নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি পদ্মাপাড়ের ছেলে। বাড়ি বিক্রমপুর। ছোট গল্প লেখার আনন্দে ছোট গল্প লেখার চেষ্টা করি!

এ এস রিপন

ছোটগল্প লেখার আনন্দে ছোটগল্প লিখে যাওয়া........

এ এস রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ম্যাসিয়ার (ছোট গল্প)

০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৫৬

এক

হোটেলটা ভাঙ্গাচোরা। ভিতরটাও নোংরা। ক্যাসেট প্লেয়ার থেকে বেসুরো গলায় হিন্দি গান বাজছে। ভিতরে ঢুকলেই গা ঘিন ঘিন করে। খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। কোন ভদ্র গোছের লোক সচরাচর হোটেলটায় ঢুকে না। হোটেলের পাশেই কনসট্রাকশনের কাজ চলছে। শত শত শ্রমিক সেখানে কাজ করছে। কেউ মাটি কাটছে। কেউ ইট ভাঙছে। হোটেলটার প্রধান কাস্টমার এরাই। দুপুর হলে সস্তায় খেতে দলবেঁধে চলে আসে। বেসিনের কল ছেড়ে কবব্জি পর্যন্ত হাত ডুবিয়ে ধোয়। হাতে মুখে লেগে থাকা মাটি ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে। তারপর চেয়ারে পা উঠিয়ে বসে ম্যাসিয়ারকে হাক দেয়। দুপুরের টিন তাতানো গরম আর ওদের ঘামের গন্ধে ভিতরটা কটু কটু গন্ধে ভরে যায়।
হোটেলটায় মাঝে মাঝে আমিও খেতে যাই। উদ্দেশ্য টাকা বাঁচানো। বড় সাইজের একটা রুই মাছের পিস নেয় চল্লিশ টাকা। অন্য হোটেলে নেয় ষাট টাকা। রান্না কেমন তা যেমন বুঝতে পারি না, মাথাও ঘামাই না। খাওয়ার কাজ খেয়ে যাই।
প্রতিদিনের মতো আজও খেতে এসেছি। ছোকরা টাইপের এক ম্যাসিয়ার এগিয়ে এল। বয়স চৌদ্দ-পনের, ফর্সা। সাদা গেঞ্জি পরা।
কি খাইবেন স্যার?
কি আছে?
রুই মাছ, কাঁচকি মাছ, তেলাপিয়া, গরু আর মুরগী- এক নিঃশ্বাসে বলে ও আমার দিকে তাকাল।
রুই মাছের মাথা আছে?
আছে।
নিয়ে আসো।
ও প্লেট ধুয়ে দ্রুত খাবার নিয়ে এল। বলতে না বলতেই এক বাটি ডাল দিয়ে গেল।
আমি রুই মাছের মাথা আর ঝোল দিয়ে খেতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ পর টের পেলাম গলার ভিতর দিয়ে যেন ঝাঁঝালো কিছু নামছে। ঝোলটা রেখে ডাল নিলাম। আশেপাশের টেবিলে শ্রমিকরা তৃপ্তির সাথে খাচ্ছে। পেটভরা লোক খাবার সময় স্টাইল করে খায়। কিন্তু ক্ষুধার্ত লোক স্টাইলের ধার ধারে না। তারা বড় বড় লোকমায় গোগ্রাসে খায়। শ্রমিকরাও গোগ্রাসে খাচ্ছে।
ছেলেটা অন্য টেবিলে খাবার দিয়ে এসে আমার টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে রইল।
ওহ! স্যার! আপনারে সালাদ দেওয়া হয় নাই!
বলেই ও হাওয়ার বেগে ছুটে গেল। কিছুক্ষণ পর সালাদ আর কাটা লেবু নিয়ে এল।
লেবুর রস চিপড়িয়ে আয়েস করে খাচ্ছি। মাঝে মাঝে বোটকা গন্ধ নাকে এসে লাগছে। শ্রমিকদের ঘামের গন্ধ। প্রথম প্রথম গা গুলিয়ে উঠতো। এখন গা সহা হয়ে গেছে।
মাছের মাথা চুষতে চুষতে ছেলেটির উপর চোখ পড়ল। ও পাশের একটি চেয়ারে বসে আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চোখাচুখি হতে ও অন্যদিকে চোখ ঘুরিয়ে নিল। স্বস্তিবোধ করছি। খাওয়ার সময় কেউ তাকিয়ে থাকলে ভাল লাগে না। নিজেকে পেটুক পেটুক মনে হয়। ছেলেটি অন্য কাস্টমারদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আমিও খাওয়া শেষ করে বিল দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
অফিস থেকে হাফ মাইল দূরে রেস্তোরাঁটা। প্রায়ই আসার কারণে দূরত্ব আরও কম মনে হয়। দুপুরে লাঞ্চের সময় মনে এক ধরনের রিলাক্স মুড আসে। একটানা বসে থাকার পর একটু হাঁটতে ভালই লাগে। তাই হাঁটার উদ্দেশ্যেও এই হোটেলে এসে পড়ি। ঢোকার সাথে সাথে ম্যাসিয়ার ছেলেটি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আমার ভাল খাওয়া-দাওয়ার দিকে ওর সীমাহীন মনোযোগ। খেতে খেতে টুকটাক কথা হয়।
তোর বাড়ি কোথায় রে?
স্যার, রংপুর।
ঢাকায় এসেছিস ক্যান?
স্যার রংপুরে কাম নাই। কাম না করলি খামু কি?
বাবা কি করে?
মহাজনের জমিতে ক্ষেতের কাম করে। এখন মংগা চলতাছে। ক্ষেতেও কাম নাই।
এখন তাহলে কি করে?
মাঝে মইধ্যে ইটের ভাটায় কাম করে। কাম না পাইলে বইয়া থাকে।
তোরা ভাই বোন ক’জন?
স্যার আমরা তিন বইন, এক ভাই। দুই বইনের বিয়া হইচে। ছোড বইন বাইত্তে থাকে। হেয় ক্লাশ ফাইভে পড়ে।
তুই পড়িস নাই?
ফাইভ পর্যন্ত পড়ছি। হেরপর বাজান বিড়ির ফ্যাক্টরীতে কামে লাগাইয়া দিল। কি দুর্গন্ধ। নাড়ি-ভুড়ি উল্টাইয়া আহে। একদিন কাম ছাইড়া ঢাকায় রওনা দিলাম। হেরপর ঘুরতে ঘুরতে এই হোডেলে কাম পাই। মালিক আমারে খুব মায়া করে।
খাওয়া-দাওয়া শেষে বিল দেয়ার সময় প্রায়ই ওকে দু’ এক টাকা বকশিস দেই। ও নীরবে আমার দিকে তাকায়। ওর চোখে গ্রামের শান্ত দীঘির ছায়া!

দুই

অনেকদিন হল অফিসের ব্যস্ততার কারণে ঐ হোটেলে খেতে যেতে পারিনি। আজকেও পারবো বলে মনে হয় না। সেমিনার চলছে।
দুপুরের দিকে আমার কলিগ আসিফের সাথে ‘চা’ খেতে বের হলাম। অফিসের সামনেই চা’র দোকানটা। চমৎকার ‘আদা-চা’ বানায়। আসিফের ভারী অপছন্দ এই চা। শুধু- চা না। এই এলাকার সবকিছুর প্রতিই তার বিতৃষ্ণা।
কথায় কথায় বলে- যতসব ছোট লোকদের জায়গা! কেন এমন একটা জায়গায় অফিসটা করলো!
হাঁটতে হাঁটতে অফিসের মেইন গেটের সামনে চলে এসেছি। পাশেই খুপড়ির মত চা’র দোকানটা কোন রকম দাঁড়িয়ে আছে। দোকানের সামনে এসে দু’কাপ চা’র অর্ডার দিলাম। আসিফ অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে। আমি ভাল শ্রোতা। তাই চুপচাপ শুনে যাচ্ছি।
চা’র কাপে চুমুক দিতে গিয়ে প্রথম বারের মতো ছেলেটি নজরে পড়ল। হোটেলের সেই ম্যাসিয়ার ছেলেটা।
অনেক দিন পর ঘনিষ্ঠজনের সাথে দেখা হলে মানুষ যে চোখে তাকায়, ও সেই চোখে তাকিয়ে আছে। সারা মুখে মুগ্ধতা ও খুশীর ঝিলিক। ওর চোখে চোখ পড়তে ও এমন এক হাসি দিল যেন আমি ওর কত পরিচিত। ওর চোখ যেন বলছে- ‘এই মানুষটিকে আমি যত্ম করে খাওয়াই।’
উৎফুল্ল কণ্ঠে ও বলল, আসসালামু আলাইকুম, স্যার।
ওয়ালাইকুম সালাম।
ও হাসি হাসি মুখ করে দাঁড়িয়ে রইল। আশা করছে আমি হয়তো অন্তরঙ্গ ভাবে কিছু জিজ্ঞেস করবো। খেতে গেলে যা প্রায়ই করি। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি নিরাসক্ত ভঙ্গিতে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। আসিফের সামনে ওর সাথে অন্তরঙ্গভাবে কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। আসিফের সবকিছুতেই নাক উঁচু ভাব। ও কি-না কি মনে করে।
চা’র কাপে চুমুক দিতে দিতে আড়চোখে একবার ওর দিকে তাকালাম। বুকটা ছ্যাৎ করে উঠলো। মানুষের মুখ মুহূর্তে এত মলিন হয়ে যেতে পারে! চোখ দুটো এতটা বিষণ্ণ হয়ে উঠেছে যেন কেউ সাড়াশি দিয়ে ওর কলজেটা চেপে ধরেছে।
দ্বিতীয়বার আমি ঐ চোখে তাকানোর সাহস পেলাম না। চা’র বিল দিয়ে অফিসের দিকে হাঁটতে শুরু করলাম। আসিফ ওর স্বভাব সুলভ উন্নাসিক ভঙ্গিতে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের মতামত দিয়ে যাচ্ছে। আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না। ওর করুণ চোখ দু’টো মনে ভাসছে। নিজেকে প্রচণ্ড ছোট মনে হচ্ছে।

তিন

প্রায় তিন সপ্তাহ পর সেই হোটেলটায় খেতে এসেছি। সবকিছু আগের মতো আছে। দিন-মজুরদের আনাগোনা। ভ্যাপসা গরম। গম গম শব্দ। একটা টেবিল দখল করে সেই ম্যাসিয়ার ছেলেটিকে খুঁজছি। কিছুক্ষণ পর ও ভিতর থেকে বেরিয়ে এল। হাতে ভাতের প্লেট। অন্য কাস্টমারকে এগিয়ে দিচ্ছে। হাতের ইশারায় ওকে ডাকলাম। ও আমাকে দেখতে পেয়ে কাছে এগিয়ে এল।
কী রে? কেমন আছিস?
ও ম্লান হেসে বলল, ভাল
খাবার কী আছে?
মুরগী, গরু, রুই মাছ, কাঁচকি মাছ।
মুরগী ভাল হবে?
জি ।
ভাল দেখে একটা মুরগী নিয়ে আয়।
ও খাবার আনতে চলে গেল। ফার্মের মুরগী খাওয়ার কোন ইচ্ছা আমার নাই। ওকে খুশী করতে মুরগীর অর্ডার দিলাম। একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছি, দামী খাবারের অর্ডার দিলে ম্যাসিয়াররা খুশী হয়। উৎসাহের সাথে দ্রুত খাবার নিয়ে আসে। না বলতেই সালাদ দিয়ে যায়।
খাওয়া শেষে টিস্যু নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। আশা কিছু বকশিস পাবে। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে ওরা বুঝে গেছে- যারা ভাল খায়, তারা ভাল বকশিস দেয়।
ছেলেটি খাবার নিয়ে এল। আমি নীরবে খেতে শুরু করলাম। খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে ওকে দেখছি। ও ধীরে সুস্থে অন্য কাস্টমারদের খাবার এগিয়ে দিচ্ছে। ওর সাথে কয়েক বার চোখাচোখি হল। প্রতিবারই ও অদ্ভুত এক নির্লিপ্ত ভাব করে চোখ ঘুরিয়ে নিল।
আমি খাওয়া শেষ করে বিল দিতে গেলাম। ও আগের মতই হাত মোছার জন্য ‘কাটা নিউজ পেপার’ এগিয়ে দিল। খুচরা যে পাঁচ টাকা ক্যাশিয়ার ফেরত দিল, ওকে বকশিস হিসেবে দিলাম। ও উদাসীনভাবে হাত বাড়িয়ে টাকাটা নিল।
এর পর অনেক বার ঐ হোটেলে খেতে গিয়েছি। প্রতিবারই ও খাবার দিয়ে গেছে। দ্রুতই দিয়েছে। সালাদ এগিয়ে দিয়েছে। হাত মোছার কাগজ দিয়েছে। বলতে গেলে সবকিছুই করেছে। তবুও প্রতিবারই আমার মনে হয়েছে আগে ‘জলজ্যান্ত’ কি যেন একটা ছিল!!
কি সেটা বলে বুঝাতে পারবো না! আবেগ, মমতা, মুগ্ধতা নাকি অন্য কিছু আমি জানি না। শুধু জানি আমি যে ভদ্রলোকের বাচ্চা। নিজের মান বাঁচিয়ে রাখতে গরীবের মানবিক অনুভূতিকে পা দিয়ে পিষে ফেলতে পারি!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৪

মিথুন আহমেদ বলেছেন: শুধু জানি আমি যে ভদ্রলোকের বাচ্চা। নিজের মান বাঁচিয়ে রাখতে গরীবের মানবিক অনুভূতিকে পা দিয়ে পিষে ফেলতে পারি! অসাধারণ ......... খুব ভালো লাগল।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৫

এ এস রিপন বলেছেন: ধন্যবাদ মিথুন আহমেদকে।

ভালো থাকবেন।

২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৭

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: গরীবের আবার অনুভুতি! সুন্দর লেখা। ধন্যবাদ।






ভালো থাকবেন নিরন্তর।

৩| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৮

এ এস রিপন বলেছেন: লেখাটি পড়ার জন্য দেশ প্রেমিক বাঙালী ভাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।


শুভ কামনা।

৪| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১৯

জনাব মাহাবুব বলেছেন: এর পর অনেক বার ঐ হোটেলে খেতে গিয়েছি। প্রতিবারই ও খাবার দিয়ে গেছে। দ্রুতই দিয়েছে। সালাদ এগিয়ে দিয়েছে। হাত মোছার কাগজ দিয়েছে। বলতে গেলে সবকিছুই করেছে। তবুও প্রতিবারই আমার মনে হয়েছে আগে ‘জলজ্যান্ত’ কি যেন একটা ছিল!!
কি সেটা বলে বুঝাতে পারবো না! আবেগ, মমতা, মুগ্ধতা নাকি অন্য কিছু আমি জানি না। শুধু জানি আমি যে ভদ্রলোকের বাচ্চা। নিজের মান বাঁচিয়ে রাখতে গরীবের মানবিক অনুভূতিকে পা দিয়ে পিষে ফেলতে পারি!

মন খারাপ করে দেওয়ার মত লেখা পাশাপাশি সচেতনতা তৈরী হবে। গরীব বলে কাউকে অবহেলা করতে নেই, কারও আবেগে আঘাত দিতে নেই। /:)

৫| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৫২

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: গল্পের মত। কিন্তু পরতে পরতে রয়েছে আমাদের শিখে নেওয়ার অনেক কিছু।

আমাদের মাঝে মানবতা বোধ নেই। কিছু কিছু মানুষের আছে, কিন্তু তাদেরকে খুঁজেই পাওয়া যায় না। কারণ, যাদের আছে - তারা সেটা প্রকাশ করে সেটা নিয়ে বড়াই করে না। তারা আড়ালেই থেকে যায় - করে যায় সাহায্য।

এরকম মানবতার আরো কয়েকটা মানুষ থাকলে দেশটা সুখে-শান্তিতে থাকতো। কোন অনিয়মও হত না। স্বপ্ন দেখি - হয়ত দেশের অবস্থাটা বদলাবে একদিন না একদিন।

লেখার শিক্ষাগুলো ছড়িয়ে দিতে পারলো। সবারই জানা দরকার এগুলো। ভাল লেগেছে। +++

০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭

এ এস রিপন বলেছেন: ঠিকই বলেছেন ভাই মানবতাবোধ বেশী প্রচার করার জিনিস না, প্রয়োগ করার জিনিস। যারা প্রয়োগ করতে না পেরে যন্ত্রনা পায়, তাদের বিবেক এখনো জাগ্রত রয়েছে। তারা মহত্বের পথে আসতেও পারে।

আপনার কমেন্ট পড়ে ভালো লাগল।

৬| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১০

রহস্যময় ডিটেকটিভ ঈশান বলেছেন: অনেক শিক্ষানীয় একটা পোস্ট। লাস্টের কথাগুলো অসাধারন হয়ছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.