নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯) ৭।শহরনামা (উপন্যাস, মাওলা ব্রাদার্স, ২০২২), ৮। মুরাকামির শেহেরজাদ ও অন্যান্য গল্প (অনুবাদ, ২০২৩), ৯। নির্বাচিত দেবদূত(গল্পগ্রন্থ, ২০২৪), ১০। দেওয়ানেগির চল্লিশ কানুন/ফরটি রুলস অফ লাভ (অনুবাদ, ঐতিহ্য, ২০২৪)
যেদিন সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদের মৃত্যুর সংবাদ পাই, সেদিন, সে মুহূর্তে আমি ছিলাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে, স্বাধীনতা স্তম্ভ ঘেঁষা জলাশয়ের পাশে। সংবাদটি ছিল শোকের, সংবাদটি ছিল শকেরও। আমরা প্রস্তুত ছিলাম না, এই সৃষ্টিশীল বাংলাদেশী চলচিত্র নির্মাতার এই অকাল প্রয়ানে।
আমার ছাত্র জীবনের একটা অংশ কেটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচিত্র সংসদ আন্দোলনের কর্মী হিসেবে। তারেক মাসুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র , জড়িত ছিলেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফিল্ম সোসাইটি নামক উক্ত অর্গানাইজেশনের সঙ্গে। উক্ত সংগঠনের সাথে জড়িত আমরা সবাই, স্বাধীনতাউত্তর বাংলাদেশের মানুষকে সুস্থ্যধারার চলচিত্রমুখী করার জন্যে তারেক মাসুদ এবং তার সহযোদ্ধারা যে সংগ্রামটি করেছেন, তার জন্যে তাঁকে গভীর সম্মানের চোখে দেখতাম। প্রোজেক্টর আর পর্দা কাঁধে তারেক মাসুদ, তানভীর মোকাম্মেল, শামিম আখতারের মত চলচিত্র সংসদ কর্মীরা ছুটে বেড়িয়েছেন একসময় গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
আমার ব্যক্তিগত সংগ্রামের জায়গা, আমার শৈশব থেকে, মূলত দুটি , যদি অ্যাকাডেমিক পড়াশোনাকে এক সাইডে চাপিয়ে রাখি। এক, বাংলা গান; দুই, বাংলা সাহিত্য।
আজকের এই পোস্ট, আমার একটি স্বপ্নকে ঘিরে। স্বপ্নের নাম ছিল - "আরশিনগরের খোঁজ"।
আমার বয়স যখন চার, আমার বাবা তখনি আমাকে হাতে ধরে রোকনুজ্জামান দাদাভাইয়ের তৈরি কিশলয় কচিকাঁচার আসরে সঙ্গীত বিভাগে ভর্তি করিয়ে দেন। ওখানে ছ' বছরের কোর্স সম্পন্ন করার পর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কণ্ঠ সঙ্গীত শেখা বন্ধ থাকে। ক্লাস সেভেনে যখন পড়ি, তখন বাবা একটা গিভসন জাম্বো গিটার কিনে দেন। এইচএসসির রেজাল্টের পর নিজের জমানো টাকা, আর মায়ের অনুদানে কেনা হয় ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের একটি কিবোর্ড। পিয়ানো বাজানোর তালিম নিই ওয়ারফেইজ ব্যান্ডের কিবোর্ডিস্ট শামস মনসুর গনি ভাই, এবং অ্যাডভান্স লেসন সমূহ নিই ওয়ারফেইজ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন শুভানুধ্যায়ী রোমেল আলী ভাই'র কাছে। গিটারের প্রাথমিক তালিম নিই ওয়ারফেইজ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইব্রাহীম আহমেদ কমল ভাইয়ের কাছে।
ছবি - ছায়ানটে, বিলম্বিত একতালে রাগ ভীমপলশ্রি পরিবেশনকালে
এখনো আমি ছায়ানটের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বিভাগের ছাত্র। আমার গুরু সঙ্গীতাচার্য রেজওয়ান আলী জগন্নাথ ইউনিভার্সিটির সঙ্গীত বিভাগের অধ্যক্ষ, ছায়ানটের উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত বিভাগের প্রধান দুই শিক্ষকের একজন। তিনি উত্তরভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের প্রাচীনতম ঘরানা - গোয়ালিয়র ঘরানার তালিম প্রাপ্ত।
ছবি - আমার গুরুজি, সঙ্গীতাচার্য রেজওয়ান আলী
২০০৯ সালে বাংলাদেশের আন্ডারগ্রাউন্ড মেটাল ব্যান্ড এম্বারসের সাথে আমার সংশ্লেষণ ঘটে। তাদের সাথে জ্যাম করা শুরু করি। এক বছর বাদে মেটালিয়ানস নামে আরএকটি ব্যান্ডের সাথে কাজ শুরু করি। যেহেতু তাঁরা মূলত মেগাডেথ, মেটালিকা, এবং আয়রন মেইডেনের মত থ্র্যাশ, বা হেভি মেটাল সং কাভার করতো , কীবোর্ডিস্ট হিসেবে আমার করনীয় খুব বেশীকিছু থাকতো না। যদিও আমি তখন টুকটাক চিলড্রেন অফ বডম, বা ড্রিম থিয়েটার ব্যান্ডের পিয়ানো বেইজড কিছু গান কাভার করা শুরু করেছি।
আমার ঝোঁক ছিল বরাবর নিজের গান করবার। নিজে গান লিখে সুর দিয়ে গাইবার। কিন্তু আমার আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ড মেম্বারদের আগ্রহ ছিল আমাকে মূলত কীবোর্ডিস্ট হিসেবে ব্যান্ডে রাখার, ফলশ্রুতিতে তাদের সাথে আমার সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। আমি নিজে নিজে গান লেখা, এবং পারফর্ম করা শুরু করি। এই প্রক্রিয়া এখনো জারি আছে।
এই লেখার মূল বিষয়বস্তুতে প্রবেশ করা যাক।
২০১৬ সালে, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করবার পর, প্রথমত আমার হাতে মিউজিকের পিছে ইচ্ছেমত খরচ করবার জন্যে টাকা আসতে শুরু করে; দ্বিতীয়ত, মাস্টারির সুবাদে, মিউজিসিয়ান ছাত্রদের সাথে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ঘটে।
ছবি - ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিকে, ক্লাসের ফাঁকে আমার ছাত্রছাত্রীদের সাথে
২০১৭ সালে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগে ইংরেজির দায়িত্ব নেয়ার পর চারুকলার সংস্কৃতিমনা ছেলেমেয়েদের সাথে পরিচয় হয়। ওখানেই , আমার দুই ছাত্র আয়াজ ফাতমি পৃথু (গিটারে) আর রাগিব এখওয়ান (পারকাশনে) কে নিয়ে একসাথে জ্যাম করা শুরু করি। কয়েকটি সেশন একসাথে মিউজিক করার পর আমাদের একটি ব্যান্ড ফর্ম করা সময়ের দাবী বলেই মনে করি।
প্রথম সমস্যা সামনে আসে নামকরণের। এমন একটি নাম ব্যান্ডের দেয়া প্রয়োজন হয়, যেটা একসাথে বাঙ্গালিয়ানা, এবং বৈশ্বিক চেতনার ধারক হবে।
ফিরে যাওয়ার জন্যে লালনের কোন বিকল্প আমাদের মাথায় আসে নি। লালনের গানের সাথে মিলিয়ে দলের নাম রাখা হল - "দা আরশিনগর প্রোজেক্ট" , বাংলায় - "আরশিনগরের খোঁজ"।
এই নামকরণের শানে নুজুল সংক্ষেপে এই যে - একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে মানুষে মানুষে এত ভিন্নমত, এত ভিন্নপথ, যার অধিকাংশই পরিপূর্ণভাবে দূর আর কোনদিনই সম্ভব নয়। আমরা গানে গানে এমন এক আরশিনগরের খোঁজে নামতাম, যেখানে মানুষ সকল ভেদাভেদ ভুলে, কিছুক্ষণের জন্যে হলেও, গানের সূত্রেই একতারে আবদ্ধ হবে, আমাদের সাথে গলা মিলিয়ে গাইবে, এবং আমাদের সেই মেহফিল পরিণত হবে লালনের সেই আরাদ্ধ আরশিনগরে, যার খোঁজে লালন বলেছেন -
"বাড়ির পাশে আরশিনগর
সেথা পরশি বসত করে
আমি একদিনও না দেখিলাম তারে ..."
কাজেই, আমাদের গানের দল আরশিনগর নয়, বরং এক আরশিনগরের অন্বেষণের প্রচেষ্টা, একটা প্রোজেক্ট, আরশিনগরের খোঁজ।
গানে গানে আত্মার মেলবন্ধন রচনার জন্যে দলের নামের সাথে শ্লোগান সংযুক্ত হল - "আরশিনগরের খোঁজঃ গানে আত্মার যোগ"।
দলের একটা লোগো প্রয়োজন হল। আমার পরামর্শ মতে, প্রাচীন রুম নগরের ঘূর্ণায়মান সূফী সাধকদের (হুয়ারলিং দারভিশ) আদলে বাংলার বাউল আঁকা হল, হাতে ধরিয়ে দেয়া হল একতারা।
ছবি - আমাদের ব্যান্ডের স্ট্রিট শো'র ব্যানার
পারফর্মেন্সের ক্ষেত্রে তারেক মাসুদের ফিলসফি আমাদের পথ প্রদর্শক হিসেবে আবির্ভূত হন। প্রাথমিকভাবে, আমরা আমাদের সমমনা মিউজিকের শ্রোতা বাড়ানোর জন্যে লক্ষ্য স্থির করি যত বেশী সম্ভব স্ট্রিট শো'র আয়োজন করা। সোজা ভাষায়, রাস্তায় গান গাওয়ার। আমাদের বেশীর ভাগ প্র্যাকটিস সেশনগুলো হত ঢাকা ইউনিভার্সিটির পথেঘাটে, ফুলার রোডে, ডাকসু ভবনের সামনে, কখনো চারুকলায়, অথবা সোহরাওয়ারদিতে, বা টিএসসিতে।
ছবি - ছবির হাটে আমাদের স্ট্রিট শো
জ্যামিং এর শুরু হত গিটারে, স্প্যানিশ ফ্ল্যামেঙ্কোর মূর্ছনায়। একে একে গাইতাম লালনের গান, আমাদের ভারতীয় ক্লাসিকেল মিউজিকের ছোট ছোট ঠুমরী, বা গজল, সিস্টেম অফ এ ডন, রেডিওহেড, কোডালাইন, রিচারড মার্ক্স, ডেমিয়েন রাইস থেকে নিয়ে অর্ণব, মহিনের
ঘোড়াগুলি, অঞ্জন দত্ত, সুমন চাটুজ্জে, ফসিলস, আমাদের দেশজ লোকসঙ্গীত, ওয়ারফেইজ, আর্টসেলের গান।
সাথে আমার নিজের কম্পোজ করা প্রায় ত্রিশটির মত গান।
ছবি - চারুকলার গ্রাফিক ডিজাইনের নবীন বরনে আমাদের পারফর্মেন্স
একবছরের একটু কম সময় আমাদের ব্যান্ডের আয়ু থাকে। এর মধ্যে আমরা পারফর্ম করি চারুকলার নবীনবরনে, ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিকের নবীনবরনে, ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত পৌষ উৎসবে, বিশ্ব সাহিত্যকেন্দ্রের চৈত্র সংক্রান্তি উৎসবে, রেডিও একাত্তরে, এবং একাধিক স্ট্রিট শোতে।
ছবি - ব্রিটিশ কাউন্সিলের পৌষ মেলায় আমাদের পারফর্মেন্স
পরবর্তীতে, আমার ছাত্রদের ব্যান্ডের প্রতি আগ্রহ ধরে রাখতে আমি অসক্ষম হই। ওদেরও জীবন - জীবিকার প্রয়োজনে আস্তে আস্তে ওদের আগ্রহ ব্যান্ডের দিক থেকে অন্যদিকে ধাবিত হতে থাকে। চারুকলার শিক্ষার্থীদের পকেটমানির একটা বড় সুযোগ থাকে বিবিধ জায়গায় "খ্যাপের কাজে", ইন্টেরিওর ডেকোরেশন বা ডিজাইনে। ওরা কমবেশী তাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আমিও খানিকটা অভিমান থেকেই ওদের ডেকে একত্র করার দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিই।
ছবি - রেডিও '৭১ এ আমাদের পারফর্মেন্স
কিন্তু সঙ্গীত আজও আমার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমার মিশন খুব সিম্পল। মারা যাওয়ার আগে, আমাদের বাংলাদেশের মানুষদের জন্যে গুনগুন করে গাওয়ার জন্যে উল্লেখযোগ্য দু' - এক ডজন গান রেখে যাওয়া। আমার স্বপ্ন , একদিন আমি আমার ক্যাম্পাস, ঢাকা ইউনিভার্সিটি দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় শুনবো, আমার গান গিটার বাজিয়ে একটি তরুণ ছেলে তার প্রেমিকাকে শোনাচ্ছে, তার প্রেমিকা তন্ময় চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে। এভাবে আমি, না থেকেও, বাংলা ও বাঙালীর জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়ে যাবো।
ছবি - ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিকের ইংরেজি বিভাগের র্যাগডেতে
ব্যান্ড নেই। এখন একাই পারফর্ম করি। আজ রাত দশটায় এই পেইজে পশ্চিমবঙ্গের এক বাচিক শিল্পীর, এবং বাংলাদেশের এক করোনা স্পেশালিষ্টের সাথে আয়োজিত একঘণ্টার এক লাইভ অনুষ্ঠানে আমি নিজের কিছু গান পরিবেশন করবো। সময় হলে শুনবেন , এই প্রত্যাশায়।
আমাদের কিছু লাইভ পারফর্মেন্সের ভিডিও নীচে সংযুক্ত করে দিলাম -
১। ফসিলস ব্যান্ডের ফিরে চলোঃ চারুকলা, গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের নবীন বরন
২। একই অনুষ্ঠানে, অর্ণবদা'র হারিয়ে গিয়েছি, এবং নিজের অরিজিন্যাল মিশেল ফুঁকো
৩। রাগ বাসান্ত মুখারির ছোট খেয়াল
৪।বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের চৈত্র সংক্রান্তি উৎসবে আমার ব্যান্ডের সাথে অতিথি শিল্পী আমার ছোটবোন, মৌমিতা হক সেঁজুতি
০৬ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:০৪
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ, আলাপচারী প্রহর! আপনার দু'লাইনের কবিতাও ভালো লাগলো!
২| ০৬ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১০
রাজীব নুর বলেছেন: খুব ভালো।
০৭ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৩
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ, রাজীব ভাই। আপনার কন্যাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে দিয়েন দয়া করে, আমার তরফ থেকে।
৩| ০৬ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:১৯
বিজন রয় বলেছেন: আপনাকে আজ নতুন করে জানলাম আবির। আপনার এই দিকটার কথা কোন দিন বলেননি আগে।
তবে আপনি খুব মেধাবী তা বুঝতে পারা যায়।
আপনার স্বপ্ন সফল হোক।
০৭ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৩
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে লেখার জায়গা তো এ প্ল্যাটফর্ম নয়, বিজন দা। গতকাল একটি স্থানীয় মিডিয়ার টক শোতে অংশ নিয়েছি, তাতে নিজের গান পরিবেশন করেছি - সে খবরটা আগাম দেয়ার সূত্রেই উপরের লেখাটি চলে এসেছে।
আমাকে আপনার নতুন করে চেনা বলতে কি বুঝিয়েছেন, সেটা আমি বেশ ভালো করে বুঝতে পেরেছি। এই বোঝা যদি আপনার জন্যে স্বস্তি আনায়ন করে, আসলেই খুশী হব। কিন্তু এই প্ল্যাটফর্মে একসময় দুর্দান্ত খাতির রাখতাম, এমন অনেককেই ইদানীং আমি যেভাবে নতুন করে চিনছি, এই চেনাটা আমার জন্যে বড়ই পীড়াদায়ক।
আসুন, আপনার উদীচী হোক, বা আমার ছায়ানট, সংস্কৃতি চর্চা , বা সংস্কৃতির ধারকবাহকের চেহারার আড়ালে আমরা বাংলাদেশের কোন নির্দিষ্ট জাতি ধর্মের মানুষের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ না করি, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের চর্চা না করি, এবং যারা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ায় তাদের সাথেও বন্ধুত্ব না করি।
মেধার চাইতে সততার গুরুত্ব বোধয় খানিকটা বেশীই।
আপনি ভালো থাকুন। সতত শুভকামনা আপনার প্রতি।
৪| ০৭ ই জুন, ২০২০ সকাল ৯:২১
কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনার জন্য শুভকামনা।
০৭ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৪
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে!
৫| ০৭ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:০৬
পদ্মপুকুর বলেছেন: ভাইরে ভাই, আপনি তো বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী দেখা যাচ্ছে। ড. সলিমুল্লাহ খানের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে লেখা আপনার পোস্টের মাধ্যমে আপনার লেখার সাথে পরিচয়। তার পরের পোস্টেই আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে আপনার গদ্য লেখার মান অনেক উঁচুতে। বলেছিলাম যে এ ধারার লেখকেরা বেশিদিন এখানে থাকবে না।
পরে গল্প লিখে ল্যাপটপ জেতার কাহিনী পড়ে জানলাম আপনি একই সাথে গল্পকার এবং লিরিসিস্টও। এখন দেখছি আপনি গায়কও। সাথে টিচিংতো আছেই।
আর কি কি করেন ভাইডি? বিয়ে করেছেন?
০৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:০২
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার রসালো মন্তব্যে বহুদিন পর অনলাইন আলাপচারিতার সূত্রে প্রাণ খুলে হাসলাম, ভাই। আসলেই আমার ভালো চাইলে, দয়া করে দোয়া করবেন যাতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আর সময় নষ্ট না করি। বাংলা সাহিত্যে, কিংবা সংস্কৃতির জগতে ধুলো ঝাঁট দেয়ার মত তেপান্তরের মাঠের সমান একটা উঠোন ধূলিধূসরিত অবস্থায় পড়ে আছে। যেখানে আমাদের বাঙ্গালী আইডেন্টিটির কন্সট্র্যাকশন, আমাদের ইতিহাসের মোড়গুলো চিহ্নিত করা, আমাদের বয়ানে আমাদের ইতিহাস লেখার মত অনেক গুরুদায়িত্ব একদম অধরা অবস্থায় ভূপতিত। এই ব্যাপারগুলো যে বা যারা বোঝে বা অনুভব করে, তাদেরই কাঁধে দায়িত্বগুলো বর্তায়।
আমার আগ্রহ এবং কর্মযজ্ঞের জায়গা অনেক প্রশস্ত, সেটা আপাতত অস্পষ্টই থাকুক। দিল্লীর লাড্ডু খেয়েছি। এ নিয়ে অনেকের অনুযোগ থাকলেও আমার কোন অভিযোগ নেই, আলহামদুলিল্লাহ! : )
ভালো থাকবেন। আপনার পাকিস্তানি সোপ অপেরা নিয়ে কিছু কথা বাকি রয়ে গেছে। আপনার পোস্টে এসেই সে আলাপ পাড়া যাবে।
৬| ০৭ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৫
ডি মুন বলেছেন: চমৎকার।
আপনি অত্যন্ত মেধাবী একজন মানুষ।
সৃজনশীল কাজের প্রতি এমন নিষ্ঠা এখন খুব কমই দেখা যায়।
আপনার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
০৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:০৮
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মুন! অনেক দিন পর আপনার সাথে বাতচিত। ভালো আছেন আশা করি!
আপনার গল্প লেখার সহজাত প্রতিভা ছিল। আশা করি সে চর্চা এখনো জারি আছে। থেমে যাবেন না দয়া করে। আপনার ইংরেজি সাহিত্যের ব্যাকগ্রাউন্ড আপনাকে অনেকভাবে সহায়তা করে, করেছে, করবে। আমাদের সৎ ও একনিষ্ঠ কথাসাহিত্যকের বড় প্রয়োজন এসময়ে। কিছুটা সময় দৈনিক সৃজনশীল লেখার পেছনে দেবেন, এই অনুরোধ।
সর্বদা শুভকামনা।
৭| ০৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১৭
পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনি তো হাসলেন, কিন্তু বিদায়ী বিউগল বাঁজার প্রস্তুতি দেখে আমার কোনো হাসি পাচ্ছে না। তবুও যে কথাগুলো বললেন আপনি, আমি চাই সেখানে ভালোভাবে দায়িত্ব পালন করেন। আপনার মত সুন্দর করে বলতে না পারলেও কথা হলো এই- যে জ্ঞানহীনতার বৃত্তে ঘুরপাক খেতে খেতে আমরাও এক 'অনন্ত নক্ষত্রবীথি'র চক্রে পড়ে গেছি, সে চক্র থেকে বের হতে তো হবে আমাদেরকে। যে সব স্বঘোষিত সোল এজেন্টদের খপ্পর থেকেও অনেক কিছুই উদ্ধার করা জরুরী।
অনেক কিছু পড়তে ইচ্ছে হয়, জানতে ইচ্ছে হয়। রিডিং ক্লাবের শাকিল অনেকবার আমাকে বলেছে- ভাই আসবেন। কিন্তু চেয়েও যাওয়া হয়নি। ওই যে যেটা বললেন- এই ব্যাপারগুলো যে বা যারা বোঝে বা অনুভব করে, তাদেরই কাঁধে দায়িত্বগুলো বর্তায়।
যা হোক, ভালো থাকবেন।
১৭ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৩৫
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: দুঃখিত ভাই, দেরিতে প্রতিউত্তর দেবার জন্যে। আমি যে ইঙ্গিত করেছিলাম, আপনি তাঁর পুরোটুকুই ধরতে পেরেছেন দেখে আনন্দ অনুভব করেছি। ২০২০ সালের প্রেক্ষিতে ভেবে দেখার বিষয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বা এজাতীয় কোন কাল্ট প্ল্যাটফর্ম পায়ের নীচে না থাকার পরেও, মিষ্টি গদ্যে প্রেমের উপন্যাস না লিখেও আহমদ ছফা কেন পোস্টার আকারে এখনো একশ্রেণীর তরুণের বাসার দেয়ালে, বা ফেসবুকের প্রোফাইল/কাভার পিকচার হয়ে ঝুলে থাকেন। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেলেই বাংলাদেশের চিন্তাশীল তরুণ সমাজের অর্ধেক কাজ সমাপ্ত। বাকি অর্ধেক কাজ নিজের পড়াশোনা আর লেখালিখির মাধ্যমে আজীবন করে যেতে হবে।
রিডিং ক্লাবে আমি আলাদা ভাবে দাওয়াত পাই না। বিয়ের আগে বর্তমান বৌ, তৎকালীন প্রেমিকাকে নিয়ে শুক্র/শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে গেলে ওনাদের সেশন চলমান দেখলে গিয়ে বসে পড়তাম। তবে, মনে হয়, এই ধরণের সেশনগুলিতে যাওয়া উচিৎ। আমার - আপনার - আমাদের। গোলাম মুর্শিদ সাহেব বাংলার ইতিহাস নিয়ে কথা বলছেন, আর রুম টইটুম্বুর ইতিহাস জানতে আগ্রহী একঝাঁক তরুণ ছেলেমেয়েদের দিয়ে, মোবাইলে টিকটক আর পাব্জি নিয়ে ব্যস্ত বাংলার বুকে এ যেন আরেক আরব্য রজনীর রুপকথা! চোখে না দেখলে বিশ্বাস হতে চায় না। এছাড়াও, আমি বরাবর মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রমকে বেশী শ্রদ্ধা করি, এবং তাঁর ইমপ্যাক্ট বেশী বলে মনে করি, অনলাইনে বিপ্লব করবার চে। রিডিং ক্লাব সেই কাজটাই করছে, মোটামুটি একটা লম্বা সময় ধরেই।
শুভকামনা আপনার জন্যে।
৮| ০৭ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৩৭
ডি মুন বলেছেন: অনেকদিন পর এই করোনাঘটিত অবসরে কয়েকটা গল্প লিখেছি।
গল্প লেখার একটা তাড়না নিজের ভেতর টের পাই, তবে নিয়মিত লেখা হয় না।
ইংরেজি ব্যাকগ্রাউন্ড খুব যে সহযোগিতা করে তেমন নয়। কারণ আমার পড়াশোনার দৌড় অত্যন্ত সীমিত। ইংরেজি সাহিত্যের নিবিড় পাঠকও আমি নই। তবে বাংলা সাহিত্য ও ভাষাটাকে আমার বেশ লাগে। একই কথা কতোভাবে কতো প্রকারে যে প্রকাশ করা যায়, এবং প্রতিটা ক্ষেত্রেই আবেদন আলাদা হয়, অনুরণন আলাদা হয় - ভাষার এ বৈচিত্র্য দেখে আমি মুগ্ধ হই।
লিখে কি হবে - এমন একটা ব্যাপারও কাজ করেছে অনেকদিন।
আসলে খ্যাতি বা অমর হবার কোনো বাসনা কাজ করে না আমার মধ্যে। এমনকি সামাজিক দায়বদ্ধতা বা সমাজের জন্য কিছু করে যাওয়া - এসব আমার মধ্যে নেই। এক ধরণের পেসিমিজম আছে ভেতরে - জীবন ও জগত নিয়ে। মানুষের ইতিহাসটাই তো রক্তের ইতিহাস, একে অন্যকে শেষ করে দখলদারির ইতিবৃত্ত; এজন্য আমার ভেতর আশাবাদের উদয় হয় না খুব একটা। চারিদিকে কামড়াকামড়ির খেলা দেখি শুধু। কোনো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে, বা পৃথিবী আরো সুন্দর হবে - এ ধরণের বিশ্বাস আমার নেই। মানবজাতি বিলুপ্ত হলে পৃথিবী সুন্দর হতো মনে করি। জানিনা, ভবিষ্যতে কোনোদিন চিন্তাভাবনা বদলে যাবে কিনা। বদলাতেও পারে। কোনো কিছুই তো স্থায়ী নয়।
তবে একটা ব্যাপার প্রায়ই ঘটছে। ইদানিং লেখার তাগিদ বোধ করি। মাথার ভেতর লেখা খেলা করে। আমি দু'একদিন হাঁটাহাঁটি করি, সেগুলো নাড়াচাড়া করি। এদিক ওদিক করতে করতে একদিন একটানে লিখে ফেলি। ছোটগল্প স্মৃতিকথা এই আরকি। যেগুলো মুখে বলতে পারিনা, যা নিয়ে ভেতরে বিরোধ বাধে - দেখা যায় লিখে ফেলার পর বেশ ভালো লাগে। নির্ভার লাগে। এই অনুভূতিটার জন্যই বোধহয় মাঝে মাঝে লিখি।
যাহোক, অনেক আজেবাজে ব্যক্তিগত কথা বলে ফেললাম
আপনার ভেতর যে উদ্যম, এবং সর্বদা সৃজনশীল কিছু একটা করার চেষ্টা এটা আমার ভালো লাগে।
ভালো থাকবেন।
১৭ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৩১
সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: দুঃখিত, ডি মুন, দেরিতে প্রত্যুত্তরের জন্যে।
আজেবাজে কথা তো মোটেই নয়, বরং আপনার চিন্তার গ্রাফের ওঠানামা শেয়ার করলেন আমার সাথে বলে সম্মানিত বোধ করছি।
কবিতার বই হাতে রাতে বিছানায় যাওয়া আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস। ইদানীং পড়ছি আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত জয় গোস্বামীর কবিতা সংকলন। কাল রাতে পড়া একটা কবিতা, আপনার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করলাম -
"কলম একমাত্র সত্য। বায়ু অগ্নি জল
প্রবাহিত তাঁর মধ্যে। জগৎ নিশ্চল।
কলম একমাত্র হাত। বাকি অঙ্গ নুলো
একবার ছোঁয়ালে উড়বে গাছ, ঘূর্ণি, ধুলো!
কলম চুপচাপ থাকে। মাথা তোলে না সে।
দিন কাটে, রাত্রি যায়, শুয়ে থাকে ঘাসে
অকস্মাৎ জাগরণ। অগ্নিমুন্ড খুলে
প্রান্তরে গড়িয়ে দেয় সূর্য তুলে তুলে
দূর থেকে আমরা শুধু আকাশ প্রান্তিকে
মিশে যেতে দেখতে পাই দু' একটি পাখিকে
কবি নির্বাপিত হন। কবিরা জন্মান।
কলম? সে ধাবমান ইতিহাসযান।"
~
কলম, লেখনক্রিয়া
জয় গোস্বামী
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪২
আলাপচারী প্রহর বলেছেন: দারুণ।
স্বপ্ন কি স্বপ্নে থাকে, আসি নাকি জীবনে।
কেন এমন মধুর স্বপন দেখি যে নয়নে !!