নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি পদ্মাপাড়ের ছেলে। বাড়ি বিক্রমপুর। ছোট গল্প লেখার আনন্দে ছোট গল্প লেখার চেষ্টা করি!

এ এস রিপন

ছোটগল্প লেখার আনন্দে ছোটগল্প লিখে যাওয়া........

এ এস রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

লোভ

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৪


দোকানে বসে মিঠু লোকটির কাজ কারবার দেখছে। তার মুখ হাসি হাসি। মহাজন দোকানে নেই। দুপুরের খাবার খেতে বাড়ি গেছে। এই সময় মিঠু একা একা দোকান চালায়। পাঁচ বছর ধরে সে এই মুদি দোকানে আছে। তার বয়স এখন বিশ। এই বয়সেই সে মানব চরিত্র সম্পর্কে মোটামুটি স্পেশালিস্ট। তার উপযুক্ত শিষ্য আবু। বয়স কম বলে মহাজন ওকে দোকানে বসায় না। বাড়িতে ফাই-ফরমাশ খাটায়। সেও আজ দোকানে বসে আছে। উত্তেজনায় সে স্থির হয়ে বসতে পারছে না।
‘মিঠু ভাই এমন সব কাণ্ডকারখানা করে!’
সে খুব কষ্টে হাসি চেপে রেখেছে। মিঠু কড়া এক ধমক দিল।
তুই এমুন ছটফট করছস ক্যা? চুপ কইরা বয়। দেখ্ ব্যাটা কি করে?
দোকানের সামনে এক চিলতে ফুটপাত। ফুটপাতের এক কোণায় পেটমোটা একটা মানিব্যাগ পড়ে আছে। টাই পরা এক ভদ্রলোক ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। মানিব্যাগটা তার চোখে পড়ল। তার চোখ সরু হয়ে গেল। তিনি আশেপাশে সতর্ক চোখে তাকালেন। কেউ লক্ষ্য করছে না। তিনি মানিব্যাগটার সামনে এসে অন্যমনস্ক ভঙ্গিতে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন। হঠাৎ মানিব্যাগটা উঠিয়ে চোরের মত পকেটে ঢুকিয়ে ফেললেন। তারপর হনহন করে হাঁটতে শুরু করলেন।
এই পর্যায়ে মিঠু তার কাজ শুরু করে দিল। সে দৌড়ে লোকটির সামনে যেয়ে দাঁড়াল।
ভাই, মানিব্যাগটা আমার। রৌদে শুকাতে দিছিলাম। তাড়াতাড়ি দেন।
ওহ! সরি। বলেই ভদ্রলোক পকেট থেকে মানিব্যাগটা বের করে মিঠুর হাতে দিলেন। তারপর দ্রুত সটকে পড়লেন।
দোকানে ফিরে মিঠু হাসিমুখে বলল, দেখলি, ব্যাটা কত বড় ভদ্রলোক! যা মানিব্যাগটা আবার জায়গামত রাইক্কা আয়।
আবু তার সবকটা হলুদ দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বলল, মিঠু ভাই, হেভি খেইল বাইর করছেন।
সে দৌড়ে মানিব্যাগটা আবার ফুটপাতে রেখে এল। তারপর অপেক্ষা করতে থাকে দ্বিতীয় শিকারের আশায়।
পেটমোটা মানিব্যাগটা রাস্তায় নিরীহভাবে পড়ে আছে। কিন্তু মনে হচ্ছে জীবন্ত কিছু। চারদিকে জ্যোতি ছড়াচ্ছে। ওটার আকর্ষণও চুম্বকের মত। যেই দেখছে, থমকে দাঁড়াচ্ছে। হঠাৎ সাপ দেখলে মানুষ যেমন থমকে দাঁড়ায়। চলাচল সতর্ক হয়ে যায়। মানিব্যাগটি দেখেও লোকজনের আচরণ তেমন হচ্ছে। তবে পার্থক্য হল- সাপ দেখলে লোকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করে, মানিব্যাগটি দেখে পা টিপে টিপে কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
এবার মানিব্যাগটি দেখতে পেল একজন শ্রমিক। সে ছোঁ মেরে ব্যাগটা উঠিয়ে ভেতরে টাকা আছে কিনা আগে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল।
তারপর ‘ধুর শালা’ বলেই সে তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে ব্যাগটা দূরে ছুঁড়ে মারল।
মিঠু এবং আবু বিমল আনন্দে হেসে উঠল। কারণ ভেতরে কাগজ ভরে ওটার পেট মোটা করা হয়েছে।
আবু মানিব্যাগটা কুড়িয়ে আবার জায়গামত রেখে দিল- তাদের তৃতীয় শিকারের আশায়!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৯

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: দেখলি, ব্যাটা কত বড় ভদ্রলোক!
এটাই বাস্তব !!!!!!

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

এ এস রিপন বলেছেন: পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।

২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৫

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: হা হা হা ..............। মজা পেলাম। ধন্যবাদ।




ভালো থাকবেন নিরন্তর।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

এ এস রিপন বলেছেন: পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।

৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৯

মুহাম্মদ তারেক্ব আব্দুল্লাহ বলেছেন: ভদ্রলোক তো মিঠুকে দেখে পুরো অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছিল । দৈহিক ভদ্র , মনটা অভদ্র ।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১০

এ এস রিপন বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই! পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫০

এহসান সাবির বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

এ এস রিপন বলেছেন: পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.