নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প - তিনকন্যা কুটিরের বাসিন্দা

১০ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:১৪



"তুমি যে আমার কবিতা আমার বাঁশীর রাগিণী
আমার স্বপন আধো জাগরণ চিরদিন তোমারে চিনি
তুমি যে আমার কবিতা ..."

সদ্য ৮২ তম জন্মদিনে পা রাখা আকলিমা খাতুন কম্পিত কণ্ঠে গানটির শেষ পংক্তি গেয়ে ওঠা মাত্রই উপস্থিত সবার হাততালিতে মুখরিত হয়ে উঠলো কক্ষটি। তরুণ দু' একটি কণ্ঠে শোনা গেল প্রশংসা বাণী - 'বাহ দাদী, বাহ! দারুণ!'। সজোরে একটা সিটি বাজানোর শব্দও ভেসে এলো রুমের এক কোন থেকে। মুরুব্বীদের ঝাড়িতে সে শব্দ আর পূর্ণতা পেলো না। আবার মুরুব্বীদের মধ্যে থেকেই কে একজন প্রশ্ন করে উঠলো - 'মা, কাকে স্মরণ করে গাইছেন এ গান? নতুন কাউকে পছন্দ হয়েছে আপনার?' অদ্ভুত এ প্রশ্নে ঘরজুড়ে হাসির হল্লা বয়ে যায়। আকলিমা খাতুনের ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি ফোটে। সলজ্জ নয়, বরং রসিকতার। তিনি উপভোগ করছেন তাকে ঘিরে এতোসব আয়োজন।

'মা! বাবা বলছে তোমার নতুন কাউকে পছন্দ হয়ে গেলে তার কোন আপত্তি নেই ...' ঘরে একটা যান্ত্রিক শব্দ ভেসে আসে। ল্যাপটপের সাউন্ড বক্সে কানাডা থেকে সংযুক্ত আকলিমা খাতুনের সবচে বড় ছেলের কণ্ঠ ভেসে আসে। ফ্রন্ট স্ক্রিনে তার চেহারা দেখা যায়। 'বাবা এখানে অনেক সুন্দর সুন্দর নারীভক্ত জুটিয়ে ফেলেছে। বিকেলবেলা হাঁটতে বের হলেই তারা এসে বাবার সাথে গল্প জুড়ে দেয়।' এই কথার প্রেক্ষিতে আবারো ঘরময় হাসির হল্লা ছড়িয়ে পড়ে। বাচ্চাদের মধ্যে কেউ কেউ বলে ওঠে - 'কই কই! দাদাভাইকে দেখবো ...' তাদের অনুরোধে আকলিমা খাতুনের প্রৌঢ় স্বামীকে এসে ক্যামেরার সামনে হাজিরা দিতে হয়।

'বাবা কানাডায় বসে যা খুশী করুক, কিন্তু আমার মা'কে আমি নতুন আর একটি বিবাহ করতে দেবো না!' হঠাৎ আকলিমা খাতুনের কনিষ্ঠ কন্যা ইসমত আরা কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন যুদ্ধাংদেহী ভঙ্গীতে। 'আমার মা'কে আমি নতুন আর একটি বিয়ে করতে দেবো না এই জন্যে যে - তাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না।' সবাই বিমোহিত হয়ে যাওয়ার শব্দ বের করে মুখ দিয়ে আকলিমার কথা শুনে। এরমধ্যেই খুব আবেগের সাথে ইসমত জড়িয়ে ধরেন তার মা'কে। আর আকলিমা খাতুন তার মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকেন। আকলিমা খাতুন আর তার স্বামী দুজনেই কানাডার সিটিজেনশীপ কার্ড হোল্ডার। বছরে নির্দিষ্ট সংখ্যক সময় তাদের কানাডায় থাকা লাগে। তার স্বামী সে কোটা পূর্ণ করবার জন্যে বর্তমানে কানাডায়। আকলিমা খাতুনেরও এসময় স্বামীর সঙ্গে কানাডাতেই থাকার কথা। কিন্তু যাত্রার দিনকয় আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় এবার আর কানাডা যাওয়া হয় নি। ফলে ছোটমেয়ে ইসমত আরার সংসারে তিনি আছেন আজ মাস তিনেক যাবত। ইসমতের বাচ্চা ছেলেমেয়ে দুটির যন্ত্রণা মিশ্রিত ভালোবাসায় স্নাত হয়ে তার সময় কাটছে বেশ।

'কি সুন্দর জীবন আকলিমা খালার, তাই না রে? মাশাআল্লাহ!' রুমের কেন্দ্র থেকে একটু দূরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা কিছু সোফার একটিতে দু'জন মহিলাকে দেখা যায়, ইসমত আরার সমবয়েসি। তারা দুজনেই ইসমত আরার অতিঘনিষ্ঠ বান্ধবী। প্রশ্নটি করেন মনোয়ারা বেগমকে - রওশন জাহান। মনোয়ারা বেগম উত্তর দেন না। হাসেন। আস্তে আস্তে চুমুক দেন কোকের গ্লাসে। 'ঘরভর্তি মানুষ, সবই আকলিমা খালার সন্তান, নাতিপুতি, নাতিপুতির ঘরের বাচ্চাকাচ্চারা। পড়াশোনা করছেন মাত্র ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত। তাও বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, হিন্দী, আর আরবি - পাঁচ পাঁচটা ভাষা জানেন। কতো কতো দেশ ঘুরেছেন...'

মনোয়ারা বেগম উত্তর না দিয়ে হাত নেড়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা একজন বেয়ারাকে ডাকেন তার খালি কোকের গ্লাসটা নিয়ে যাওয়ার জন্যে। 'কিছু দিবো এনে ম্যাডাম?' প্রশ্ন করে সে গ্লাসটা হাতে নিয়ে। 'না, লাগলে আমি ডাকবো।' এরপর তিনি রওশন জাহানের দিকে তাকিয়ে বলেন - 'হ্যাঁ, ঘুরবেনই তো। অ্যামেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া - চারটা উপমহাদেশ জুড়ে তার ছেলেমেয়েরা থাকে...'

'আমরা যে কেন মানুষকে তার এজুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন আর ক্যারিয়ার দিয়ে মাপার চেষ্টা করি - তা আমার একদমই বুঝে আসে না। ভাগ্য যাকে যেখানে নিয়ে যাওয়ার, তা সে নিয়ে যাবেই।' উত্তর করেন রওশন জাহান, ' আকলিমা খালার এই পুরো ঘরভর্তি বাচ্চাকাচ্চা, পৃথিবীর নানা প্রান্তে তারা ছড়িয়ে পড়েছে, সুখে আছে, আকলিমা খালাকে প্রতিনিয়ত স্মরণ করছে, ফোনে, ম্যাসেঞ্জারে ভালবাসা জানাচ্ছে, প্রতিটা পালাপার্বণে উপহার পাঠাচ্ছে - এটাও কী হেলাফেলা করার মতো কোন অর্জন? এদিকে এই যে আমি এত কষ্ট করে ঢাবি থেকে মাস্টার্সটা শেষ করলাম, তবুও শ্বশুরবাড়ির প্রেসারে পড়ে আর কিছু করাতে পারলাম না। এদিকে আমাদের ইসমত বিয়ে করলো ওর মা' মানে আমাদের আকলিমা খালার মতই, ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে, হাবিবুল্লাহ বাহার থেকে খুব কষ্টে সংসার - সন্তান সামলে গ্রাজুয়েশনটা শেষ করলো। কিন্তু আমাদের জামাল ভাইয়ের ব্যবসায়ে বিয়ের পর এমনি বরকত লাগলো, ইসমতকে এখন বিরাট একটা সাম্রাজ্যের রানীর মতই লাগে। আমার পড়াশোনাটা কোন কাজে লাগলো তবে বল?'

'ছেলেমেয়েকে আর পড়াশোনা করতে নিষেধ করে দে তবে...' মৃদু হেসে বলেন মনোয়ারা বেগম।

'হ্যাঁ, তা করলেও খুব একটা ক্ষতিবৃদ্ধি হবে বলে তো আর মনে হয় না...' রওশন বলেন। 'তুইও ডিগ্রী পাশের পর আর পড়লি না, এতে তোর কি ক্ষতিই বা হল? তুই তো আমাদের আকলিমা খালার মতই প্রায় হয়ে বসেছিস। এই বয়সেই তিনমেয়েকে বিয়েশাদী দিয়ে তাদের দুটোকে দুই ভিন্ন মহাদেশে পাঠিয়ে দিয়ে দস্তুরমতো শাশুড়ি হয়ে বসেছিস। কিছুদিন পর তাদের সবার বাচ্চাকাচ্চা হবে। বিশাল হয়ে ছড়িয়ে পড়বে তোর সংসার।'

মনোয়ারা আবারো উত্তর দেয়ার বদলে মৃদু হাসেন শুধু।

'আমার ছেলেমেয়ে দুটিকে তো কিছুতেই বিয়েতে রাজি করাতে পারছি না। রাজীব যে জার্মানি গেল এ বছর পিএইচডি করতে, ওকে কতো মেয়ের ছবি দেখাই নেটে, ইমেইলের পর ইমেইল করি, ওর একটাও পছন্দ হয় না। কবে যে একটা জার্মান সাদা মেয়েকে বিয়ে করে আনে...' চিন্তায় রওশনের ভ্রু কুঁচকে যায়, 'আবার এদিকে রওনক তো ভার্সিটিতে কি শিখেছে নারীবাদ টারিবাদ, মুখের ওপর সাফ বলে দেয় - চাকরি না জুটিয়ে কোন বিয়েশাদী নয়। কোন পুরুষের সংসারের ঘানি টানবার জন্যে কেবল ওর জন্ম হয় নি। তা বাবা হ' তুই নারীবাদী, তাই বলে বিয়ে করবি না?' একটু বিরতি দিয়ে রওশন আবার বলে, 'আহ, যদি তোর মতো সৌভাগ্য আমার হত! ছেলেমেয়ে সব বিয়ে দিয়ে একদম নিশ্চিন্ত! ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করে লায়েক হয়ে উঠছে সব, কিন্তু সেটা তো জীবনের একটা মাত্র দিক। প্রাক্টিক্যাল দিকগুলোও তো রপ্ত করতে হবে। ঐযে বলে না, গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন, নাহি বিদ্যা নাহি ধন হলে প্রয়োজন...'

'তোর ঢাবি থেকে মাস্টার্স শেষ করবার এই একটা সুফল তো চোখেই দেখতে পাচ্ছিস।' মনোয়ারা বলেন, 'সময়ে অসময়ে যে পরিমাণ বাগধারা তুই তোর কাব্যিক ভাষায় ব্যবহার করিস, সেটা তো আমরা পারি না...'
'ধুর! রাখ তোর কাব্যিক ভাষা!' রওশনকে আসলেই বিরক্ত লাগে।

'রওশন, এবার তোর পালা!' দূর থেকে ইসমতের গলা ভেসে আসে। রওনক কিছু বুঝে ওঠার আগেই রুমের ছোটছোট ছেলেমেয়েরা ওকে হাত ধরে টেনে উঠিয়ে নিয়ে রুমের মাঝখানে নিয়ে বসিয়ে দেয়, 'খালা, এবার আপনার গান শোনাতে হবে...'। 'গান, গান, গান' - চিৎকারে রুম আবার মুখরিত হয়ে ওঠে।

রওশনকে দেখে মনে হয় সে সাময়িকভাবে লজ্জা পাচ্ছে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসে। কিন্তু মনোয়ারা জানে, রওশন শীঘ্রই কাটিয়ে উঠবে এ লাজুকতা। ছেলেবেলা থেকেই তাদের এ বান্ধবী মানুষের মনোযোগ খুব পছন্দ করে।

গান চলতে থাকে। এই ফাঁকে মনোয়ারা তার মোবাইলের স্ক্রিন অন করে ফেসবুকে ঢোকেন। প্রথম পোস্টটাই চোখে পড়ে তার ছোটমেয়ের। সিলেটে বেড়াতে গিয়েছে দু'জনে। বিয়ে হয়েছে মাসচারেক, কিন্তু ওদের হানিমুনে যাওয়া হয়ে ওঠে নি বরের চাকরীর কাজের চাপে। এবার একটা ছুটি পেয়েই প্রথম সুযোগে ওরা সিলেটে চলে গেলো। কক্সবাজার যাওয়ার একটা আলোচনা চলছিল, কিন্তু এতো এতোবার যাওয়া হয়েছে এই জায়গায় যে, পরে আর ওর বর রাজী হয়নি কক্সবাজারে যেতে। ছবিগুলো দেখে মন জুড়িয়ে যায় মনোয়ারা বেগমের। গ্র্যান্ড সুলতানে ডিনার, সাতরঙ্গা চা, আগুনে পান খাওয়া, হজরত শাহজালালের মাজার জিয়ারত, টাঙ্গুয়ার হাওড়, জাদুকাটা নদী, সুরমা নদী, হাসনরাজার বাড়ি - একসপ্তাহ ছুটির পুরোটা উসুল করছে দুজনে মিলে। বিয়ের প্রথম প্রথম এ দিনগুলিই সবচে সুন্দর। তারপর দিন যত যায়, দায়িত্ব বাড়ে কেবল। ভালোবাসার জায়গাটাকে ক্রমশ প্রতিস্থাপন করে দায়িত্ববোধ, আর মায়া। সেটা অবশ্য শক্তির দিক থেকে ভালোবাসার চেয়েও অনেক প্রবল। ভালোবাসার টান মানুষ অহরহ এড়াচ্ছে। সম্পর্ক ভাঙছে এবং গড়ছে। কিন্তু মানুষ সাধারণত দায়িত্ববোধ এড়িয়ে যেতে পারে না। পারে না মায়ার বাঁধন হুট করে কেটে ফেলতে।

একটু স্ক্রল করলে বড় মেয়েটার পোস্ট সামনে আসে। গতবছর ওর ছেলে হল একটা। কি সুন্দর ফুটফুটে যে হয়েছে মাশাআল্লাহ! ওরই চার-পাঁচটা ছবি, শেষ ছবিতে মেয়ে - মেয়েজামাই, কোলে ছেলে। কি যে সুন্দর লাগে ওদের তিনজনকে একসঙ্গে! বড় মেয়ের বর মনাশ ইউনিভার্সিটির ইংরেজির লেকচারার। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। পারিবারিকভাবেই বিয়ে। ছোট মেয়েরটা পছন্দের বিয়ে।

পারিবারিক বিয়ে মেঝো মেয়েরটাও। স্বামী - স্বামীর পরিবারের সঙ্গে অ্যামেরিকা থাকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আজ প্রায় মাস ছয়েক যাবত ওর কোন ছবি বা পোস্ট আসছে না ফেসবুকে। মেয়ে ছবি তোলেও না, শেয়ারও করে না। এই লম্বা সময়ে ফোনে কথাও হয়েছে মাত্র দু'বার। আগে ভিডিও চ্যাট হতো। পেছনের এই সময়টায় মেয়েকে ভিডিও চ্যাটে রাজি করানো যায় নি। আগেও ভিডিও কলে ও কিছু না কিছু একটা কাজ করতে করতেই কথা বলতো। একদম ফ্রি হয়ে কখনো কথা বলতো না। আর কলের সময় হতো সংক্ষিপ্ত। মিনিট পাঁচ - সাত। মনোয়ারা বেগমের তো আগ্রহের শেষ নেই। সে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে যতই এটা ওটা নিয়ে প্রশ্ন করে, কন্যা তার সব প্রশ্নই এড়িয়ে যায়। একবার মেয়ের স্বামীকে ফোন করেছেন, সে ফোন রিসিভ করে নি। কোন সমস্যা হল কিনা সেটাও তিনি জানতে পারছেন না। এই মেঝোমেয়ের চিন্তাই তাকে কুরে কুরে খাচ্ছে ক্রমাগত।

রুম গমগমিয়ে উঠেছে এরই মধ্যে রওশনের গানের তালে তালে হাততালিতে। রওশন গাইছে - 'আমি রূপনগরের রাজকন্যা, রূপের জাদু এনেছি...' রুমের ছেলেবুড়ো সবাই দারুণ উপভোগ করছে ওর এ গান। এতো নতুন কিছু নয়। সেই কলেজ জীবনেই, যখন তারা তিনজন একসঙ্গে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে পড়তেন, কলেজের ফাংশানের সময় রওশনের গান থাকতো একদম শো স্টপারের ভূমিকায়। কলেজের দেয়াল দিয়ে ছেলেরা উকিঝুঁকি মারত আর শিস বাজাতো ওর রূপনগরের রাজকন্যা গানের তালে তালে। এরমধ্যেই হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো মনোয়ারার। আনিস, মনোয়ারার স্বামীর ফোন। বাসায় একা আছে। রাতে খাওয়ার মনোয়ারা রেধে বেড়ে রেখে এসেছে। ওর খাওয়ার সময় তো এখনো হয় নি।

'মনু, বাসায় এসো জলদি। আমাদের রান্নাঘরের বেসিনের পাইপ আবার নষ্ট হয়েছে বোধয়। খেয়ে প্লেট ধুতে গিয়েছিলাম। দেখলাম পানি পাস হচ্ছে না। পুরোটা রান্নাঘর ভেসে যাচ্ছে পানিতে। আমি কিছুটা মুছেছি। আর পারছি না...'

আনিসকে অপেক্ষা করতে বলে মনোয়ারা হাতের ইশারায় ইসমতকে ডাকলো। 'কি বলিস, তুই খেয়ে যাবি না!' মনোয়ারার চলে যাওয়ার প্রস্তাবে ইসমত একদম আকাশ থেকে পড়লো। ঘটনা শুনে ইসমত তড়িৎ গতিতে কিভাবে যেন একটা টিফিন ক্যারিয়ারে ভরে খাবার নিয়ে এসে ধরিয়ে দিলো মনোয়ারার হাতে। 'আনিস ভাইকে বলিস, আমি রাগ করেছি। নিজে দাওয়াত রক্ষা করেন না। বৌকেও আসতে দেন না, এটা তো ঠিক না।'

আকলিমা বেগম এর মধ্যে খেয়াল করলেন মনোয়ারার প্রস্থানের উদ্যোগ। তিনি হাত ইশারা করে ডাকলেন মনোয়ারাকে। 'খালা, এতো খুশী হয়েছি আজ আপনার জন্মদিনে এসে! একদম ছোটবেলার মতো লাগছে। আপনার মেয়ের চে আমরা তো আরও বেশী মজা করতাম সবসময় আপনার জন্মদিনে। শরীরের যত্ন নেবেন। অন্তত একশো বছর বয়স হবার আগে আপনার বুড়ো হওয়া চলবে না...' আকলিমা বেগম হাসিমুখে মনোয়ারার গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন - 'তোর পাজি জামাইটাকে বলিস, ওকে অনেক করে বকে দিয়েছি আমি...'। হাসিমুখে মনোয়ারা বিদায় নিয়ে বেরিয়ে আসেন জামাল মঞ্জিল থেকে।

রিকশার চাকা ঘুরতে আরম্ভ করে, মালিবাগ চৌধুরী পাড়া থেকে খিলগাওয়ের খাবারের দোকানগুলোর দিকে। রাত হয়েছে ভালই। পৌনে দশটা প্রায়। এখনো রাস্তা গমগম করছে ছেলেমেয়েদের ভিড়ে। মনোয়ারা রিকশার হুডের ফাঁক গলে দুদিকে চান। শীতের রাত। সবার গায়ে উষ্ণ কাপড়। রাস্তার সাইডে ফুটপাথে খাবারের দোকান বসেছে অনেক। একজোড়া ছেলে আর মেয়েকে দেখা গেল একটা চাদরে শরীর জড়িয়ে বসে আছে। ছেলেটার হাতে সিগারেট, মেয়েটার হাতে চায়ের কাপ। মনোয়ারা তাকিয়ে দেখলেন, যতক্ষণ তাদের দেখা যায়। দৃশ্যটা তার আপাত দৃষ্টিতে খারাপ লাগে না। কিন্তু যতদিন তার মেয়েদের তিনি বিয়ে করান নি, সেই সময়টাতে এরকম কোন দৃশ্য, এমনকি কোন ছেলে আর মেয়ে রাস্তায় একসাথে হেঁটে যাচ্ছে - এটা দেখলেও তার বুক কেপে উঠত। তার মেয়েদের কেউ কি না - এটা নিশ্চিত হবার জন্যে আড়চোখে তাকাতেন বার বার। তার দুশ্চিন্তার মূল ছিল মেয়েদের নিরাপত্তা। দুর্নাম রটে যাওয়া। আজ থেকে পাঁচ বছর আগেও এই মহল্লার লোকেরা একটা ছেলে আর একটা মেয়ের সম্পর্ক যে দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখত, এখন আর তারা অতটা বাজেভাবে দেখে না। সময় কতো দ্রুত বদলে যাচ্ছে! নৈব্যত্তিকভাবে একটা ছেলে আর একটা মেয়েকে একসঙ্গে রাস্তায় দেখলে এখন বরং ভালোই লাগে। যারা এই বিষয়গুলো নিয়ে দুর্নাম রটিয়েছেন একসময়, যারাই একে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেছেন, তাদের প্রত্যেকের জীবনে একপর্যায়ে ইচ্ছে ছিল এমন একটা সম্পর্কের। এমন একটা মুক্ত স্বাধীন পরিবেশে নিজের পছন্দের মানুষকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর।

রিকশা শীঘ্রই তালতলা মার্কেটের পাশে, খিলগাও পুলিশ ফাঁড়ির গলিতে ঢুকলো। কাঁচের চুড়ি, টিপ, কানের দুল, নাকফুল, গলার মালাসহ মেয়েদের অন্যান্য অলঙ্কারের সাঁঝি নিয়ে রাস্তায় বসে আছে ভাসমান ব্যবসায়ীরা। দু'দিন পর পর এদের পুলিশ এসে উঠিয়ে দেয়, আবার দু'দিন পর কিছু একটা আপোষরফা করে তারা জায়গা দখল করে বসে। অদূরেই তালতলা কবরস্থান, এবং এরপর রিয়াজবাগ, তিনকন্যা কুটির। মনোয়ারা বেগম একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। তার পুরোটা জীবন এই এক এলাকায় কেটে গেলো। বিয়ের আগে বাবার বাড়ি ছিল এই খিলগাঁওতেই, বিয়ের ঠিকও হল খিলগাঁওএর এক পরিবারেই। বাড়ির মুরুব্বীরা মিলে ঠিক করলেন। তার মতামত দেবার মতো কিছু ছিল না। তার বিদেশ নিবাসী কন্যাদ্বয়ের কথা ভাবলে মনোয়ারা বেগমের ভালো লাগে। তিনি পৃথিবী দেখেন নি। তার মেয়েরা দেখছে। বিয়ের সূত্র ধরেই যদিও। মনোয়ারার মনে প্রশ্ন জাগে - ছেলেদের পৃথিবী ঘুরে দেখতে বিয়ে করা লাগে না। তারা পড়তে যায়, চাকরি করতে যায়, ব্যবসার কাজে যায় - আজকে সিঙ্গাপুর, কাল ইংল্যান্ড, পরশু অ্যামেরিকা। মেয়েদের এ সুযোগ হয় না কেন? না কি হয়? হয় তো বোধয়। তাদের বিল্ডিং এরই তৃতীয় তলার নতুন বিয়ে করা বৌটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। সে নাকি আরও পড়াশোনা করতে ইংল্যান্ড যাচ্ছে সামনে। তো, যাচ্ছে তো মেয়েরা একা একা বাইরে। মনোয়ারার আফসোস লাগে, তার বেলায় এরকম হল না কেন। তার কন্যাদের কেন তিনি আরও একটু পড়াতে পারলেন না।

অতঃপর রিকশা এসে থামলো তিনকন্যা কুটিরের সামনে। মনোয়ারা বেগম ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে তাকালেন একবার বাড়ির নেমপ্লেটের দিকে। বাড়ির মালিকের তিনটি মেয়ে আছে। তিনি বাড়ির নামও রেখেছেন মেয়েদের ওপর। এবং, তিনি কন্যা নেই - এমন কাউকে বাড়িভাড়া দেনও না। এ বড় অদ্ভুত নিয়ম তার।

লিফট তাকে তুলে আনলো বাড়ির সপ্তম তালায়। এখানেই ছাদ। ছাদ সংলগ্ন দুটি রুমে স্বামী স্ত্রী থাকেন। তাদের এরচে' বড় ফ্ল্যাটের প্রয়োজনও নেই। বেল দিতে গিয়েও কি মনে করে বেল বাজান না মনোয়ারা। দু'বার দরোজায় ঠকঠকিয়ে কড়া নাড়েন। ভেতর থেকে কোন সাড়াশব্দ আসে না। তিনি চাবি বের করে গেটের লক খুলে ভেতরে ঢুকে পড়েন।

ফ্ল্যাটে কেবল ড্রয়িং - ডায়নিং রুমে বাতি জ্বলছে। বাকি সব ঘরের বাতি নেভানো। তাদের শোয়ার রুমে উঁকি মেরে দেখা গেলো আনিস ঘুমিয়ে পড়েছে। রান্নাঘরের সামনে কিছুটা পানি, ভেতরের মেঝে পানি জমে থৈ থৈ। এই রাতে আর এগুলো ঘাটাঘাটি করতে ইচ্ছে করে না মনোয়ারার। বাড়িওয়ালীকে আগামীকাল জানাতে হবে সমস্যার কথা।

মনোয়ারা এসে বসে পড়েন অন্য রুমটিতে, যেখানে তার কন্যাত্রয়ের ছোট বেলা থেকে বড় হয়ে ওঠার সময়কালের বিবিধ ব্যবহৃত জিনিসপত্র রাখা। সবচে ছোট মেয়েটির কলেজে পড়বার সময়কার ব্যাগ এখনো ঝুলন্ত দরজার পেছনে একটি হ্যাঙ্গারে। টেবিলের ওপর ওর ছেলেবেলার একটা খেলনার সেট। গৃহস্থালি জিনিসপত্রের সংক্ষিপ্ত ভার্শন, যা দিয়ে সে রান্নাবাটি খেলত প্রতিদিন। খুব কান্নাকাটি করবার পর একটা বারবি ডল কিনে দেয়া হয়েছিল ওকে। তার ওয়েস্টার্ন ড্রেস বদলে পুতুলের মাপেরই একটা শাড়ি ব্লাউজ সেলাই করে পড়িয়ে রেখেছে বারবিকে। এখন অবশ্য তার সব কন্যারাই কমবেশী ওয়েস্টার্ন পোশাকেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে বেশী। মনোয়ারা বারবি পুতুলটি কোলে নিয়ে বসে থাকেন। তার মনে প্রশ্ন আসে, সর্বদা রান্নাবাটি খেলায় অভ্যস্ত তার কন্যাত্রয়ের পক্ষে বিয়ে করে স্বামী - সংসার নিয়ে থিতু হওয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প ভবিষ্যৎ চিন্তার কথা কল্পনা করা কি আদৌ সম্ভব ছিল?

মনোয়ারার মনে পড়ে রওশনের সঙ্গে তার আজ রাতের কথোপকথন। মনে পড়ে, আকলিমা খালার সঙ্গে তার নিজের তুলনা, এবং সেই সূত্র ধরে মনোয়ারাকে এক সফল রমণী হিসেবে উপস্থাপনের প্রচেষ্টা। সত্যি বলতে কি - মনোয়ারা নিজেও যে তার তিন কন্যাকে বিয়ে দিয়ে সংসারকে আবারো স্বামী - স্ত্রীর ক্ষুদ্র পরিসরে নিয়ে আসাকে সফলতা হিসেবে চিহ্নিত করে আত্মশ্লাঘায় ভোগার চেষ্টা মনে মনে করে নি, তা নয়। করেছে, কিন্তু বেশীক্ষণ জোর করে খুশী হয়ে থাকতে পারে নি। নিজেকে নিজে ধোঁকা দেয়া তো মুশকিল। তার স্বামীকে রোম্যান্টিক, অথবা নিদেনপক্ষে একটু প্রফুল্ল চেহারায় সে শেষ কবে দেখেছে, মনে পড়ে না এখন আর। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত আধা সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরী করতেন। চাকরীর মেয়াদ শেষ হবার আগেই অবসরে গেছেন। আজীবন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে চাকরী করবার ফলে চাকরী ক্ষেত্রে শত্রু বানিয়েছেন প্রচুর। নিজে অসৎ পয়সায় কিছুই উপার্জন করেন নি, সহকর্মীদের মধ্যে যারা চেষ্টা করেছে, তাদের জন্যে কাজটা কঠিন করে দিয়েছেন। একটা আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্থ সিস্টেমে এভাবে টিকে থাকা যায় না। কাজেই তার নামে নানা মিথ্যে অপবাদ - অভিযোগ তৈরি করে তার স্বামীকে বার বার কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়ে দিয়ে বাধ্য করেছে তারা , আনিসকে চাকরী থেকে বয়সের আগেই অবসর নিতে। চাকরীর মধ্যে কখনই অসততা অবলম্বন না করা আনিস বৈবাহিক জীবনে খুব ঘটা করে মনোয়ারা, বা তাদের কন্যাদের কোন শখ আহ্লাদ পূরণ করতে পারেন নি। আবার একটা গোটা সিস্টেমের বিপরীতে চলতে গিয়ে সম্মান নিয়ে চাকরী ছাড়তেও পারেন নি - এই কষ্টই তার স্বামীকে এই পড়ন্ত বয়সে এসে কুরে কুরে খাচ্ছে। এই হচ্ছে মনোয়ারা বেগমের বাস্তবতা, যার মধ্যে তিনি বসবাস করেন। একেই রওশন একটু আগে এক সফল সার্থক জীবনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিল। মনোয়ারা ঠোঁটের কোনে একটা দুষ্পাঠ্য হাসি ঝুলিয়ে বসে থাকেন।

হঠাৎ মনোয়ারার ফোন বেজে ওঠে। মনোয়ারা খানিকটা অবাক হন। এতরাতে ... অবশ্য মোবাইল চোখের সামনে আনলে দেখা যায় রওশনের নাম। রওশনই বা এত রাতে আবার কেন ...
'হ্যালো' মনোয়ারা ফোন ধরেন। ওপাশ থেকে কোন কথা শোনা যায় না। কেবল কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। মনোয়ারা চিন্তিত হয়ে ওঠেন - 'হ্যালো, রওশন! কি হয়েছে তোর? কোথায় তুই?'
'আকলিমা খালা ...' রওশন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কথা বলার চেষ্টা করে 'আকলিমা খালা আর নেই রে মনু ... কিছুক্ষণ আগে মাত্র তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন ...'
'বলিস কি!' বিস্ময়ে মনোয়ারা মুখ দিয়ে কথা বেরোতে চায় না 'কখন ঘটলো এ ঘটনা? আমি তো বাড়ি এলাম আধাঘণ্টাও হয় নি!'

'এই তো মিনিট দশেক আগে খালা হার্টঅ্যাটাকে মারা গেলেন! বাড়ির ডক্টর এসে নিশ্চিত করলো।' মনোয়ারা শুনে ভাবতে লাগলেন তিনি এখনি আবার বেড়িয়ে পড়বেন কিনা। 'তুই এখনি আবার বের হয়ে পড়িস না মনু। খালাকে আগামীকাল সকাল দশটায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে দাফনের জন্যে। সকাল আটটায় জানাজা। তুই সকালে আসিস বরং।' এই বলে রওশন ফোঁপাতে ফোঁপাতেই আবার ফোনটা রেখে দিলো।

মনোয়ারা ফোনটা হাতে ধরে পুতুলটা কোল থেকে নামিয়ে রেখে উঠে গিয়ে জানালার পাশে দাঁড়ালেন। আকলিমা খালার চোখের সামনেই তারা সবাই বেড়ে উঠেছেন বলতে গেলে। তাদের বান্ধবীদের সবার মা - বাবা একে একে ছেড়ে গেলেও শুধু আকলিমা খালাই রয়ে গিয়েছিলেন বয়স্ক বটবৃক্ষের মতো। আজ তিনিও চলে গেলেন। মনোয়ারা কিছুক্ষণ ধরে চেষ্টা করেন আকলিমা খালাকে হারানোর ফলে সৃষ্ট তার শোক পরিমাপের। কিন্তু মনোয়ারা অবাক হয়ে লক্ষ্য করলেন, তার অতটা খারাপ লাগছে না। বরং ভালো লাগছে খালার কথা ভেবে। তাদের আজীবন যে সুখী সাংসারের কর্ত্রী হয়ে থাকার নিরবচ্ছিন্ন অভিনয়ের চাপ, তা থেকে খালা মুক্তি পেয়েছেন। এটাই তো মনোয়ারা, ইসমত, রওশন, অথবা আকলিমা খালাদের জীবনের চরম, এবং চূড়ান্ত মুক্তি। মনোয়ারা আদ্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন রাতের অন্ধকার আকাশের দিকে।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: অনেকদিন পর খুব সুন্দর একটা গল্প পাঠ করলাম।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। দ্রুত শেষ করে শেয়ার করেছি। আরও একটু ঘষামাজা করবো।

২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:০৫

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: সাজিদ ভাই কি খিলগা থাকেন?
গল্প সুন্দর হইসে।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৩৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। খিলগাঁও আমার শ্বশুরবাড়ি।

৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:৪৬

কবিতা ক্থ্য বলেছেন: আপনি তো দেখা যায় এলাকার জামাই।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:০৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: খিলগাঁওবাসীদের অতিথি আপ্যায়নে মুগ্ধ আমি দীর্ঘদিন ধরেই।

৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:০৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
মৃত্যু মানেই জাগতিক সব কিছু থেকে মুক্তি।

গল্প ভালই হয়েছে, নারী মানেই কিছুটা সুখের অভিনয় জীবনের কোন না কোন বেলা।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:০৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: পাঠে ও মন্তব্যে ধন্যবাদ মাঈদুল সাহেব।

৫| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ রাজীব ভাই। দ্রুত শেষ করে শেয়ার করেছি। আরও একটু ঘষামাজা করবো।

ঘষামাজা খুব জরুরী।
আমিও কিন্তু খিলগা থাকি।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৫৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: একদিন আপন কফি হাউজে আসেন, কফি পান করি। এরমধ্যে ভেবে দেখার অনুরোধ, আপনার চিন্তাধারার মধ্যেও ক্ষেত্রবিশেষে ঘষামাজা জরুরী কি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.