নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

বরেন্দ্রভূম থেকে জাহাঙ্গীরনগরঃ বাংলার চিত্রকলার ইতিহাস, পর্ব ৭ (অবিভক্ত বঙ্গে ইউরোপীয় চিত্ররীতির প্রাতিষ্ঠানিক সূত্রপাত)

১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১২

সরকারি - বেসরকারি বিবিধ বিজ্ঞাপন প্রকাশকারি সংস্থা 'ক্যালকাটা গেজেট' এ ১৭৮৫ সালে একটি ব্যতিক্রমধর্মী বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞাপনে জনৈক শিল্পী মিঃ হোন জানান, এখন থেকে সপ্তাহে তিনদিন, তিনি তার রাধাবাজারের বাড়িতে ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়দিগকে ছবি আঁকা শেখাবেন। কোলকাতার জনসাধারণ নানা রকম বিজ্ঞাপন দেখে অভ্যস্ত, কিন্তু বিজ্ঞাপন দিয়ে পেইন্টিং এর মাস্টারির প্রস্তাবনা তাদের কাছে একদম নতুন একটা ব্যাপার ছিল।

ভেবে দেখার বিষয় যে, ততদিনে ১৭৭৩ এর ব্রিটিশ সরকারের তরফ থেকে ইন্ডিয়া রেগুলেটিং অ্যাক্টের একযুগ পার হয়ে গেছে। ইংল্যান্ড থেকে আসা রাজকর্মচারিবৃন্দ নববিজিত এ উপমহাদেশে নিজ নিজ কর্মকাণ্ড বুঝে শুনে নিয়ে বেশ জাঁকিয়ে বসেছেন। প্রাথমিকভাবে যারা ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাবসার নামে আসে, সে বেনিয়া ইউরোপিয়ানদের মাঝে স্বজাত - সংস্কৃতির প্রতি নাড়ির টান ছিল ক্ষীণ। তারা লুটেপুটে খেয়ে থুয়ে মৌজ মস্তিতে জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিল। তাদের অনেকে ধনী ভারতীয় ব্যাবসায়িদের সাথে এক মদের আসরে বসে হুঁকোর নল ভাগ করে তামাক টেনেছে, তাদের অনেকে ভারতীয় রমণীর প্রেমে পড়ে বিয়েশাদী করে ভারতেই থিতু হয়েছে। কিন্তু, ইন্ডিয়া রেগুলেটিং অ্যাক্ট নাজিল হবার পর যে ইংরেজরা সরকারী চাকুরে হিসেবে ভারত শাসন করতে আসেন - তাদের শরীরে ইংরেজ আভিজাত্যের নীল রক্ত, আর মানসিকতায় স্যুডো মিশনারিদের আকাঙ্খা - 'অন্ধকারে নিমজ্জিত এ দীন-হীনজাতিকে আলোর পথ দেখাইতে হইবে ...' । এই ইংরেজ সরকারী চাকুরেদের কোলকাতায় থানা গেড়ে বসবার পর মুঘল আমলে বাংলার প্রশাসনিক কেন্দ্র মুর্শিদাবাদের শৌর্যের পতন হয়। কোলকাতা পরিণত হয় ভারতের বুকে ইংরেজদের রাজধানীতে।

শুধু থানা গেড়ে বসলেই তো হবে না, ব্রিটিশ আদলে মহল্লা নির্মাণ করতে হবে, বাড়িঘর তৈরি করতে হবে, ঘরে ফায়ারপ্লেসের বিপরীতে - দেয়ালে পূর্বপুরুষদের ন্যায় বড় প্রতিকৃতি চিত্র ঝুলাতে হবে। সেই সূত্রেই অবিভক্ত বাংলার রাজধানী কলাকাতায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইংরেজ ও ইউরোপীয় শিল্পীদের আগমন ঘটতে থাকে, যারা মাতৃভূমিতে যশ উপার্জনে ব্যর্থ হয়েছিলেন। এদের মধ্যে টিলি কেটল, জোফানি, জর্জ চিনোরি, উইলিয়াম হজেস উল্লেখযোগ্য।

ব্রিটিশদের মধ্যে বঙ্গীয় মোঘল আমলের ধারক-বাহক আধশিক্ষিত চিত্রকরদের একটা প্রকৃত কারিকুলামের মধ্যে এনে ইউরোপীয় কেতায় চিত্রশিল্প শিক্ষা দেয়ার প্রথম একটা প্রক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় ১৮৩৯ সালে। মাসিক 'ইন্ডিয়া রিভিউ' পত্রিকার সম্পাদক ফ্রেডরিক কোরবিনের উদ্যোগে কোলকাতা টাউন হলে একটি সভা আয়োজিত হয় যাতে উপস্থিত বিবিধ সুধীজনকে নিয়ে 'মেকানিকাল ইন্সটিটিউশন' প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অবশ্য খুব নান্দনিক কিছু ছিল না। পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী তার 'রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ' গ্রন্থে উল্লেখ করেন, উক্ত মেকানিক্যাল ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিল - 'নির্মাণ প্রকল্প সহায়ক ব্যবহারিক কাজে এ দেশের ছাত্রদের দক্ষ করে তোলা'। এই ইন্সটিটিউটের ঝোঁক তাদের মাথায় বেশীদিন টেকে নি। ফলে শীঘ্রই এর কার্যক্রম স্তিমিত হতে হতে একসময় পূর্ণচ্ছেদ পড়ে যায়।

শিল্পশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা পুনরায় প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে ১৮৫১ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত গ্রেট এক্সিবিশনে প্রদর্শিত ভারতীয় কারুকলার নিদর্শনগুলি ইউরোপীয় কলাশিল্পের জগতে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেবার পর। মোঘল - পারসিক সংমিশ্রণজাত ভারতীয় কারুশিল্পের রূপ, নকশা, ও রঙের ব্যাবহার এতটাই স্বীকৃতি অর্জন করে নিয়েছিল যে ইংল্যান্ডের ডিজাইন স্কুলের তৎকালীন সিলেবাস রিভাইস করে তাতে ভারতীয় আলংকারিক কারুকলা পাঠ ও চর্চার ব্যবস্থা করা হয়।

এই একটা ব্যাপার আমাকে ইতিহাসের পাঠক হিসেবে প্রায়ই বড় আমোদ দেয় যে, যে কোন বস্তু একবার ইউরোপের স্বীকৃতি পেয়ে যাবার পর আমরা তাকে মাথায় তুলে নৃত্য করা শুরু করি। এবং আমাদের এই যে প্রতিক্রিয়া, তার ইতিহাস অনেক পেছনঅব্দি বিস্তৃত। ইংল্যান্ডে হইচইএর জন্ম দিয়ে ফেলার পর ভারতীয় চিত্রকলার প্রচার - প্রসারে ভারতে নিযুক্ত ইংরেজ কর্মচারি এবং নব্যবঙ্গীয় সভার রত্নেরা নড়েচড়ে বসেন, কি করে এদেশে চিত্রশিক্ষার তমসাচ্ছন্ন আকাশে দ্রুতগতিতে ঊষার প্রত্যাগমন ঘটানো যায়।

১৮৫৪ সালে গঠিত হয় 'দি ক্যালকাটা স্কুল অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্ট'। এর পেছনের সূত্রধরদের নাম মনে রাখা প্রয়োজন। প্রথমেই আসে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার কর্নেল ই. গুডউইনের নাম। তারপর উল্লেখ করা লাগে হজসন প্রাট, রাজেন্দ্রলাল মিত্র, সূর্যকুমার গুডিভ চক্রবর্তী, রামগোপাল ঘোষ, রামচন্দ্র মিত্র, প্যারীচাঁদ মিত্র ও প্রতাপসিংহের নাম। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে প্রস্তাবিত আর্ট কলেজে শেখান হবে -

(ক) আদর্শ (মডেল/অবজেক্ট) ও প্রকৃতি (নেচার) অনুসরণে অঙ্কন,
(খ) ধাতুর পাত, কাঠখোদাই, এবং লিথোগ্রাফি তথা ছাপার জন্যে পাথরফলকে আঁকা,
(গ) মাটি ও মোমের সাহায্যে মৃৎপাত্র ও বিবিধ জিনিস বানানো।

শরচ্চন্দ্র দেব তার 'কলিকাতার ইতিহাস' গ্রন্থে শিল্পশিক্ষার প্রতিষ্ঠানটির প্রাথমিক প্রয়াসগুলি বিবৃত করে উল্লেখ করেন, এই স্কুল অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্টের - 'উচ্চ অঙ্গের শিল্প শিক্ষা দিবার আদৌ উদ্দেশ্য ছিল না। যাহাতে দেশের কতকগুলি লোক সহজে জীবিকার্জনে সমর্থ হয়, সেই উদ্দেশ্যেই' এই বিদ্যালয়ের উন্মেষ ও যাত্রা।

প্রতাপচন্দ্র সিংহ তার গরানহাটার একটি বাড়ি বিনা ভাড়ায় ছেড়ে দেন এই স্কুলের কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে। ভারতীয় ও বিদেশী শিল্পানুরাগী অনেকেই এককালীন চাঁদা দেন স্কুলের অর্থনৈতিক ভিত্তি নির্মাণের জন্যে। ১৮৫৪ সালের ১৬ অগাস্ট মূর্তি ও মৃৎশিল্পের শিক্ষক মিঃ রিগো এবং অঙ্কনের শিক্ষক মিঃ আগ্যায়ার স্কুলটিতে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করেন মূর্তি - তথা স্কাল্পচার ডিপার্টমেন্টে ৪৫ জন এবং ড্রয়িং - পেইন্টিং ডিপার্টমেন্টে ৫০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে। পরবর্তী বছর এই স্কুলের শিক্ষক - শিক্ষার্থীদের কাজ নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করলে তা কোলকাতার শিল্প সমঝদার জনগোষ্ঠী এবং সংবাদমাধ্যমের মধ্যে সাড়া সৃষ্টি করে। অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থীর স্থান সঙ্কুলানের জন্যে বিদ্যালয় নিয়ে আসা হয় কলুটোলার মতিলাল শীল ফ্রি কলেজ ভবনে। এই বছরেই এচিং , কাঠখোদাই ইত্যাদি শেখানোর জন্যে ইংল্যান্ড থেকে তিনশো টাকা বেতনে তিন বছরের জন্যে নিয়ে আসা হয় টি এফ ফাউলারকে।

বিদ্যালয়ের এই অগ্রগামীতার পক্ষে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় অর্থাভাব। সদস্য - শুভানুধ্যায়ীদের এককালীন চাঁদা, আর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নামমাত্র বেতনে বিদ্যালয়ের ব্যয়ভার বহন করা সম্ভবপর থাকে না। সরকারের কাছে বহু দেনদরবারের পর বড়লাট ক্যানিং প্রাথমিক ভাবে মাসে ছয়শ' টাকা অর্থ বরাদ্দ করেন। কিন্তু বছরখানিকের মধ্যেই (১৮৫৭) সিপাহী বিদ্রোহ সংঘটিত হলে সে বরাদ্দ মাসে তিনশো টাকায় নেমে আসে। এতে করেও বহু কষ্টেসৃষ্টে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলতে থাকে। বিদ্যালয়ের পাঠক্রম রিভাইস করে তাতে মডেলিং , মোলডিং, ফিগার ড্রয়িং, ল্যান্ডস্কেপ ড্রয়িং, পারস্পেক্টিভ ড্রয়িং এবং ফটোগ্রাফি শেখান শুরু হয়। বিদ্যালয়ের পাঁচজন ছাত্র বিদ্যালয়ের শুভানুধ্যায়ী বিচারপতি লরেন্স পিলের নামাঙ্কিত বৃত্তি লাভ করে। এরপরেও বিদ্যালয়ের আর্থিক দেনা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সরকার বরাবর আর্জি জানাতে হয় - বিদ্যালয়ের পেছনে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে, নতুবা সম্পূর্ণ বিদ্যালয় অধিগ্রহণ করতে।

বাংলার বড়লাট তখন সিসিলি বিডন, যিনি এই বিদ্যালয়ের উদ্যোক্তাদের একজনও ছিলেন। তার চেষ্টায় বিদ্যালয়টি সরকারী করে নেয়া হয়, এই শর্তে যে - ইংল্যান্ড থেকে একজন যোগ্য অধ্যক্ষ এনে তার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। সেই সূত্র ধরেই ১৮৬৪ সনের ২৯ জুন হেনরি হোভার লক ইংল্যান্ড থেকে এসে বিদ্যালয় পরিচালনা সমিতির কাছ থেকে বিদ্যালয়ের ভার গ্রহণ করেন। অবিভক্ত বঙ্গের চিত্রকলা শিক্ষার ইতিহাসে যুক্ত হয় নতুন একটি অধ্যায়, যার সূত্র ধরে আমরা খুঁজে পাবো একদিন আমাদের জয়নুল আবেদিন - কামরুল হাসান - সফিউদ্দিন আহমেদ, সর্বপরি আমাদের আজকের চারুকলাকে।

ঋণস্বীকারঃ

আমার এই প্রবন্ধের প্রায় সব তথ্যই অশোক ভট্টাচার্যের 'বাংলার চিত্রকলা' (পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি) থেকে গৃহীত। ভারতভাগের আগ পর্যন্ত বাংলার চিত্রকলার জন্ম - বিস্তার ও বিকাশ সংক্রান্ত তার এই বইটি অমুল্য ও প্রামাণ্য।

এছাড়াও, এই রচনাটি তৈরি করবার সময় আরও যে সমস্ত বই আমার টেবিলে স্থান পেয়েছে তারা হল - ভারতীয় চিত্রকলা - অশোক মিত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড, আনন্দ পাবলিকেশনস), এবং চিত্রকথা - বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় (অরুণা প্রকাশনী, কোলকাতা)

এই সিরিজের আগের লেখাটি - কালীঘাটের পট

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৪

বিড়ি বলেছেন: দুর্দান্ত একটা সিরিজ হতে যাচ্ছে , আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় রইলাম।
"তাদের শরীরে ইংরেজ আভিজাত্যের নীল রক্ত, আর মানসিকতায় স্যুডো মিশনারিদের আকাঙ্খা" উপমাটা দারুন লেগেছে।

১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ। চিত্রকলার ইতিহাস নিয়ে একনিষ্ঠ কৌতূহল না থাকলে হয়তো আগ্রহ ধরে রাখা মুশকিল হবে। এমন কিছু মজাদার ইতিহাসের বয়ান এ সিরিজে উঠে আসবে না, বরং ইতিহাস বর্ণনা করা হবে খুবই স্পেসিফিক একটা অ্যাঙ্গেল থেকে। মাঝেমধ্যে চটুল দু' একটা বাক্য পেয়ে যাবেন , যা হয়তো বিনোদনের খোরাক জোগাবে , যেমন একটি বাক্য মেনশন করলেন।

শুভকামনা।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৫৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: দুর্দান্ত লিখেছেন । চমৎকার লেখা পড়লাম।

১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ নেওয়াজ ভাই।

৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: ইংরেজদের আমার খুব খারাপ মনে হয় না। তারা এই উপমহাদেশে অনেক ভালো ভালো কাজ করেছে।

১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৪৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: রাজীব ভাই, দীর্ঘদিন যাবত ব্লগিং করছেন। যেই ব্লগে কেউ যায় না, সেই ব্লগের পায়ের ছাপ রেখে আসছেন। নানান ব্লগারদের পোস্টে গিয়ে মন্তব্যের উত্তর ভালো হচ্ছে - টাইপের পীঠ চাপড়ানো কমেন্টও করছেন। সবই ভালো। এত কিছুর পর এখন অন্তত আলোচনা টু দা পয়েন্ট রাখার প্র্যাকটিসটা করুন! শুভকামনা।

৪| ১৮ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:০৮

বিড়ি বলেছেন: আচ্ছা "চটুল দু' একটা বাক্য" এর খোঁজেই থাকবো না হয় তাহলে, যে যেটার যোগ্য ।
আশা করি অন্যান্য সিরিয়াস একাডেমিক জ্ঞান সম্পন্ন ব্লগারগন একে পিয়ার রিভিউ দিয়ে আমাদের ঋদ্ধ করবেন।

১৮ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার মনঃকষ্টের কারণ বুঝতে পারছি। আপনার মন্তব্যের এরকম রুড প্রতিমন্তব্য করাটা আমার ঠিক হয় নি। আমি দুঃখিত।

বোঝা যায় আপনার আত্মমর্যাদা বোধ তীক্ষ্ণ। আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মানুষদের আমি পছন্দ করি। আমি আপনাকে ভিন্ন পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে চিন্তা করবার জন্যে কিছু সম্পূরক প্রশ্ন রেখে যাচ্ছি। চিন্তা ভাবনা করে দেখতে পারেন। উত্তর আমাকে না জানালেও চলবে, কারণ প্রতিটা প্রশ্নই রেটোরিক।

আপনার আত্মমর্যাদাবোধ কী সবসময় একভাবেই কাজ করে, নাকি কমেন্ট স্ল্যাপিং -এর স্বীকার হলে সেটা অধিকহারে টনটনায়? নতুবা, নিজের পিতৃপ্রদত্ত নাম ছেড়ে 'বিড়ি'র মত একটা অপ্রাসঙ্গিক এবং কোন ধরণের সিম্বলিক বা মেটাফরিক্যাল দ্যোতনাবিহীন নিকের আড়ালে একটা ইন্টেলেকচুয়াল ফোরামে কথা বলতে আসাটা আপনাকে লজ্জিত করে না?

আন্তরিক শুভকামনা।

৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:২৭

বিড়ি বলেছেন: আপনার প্যাসিভ এগ্রেসিভ আচরণে খুব মজা লাগছে! যদিও আপনার প্রশ্নগুলো অবমাননার জন্যে করা তাও উত্তর দিচ্ছি, দেখুন আপনিও ভাবনার অন্য কোন দিক খুঁজে পান কি না। নাম আমার কাছে খুব সাধারণ একটা বিষয় "নামে কি আসে যায়" ধরনের। আমি ব্লগে খুব একটা আসি না এবং লেখালেখিও করি না তো আমার মতো 'ইতর জনে'র নাম হাতি-ঘোড়া-ঘাস-পাতা যাই হোক তাতে কিছু যায় আসে না। হয়তো অন্যের কাছে আমার নিকে উচ্চস্তরের মনে নাও হতে পারে কিন্তু তাতে আমার বিশেষ কিছু যায় আসে না (ব্যক্তিগত অভিরুচি এবং স্বাধীনতা)। তাছাড়া ব্লগ কর্তৃপক্ষ থেকে ছদ্মনামে নিক নেয়া যাবে না এমন কোন নিয়ম আছে বলেও আমি জানি না। তাই বিব্রত হবার প্রশ্নই আসে না। বরঞ্চ আমি হয়তো বিব্রত হব আচরণের অভব্যতায়। যেহেতু আপনি শিল্প গবেষক তাই অবাক হচ্ছি ভেবে যে, পারসোনাল মেটাফোর বলে যে একটা বিষয় আছে সেটা কেন ভাবছেন না? আপনার কাছে হয়তো "বিড়ি" শব্দটা "অপ্রাসঙ্গিক এবং কোন ধরণের সিম্বলিক বা মেটাফরিক্যাল দ্যোতনাবিহীন" আমার কাছে সেটা হয়তো প্রলিতারিয়েত শ্রেণির রিপ্রেজেন্টিটিভ। আর এই ব্লগকে জনসাধারণের ব্লগ বলেই মনে করি এটা আবার 'ইন্টেলেকচুয়াল ফোরাম' হলও কবে থেকে ঠিক মনে পড়ছে না। আমি স্বল্প জ্ঞানে যতটুকু বুঝি ব্লগ আর জার্নাল এক জিনিস তো নয়। "টনটনায়" এর মতো স্ল্যাং এর ব্যবহার করে আপনিই প্রমাণ দিলেন এই ইন্টেলেকচুয়াল ফোরামের অবস্থা। আপনার মত একাডেমিক ব্যক্তিত্বের থেকে এমনটা আশা করিনি, মন্তব্য/নিক অপছন্দ হলে সেটা সুন্দর ভাবে বলার উপায় অবশ্যই আপনার জানা আছে।

যাই হোক, আপনার এলিট ক্লাস লেখায় আমার "ক্যাবলা" মন্তব্য হয়তো আপনার বেমানান লাগছে আপনি চাইলে আপনার সম্মানে আমার প্রথম মন্তব্য মুছে দিব না হয়।
ভালো থাকবেন।

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:১১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আমাদের পুরো আলোচনাটাই খুব দুর্ভাগ্যজনকভাবে এগিয়েছে। আমি আমার দিকের ভুল স্বীকার করে নিচ্ছি, এবং আপনার মনঃকষ্টের জন্যে ক্ষমা চাইছি।

দুটো জায়গায় আপনার আর আমার চিন্তায় মৌলিক তফাৎ আছে, আপনাকে কষ্ট দেওয়ার জন্যে বলা না , বরং আগের আলোচনায় বারবার উঠে এসেছে বলেই উল্লেখ করতে চাই।

প্রথমত, আমি কোনদিনই ছদ্মনামের আড়ালে, নিজের পরিচয় গোপন করে লেখালিখির বিষয়টি বুঝি নি। যে ব্যক্তি একটি পাবলিক/ ইন্টেলেকচুয়াল ফোরামে নিজেই নিজের প্রকাশিত চিন্তার দায়ভার গ্রহণ করতে চায় না, বা সাহস রাখে না - তার সাথে আমি কেন আলাপে যাবো? আমার সময়ের মূল্য আছে। সময়ের মূল্য আসলে সবাই আছে, কিন্তু সেটা সবাই বোঝে না, আমি চেষ্টা করি তাকে ভ্যালু দেবার। সম্ভব হলে নিক থেকে আসা প্রতিটি কমেন্টে আমি নিরুত্তর থাকতাম।

দ্বিতীয়ত, আমি গোড়া থেকেই ব্লগিং কে বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তাচর্চার জায়গা হিসেবেই জেনে এসেছি, সেভাবেই মানুষের সাথে টুকটাক কমিউনিকেশন করেছি। ফেসবুক তো আগেই উচ্ছন্নে গেছে রিপন ভিডিও আর কান হেলালদের জ্বালায়, ক্রমে এই ব্লগও পরিশীলিত রৌদ্দুর রয়দের খোঁয়াড় হয়ে উঠবে যদি এখনি ব্লগ আর ফেসবুকের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা না হয়। এবং তা প্রায় হয়েও উঠেছে, দীর্ঘদিন যাবত লক্ষ্য করছি।

এই মন্তব্যসমূহ দু'একদিন রাখছি, যেহেতু আপনি ব্লগে নিয়মিত নন। আপনার নজরে পড়লে এগুলো মুছে দেবো। আপনি ভালো থাকবেন। ব্লগ ছাড়াও অবসর সময়ে অনেক পড়বেন। মন চাইলে লেখালিখিতে সময় দেবেন। সর্বাঙ্গীণ সুস্থ্য থাকবেন এই কামনা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.