নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

আহমদ ছফার শেষ উপন্যাস \'অর্ধেক নারী, অর্ধেক ঈশ্বরী\' পাঠ প্রতিক্রিয়া

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৩৪

আহমদ ছফার শেষ উপন্যাস 'অর্ধেক নারী, অর্ধেক ঈশ্বরী' (১৯৯৬) আজ পড়ে শেষ করলাম। হুমায়ূন আহমেদের ব্যাপারে এই অভিযোগ শুনেছি, নিজেও করেছি যে তার উপন্যাস পাঠকের খুব বেশী মেধার আলোড়ন, বা অখণ্ড মনোযোগ দাবী করে না। আহমদ ছফার এ উপন্যাসের ব্যাপারেও আমার অভিজ্ঞতা একই। দুলকি চালে দ্রুতগতিতে টেনে পড়ে ফেলা যায় এমন একটি বই এটি। আমার সে অভিজ্ঞতারই দু' চার ছত্র ভাবলাম লিখে শেয়ার করি। ব্যক্তিগত আক্রোশ যদি না থাকে, তবে সমস্ত সাহিত্য সমালোচনার একটি ভদ্রস্থ নিয়ম হচ্ছে, লেখকের কাজের ব্যাপারে কিছু ভালো কথা বলে ফের সমালোচনা আরম্ভ করা। ছফার এ উপন্যাসটির ব্যাপারে আমি সে কাজটি করি নি। আগে যা ভালো লাগে নি, তা বলে যা ভালো লেগেছে সেটার আলোচনা করেছি।

সাধারণত কোন শিল্পী - সাহিত্যিকের পক্ষে জানার কথা না যে তার জীবনের শেষ কাজ কি হবে। তবে 'অর্ধেক নারী, অর্ধেক ঈশ্বরী'র মতো একটি উপন্যাস ছফার জীবনের শেষ উপন্যাস, এটা ভাবতে আমার কষ্ট লাগে। আহমদ ছফার ষাটের দশকে লেখা প্রথম উপন্যাস 'সূর্য তুমি সাথী' ব্যতিরেকে তার বাকি সবগুলো উপন্যাস নিয়ে আমার যে সমালোচনা, তার এ উপন্যাসটি নিয়েও আমার একই সমালোচনা। ব্যক্তি ছফার উপন্যাসে অতিপ্রবল উপস্থিতি। বরং, আলোচ্য এ উপন্যাস তো ছফার প্রেমেরই সাতকাহন। ছফার কাছে যেকোন সাহিত্যকর্ম বোধয় কাব্যেরই নামান্তর ছিল। প্রেমের উপন্যাস লিখবার ইচ্ছেতে তিনি প্রচুর কাব্যিকতা করেছেন 'অর্ধেক নারী...' উপন্যাসটিতে। কিন্তু, আমার ব্যক্তিগত অভিমত, তেলেজলে মেশে নি, যেমনটা মেশান অরুন্ধতী, বা টনি মরিসন। কথা হল, আপনার বলবার জন্যে না অতি অসাধারণ একটি গল্প থাকতে হবে। তবেই ভাষার সৌকর্য বিশেষত্ব পায়। তত্ত্ব - তথ্য নেই, ভাষাই শুধু বড় পেলব মধুর, এমন লেখা আমার পছন্দ নয়।
.
ছফার উপন্যাসের প্রথম দুটি অধ্যায় দীর্ঘায়িত প্রেমপত্র, সোহিনী নাম্নী এক রমণীর প্রতি। তাকে কোন চরিত্র হিসেবে তৈরি করবার শ্রম ছফা কাঁধে নেন নি। সোহিনী থেকে যান ছফার দুই প্রেমিকার সঙ্গে কৃষ্ণের ব্রজানন্দ লাভ, এবং রাধার বিচ্ছেদ যাতনার একক স্রোতা হিসেবে। উপন্যাস যখন দুম করে শেষ হয়ে যায়, তখন পাঠক বুঝতে পারে - সোহিনী কেবল তৈরি করবার ছলেই তৈরি করা একটি চরিত্র।
.
তারপর, উপন্যাসের ছলে ছফা যেটি করেন, আমার তা একদমই পছন্দ হয় নি। দুরদানা এবং শামারোখ, ছফার আসনাইয়ের দুই পাত্রীকে ৭০এর দশকের ঢাকার ইতিহাস জানা ব্যক্তিমাত্রই চিহ্নিত করতে পারবেন। তারা যথাক্রম বিখ্যাত ভাস্কর শামিম শিকদার, এবং ঢাবির ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষিকা সুরাইয়া খানম। তাদের সঙ্গে ছফা নিজের বন্ধুত্ব, এবং বন্ধুত্ব থেকে গড়িয়ে প্লেটোনিক, প্লেটোনিক থেকে গড়িয়ে শারীরিক প্রেমের যে বর্ণনা দিয়েছেন, তাতে ছফার প্রতি আমার শ্রদ্ধা কমেছে। বাড়ে নি। রিকশায় বৃষ্টিস্নাত অবস্থায় প্রেমিকার সঙ্গে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়া, তার শরীরের কামোদ্দীপক বর্ণনা দেয়া - ছফার সঙ্গে যায় কি? এ অভিজ্ঞতা বাংলার প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িত নারী - পুরুষের জীবনে খুব ইউনিক কোন কিছু? নিজের জীবনে সংঘটিত প্রেমের আনুপুঙ্খিক বর্ণনা দিয়ে যে লেখক তার জীবনের শেষ উপন্যাসটি লিখবেন, তার আদৌ উপন্যাস লিখবার কি প্রয়োজন ছিল? একটা ব্যাখ্যা ছফার উপন্যাস পড়তে পরতেই পাওয়া যায়। ছফা বারবার এ প্রসঙ্গটি তোলেন যে, এ দুই মহীয়সী নারীর সঙ্গে তার সম্পর্ককে ঢাকার তৎকালীন এলিট ক্লাসে থাকা অধ্যাপক, কবি সাহিত্যিক, ব্যবসায়ীরা ভালোভাবে নেই নি। কারন, তাদের সবারই আগ্রহ ছিল উক্ত রমণীদ্বয়ের ঘনিষ্ঠ হবার, এবং তারা পেলেন না, কিন্তু 'আচাভুয়া গ্রাম্য' ছফা পেয়ে গেলেন নানা গুণে গুণান্বিতা রমণীদের, এ নিয়েই ছিল তাদের বিস্তর ঈর্ষা, এবং ক্ষোভ। হয়তো সেই এলিট সম্প্রদায়কে অপ্রাপ্তির বেদনায় আরও কিছু জ্বলন বৃদ্ধির আকাঙ্খাও ছফার এতটা রসিয়ে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের প্রেমকাহিনীর ডালা খুলে বসার একটি কারন।
.
ছফা যে গ্রাম থেকে উঠে আসা মানুষ, এবং আজীবনই দরিদ্র ছিলেন, এ ব্যাপারটা তাকে সচেতনে, অবচেতনে তাড়িয়েছে। এ উপন্যাসেও তার প্রমাণ পাওয়া যায়। শামারোখ তাকে বারবার তার পোশাক পরিচ্ছদ নিয়ে খোঁচা দেয়। তার ইন্টারন্যাশনাল হলে থাকার জায়গা, খাবারের মান, পকেটের পয়সা এ সব নিয়েও তিনি বরাবর হীনমন্যতায় ভোগেন। ভার্সিটির প্রফেসরদের সঙ্গে রিসার্চারের পদমর্যাদার তফাৎ তার কাছে অসহ্য লাগে। জায়গায় জায়গায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক - শিক্ষিকাদের চারিত্রিক দুর্বলতা, লাম্পট্য প্রমাণ করবার চেষ্টা করেছেন। সত্যমিথ্যা ছফাই ভালো জানেন। কিন্তু উপন্যাসের আশ্রয় না নিয়ে যদি প্রবন্ধের আকারে এসমস্ত ঘটনা সবিস্তারে বর্ণনা করবার সৎসাহস তিনি দেখাতেন, ভালো লাগতো। ছফার কাছ থেকে এতটুকু আশা করতেই পারি।
.
অবশ্য এও সত্য যে, ছফা যদি এই কথাগুলো না লিখতেন কথাগুলো আলোচনাতেও আসতো না কখনো। কবি আবুল হাসান, শামারোখ, বা সুরাইয়া খাতুনের পরবর্তী প্রেমিককে ছফা পয়সা ধার দিয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হতে সহায়তা করেছিলেন, পরে সেই টাকা দিয়ে আবুল হাসান বেশ্যাপল্লীতে গিয়ে মৌজ করা অবস্থায় ছফা তাকে পিটিয়েছেন - এ সমস্ত ঘটনা ছফা বর্ণনা করেন অকপটে। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্যারকে উপস্থাপন করেন, একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে, দাম্ভিক মিথ্যেবাদী হিসেবে। আহমদ শরীফ স্যারকে উপস্থাপন করেন মিথ্যে রটনার সহযোগী হিসেবে। সুরাইয়া খানমকে ইংরেজি বিভাগে চাকরী পাইয়ে দেবার জন্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তদবির করান ঢাবির এক শিক্ষককে ধরে, সেই সুরাইয়া খানম যখন ডিপার্টমেন্টে টিকে থাকার জন্যে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী স্যারের সঙ্গে টিচার্স লাউঞ্জে বসে মধুমিশ্রিত কথা বলে ডাগর নয়নে চেয়ে থাকেন সিক স্যারের দিকে ছফার বুকে তা কাঁটার মতো বেঁধে। দুরদানার সূত্রে তার ভাই ইউনুস জোয়ারদার, বা সিরাজ শিকদারের ঘটনাও আসে।
.
কাঠামোগতভাবে এতটা দুর্বল, এতটা ব্যক্তিগত একটি উপন্যাস, যেখানে ছফা নিজেই ভুতের মতো উপস্থিত আদ্যোপান্ত - এটা আহমদ ছফার শেষ উপন্যাস, ভাবতেই খারাপ লাগে। গুরু আবদুর রাজ্জাক তাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন তলস্তয়ের ওয়ার অ্যান্ড পিস, আন্না কারেনিনার মতো হাজার পাতার উপন্যাস লিখতে, মাওলা ব্রাদার্স থেকে তার আটটি উপন্যাসে মিলিত উপন্যাস সমগ্রের সর্বমোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৫৭২, এটাও কষ্টেরই একটা ব্যাপার।
.
ছফা যাদের বাসায় বা মনে পোস্টারের মতো সেঁটে আছেন, আমি সেই ভক্তদের একজন। কাজেই ছফার প্রতি আমার - আমাদের দাবী বেশী। ঔপন্যাসিক ছফা সেই দাবী পূরণ করতে পেরেছেন কদাচিৎ। তার প্রবন্ধই তার মননশীলতার সেরা প্রমাণ।

মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি একটা বই কতবার পড়লে, উহার উপর পরীক্ষা দিয়ে ২০ নম্বরের মাঝে ১৫ পেতে পারেন?

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৪

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। আপনি যে মূল্যায়ন পদ্ধতির কথা বললেন, আমি এর বিরোধী। টার্মপেপার / রিসার্চ বেইজড মূল্যায়ন সবচে ভালো মূল্যায়ন পদ্ধতি। আমরা ধীরে ধীরে সে পথেই হাঁটছি।

২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫১

চাঁদগাজী বলেছেন:



ঠিক আছে, কোন বিষয়ের উপর টার্ম পেপার লিখলে, আপনি ২০ নম্বরে ১৫ পাবেন।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:০২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: কাকু, আমরা যারা অ্যাকাডেমিয়াতে অ্যাকাডেমিক হিসেবে সক্রিয়, আমাদেরকে আর ফরমালি মার্কিং করার উপায় থাকে না। কিছুকাজ ভালো হয়। কিছুকাজ বস্তাপচা হয়। এভাবেই গবেষকের জীবন এগিয়ে চলে।

৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:২১

চাঁদগাজী বলেছেন:


আহমেদ ছফার লেখাগুলো কিসের উপর ফোকাস করেছে?

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৩৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ছফাকে মানুষ পছন্দ, এবং অপছন্দ করে তার অকপট, নির্ভীক সত্যকথনের জন্যে। কৌম পতিত বাঙ্গালী মুসলিম আইডেন্টিটিকে একটা শক্ত ইডিওলজিক্যাল ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে গেছেন তার রচিত প্রবন্ধগুলির মাধ্যমে। লিখেছেন রাজনীতি, সংস্কৃতি, নৃতত্ত্ব - সবকিছু নিয়েই, যা কিছু তার সময়ে প্রাসঙ্গিক ছিল।

৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৪১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আহমেদ ছফার নাম শুনলে একটা মোহ কাজ করে তবে এই বইচি পড়ি নাই। আহমেদ ছফা সাদাকে সাদা বলা লেোক চামচা নয়।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: নিদারুণ অর্থকষ্টে জীবন কাটিয়েছেন, সততার জন্যে। মারাও গেছেন দারিদ্র্যের মধ্যেই। তার প্রধানতম শিষ্য সলিমুল্লাহ খান যেমন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়ে চলনসই একটা জীবন কাটিয়ে নিচ্ছেন, ছফার সে সুযোগ হয় নি।

৫| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৪১

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আহামদ ছফার কোন বই পড়া হয়নি,উপন্যাস এমনিতেই কম পড়ি তবে ওয়ার অ্যান্ড পিস ও আন্না কারেনিনা অনেক আগে কোন এক ফাঁকে পড়ে ছিলাম,এখন স্পষ্ট করে কিছু মনেও নেই।ছফার প্রবন্ধ গুলো নিয়েই কিছু লিখুন,ভাল যখন বলছেন।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: লিখবো কোনদিন, যখন আবার পুনঃপাঠ করা হবে, বা হয়তো আমার কোন আলোচনার সূত্রেই চলে আসবে। বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় প্রাবন্ধিকদের প্রচারিত মতাদর্শ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে লেখার ইচ্ছে আছে একসময়।

৬| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৫০

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: উপন্যাসটা আমার প্রিয়'র তালিকায় রয়েছে। কোথায় যেন খানিকটা অসমাপ্তি থেকে গেছে।

১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:২০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ছফার এ উপন্যাস অনেকেরই প্রিয়। যে লেখাটা এখানে শেয়ার করলাম, বইপোকাদের আড্ডাখানা নামে একটা গ্রুপ আছে ফেসবুকে, জানেন হয়তো, ওখানে শেয়ার করলে অন্ধভক্তরা গালাগাল করতে করতে আমাকে এতক্ষণে লাল করে দিতো। আমার সমালোচনাটা লেখক হিসেবে, লেখকের জায়গা থেকে। নিজের জীবন থেকে পুরোপুরি টুকলিফাই করে একটা উপন্যাস লিখে ফেলা খুবই আলস্যের পরিচায়ক। দুর্বলতারও। এখানেই আমার আপত্তি।

৭| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:২৯

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: যদিও আমি সহিত্যের শিক্ষার্থী নই, তবু 'ঘরভর্তি বই থাকবে না ভাবলে আমার বুকে ব্যথা হয়'।
'অর্ধেক নারী, অর্ধেক ঈশ্বরী' উপন্যাসের শামারোখের জন্যই লেখা।
ঠিক ১২বছর আগে বইটা পড়েছিলাম।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ঘরভর্তি বই থাকলে ঘরভর্তি মশা হয়, খেয়াল করেছেন ব্যাপারটা? বইয়ের ফাঁকে ফাঁকে মশা লুকিয়ে থাকে। দিনের বেলায়ও কামড়ায়। বড়ই যন্ত্রণা।

৮| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: 'অর্ধেক নারী, অর্ধেক ঈশ্বরী' বহু বছর আগে পড়েছিলাম। ঘটনা কিছুই মনে নেই। আপনার পোষ্ট টি পড়ে বইটি আবার পড়ার ইচ্ছা জাগলো।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: পড়তে পারেন। আমার বরং অনুরোধ থাকবে নতুন কিছু পড়ার। দ্বিতীয়বার পড়ার মতো বই এটা না, যদি না গবেষণার সূত্রে হয়। গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের মতো কেউ কেউ এই বইয়ের বিরুদ্ধে নারী অবমাননার অভিযোগ এনেছিলেন।

৯| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪৭

অধীতি বলেছেন: আমি ছফাকে বেশি পড়ার সুযোগ পাইনি।তার গল্প সমগ্র পড়েছি এই যা। বইটা পড়ে নিবো শিঘ্রই।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ছফার চিন্তার বৈচিত্র্য বুঝতে তার নির্বাচিত প্রবন্ধ পড়তে পারেন বরং, উপন্যাস পড়ার চে' । মাওলা ব্রাদার্স বের করেছে।

১০| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:০৫

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ভেবেছিলাম ২০২১এ আপনার অনূদিত মিসিং পারসন এবং কোমা ও অন্যান্য গল্প (গল্পগ্রন্থ) পড়বো।
তবে বইয়ের ফাঁকে মশার যন্ত্রণার বিষয়টা আমলে নিয়ে ইচ্ছা স্থগিত করলাম।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:২০

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আমার লেখার অধিকাংশ পাঠকের জন্ম এখনো হয় নাই। ব্যাপারটা এমনও না যে একজন দু'জন করে পাঠক বাড়াবার জন্যে আমার আগ্রহ অনেক। আপনাকে ডেঙ্গু থেকে বাঁচাতে আমার এই সাময়িক ক্ষতি আমি শিকার করে নিচ্ছি।

প্রাসঙ্গিক কথা হল এই যে, শুধু ব্যক্তিগত লাইব্রেরীর সাইজ দিয়ে যদি মানুষ মাপা হয়, তাহলে এই ব্লগের একজন ব্লগারও হিটলার, বা গোলাম আজমের ধারেকাছেও যেতে পারবে না। কিন্তু বড় বড় লাইব্রেরীর মালিক বলেই কি হিটলারকে বিশ্বের ইতিহাস, আর গোলাম আজমকে বাংলাদেশের ইতিহাস ক্ষমা করবে কোন দিন? যে কেউ তার লাইব্রেরীর সাইজ নিয়ে কথা বললে আমার ঠোঁটের কোনে একটা বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে। মানুষরে তার কাজে চেনা যায়। লাইব্রেরীর সাইজ দিয়ে না।

১১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০২

রোকসানা লেইস বলেছেন: আহমেদ ছফার নিজের জীবনের গল্পই মিশেছে অর্ধেক নারী, অর্ধেক ঈশ্বরী র গল্পে।
নৈতিক মানুষের প্রেম থাকবে না এই চিন্তাটা কেমন যেন লাগল।
উনার লেখা খুব বিখ্যাত গান ঘর করলাম নারে আমি সংসার করলাম না ..শুনেছেন

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:০১

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: গানটা শোনা হয় নি। ইউটিউবে খুঁজে দেখবো। রেফার করবার জন্যে ধন্যবাদ। আর আমার আর্গুমেন্টটা এটা ছিল না যে নৈতিক মানুষের প্রেম থাকবে না। আমার আর্গুমেন্টটা ছিল - লেখক বলুন, বা ব্যক্তি ছফা বলুন, ছফার কোন ইমেজের সঙ্গেই এই উপন্যাসটা যায় না। তসলিমা নাসরিনকে অনেকেই দোষ দেন, বাংলাদেশের সেলিব্রেটি পুরুষ লেখকদের সঙ্গে তার প্রেম ভালোবাসার গল্প উদাম করে লেখার জন্যে। ছফাকেও একই দোষে দোষী, এ উপন্যাসে করা যায়। এছাড়াও, এভাবে স্রেফ চরিত্রের নাম বদলে, নিজের জীবন নিয়েই পুরো একটা উপন্যাস লেখা, লেখক হিসেবে আলস্যের পরিচায়ক। শুভকামনা।

১২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৪

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: আহমদ ছফার অকপটে কথা বলাটা আমার পছন্দ।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:০২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আমারও পছন্দ।

১৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:০৫

মনিরা সুলতানা বলেছেন: পড়ার সময় ডীন ডীন কমে যাচ্ছে আফসোস।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:০৪

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: রাতে আধাঘণ্টা আগে শুতে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন আপা, একটা বই হাতে। ছফার এ উপন্যাসটা আমি ঘুমানোর আগেই পড়েছি। পড়া থামিয়ে দিয়েন না। আপনাকে দেখে আমাদের ভাগ্নে - ভাগ্নিরা এ অভ্যাস তৈরি করবে।

১৪| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:২৯

পদ্মপুকুর বলেছেন: ছফা যাদের বাসায় বা মনে পোস্টারের মত সেঁটে আছেন..... আমি সেই দলে পড়ি। সে অর্থে আপনার এই পাঠপতিক্রিয়া ভালো লাগেনি। সেটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, যেমনটা আপনি জানিয়েছেন আপনার মতামত।

আহমদ ছফার অন্যতম শিষ্য ড. সলিমুল্লাহ খান যদিও তাঁকে কবি, ঔপন্যাসিক, গদ্যলেখক এবং বুদ্ধিজীবিসহ বিবিধ পরিচয়ে পরিচিত করেন, তবে আমি মনে করি- অন্যান্য পরিচয়কে ছাপিয়ে আহমদ ছফা মূলত ঋজু ব্যক্তিত্বের বুদ্ধিজীবি হিসেবেই এদেশের ইতিহাসে বেঁচে থাকবেন।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:১৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আমি ভক্ত বটে, অন্ধভক্ত নই। ছফা বেচে থাকলে আমি নিশ্চিত তার সঙ্গে আমার দেখা হতো। তাকে সামনা সামনিই বলতাম এ কথাগুলো। আর শালীনতা - সৌজন্যবোধ বজায় রেখে দ্বিমত, আমাদের একে অপরের সঙ্গে করে যেতেই হবে। নাহলে আমাদের সামগ্রিক চিন্তা সামনে এগুবে না।

ছফার সর্বনাশ, মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত ছফার উপন্যাস সমগ্রের শুরুতে, মহাত্মা সলিমুল্লাহ খান করে দিয়েছেন। মুখবন্ধে খান সাহেব লিখেছেন - ১) ছফা সাহেব লিখতেন জিনের গতিতে, ২) শুধু এই ৮টি উপন্যাসের মাধ্যমে ছফাকে পৃথিবীর সর্বকালের সেরা ১০ ঔপন্যাসিকের কাতারে ফেলা যাবে। এরকম একটা হাইপ তৈরি করে দেয়ার পর উপন্যাসগুলো, সাহিত্যিক মান বিবেচনা করলে অনুজ্জ্বল লাগে। একজন বিশ্বমানের প্রলিফিক লেখক কেন উপন্যাস লেখায় এতটা আলস্য, এতটা অনৈতিকতা অবলম্বন করবেন? শামীম শিকদারের সঙ্গে তার যৌন অভিজ্ঞতার কথা তিনি যখন উপন্যাসে লিখছেন, যখন তা প্রকাশ পাচ্ছে, ভাস্কর শামীম শিকদার তখন দেশেই আছেন, স্বামী - সন্তান নিয়ে সংসার করছেন। হয়তো শামীম এমন একটা সোশ্যাল সার্কেলে বিলং করতেন যে তার অতীত জীবনের কেচ্ছা কাহিনী তার পারিবারিক - সামাজিক জীবনকে প্রভাবিত করে নি, কিন্তু ছফার দিক থেকে এই কাজটি কিভাবে ভদ্রতার কাতারে পড়ে? একই কারনে তসলিমা নাসরিনকে কি বাংলাদেশের পুরুষরা বাপ মা তুলে গালিগালাজ করে নি?

ছফাকে আপনার ঋজু ব্যক্তিত্বের বুদ্ধিজীবী লাগতে পারে, তবে আমাদের নৃতাত্ত্বিক, জাতীয়, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বেশ কিছু আলোচনার সূত্রধর ছিলেন তিনি, এবং সেই আলোচনার জন্যে ব্যক্তিজীবনে তিনি বারংবার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, এও ঐতিহাসিক সত্য।

১৫| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৩৩

কালো যাদুকর বলেছেন: পড়লাম।
যেটা মুখে বলা যাবে না, সেটাই প্রকৃত অনুভূতি। একজন লেখকের কাজ সেটাই করা, প্রকৃত অনুভূতি বর্ণনা করা।
আপনার বুক রিভিউ পরে মনে হল বিমুখ পাঠকের আহাজারী।
আহমদ ছফা আসলে অকপটে প্রকৃত অনুভূতিই তাঁর উপন্যাসে লিখেছেন। যখন লেখক একটি কবিতা, গল্প, উপন্যাস লিখেন , পাঠক হিসেবে আমাদের বিভিন্ন চাহিদা থাকে, অনেক সময় আমরা লেখকের আশেপাশের মানুষের সাথে সেগুলো মিলিয়ে গল্পটি বোঝার চেস্টা করি। আপনার বুক রিভিউ পরে অন্তত সেটাই মনে হলে। তবে আমি সেটা কখনোই যৌক্তিক মনে করি না।

ভাবুন তো , লেখকের আশেপাশের মানুষের সাথে যাদের কোন পরিচিতি নেই, ওই পাঠকরা এই বইটি পড়ে কি ভাববেন?
যাহোক উপন্যাসটি সময় নিয়ে পড়ে আবার আলাপ করা যাবে। ধন্যবাদ।

১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:১৮

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: আপনার মন্তব্য ভদ্রতা, এবং সৌজন্যবোধের গণ্ডি অতিক্রম করেছে। এই ধরনের মন্তব্যের কোন উত্তর আমি দিই না, মন্তব্যকারীর এ আচরণের জন্যে দুঃখপ্রকাশ করা ছাড়া।

১৬| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:২৭

নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: সাজিদ উল হক আবীর, সামগ্রিক দুঃসময়ে আপনি বাঁকা হাসি হাসতে পেরেছেন জেনে ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ ডেংগু বিষয়ক সচেতনতা জানান দেয়ার জন্য।
আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি, আশা করি কাজ হিসেবে সেটা মন্দ নয়।
ছোট হলেও আমার একটা ব্যক্তিগত লাইব্রেরি আছে, সেটার জানান দিতে আমি আগ্রহী নই।
পাঠক হিসেবে আমাকে আপনি সাময়িক নয়, চিরস্থায়ী হিসেবে হারালেন।
আপনার জ্ঞানগর্ভ এবং সমৃদ্ধ বইয়ের কোনো পাঠকের সাথে ঘটনাক্রমে আলাপ হলে জেনে এবং বুঝে নেয়ার চেষ্টা করবো তাদের জন্মটা ঠিক কোন সময়ের।
ভালো থাকবেন।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:০৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: নামের বানানটা ভুল লিখেছেন আমার। এছাড়া আর যা লিখলেন, কোনকিছুতেই আপত্তি নেই। শুভকামনা।

১৭| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:০২

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম- কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।
আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:০৬

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ফিরে আসার জন্যে ধন্যবাদ রাজীব ভাই।

১৮| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২৬

কালো যাদুকর বলেছেন: আপনি আমার আগের মন্তব্যে ভুল বুঝেছেন। আমি শুধুই আপনার বুক রিভিউর সাথে একমত হয়নি। তার বেশী নয়। আমার প্রশ্নটির উত্তর দিতে হবে না, শুধু ভেবে দেখুন।

তারপরেও যদি মনে হয় আমার মন্তব্য ভাল হয়নি তাহলে আমার মন্তব্যে দুঃখিত।

May be you and I am at two different pages of the same story.

ধন্যবাদ।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:১৯

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: নিক থেকে মন্তব্য করবার সময় শব্দচয়নে, লেখার টোনে সতর্কতা অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়, বিশেষ করে কোন পূর্ব পরিচয় না থাকলে। অনেকে মনে করেন, খোলা প্লাটফর্মে সবার সমান অধিকার, প্রশ্ন রাখার। আমি তার সঙ্গে একমত নই। আমরা ব্যক্তিজীবনে মুখোশ পরিহিত ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় যাই না। আমি নিজস্ব পরিচয়ে ব্লগিং করছি। বাকি যারা নিকের আড়ালে লিখছেন, তারা মুখোশ পরে আছেন বিবেচনা করছি। এটা গেল একটা দিক। আরেকটা দিক হল, আমরা ব্যক্তিজীবনেও সবার প্রশ্ন একই গুরুত্বের সঙ্গে নেই না। যেমন ধরুন আমি ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যাপনা করি। আমার একটি ক্লাসের সব স্টুডেন্টের প্রশ্নের গুরুত্ব একরকম নয় আমার কাছে। আবার যাদের প্রশ্ন গুরুত্বপূর্ণ, তাদেরও উত্থাপিত সবপ্রশ্ন, সব ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ নয়।

আপনার "বিমুখ পাঠকের আহাজারী" শব্দগুচ্ছ আমার বিরক্তি উৎপাদন করেছে। প্রথমত, এটা কোন একটা নির্দিষ্ট অর্থ বহন করে না। কে বিমুখ? কিসে বিমুখ? যদি পড়ার কথা হয়, আমার চে' বেশী পড়ুয়া স্বভাবের মানুষের সঙ্গে আপনার দেখা হবার সম্ভাবনা কম। কাজেই আমি পাঠবিমুখ নই। কিসে বিমুখতা? ছফায়? ছফার লেখাও, আমার চে বেশী পড়া মানুষের সঙ্গে আপনার দেখা হবার সম্ভাবনা কম। বাকি রইল আহজারী শব্দটা। আহজারী জিনিসটা আমার খাসলতের মধ্যেই নেই।

আপনার চিন্তা রিভাইস করার জন্যে ধন্যবাদ। এখন আমরা ইভেন। আলোচনা সম্ভব।

১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৩

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: এবার আসা যাক আপনার উত্থাপিত আপত্তিতে - যে, আমি কনটেক্সটা জানি বলে আমার উপন্যাসটা এরকম লেগেছে, যারা জানে না, তাদের কি অমনটা লাগবে?

আমার উত্তর হল - আমি বেশী জানি, এটা আমার অপরাধ হতে পারে না। আপনি যে ব্যাকগ্রাউন্ড নলেজকে মূল টেক্সট থেকে বিচ্ছিন্ন করে পাঠ করতে বললেন, এটা সাহিত্যতত্ত্বের বর্তমানে এক অচল ও বাতিল ফেরকাওয়ালারা প্রোপাগেট করেছিল ১৯৪০ সালে। ফরমালিস্ট মুভমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসা সে ফেরকার নাম 'নিউ ক্রিটিসিজম'। এখন আর টেক্সট এভাবে পড়া হয় না। এই ম্যাথড, ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে টেক্সট বিচ্ছিন্ন করে পাঠ করা, এটা আদৌ সম্ভবও না। ধরুন আপনি ছফার প্রথম একটি বই পড়লেন, সেটার একটা ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যতিত নির্মোহ পাঠ সম্ভব। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে ছফার ১০ নম্বর বইটি যখন আপনি পড়বেন, আপনার সাবকনশাসে ছফার ব্যাপারে আপনার একটা ইতিবাচক/নেতিবাচক আকাঙ্খা তৈরি হয়েই থাকবে। আপনি চাইলেও আর ১০ নম্বর বইটি ছফা সংক্রান্ত তথ্যের ভারে ভারাক্রান্ত আপনার মস্তিস্ক থেকে আলাদা করে পড়তে পারবেন না।

আপনি যেভাবে বই পড়তে পরামর্শ দিচ্ছেন, এভাবে বই পড়লে সাহিত্য সমালোচনা ও সাহিত্যতত্ত্ব কোনদিনও সামনে বাড়তো না। সাহিত্য সমালোচনা কখনো দুর্বল পাঠকদের মাথায় রেখে করা হয় না।

এছাড়াও, ছফার নাম দেখেই যখন বইটা হাতে তুলে নিয়েছি, ছফা সংক্রান্ত আমার অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলিয়ে বইটি পড়বো না ই বা কেন? ছফার জায়গায় অন্যকারো প্রণয় ও যৌনজীবনের আখ্যানওয়ালা বই যদি রাস্তায় থাকে, তা যত রগরগেই হোক, আমি তো কিনিনি ওটা। ছফার ব্র্যান্ড ভ্যালুর জোরে বইটা আমার হাতে এসেছে, কাঁচা পয়সার বিনিময়, বইটার পাঠও হবে ছফার সঙ্গে মিলিয়েই।

শেষ কথা এই যে, আপনি বরং বইটায় ফিরে যান, এবং নিজেকে প্রশ্ন করুন, ছফা নিজে চেয়েছিলেন কিনা তার এ বইয়ের পাঠক তার জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন করে বইটা পাঠ করুক? যদি চেয়েই থাকেন, তবে উপন্যাসের নায়কের সঙ্গে স্রেফ নামটা ছাড়া আর শতভাগ মিল কেন রাখলেন, নিজের জীবনের সাথে?

১৯| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩৭

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ভাব ও ভাষার পরিমিতি বজায় রেখে যারা এ আলোচনায় অংশ নিলেন সবাইকে ধন্যবাদ। সাহিত্য বিষয়ক একটি পোস্টের পাঁচশোর কাছাকাছি পাঠ অনুপ্রেরণাদায়ী।

২০| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:০৮

রানার ব্লগ বলেছেন: আহমেদ সফা যাই বিশ্বাস করতেন তার লেখায় তাই ফুটে উঠতো, আমি তার লেখার ভেতরে কোন সঠতা খুজে পাই নাই। আমি ওনার পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গ পুরাণ বইটাই পড়েছি তাতে আমি ওনাকে লেখক হিসেবে সৎ পেয়েছি।

২০ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৩২

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: ছফা সম্পর্কে আপনার ধারনা জানলাম। ভালো লাগলো। ক্রিটিকালি পড়বার অভ্যাস বজায় রাখুন। শুভকামনা।

২১| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ২:৫৪

কালো যাদুকর বলেছেন: ধন্যবাদ | আশা করি "there is no hard feeling".
আসলে কেউ ছদ্য নামে লিখতে পছন্দ করেন, কেউ করেন না। এটি একটি ফ্যাক্টর হতে পারে আলোচনার জন্য তা কখনো মনে হয়নি। তবে "everyday we learn something new".
যেহেতু ছফা সাহেব বেঁচে নেই 'সেহেতু নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই 'উঁনি আসলে কি চেয়েছিলেন ৷
ধন্যবাদ৷ ভাল থাকুন ও সুস্থ থাকুন। হ্যাপি ব্লগিং।

২০ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:৩৯

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: এতে কোন সন্দেহ নেই যে ছফা বেঁচে নেই বলে ওনার সঙ্গে আলাপ করে উনি উক্ত উপন্যাসে ঠিক কি ম্যাসেজ কীভাবে কনভে করতে চেয়েছিলেন, এটা আর জানার উপায় নেই। এটা আমার রিয়ালাইজেশনে ছিল বলেই আমি ওনার মাজারে নয়, বরং অনুরোধ করেছিলাম ওনার বইয়ের কাছেই পুনরায় ফেরত যেতে। যদ্যপি আমার গুরু পড়া না থাকলে একবার পরে তারপর এই উপন্যাসটায় ফেরত আসলে হয়তো বুঝতে সহজ হবে আমি কি বলতে চেয়েছি।

ছদ্মনামে লেখা বা না লেখা আলচনার ফ্যাক্টর হতে পারে না - এটা যেমন আপনার একটা অভিমত, তেমনি ছদ্মনামে যারা ব্লগিং করেন, তাদের ব্যাপারে আমার অস্বস্তিও আমার পূর্বাভিজ্ঞতাজাত। যার সঙ্গে আলাপ করবেন, তার সুবিধা - অসুবিধা জেনে, সে অনুযায়ী আলাপ করাটা স্বাভাবিক সৌজন্যবোধ।

নো হার্ড ফিলিংস। আপ্নিও ভালো ও সুস্থ্য থাকুন। শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.