নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আরিফুজ্জামান১৯৮৭

আরিফুজ্জামান১৯৮৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্য লাস্ট মাইল বইয়ের রিভিউ

০৭ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:২৮

খুনের দায়ে দণ্ডিত করা হয়েছিল মেলভিন মার্সকে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ... বিশ বছর আগে নিজের বাবা-মাকে খুন করেছে সে। বিশ বছর ধরে টেক্সাস রাজ্য সরকার সেই খুনের তদন্ত করে আসছে। অবশেষে, তারা রায় দিল মেলভিন মার্স দোষী। তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হল।
মেলভিন মার্স নিজের সেল-এ বসে অপেক্ষা করতে লাগল, কখন কারাগারের প্রহরী আসবে। তাকে নিয়ে যাবে ইনজেকশন পুশ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য।
প্রহরী এক পর্যায়ে ঠিকই এল। এবং তাকে তার সেল থেকে বের করে নিয়েও গেল। কিন্তু তারা মেলভিন মার্স-এর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল না। বদলে তারা মেলভিনকে অপ্রত্যাশিত একটা খবর দিল। চার্লস মন্টেগেমারি নামের একজন লোক তার খুনের সম্পূর্ণ দায় স্বীকার করে নিয়েছে। টেক্সাস কারা কর্তৃপক্ষ এবার তার দেয়া সাক্ষ্য তদন্ত করে দেখবে। তদন্তে যদি দেখা যায়, মেলভিন মার্স আসলেই নির্দোষ, তাহলে তখন তাকে মুক্তি দেয়া হবে।
মেলভিন এই অপ্রত্যাশিত খবরে খুশি হওয়ার বদলে রেগে গেল। সে রাগান্বিত গলায় বলতে লাগল, আমার জীবনের বিশ বছর আমি জেলে কাটিয়েছি। এই বিশ বছর কিভাবে ফেরত পাব আমি?
কারা কর্তৃপক্ষ মেলিভিনের এই কথা হতচকিত হয়ে যায়। তারা কুটনীতিকের মতো বলে, আমরা একবারে কেবল একটা সমস্যাই সমাধান করতে পারি।
এরপরে মেলভিনকে তার সেল-এ পাঠিয়ে দেয়া হয়।
.
কাহিনীর এই পর্যায়ে আমোস ডেকারকে দেখা যায়। আমোস ডেকার আগে পুলিশ অফিসার ছিল। পুলিশ অফিসার থাকার সময়ই তার স্ত্রী, মেয়ে এবং শ্যালককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। ডেকার এখনও চোখ বন্ধ করলে ওর সেই প্রিয়জনদের মৃতদেহ দেখতে পায়।
আমোস ডেকার এর আরেকটি ইন্টেরেস্টিং মেডিক্যাল প্রবলেম-ও আছে। রাগবি খেলতে গিয়ে সে একবার প্রচণ্ড আঘাত পায়। আঘাতের চোটে কয়েকদিন কোমায় ছিল। আঘাত সেরে ফিরে আসার পরে দেখা যায় ওর স্মৃতি ভয়ানক ধারালো হয়ে গেছে। একবারে কিছুই ভুলে না। যা দেখে তাই মনের মধ্যে গেঁথে যায়। এমনকি চোখ বন্ধ করলে ভিডিওচিত্রের মতো অতীতের সব দৃশ্য মনের মধ্যে ফুটে ওঠে। অনেকের কাছে মনে হতে পারে, এটা তো অসাধারণ ক্ষমতা। কিন্তু আমোস ডেকার এর কাছে এটা ভীষন এক যন্ত্রণা।
.
সে যাহোক, আমোস ডেকার এর কাছে তো মেলভিন মার্সের কেসটা এল। আমোস এর কাছে মনে হল যে, তার নিজের এবং মেলভিন-এর জীবনের সাথে অনেক মিল। দুজনেই ছিল প্রতিভাবান রাগবি খেলোয়াড়, প্রতিশ্রুতিশীল ক্যারিয়ার ছিল তাদের সামনে, কিন্তু দুঃখজনক ঘটনার কারণে তাদের ক্যারিয়ারে যতি পড়ে যায়।
দুজনের পরিবারকেই নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে হয়েছিল। এবং দুটো ক্ষেত্রেই, খুন হওয়ার বহু বছর পরে আরেকজন সাসপেক্ট হাজির হয় এবং খুনের কথা স্বীকার করে নেয়। এমন একজন সাসপেক্ট যে কিনা খুব সম্ভবত সত্যি কথাটা বলছে না।
আমোস চাইল মেলিভিনের কেসটা সুরাহা করতে। সে অনেকটা জোর করেই কেসটা নিজেদের টিমের কাছে নিয়ে এল।
.
চার্লস মন্টেগেমারি স্বীকার করেছে যে মেলভিন মার্সকে যেই খুনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং বিশ বছর কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে, সেটা আসলে সে-ই করেছে। তদন্তে যদি দেখা যায়, মেলভিন আসলে নির্দোষ, তাকে তখন অবশ্যই কারাগার থেকে মুক্ত করতেই হবে।
কিন্তু এ অবস্থায় কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। মেলভিন মার্সকে কে কারাগার থেকে বের করতে চায়? এখনই কেন চায়?
আমোস তার তদন্তকার্য শুরু করে দেয়। কিন্তু আমোসের টিমের একজন সদস্য যখন কিডন্যাপড হয়ে যায়, তখনই পরিষ্কার হয়ে যায় এর পেছনে আরও বড়, আরও অশুভ কিছু আছে। স্রেফ মেলভিন মার্সের জীবন-ই না। এর পেছনে আরও সাংঘাতিক কিছু আছে। আমোসকে তার অসাধারণ মস্তিষ্কের পুরো খেলটাই দেখাতে হবে, এই কেসটা সলভ করতে হলে।
.
কাহিনী শেষ পর্যায়ে দেখা যায়, কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বের হয়ে এসেছে।
.
সায়েম সোলায়মানের অনুবাদ নিয়ে বলার কিছু নেই। দারুণ কাজ দেখিয়েছেন তিনি। অনুবাদ ৫/৫। বইটি বের হয়েছে রোদেলা প্রকাশনী থেকে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ১১:৫১

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: সায়েম সোলায়মান তো সেবা প্রকাশনীর একজন নিয়মিত রাইটার। তার অনেক অনুবাদ আমি পড়েছি। খুবই ঝরঝরে এবং প্রাঞ্জল অনুবাদ। হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের অনেক বই তিনি অনুবাদ করেছেন। তার এই অনুবাদটাও নিশ্চয়ই সুখপাঠ্য হবে! সেবার স্থানে রোদেলা দেখে একটু আশ্চর্য লাগল!

২| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ১২:৩৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার উপস্থাপন

৩| ০৭ ই মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:২২

রাজীব নুর বলেছেন: ্মুভির রেটিং মানুষ দেয়।
ইদানীং ম্লোকজন বইয়ের রেটিং দেয়।
আপনি দিলেন অনুবাদের রেটিং।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.