নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি পদ্মাপাড়ের ছেলে। বাড়ি বিক্রমপুর। ছোট গল্প লেখার আনন্দে ছোট গল্প লেখার চেষ্টা করি!

এ এস রিপন

ছোটগল্প লেখার আনন্দে ছোটগল্প লিখে যাওয়া........

এ এস রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ (ছোট গল্প)

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৭

বিকেল পাঁচটা। অফিস থেকে বের হয়ে এলাম। রাস্তায় সেই পুরনো দৃশ্য। ভয়াবহ যানজট। অফিস ফেরত যাত্রীরা যানজটে আটকা পড়ে গাড়িতে বসে ঝিমাচ্ছে। ওদের পাশে যেয়ে আর বসতে ইচ্ছা করছে না। হাঁটতে শুরু করলাম। সারাদিন একটানা বসে থাকার পর হাঁটতে খারাপ লাগছে না। রাস্তার পাশে সারি সারি প্রাইভেট কার। চকচকে গাড়িগুলো দেখলে মনে হয় না তৃতীয় বিশ্বের কোন রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। একটা গাড়ির সামনে লম্বা-চওড়া এক যুবক দাঁড়ানো। মুখ ঘুরাতেই চিনলাম- এ আমাদের পার্থ। পিছন থেকেই আমার চেনা উচিত ছিল। কারণ ছ’ফুট বাঙ্গালী এদেশে খুব সুলভ না। আমি কিছু বলার আগেই ও চেঁচিয়ে উঠল,
আরে সুমন তুই এখানে?
আমার তো এখানেই থাকার কথা। তুই এখানে কেন? তোর তো থাকার কথা মেডিকেল-মির্ডফোর্টে।
ওসব জায়গায় ঘোরাঘুরি আমি অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি।
কেন? এম.আর (মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ) এর চাকুরী ছেড়ে দিয়েছিস?
হ্যাঁ। বলেছিলাম না-একদিন এই চাকুরী ছাড়বো।
আমি পার্থর দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকালাম। চোখে-মুখে সুখী জেল্লা জেল্লা ভাব। গায়ে দামি একটা টি সার্ট। শরীর থেকে তীব্র পারফিউমের ঘ্রাণ আসছে। বোঝাই যাচ্ছে- মালপানি ভালই কামিয়েছে। এই বস্তু যার কাছে আসে- তাকেই প্রচণ্ড জীবন্ত করে তোলে। অথচ পাশ করার পর ওরই কিছু হচ্ছিল না। আমরা সবাই কিছু একটাতে ঢুকে পড়ি।
ব্যাংক, ট্রাভেল এজেন্সি, কলেজের পার্টটাইম টিচার। একমাত্র ও কিছু জোটাতে না পেরে টোফেল, জি.আর.ই নিয়ে মেতে উঠে।
সন্ধ্যার পর অফিস থেকে ফিরে প্রায়ই দেখতাম পার্থ চেয়ার টেবিলে বসে চোখ-মুখ বন্ধ করে ভোকাবুলারি মুখস্থ করছে।
আমি কাপড় বদলাতে বদলাতে বলতাম, হবে নাকি এক দান?
ও বই থেকে মুখ না তুলেই বলত, না দোস, তাসের মধ্যে আমি আর নাই। খামোখা সময় নষ্ট।
এই সময় একজন দু’জন করে সবাই মেসে ফিরতো। আমরা গোল হয়ে বসে যেতাম। একসময় পার্থও উঠে আসতো। চলতো ম্যারাথন খেলা। প্রায়দিন খেলা শেষ হতো একটা ঝগড়ার মধ্যে। কোন কোন সময় হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যেত। তাতে অসুবিধা হতো না। পরের দিন সন্ধ্যায় আবার যখন তাস নিয়ে বসতাম, আগের দিনের কথা কিছুই মনে থাকত না।
আমাদের মধ্যে তাপস ছিল একটু খোঁচানো প্রিয়। প্রায়ই পার্থর সাথে লেগে যেত। পার্থ কোন ভুল চাল চাললেই বলে উঠতো,
ভোকাবুলারি মুখস্থ করতে করতে তোর মাথায় একটা ‘ভ্যাকুয়াম’ সৃষ্টি হয়েছে। এটা ভরাট করা দরকার। তুই এক কাজ কর - মৌরীকে একদিন মেসে নিয়ে আয়। আমরা না হয়-একদিন বাইরে থাকবো।
পার্থর মুখ শক্ত হয়ে উঠতো।
দেখ, মৌরীকে নিয়ে ভালগার কথাবার্তা বললে স্ট্রেইট নাক বরাবর ঘুষি খাবি।
আচ্ছা যা, মৌরীকে বাদ দিলাম। কিন্তু তুই দিন দিন এমন বে-আক্কেল হয়ে উঠছিস কেন? তোকে পার্টনার করা ভুল হয়েছে?
বেআক্কেলের কি দেখলি?
তুই বিবি না চেলে হার্টস চাললি কেন?
আমার যা বেটার মনে হয়েছে, তাই সার্ভ করেছি।
ইংরেজী প্রাকটিস করতে যেয়ে পার্থর অবস্থা এমন দাঁড়াল-ইংরেজী শব্দ না মিশিয়ে সে কথা বলতে পারত না।
যেদিন সে ঠিক করলো- চাকুরীর পিছনে আর দৌড়াবে না, তার চেয়ে টোফেল করে আমেরিকা চলে যাবে, সেদিন সে ঘোষণা দিল,
এখন থেকে মেসে বাংলা কথাবার্তা বন। সমস্ত কথাবার্তা হবে ইংরেজিতে।
তাপস শুনে বলল,
মেসে ইংরেজীতে কথা বলতে হবে?
হ্যাঁ।
কেন? আমি কি ইংরেজদের বাচ্চা? আমার বাপ-মা কি ইংরেজ?
ইংরেজী না জানলে তুই অফিসে ডোমিনেট হবি। অন্যকে সব সময় ‘স্যার’ ‘স্যার’ বলতে হবে।
তুই অফিস সম্পর্কে কি জানিস? অফিসে কারা ‘স্যার’ হয় তুই জানিস?
মেসে ইংরেজী চালু করতে ব্যর্থ হলেও পার্থ দমে গেল না। সে নিজে নিজেই প্রাকটিস শুরু করল। আমরা যখন বাইরে থাকি- সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হাত-মুখ নেড়ে নেড়ে বলে-
পার্থ, হাউ আর ইউ?
ইংরেজদের মত একটু টেনে টেনে সে নিজেই উত্তর দেয়,
আঁই অ্যাঁম ফাঁইন।
হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?
অ্যাঁই অ্যাঁম লার্নিং ইংলিশ।
হোয়াই?
আঁই উয়িল গো অ্যামেরিকা। বাই হুক অর বাই ক্রুক!
কোন একটা বিষয়ে সারাক্ষণ বুঁদ হয়ে থাকলে মানুষ ‘টাইপ’ হয়ে যায়। পার্থর ক্ষেত্রেও তাই হল।
মেসে বাজার করে হয়তো খাতায় হিসাব তুলছে। যেখানে আমরা লিখি বাংলায়, সে লিখছে লেডিস ফিঙ্গার ওয়ান কেজি টাকা ফিফটি। হঠাৎ করে হয়তো জিজ্ঞেস করছে,
সুমন করলার ইংরেজী কি?
জানি না।
তা জানবি কেন?
হিসাব তোলা বাদ দিয়ে সে বাংলা-টু-ইংরেজী ডিকশনারী নিয়ে বসল। গভীর উৎসাহে সে ‘করলার’ ইংরেজী খুঁজতে লাগল।
কয়েক মাস পর ওর দশা এমন হল- বাংলা লেখা কিছু দেখলে ভ্রূ কুঁচকে উঠতো।
সকাল বেলা হকার হয়তো ‘প্রথম আলো’ দিয়ে গেছে। কয়েকটা হেড লাইন পড়ে (ও কখনও পুরো নিউজ পড়ত না) ওর ভ্রু কুঁচকে যেত।
ধুর! যত সব বোগাস নিউজ। এগুলো পড়া মানে টাইম কিলিং। এটা বাদ দিয়ে ‘ডেইলি স্টার’ রাখা দরকার।
তাপস বলল, কেন? ইংরেজী প্রাকটিসের জন্য?
ইংরেজী পত্রিকায় অথেনটিক নিউজ থাকে। ইংরেজী পত্রিকা তো আর ভেড়া ছাগলে পড়ে না।
তোর ধারণা যারা বাংলা পত্রিকা পড়ে তারা ভেড়া-ছাগল।
দেখ, তোর সাথে আমি তর্ক করতে চাই না। আমি আর বাংলা পত্রিকাতে নাই। কাল থেকে আমি নিজেই ‘ডেইলি স্টার’ রাখবো।
শুধু ডেইলি স্টার না, নীলক্ষেত ঘুরে ঘুরে Spoken English এর যাবতীয় বই কিনে সে সেলফ ভর্তি করে ফেলল। এর মধ্যে ‘সাতদিনে সহজ ইংরেজী শিক্ষা’ থেকে শুরু করে Barron's এর TOFEL পর্যন্ত আছে।
এসব বই সে কাজে লাগাতে পারছিল কিনা জানি না-তবে আমার মাঝে মাঝে বেশ কাজে লাগত।
মেসে গেস্ট আসলে বালিশের শর্ট পড়তো। আমার বালিশটি গেস্টকে দিয়ে আমি গাইডগুলোর উপর একটা তোয়ালে বিছিয়ে ‘বালিশের’ কাজ চালিয়ে নিতাম।
গেস্ট চলে গেলে পার্থ মুখ অন্ধকার করে বলত-
বই মাথায় দিয়ে শোওয়া তোর একটা বিচ্ছিরি অভ্যাস। এতে বিদ্যা চলে যায়।
গেলে আমার যায়, তোর কি?
আসলে ইংরেজীর শক্তিটা তুই বুঝতে পারছিস না। তাই বইগুলোর প্রতি এত অবজ্ঞা।
ইদানিং ভাষা নিয়া সে ছোটখাটো বক্তৃতা দেয়াও শুরু করেছে।
একদিন বলল, যাই বলিস, ইংরেজী ভাষায় একটা পুরুষালী ভাব আছে!
তাপস চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
বাংলা ভাষায় কি ভাব আছে? মেয়েলি?
পার্থ আমতা আমতা করে বলল,
মেয়েলি বলছি না। তবে মাতৃভাষা বাতাস পানির মতো সহজলভ্য। তুই-আমি যেমন এই ভাষা জানি, একজন রিক্সাওয়ালাও এই ভাষা জানে। তাহলে রিক্সাওয়ালা আর আমার মধ্যে পার্থক্য রইল কই?
তাপস সাথে সাথে বলল,
কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্য হল-রিক্সাওয়ালার একটা রিক্সা আছে। তোর তা নেই!!
রসিকতা করছিস?
তোকে নিয়ে রসিকতা করবো আমরা? তুই ইংরেজী শিখে এখন ম্যানলি হচ্ছিস। তুই বরং আমাদের নিয়ে রসিকতা করবি!
পার্থ তাপসকে থামানোর জন্য একটু বোঝানোর ভঙ্গিতে বলল,
শোন, আমি আসলে বলতে চাচ্ছি ইংরেজী ভাষাটাই এমন, জানা থাকলে মনটা চাঙ্গা থাকে। মানিব্যাগ ভরা থাকলে মনটা যেমন থাকে।
কিন্তু আমার রুমমেট হওয়ায় আমি জানি-ইংরেজীও ওকে চাঙ্গা রাখতে পারছে না। দিন দিন কেমন যেন মিইয়ে যাচ্ছে। পাশ করার পর একটা ছেলের চাকুরী পেতে যত দেরী হয়, তার তেজ তত কমতে থাকে।
একদিন ওর বাড়ি থেকে একটা চিঠি এল। খুলবো না খুলবো না করেও শেষমেষ খুলে ফেললাম।

বাবা পার্থ,
আমার দোয়া নিও। তোমার পত্র পাইয়াছি। পত্র মারফত জানিতে পারিলাম তোমার দশ হাজার টাকা অতীব প্রয়োজন। তুমি বৃটিশ কাউন্সিলে ইংরেজী শিখিবে। খুব ভাল কথা। আমি ইংরেজীর শিক্ষক। ইংরেজীর মর্ম বুঝি। তাই অতি ছোটকালেই আমি তোমাদের ‘ইংরেজী শিক্ষনের’ প্রতি গুরুত্ব আরোপ করিয়াছিলাম। তখন যদি একটু সিরিয়াস হইতে, আজ কোন কাউন্সিলে দৌড়াদৌড়ি করিতে হইত না। বিলম্ব হইলেও তোমার শুভ বুদ্ধির উদয় হইয়াছে। ইহাতেই আমি অতীব খুশী।
পর সমাচার এই যে, আমি এখন রিটায়ার্ড শিক্ষক। রিটায়ার্ড শিক্ষকের কাছে ছাত্রছাত্রীরা ঘেষে না। পেনশনের অতি সামান্য টাকা দিয়ে ‘সংসার ধর্ম’ পালন করিতে হইতাছে।
তুমি জান তোমার বোন অনু এইবার এস.এস.সি পরীক্ষা দিবে। তাহার জন্য অঙ্কের মাস্টার রাখিতে হইয়াছে। আমি আশা করিয়াছিলাম- পাশ করিয়া তুমি সংসারের হাল ধরিবে। অনুর যাবতীয় খরচ চালাইবে। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয়- পাশ করার পর দুই বৎসর অতিক্রান্ত হইতে চলিল, তুমি এখনও নিজের হাল নিজেই ধরিতে পার নাই। ইহা তোমার জন্য যেমন লজ্জার, আমার জন্য তেমন অস্বস্তিকর। তুমি বুদ্ধিমান ছেলে-অধিক বলার আবশ্যকতা দেখি না। তবে তুমি ইংরেজী শিখিয়া আমেরিকা যাওয়ার যে চিন্তা-ভাবনা করিতাছো, তাহা আমার নিকট বুদ্ধিমান কাজ মনে হইতাছে না। মেধা থাকিলে দেশের মাটিতেও ফুল ফুটানো যায়।
এই বিষয়ে তুমি আরও ভাবিয়া চিন্তিয়া অগ্রসর হইবে। কারণ জীবনে একবার ভুল করিলে তাহা সংশোধন করা যায়। তবে জীবনের একটা বড় অংশ অপচয় হয়। এই বিষয়ে আমার মতামত হইল-তুমি বিদেশ যাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়া দেশেই চাকরী খোঁজার চেষ্টা কর। অনুর পরীক্ষা নিয়ে আমি ব্যস্ত আছি। ভাগ্যিস নিজেই ইংরেজীর শিক্ষক। নতুবা আরেকজন ইংরেজী শিক্ষক রাখিতে হইত। তোমার মার শরীর ভাল আছে। তুমি তোমার স্বাস্থ্যের অতিশয় যত্ন নিবে।

ইতি-
তোমার বাবা।

ইংরেজীর পিছনে মুক্তহস্তে খরচ করতে যেয়ে পার্থ মাস শেষে প্রায়ই আমার কাছে হাত পাততো।
দোস পাঁচশ টাকা দে তো। আগামী মাসে আমার আরেকটা টিউশনী হচ্ছে। ইংলিশ মিডিয়াম। সপ্তাহে তিনদিন, তিন হাজার টাকা।
আমি মুখ কালো করে বললাম,
তোর কাছে আগেই পাঁচশ টাকা পাই। মনে আছে?
মনে থাকবে না কেন? ধার নিয়ে ভুলে যাওয়ার বান্দা আমি না। তুই আরও পাঁচশ দে। এক সাথে দিয়ে দিবো।
তা না হয় দিলাম। কিন্তু তুই এইভাবে কত দিন চালাবি? কিছু একটাতে ঢুকে পড়!
ইন্টারভিউ তো কম দিলাম না। না হলে কি করবো?
ছত্রিশতম বি.সি.এস এর সার্কুলেশন দিয়েছে। বি.সি.এস এর জন্য লেগে পড়।
ধ্যাৎ তোর বি.সি.এস। এই দেশে আমলা হওয়ার চেয়ে বিদেশ যেয়ে কামলাগিরি করাও অনেক ভাল। আমেরিকায় যেয়ে রাস্তায় ঝাড়– দিবো, আর লাখ লাখ টাকা কামাবো।
মুচকি হাসলাম। হলে থাকতে পার্থ টুকটাক ছাত্র ইউনিয়ন করতো। আমেরিকার কথা শুনতেই পারতো না। দেশের কোন সমস্যা হলেই বলত-
এর পিছনে আমেরিকার হাত আছে। তেল কিংবা চালের দাম বাড়ছে- ওর ভাষায় এগুলো আমেরিকার কারসাজি। দীর্ঘ সময়ের জন্য লোডশেডিং হচ্ছে কিংবা বাংলাদেশ নিউজল্যান্ডের টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে। জিততে জিততেও বাংলাদেশ জিতলো না। ওর ধারণা এগুলো আমেরিকার চক্রান্ত।
দুই বছরের মাথায় সেই পার্থ আমেরিকার কেমন অন্ধভক্ত হয়ে উঠল। মানুষের মন সম্পর্কে শেষকথা বলতে কিছুই নেই।
ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললাম-
বি.সি.এস ভাল না লাগলে অন্য চাকুরী দেখ। তোর ‘হোমল্যান্ড’ ইন্সুরেন্সের খবর কি?
দেখ, না খেয়ে থাকবো। তবুও জীবনে তিন ধরনের চাকুরী করবো না। মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ, দোকানের সেলসম্যান এবং বীমা প্রতিনিধি।
কেন, এগুলো খারাপ কি? চ্যালেঞ্জিং জব। এখন তো এগুলোরই ডিমান্ড!
যত ডিমান্ডই থাক, মার্কেটিং জব আমি করবো না।
কেন? তুই একটা এক্সট্রোভার্ট ছেলে। এদের জবই তো মার্কেটিং। কোম্পানীর প্রোডাক্ট নিয়ে সারা বাংলাদেশে ঘুরবি। মাস শেষে টি.এ, ডি.এ বিল করবি। আমাদের মতো ইন্ট্রোভার্ট ছেলেদের কাজ হল সকাল নয়টা-পাঁচটা অফিস করা। কি আছে এই জীবনে? সকাল ন’টা হলে মুরগীর খোয়াড়ে ঢুকি। সারাদিন ক্লায়েন্টদের সাথে বকবক করি। সন্ধ্যা হলে কুকুরের মত হাঁপাতে হাঁপাতে বাসায় ফিরি। তুই এই লাইনে ঢুকবি কেন?
পার্থ থমথমে মুখে বলল,
মার্কেটিং জব মানুষকে চাপাবাজ করে তোলে। চাপাবাজি আমার পছন্দ না।
মুচকি হাসলাম।
এটা তো ঠিক বললি না। মৌরিকে তুই যা বলেছিস - সব সত্যি? এর মধ্যে চাপাবাজির কিছু নাই?
পার্থ কিছুক্ষণ স্থির চোখে তাকিয়ে রইল। কিছু বলল না। এই মুহূর্তে মৌরীর কথা তোলা হয়তো উচিত হয়নি।
মৌরিরর সাথে আমার প্রথম দেখা এক ছুটির দিনে দুপুরে। ছুটির দিন পেয়ে ম্যারাথন ঘুমাচ্ছি। কড়া নাড়ার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। দরজা খুলে হকচকিয়ে গেলাম। অসম্ভব সুন্দরী একজন তরুণী দাঁড়িয়ে আছে। স্লীম দেহ। উজ্জ্বল চোখ।
এ জাতীয় মেয়েদের সাধারণত পাজেরোতে আলগোছে বসে থাকতে দেখা যায়। কিংবা ইন্ডিয়ান টিভি চ্যানেলগুলোতে হাসিমুখে উপস্থাপন করতে দেখা যায়। মেয়েটি ভীত চোখে আশেপাশে তাকাচ্ছে। আমাকে দেখে ঢোক গিলে বলল, শুনুন, এখানে পার্থ থাকে?
হ্যাঁ।
ওকে একটু ডেকে দিবেন?
ও তো রুমে নেই। আপনি কে?
আমি মৌরি।
ও আচ্ছা। ভিতরে এসে বসুন।
ভিতরে আসার কথা শুনে মেয়েটি চমকে উঠল। তার কপাল ঘামছে। সে দরজার ফাঁক দিয়ে এমন ভঙ্গিতে তাকাচ্ছে যেন এটা রুম না, বাঘের গুহা। ভেতরে ঢুকলেই ঘাপটি মারা বাঘ থাবা মেলে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
সে ইতস্তত করে বলল,
না, এখন বসবো না। ও কোথায় গেছে বলতে পারেন?
কিছু তো বলে যায়নি। হয়তো টিউশনিতে গেছে।
মেয়েটি অবাক গলায় বলল,
পার্থ টিউশনী করে!
গলার স্বর শুনে বুঝলাম- ভুল হয়ে গেছে। পার্থ হয়তো টিউশনীর ব্যাপারে কিছুই বলেনি। গ্রামের কোন ধনীর দুলাল হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়েছে।
কথা কাটানোর জন্য তাড়াতাড়ি বললাম-
ও আসলে ঠিক টিউশনী করে না। তবে নিজেই ইংরেজী শেখার জন্য এক টিউটরের কাছে যায়।
মেয়েটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
ও তাই বলুন। কিছুদিনের মধ্যে ও আমেরিকার অ্যাম্বেসি ফেইস করবে তো। তাই প্রিপারেশন নিচ্ছে। ওর টোফেলের স্কোর জানেন?
না।
ওমা, আপনি জানেন না? আপনি ওর রুমমেট। আশ্চর্য!
আমি ইতস্তত করে বললাম,
আসলে আমার স্মরণশক্তি খুবই খারাপ। আমাকে হয়তো বলেছিল।
মেয়েটি হড়বড় করে বলল, ওর টোফেলের পিবিটি স্কোর সিক্স হানডেড ফিফটি। বাংলাদেশে টোফেল স্কোরের ইতিহাসে ও পাঁচজনের একজন!
ও আচ্ছা। আপনি ভিতরে এসে বসুন।
না, এখন আর বসবো না। আমি আসি।
কিছু বলতে হবে?
বলবেন মৌরী এসেছিল। এইটুকু বললেই হবে।


পার্থ অনেকক্ষণ চুপ থেকে বলল,
তুই তো প্রেম করিস না। তাই জানিস না, প্রেম টিকিয়ে রাখতে কত কলা-কৌশল দরকার।
আমিও তো এই কলাকৌশলের কথা বলছি। মার্কেটিং জবেও তো তাই। কোন মানুষের সাথে কথা বলে তাকে তোর স্বপক্ষে আনার চেষ্টা করছিস। এটা পৃথিবীর কঠিন আর্টের একটি। তুই সেই আর্ট নিয়ে কাজ করছিস। ব্যাপারটা শুধু চাপাবাজির দৃষ্টিতে দেখছিস কেন?
পার্থ কিছু বলল না। চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে রইল।

মানুষের জীবন শান্ত নদীর মতো একইভাবে বহে না। দু’ মাসের মধ্যে আমাদের মেসে ভাঙ্গন শুরু হল।
মাহবুব বিয়ে করে আলাদা বাসা নিল। আমাদের মধ্যে সবচেয়ে শান্ত প্রকৃতির মাহবুব। অথচ সেই কেমনে কেমনে যেন সবার আগে বিয়ে করে ফেলল। তাপস বদলি হল চিটাগাং। আমি চলে গেলাম দিনাজপুর।
পার্থর সাথে প্রথম প্রথম মোবাইলে যোগাযোগ ছিল। ধীরে ধীরে তাও কমে গেল। নতুন জায়গায় নতুন রুমমেটদের সাথে আড্ডা, হৈ-চৈ, কার্ড নিয়ে মেতে উঠলাম।
পার্থর সাথে শেষ দেখা তাও চার বছর আগে।
এক আত্মীয়কে দেখতে পিজিতে এসেছি। হঠাৎ দেখি পার্থ কালো একটা ব্যাগ নিয়ে ডাক্তার রুম থেকে বেরুচ্ছে।
কীরে, তুই এখানে?
পার্থ আমাকে দেখে চমকে উঠল।
এই তো ডক্টর ভিজিটে এসেছিলাম।
কি করছিস?
অপসোনিনে চাকুরী নিয়েছি। মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ।
বলেই কেমন জানি অপরাধী ভঙ্গিতে হাসল।
ও হয়তো ভাবছে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভের চাকুরী করবে না বলে ও যে বড়াই করেছিল আমি হয়তো সেই প্রসঙ্গ তুলে ওকে খোঁচা দিবো। আমি তার ধারে কাছেও গেলাম না।
বললাম, খারাপ কি? ভাল কিছু না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাক।
ও উদাস ভঙ্গিতে বলল, আর লেগে থাকাথাকি। দেখবি, একদিন হুট করে ছেড়ে দিয়েছি। প্রতিদিন ওষুধের স্যাম্পল নিয়ে ডাক্তারের পিছনে ছোটাছুটি ভাল লাগে না।

পাঁচ বছর আগের পার্থ আর আজকের পার্থ- কত তফাৎ!
পার্থ বলল, হা করে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? চল গাড়িতে যেয়ে বসি।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।
গাড়ি কিনেছিস নাকি?
গাড়ি না হলে বাংলাদেশের ব্যবসা জমে? নানা জায়গায় ছুটাছুটি করতে হয়। গাড়িতে উঠে পার্থ গম্ভীর গলায় বলল,
কামাল, রবীন্দ্রসঙ্গীতটা দাও তো?
দারুণ আরামের গাড়ি। আরামে চোখ বন্ধ হয়ে আসে।
পার্থ সিগারেট বের করে ধরাল। দামী জিনিস। প্যাকেটটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিল। আমার হতভম্ব অবস্থা তখনও কাটেনি। বললাম,
তুই বিল গেটস হয়ে উঠলি কিভাবে? আলাদিনের চেরাগ পেয়েছিস নাকি শ্বশুর বাড়ির সম্পত্তি পেয়েছিস?
পার্থ মুচকি হাসল।
এসব কিছুই না। ব্যবসা ধরেছি।
কিসের ব্যবসা?
ওষুধের ব্যবসা। দেখলাম- ওষুধের ব্যাগ নিয়ে ডাক্তারদের পিছনে ঘোরাঘুরির কোন মানে হয় না। নিজেই ওষুধের দোকান খুলে বসলাম। বাঙ্গালী হল ‘অসুখখ্যা’ জাতি। রাতারাতি আমার অবস্থা পাল্টে গেল। এখন সারা বাংলাদেশে আমার চল্লিশটা ফার্মেসী আছে। ঢাকাতেই আছে বারটা।
বলিস কি? শালা তুই তো উঠে গেলি আমাদের মধ্যে!
পার্থ লাজুক ভঙ্গিতে হাসল। কিছু বলল না। জিজ্ঞেস করলাম,
বিয়ে করেছিস?
না।
হঠাৎ মৌরীর কথা মনে পড়ল।
তোর মৌরীর খবর কি?
পার্থর মুখ কালো হয়ে গেল। শুকনো মুখে বলল, ভাল।
বিয়ে করছিস না কেন?
পার্থ জবাব দিল না। গাড়ির কাচ নামিয়ে দিল। হু হু করে বাতাস ঢুকছে। পার্থ বলল, তুই বিয়ে করেছিস?
না।
তুই বিয়ে করছিস না কেন?
তোর অবস্থা আর আমার অবস্থা এক? পাঁচ বছর যাবৎ চাকুরী করছি, কিন্তু পাঁচ পয়সাও জমাতে পারলাম না।
পার্থ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ওর এতক্ষণের ঝলমলে চেহারাটা কেমন যেন মলিন হয়ে উঠেছে। পার্থ ধীরে ধীরে বলল,
মৌরীর বিয়ে হয়ে গেছে!
আমি কিছু বললাম না। স্থির চোখে তাকিয়ে রইলাম।
পার্থ কিছুক্ষণ থেমে বলল,
মৌরীকে হারানোর ভয়ে তাড়াতাড়ি মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভের চাকুরীটা নিলাম। টোফেল, জিআরই সব ভেস্তে গেল। একদিন সাহসে ভর করে ওকে বললাম, চল, বিয়ে করে ফেলি। আমার যা আয়, দু’জনে কোন রকম চলে যাবে।
মৌরী বলল, বাড়িতে জানাও।
বাড়িতে জানালাম।
ওর এক মামা শুনে বললেন,
কোম্পানী তোমাকে কত দেয়?
টার্গেট ফুলফিল করতে পারলে পনের-ষোল হাজার টাকা পাই!!
মামা শুনে হাসলেন।
তুমি জান, মৌরীর প্রতিদিন হাত খরচ কত?
আমেরিকা থেকে ওর বাবা ওর হাত খরচের জন্য প্রতিমাসে সাতশ পঞ্চাশ ডলার পাঠান। প্রতিদিন পঁচিশ ডলার। পঁচিশ ডলারে কত টাকা বলতে পার?
চুপ করে থাকলাম। মামা বললেন,
প্রায় দুই হাজার। মাসে ষাট হাজার। তুমি যেদিন মান্থলি সিক্সটি থাউজ্যান্ড আয় করতে পারবে, সেদিন আমার সাথে দেখা কর। তোমার সাথে কথা বলবো।
পার্থ থামল। ছোট্ট করে একটা নিঃশ্বাস ফেলল। সেই নিঃশ্বাসে গভীর হতাশামাখা। সে তার পিঠ সীটের সাথে এলিয়ে দিয়েছে। এক সময় শান্তগলায় বলল,
এখন আমার ‘মান্থলি ইনকাম’ প্রায় দুই লক্ষ। গাড়ি কিনেছি। ধানমণ্ডিতে ফ্লাট কিনেছি। সবকিছুই হয়েছে। শুধু ও নেই!!

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫১

অশ্রুকারিগর বলেছেন: হৃদয় ছুঁয়ে গেল।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫২

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই, পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৪

আজমান আন্দালিব বলেছেন: জীবনের গল্প। ভালো লাগলো।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫২

এ এস রিপন বলেছেন: ভালো লেগেছে শুনে ভালো লাগল। পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

৩| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আহা!

সেই বাংলা সিনেমার গানটা মনে পড়ে যায়

টাকারে তুই সময় মতো আইলি না ;)

একটানে পড়ে গেলাম! ++

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৫

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই ঠিকই বলেছেন। এই বস্তু ঠিক সময় মতো আসে না বলে আমাদের অনেক কিছুই এলোমেলো। পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

৪| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৫

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: আজ পার্থর সব আছে শুধু যে পাশে থাকার সে নেই।

পড়তে পড়তে শেষে এসে মন খারাপ হয়ে গেল।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯

এ এস রিপন বলেছেন: সবকিছু পাওয়া যায় না বলে জীবনের হাহাকারও শেষ হয় না। কোন না কোন বিষয়ে দীর্ঘশ্বাস সব মানুষের জীবনে থাকে। পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

৫| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৮

মুদ্‌দাকির বলেছেন: অসাধারন সুন্দর গল্প!!

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই, পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ওরে বাপরে! অসাধারণ লেখা| পার্থের এই সংগ্রামী মনোভাবটা ভাল লেগেছে| আর ভাল লেগেছে আপনার বলার ধরনটা| ফাটাফাটি

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০০

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই, পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

৭| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২০

ধমনী বলেছেন: বড় লেখা পড়ার অভ্যেস নেই। কিন্তু আপনার গল্পটা টেনে নিল শেষ পর্যন্ত। দারুণ।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০২

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই, আগ্রহ নিয়ে যে পড়েছেন- এজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

৮| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: চমৎকার

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০০

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই, পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

৯| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৫

রাশেদ মহাচিন্তিত বলেছেন: ভালো লিখেছেন| আমিও টুকটাক লিখি| যাই হোক, এক যায়গায় বলেছেন পার্থর সাথে শেষ দেখা ৪ বছর আগে হয়ছিল, আর আরেক যায়গায় বলেছেন পাচঁ বছর পরের পার্থক্যের কথা| এখানে একটু গড়মিল আছে| একটু খেয়াল করে দেখবেন|

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২২

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই, গড়মিল না। প্রথমবার দেখা হয়েছিল- ৪ বছর আগে। শেষ যখন দেখা তা মেস জীবন থেকে ৫ বছর বুঝাতে চেয়েছি। যাই হোক মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ! আপনার ব্লগে গিয়ে আপপনার লেখা পড়ব।

১০| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:১০

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: একদিন যে পার্থ ষাট হাজার টাকা আয় করতে পারেনি এখন সেই পার্থ এখন দু লক্ষ টাকা আয় করে কিন্ত তার পরেও তার না পাওয়ার একটা দীর্ঘশ্বাস থেকেই গেল ........


চমৎকার হয়েছে জীবন থেকে নেয়া গল্পটি। ধন্যবাদ।


ভালো থাকবেন নিরন্তর।

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:২৬

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই, মানুষের জীবনটাই এমন! কোন না কোন অপ্রাপ্তি মানুষের জীবনে থেকে যায়। একজীবনে সবকিছু পূরণ হয় না। পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

শুভ কামনা রইল!

১১| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৪

অহন_৮০ বলেছেন: চমৎকার হয়েছে

১২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৯

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই, পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!



শুভ কামনা রইল!

১৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৫

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: গল্পের বর্ণনা শৈলী চমৎকার !! ভালো লাগলো ---

১৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৩

এ এস রিপন বলেছেন: ভাই, পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ!

শুভ কামনা রইল!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.