নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাজিদ উল হক আবির

সাধু সাবধান ! ব্লগের মালিক বঙ্গালা সাহিত্যকে ধরিয়া বিশাল মাপের ঝাঁকি দিতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করিতেছেন। সেই মর্মে তিনি এখন কিটো ডায়েটিং, ডন-বৈঠক ও ভারোত্তলন প্রশিক্ষণে ব্যস্ত। প্রকাশিত গ্রন্থঃ১। শেষ বসন্তের গল্প । (২০১৪)২। মিসিং পারসন - প্যাত্রিক মোদিয়ানো, ২০১৪ সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী (অনুবাদ, ২০১৫) ৩। আয়াজ আলীর ডানা (গল্পগ্রন্থ - ২০১৬ ৪। কোমা ও অন্যান্য গল্প(গল্প গ্রন্থ, ২০১৮) ৫। হেমন্তের মর্সিয়া (কবিতা, ২০১৮) ৬। কাঁচের দেয়াল (গল্পগ্রন্থ, ২০১৯)

সাজিদ উল হক আবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

সূতির খালের হাওয়া - ১০ঃ ২১ ফেব্রুয়ারির প্রাক্কালে

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:০০

শুয়েই পরসিলাম প্রায়। পরে মনে হইল, আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি। এই নিয়ে গুটিকয় চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। ওগুলা খসড়া আকারে টুকে রাখি।
.
১। বাংলাভাষার সৃজনশীল গদ্যকার হিসেবে আমার ভাষা বিষয়ক মতামত হইল এই যে, আমার বাংলা গদ্যে আমি বরাবর শব্দচয়ন, বাক্যবিন্যাস, বানান ও ব্যাকরণগত সতীত্ব রক্ষার চে' কি বলতে চাইছি, অর্থাৎ আমার চিন্তাটা কতটুকু যৌক্তিক - মৌলিক - প্রাসঙ্গিক - ও অন্তর্ভেদী হইল, এই নিয়া ফিকির করছি বেশী। অনেক লেখক্রে কেওয়াজ করতে দেখসি 'জল' বলব না 'পানি' বলব - এই নিয়া। আমার মতে, যদি আপনার বলার মতো অনেক গল্প থাকে, এই কেওয়াজ্রে আপনি একটা ব্যক্তিগত সমরক্ষেত্র বলে বিবেচনা করবেন না, বা করার কথা না। আমি মুছলিম পরিবারে জন্মাইছি, তাই ধন্যবাদের পাশাপাশি শুকরিয়া বলার অভ্যাস আছে আমার। আবার আমার পাঁচতলায় দুই ফ্ল্যাট নিয়া যে বৈষ্ণব পরিবার ভাড়া থাকে, তারা আল্লা বলে না, বলে হরি। এই ধরনের শব্দচয়নরে আমি রাজনীতি আকারে দেখতে চাই না, আর যদি কেউ অনেক জোর করে এটারে রাজনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেও, তবুও, এই রাজনীতি - আমার চিন্তাশীল সজীব সত্ত্বার মৌলিক স্ট্রাগল না।
.
২। শিক্ষক (যদি বা ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের) হিসেবে আমার ভাষা বিষয়ক মতামত হইলে এই যে - শুনতে খানিকটা ক্লিশে (ক্লিশের বাংলা কি হইতে পারে? জীর্ণ? ধ্যাতা ধ্যাতা?) শোনালেও, বাংলাভাষায় জ্ঞানচর্চার পরিসর ইদানিং বয়স্কালীন পুরুষদের প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের মতই সংকুচিত হয়ে আসতেছে দিন কে দিন, এবং এটা আমারে হতাশ করে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলিতেই, আপনারা জানেন কি না জানি না, মাস্টারে পুরা বক্তৃতা আংরেজিতে দিতেছে কিনা, সেইটার উপর ছাত্রছাত্রীরা আলাদা ভাবে এভালিউশন করে। বৈদেশী জ্ঞানমূলক শব্দের পরিভাষা সৃজন সে তো আরেক নকুলের সম্মুখীন হওয়া। চারুকলার শিক্ষকদের নৌভ্রমনে একজন শিক্ষিকা আমারে বলতেছিলেন - কেন চায়নিজরা চায়নায় তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দেয়, আংরেজির এই রমরমা যুগেও? আমরা কি পারি না ঔপনিবেশিক ভাষার বিরুদ্ধে রুখিয়া দাঁড়াইতে? জলের উপর রঙ্গিন জলে সয়লাব সে সন্ধ্যায় কাচরুর ওয়ার্ল্ড ইংলিশেস থিয়োরি কপচানো বড়ই খাপছাড়া মনে হইতেছিল বিধায় কিছু বলি নাই। মাগার বাট, কেন চায়নারা ইঞ্জিরির বদলে ম্যান্ডারিন শিখা কুতুব হইতে চায়নায় আসতে বলার হ্যাডম দেখাইতে পারে, আর কেন আমরা পারি না - এই প্রশ্নের সম্পূরক একটা প্রশ্ন, কেন আপনার চুলের ক্লিপ, চশমার ফ্রেম, এবং হাতের মুবাইল সেটখানাও চায়নিজ, এবং উভয় প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে পুঁজির ফ্লো বুঝা লাগবে। সেই আলাপও পাড়ার সময় এবং প্রেক্ষিত, এই জায়গা না।
.
৩। বাকি রইল আমআদমি হিসাবে আমি ভাষা নিয়া কি চিন্তা করি, সেই আলাপ। ভাষারে নিজের মতো চলতে দেয়ার পক্ষপাতী আমি। অর্থাৎ, ভাষা ভাসতে থাকুক। আরবি ফারসি যেমন কোর্ট ল্যাঙ্গুয়েজ ছিল একদা, সেই রকম কোন 'প্রমিত' বাংলার খবরদারী, এবং তার উপর ভিত্তি কইরা সামাজিক শ্রেণীবিভেদের ছড়িবরদারির বিপরীতে আমার চিন্তার রাজনৈতিক অবস্থান। নিপীড়নের একটা মাধ্যম যে ভাষা নিজেও হইতে পারে, ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ দুপুরবেলার অক্ত তো তারই প্রমাণ।
.
প্রত্যেক চিন্তাশীল বাংলাদেশী বাঙ্গালী আইজ্জা ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ আমাদের দিলে কি দিলো, আর নিলে কি নিলো - এইটা নিয়া ফিকির করুক এই বাসনা দিলে রাখি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



২ নং:

বয়স্ক পুরুষের প্রষ্টেট বয়সের সাথে সংকুছিত হয় না, উহা "বড় হয়"।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৪৪

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: হ্যাঁ, প্রোস্টেট গ্ল্যান্ড না, গ্ল্যান্ডের সম্মুখের ইউরিনারি ক্যানল সংকুচিত হয়।

২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: ঘুম বাদ দিয়ে লিখতে বসে ভালো করেছেন। তবে ঘুমকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবেন না। ঘুম খুব মূল্যবান।
ভাষা নিয়ে আমি মোটেও চিন্তিত না।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৪৫

সাজিদ উল হক আবির বলেছেন: বটেই রাজীব ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.