিরাজ বলতে সাধারণত যারা পানি পড়া, ঝাড় ফুক, তন্ত্র মন্ত্রের সাহায্যে রোগ ব্যাধি উপশমের চেষ্ট করেন তাদেরকে বুঝানো হয়। সময় অনেক বদলে গিয়েছে , চিকিৎসা পদ্ধতিরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। অথচ চিকিৎসা জগতে ও সামাজিক মর্যদার ক্ষেত্রে অাসেনি কোন পরিবর্তন । যুগের চাহিদা অার সময়ের প্রয়োজনে অামাদের প্রত্যাশার যুগোপযোগী অাবেদন অামরা যেন নামের অাগে ডাক্তার উপাধী লিখতে পারি । অাইনগত স্বীকৃতি প্রদান না করলেও অাইনগত বাধা না থাকার বিশেষ অনুমোদন প্রার্থনা করছি। উল্লেখ্য যে, সরকার প্রত্যেকটি জেলা সদর হাসপাতালে একজন হোমিও এবং একজন ইউনানী অায়ুর্বেদিকের চিকিসক নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়াটা ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু সম্মানীত সে সব চিকিৎসকদের পদমর্যদার ব্যাপারে অনেকটা লজ্জাষ্কর পরিচয়ের গন্ডির মাধ্যেই রয়ে গিয়েছে। অামরা জানি জাতীয় চিকিৎসা মানেই ভেষজ চিকিৎসা, জাতীয় চিকিৎসা মানেই ইউনানী অায়ুর্বেদিক চিকিৎসা, জাতীয় চিকিৎসা মানেই হলিস্টিক চিকিৎসা, জাতীয় চিকিৎসা মানেই হারবাল চিকিৎসা। জাতীয় চিকিৎসা পদ্ধতির এই করুণ অবস্থা অামাদের জাতীয় মূল্যবোধেরই অবমাননাকর কলঙ্ক। এই বেদনাদায়ক হৃদয়ের রক্তক্ষরণজনিত কলঙ্ক নিরষণে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে অাশা করছি।
অাতএব মহোদয় সমীপে বিনম্র শ্রদ্ধা ও একান্ত প্রার্থনা, উক্ত বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্তের অনুরোধ করছি।
বিনীত নিবেদক
সকল ইউনানী ও অায়ুর্বেদ চিকিৎসক, শিক্ষার্থী,শিক্ষকমন্ডলী এবং ইহার সাথে সম্পৃক্ত সবাই
" একটি বিষয় উল্লেখ্য ভারতে নামের অাগে ডাঃ লিখা হয় এবং নরেন্দ মোদী ও এক ভাষণে বলেছিলেন দেশের প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে অায়ুর্বেদিক হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে "
ইউনানী ও আয়ুর্বেদের মধ্যে পার্থক্য
বাবেল বা ব্যবিলনে যে সভ্যতা গড়ে উঠেছিল মধ্য-এশিয়া থেকে আর্যগণ সে সভ্যতা বহন করে উপমহাদেশে নিয়ে আসেন। আর্যদের প্রধান ধর্মগ্রন্থের নাম "বেদ"। তাই আর্য সভ্যতাকে বৈদিক সভ্যতাও বলা হয়ে থাকে। ধর্মগ্রন্থ বেদের চারটি খন্ড রয়েছে যেমন-- ১ ঋক বেদ, ২ যজুর বেদ, ৩ সাম বেদ, ৪ অর্থব বেদ। অার এই অর্থব বেদ হতেই অায়ুর্বেদের নামকরণ হয়েছে।
আয়ুর্বেদ এর আয়ু অর্থ জীবন আর বেদ অর্থ বিজ্ঞান। অর্থাৎ যে বিজ্ঞানে মানুষের আয়ু বা জীবনী শক্তির উৎস, শক্তির ক্ষয় বা অপচয়, অপচয়ের কারণ এবং অপচয় হতে রক্ষা করে জীবনকে দীর্ঘায়িত ও সুস্থ্য রাখার জ্ঞান সম্পর্কে অবগত করায়, তাকেই আয়ুর্বেদ বলে।
আয়ুর্বেদ মতে পঞ্চভূত তথা ক্ষিতি, অপ, তেজঃ, মরুৎ ও ব্যোম এর সমন্বয়ে প্রকৃতি জড়, জীব ও উদ্ভিদ জগৎ সৃষ্টি হয়েছে। এদের মধ্যে কোন প্রকার বৈষম্যের সৃষ্টি হলেই মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এছাড়া দেহে তিন প্রকার রস পদার্থের যথা- বায়ু, কফ ও পিত্ত এর কথা বলা হয়েছে।
অতপর
বাবেল ও মিশরীয় সভ্যতা ইউনানে স্থানান্তরিত হয়ে বিভিন্ন মনীষীগণের মাধ্যমে চরম উৎকর্ষ সাধিত হয়। আরবে ইসলামের আবির্ভাবের পর মুসলমানগণ যখন তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছিল তখন মুসলমানদের মাধ্যমে ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞান এই উপমহাদেশে আসে। মুসলমানগন ১০০০ বছর উপমহাদেশ শাসন করে এবং এই সময়কালে আয়ুর্বেদ ও ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞান তৎকালীন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সমানতালে গবেষণার মাধ্যমে উৎকর্ষ সাধণ করতে থাকে।
ইউনানী ও আয়ুর্বেদের শিক্ষার্থী বা এই বিজ্ঞানের সাথে জড়িত সকলকে একটি প্রশ্নের সম্মুক্ষীন হতে হয়, তা হল ইউনানী ও আয়ুর্বেদের মধ্যে পার্থক্য কি??
এই প্রশ্নের প্রচলিত উত্তর হল- যাহা জল তাহাই পানি অর্থাৎ ইউনানী ও আয়ুর্বেদের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। আসলে কি তাই ?? ইতিহাস থেকে আমরা খুব সহজেই তিনটি পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
১) চিকিৎসা বিজ্ঞানের উৎপত্তি মুলতঃ বাবেলে কিন্তু ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞান ইউনানী চিকিৎসা নামকরন হয় গ্রীসের ইউনান নামক প্রদেশের নামে আর আয়ুর্বেদ হল আর্যদের ধর্মগ্রন্থের নামে যা ভারতবর্ষ থেকে এর উৎপত্তি।
২) আয়ুর্বেদ মতে পঞ্চভূত তথা ক্ষিতি, অপ, তেজঃ, মরুৎ ও ব্যোম এর সমন্বয়ে প্রকৃতি জড়, জীব ও উদ্ভিদ জগৎ সৃষ্টি হয়েছে আর ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞান মতে বায়ু, পানি, আগুন, মাটি দ্বারা মানবদেহ গঠিত।
৩) আয়ুর্বেদ মতে, দেহে তিন প্রকার রস পদার্থ যথা- বায়ু, কফ ও পিত্ত রয়েছে আর ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞান মতে, দেহে চার প্রকার রস পদার্থ রয়েছে এরা হল-রক্ত, শ্লেষ্মা, পিত্ত ও অম্ল।
৪) ঔষধ প্রস্তুতের ক্ষেত্রে এদের নিজস্ব স্বকীয়তা রয়েছে।
৫) ভেষজ শোধনের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম-কানুন রয়েছে।
৬) ইউনানী চিকিৎসার উৎপত্তি ঘটেছিল গ্রীস শহরে, আর আয়ুর্বেদের উৎপত্তি পাক-ভারত উপমহাদেশে।
ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞান হল Traditional Medicine হিসেবে ব্যবহৃত বিশ্বের প্রাচীন ও বহুল ব্যবহৃত দুটি চিকিৎসা বিজ্ঞানের নাম।
World Health Organization(WHO) এর মতে, Traditional Medicine হচ্ছে - "The health practices, approaches, knowledge and beliefs incorporating plant, animal and mineral-based medicines, spiritual therapies, manual techniques and exercises, applied singularly or in combination to treat, diagnose and prevent illnesses or maintain well-being."
অর্থাৎ উদ্ভিজ্জ, প্রাণিজ ও খনিজ উপাদানের একক অথবা যৌগিক প্রয়োগ বা ব্যায়াম অথবা খাদ্যভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগ নির্ণয়, রোগ নিরাময়, রোগ প্রতিরোধ অথবা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার চিকিৎসা ব্যবস্থা, পদ্ধতি, জ্ঞান এবং ধ্যান ধারণা ও বিশ্বাসের সমন্বয়কে Traditional Medicine বলা হয়। সহজ কথায়, বিশ্বের বিভিন্ন জাতি বা গোষ্টী কর্তৃক ব্যবহৃত তাদের নিজস্ব জ্ঞান প্রয়োগের মাধ্যমে প্রাপ্ত চিকিৎসা পদ্ধতিকে Traditional Medicine বলা হয়ে থাকে।
ইতিহাস থেকে যা জানা যায়, সর্ব প্রথম চিকিৎসা বিজ্ঞানের সূচনা ঘটে বাবেল তথা ব্যাবিলনে (ইরাক)। পরবর্তীতে মিশর এবং তারপর পাক-ভারত উপমহাদেশ ও চীনে চিকিৎসা বিজ্ঞানের চর্চা আরম্ভ হয়। কালের পরিক্রমায় বাবেল ও মিশর ধ্বংসের পর বাবেলীয় ও মিশরীয় চিকিৎসা সভ্যতা স্থানান্তরিত হয়ে গ্রীসের ইউনান নামক প্রদেশে ইউনানী চিকিৎসা নামে আত্নপ্রকাশ করে। সময়ের সাথে সাথে ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞান দুটি আলাদা কেন্দ্র থেকে তাদের আবিষ্কার, মানব কল্যাণে প্রয়োগ অব্যাহত রাখে এবং মুসলমানদের মাধ্যমে ইউনানী চিকিৎসা বিজ্ঞান উপমহাদেশে প্রবেশ করে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে।
বাংলাদেশে বর্তমানে এই দুটি চিকিৎসা পদ্ধতির অনেক ডিপ্লোমা কলেজ থাকলেও স্নাতক পর্যায়ে মাত্র একটি মেডিকেল কলেজ রয়েছে।
যীশু খ্রী: জন্মের প্রায় ৮৬০ - ৩৩৭ বছর অাগে হিপোক্রেটস গ্রিস দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বুনিয়াদ স্থাপন করে। পরে প্লেটো, এরিস্টটল, সক্রেটিস ইবনে সিনা প্রমুখ মহামনীষীরা একে এগিয়ে নেন। মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা পরে গ্রিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে পরিচিত হয় এবং একটা অাধুনিক চিকিৎসা সেবা অাবিস্কারে সক্ষম হন। এদের মধ্যে ইবনে সিনা, অাল - রাজি, অাল- বিরনীর নাম অন্যতম। বিজ্ঞানের অাবিস্কার ও প্রসারের ফলে চিকিৎসা পদ্ধতিও পরিবর্তন হয়েছে। ইউনানি, অায়ুর্বেদ, এলোপ্যাথিক, হোমিও, কবিরাজি, থেরাপি প্রভৃতি পদ্ধতিতে মানুষ চিকিৎসা সেবা গ্রহন করেন। হিপোক্রিটসকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক বলা হয় । অার অামরা অনেকেই জানিনা অামাদের জাতীয় চিকিৎসা পদ্ধতির নাম ভেষজ চিকিৎসা যা ইউনানী ও অায়র্বেদ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে।
ডাক্তার এ,এইচ,এম, কামাল হোসেন (অনন্য)
ডি এ এম এস
রেজিঃ নং ১১৩৬
ক্যাটাগরি ~এ
২| ০৬ ই মে, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৪
নতুন বলেছেন: সরি আপনার সাথে একমত হতে পারছিনা।
আধুনিক চিকিতসা যেহেতু এখন সহজলভ্য তাই এই রকমের চিকিতসার প্রসারের দরকার নাই।
কবিরাজ বা হেকিমই ঠিক আছে। কিন্তু ডাক্তার বললে জনগন অনেক জরুরী চিকিতসার জন্য হাসপাতালে না গিয়ে আপনাদের কাছে যাবে এবং তাকে জীবনের ঝুকি বাড়বে।
৩| ০৬ ই মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার একটি পোষ্ট।
এই বিষয়টির উপর আমার দারুন আগ্রহ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই মে, ২০১৮ সকাল ১১:০১
প্রামানিক বলেছেন: হিন্দু ধর্মে চার প্রকার বেদের নাম শুনেছি, যেমন-- ঋক বেদ, যজুর বেদ, সাম বেদ, অথর্বেদ এবং এই চারটা ধর্মগ্রন্থই আমার কাছে আছে। বেদে যে আয়ুর্বেদ নামেও বেদগ্রন্থ আছে এই প্রথম জানা হলো। ধন্যবাদ