![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কুয়াশা ভেজা কোনো এক রাত শেষের ভোরে প্রান্তর ভেজানো শিশিরে, আমি জন্মেছি, কারো স্বপ্নে বিভোর ঘুম জড়ানো কন্ঠে জল পেতেছি দৃষ্টির আড়ালে। জোসনা ভেজা রাতে চন্দনের ঘ্রাণে ভোরের শিউলিও থমকে ছিলো খানিকটা। মৃদু হাওয়ার স্পন্দনে বকুল ফুলের নেশা আমায় গ্রাস করেছিলো শুভ্র আবহে। ঘরের এককোনে অনাদরে মলিন হওয়া তারপুরার বেদনার সাথে কেনো যেনো বন্ধুত্ব ছিলো শতাব্দী ধরে। চিঠির কালি শুকিয়ে পড়তো জলেশ্বরীর জলপদে। শ্রাবণের সন্ধ্যার বর্ষণের পানে আমি কতোকাল চেয়েছি। তরুণীর ভেজা চুল আকাশের স্বপ্নের শরৎের বিকেল কাশফুলের শুভ্রতা লুটতো আমাকে সঙ্গী রেখে। কারো স্বপ্নে, এক ফোঁটা নিঃশ্বাসে, হয়তো একটুখানি তৃপ্তিতে আমি দিনশেষে ফুরিয়ে যাবো মহাকালের বুকে। হয়তো স্বপ্ন ভিড়বে কুয়াশায়, বকুলের ঘ্রাণে, শ্রাবণের বর্ষনে!
আসলে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কি চায়। এরা প্রচণ্ড সাম্প্রদায়িক। মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড আক্রোশ পোষণ করে এরা। এদের কে কেন জামায়াতের মতো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হচ্ছেনা? সংখ্যালঘুদের উপর হামলার পর এরাই ভারতকে উস্কে দিয়েছে।
এখন শুরু করলো গেণ্ডারিয়ার মসজিদ নিয়ে। ওই এলাকার হিন্দুরা বলছে তাঁদের মণ্ডির ভেঙ্গে নাকি মুসলমানেরা মসজিদ বানিয়েছে। মুসলমানেরা দাবি করেছে, ১৯৭১ সাল থেকে জায়গাটি সরকারী তালিকাভুক্ত, যা ১৯৯২ সালে স্থানীয়রা লিজ নিয়ে ক্লাব তৈরি করে যেখানে এখন মসজিদ গড়ে উঠেছে।
অন্যদিকে মুসলমানেরা বলছে হিন্দুদের ৭টি বাড়িতে ৪টি মন্দির আছে তবে সবগুলো সরকারী জায়গায়। অন্যদিকে মুসলমানদের ৫০ বাড়িতেও মসজিদ নেই। এই নিয়ে চলছে বিরোধ।
অন্যদিকে হেফাজত মসজিদ রক্ষার নামে আন্দোলনের ঘোষণা পরিকল্পনা করছে, অন্যদিকে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও দাবি আদায়ের ঘোষনা দিচ্ছে। এখানে বলে রাখা ভালো হেফাজত এবং এই সংগঠনটির মধ্যে একটি মিলই খুঁজে পাওয়া যাবে যা হলো দুটোই প্রচণ্ড সাম্প্রদায়িক। দুটোই রক্তপাত ঘটানোর অবস্থা তৈরি করতে পারে।
কয়েকটি স্ট্যাটাসে দেখলাম কয়েকজন হিন্দুদের উপর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ, এবং হামলা করার জন্য তৈরি। এরাই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার রুপকার। একটা ভিডিও প্রায় আড়াই লাখ মানুষ দেখেছে। নিচের মন্তব্যের জায়গাটি প্রচণ্ড রকম ভীতিকর। অনেকেই হিন্দুদের চামড়া তুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছে, অনেকে মন্দির ভাঙ্গা, বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করার দাবি তুলেছে। এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যত দ্রুত প্রশাসন ব্যাবস্থা না নিবে এমন উগ্রতা থাকবেই। এখানে একটি সুষ্ঠু সমাধান দরকার। হ্যাঁ যদি সত্য হয় তবে মসজিদ ঠিক থাকবে আর যদি মুসলমানদের দাবিটি ভুল হয় তবে হিন্দুদের দাবি মেনে নিতে হবে
আমরা বাংলাদেশী। আমাদের দেশের সৃষ্টি পূর্ব থেকে আমরা অসাম্প্রদায়িক। যে যার ধর্ম পালন করবে, কেউ কারো ধর্মে বাঁধা কিংবা বিরুপ মন্তব্য করবেনা। বর্তমানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার দেশ ব্যাপী হচ্ছে অথচ সরকার নীরবতা পালন করছে, ব্যাবস্থা গ্রহণের নামে নাটক করছে। একদিকে হেফাজত আর জামায়াত মিলে ধর্মীয় উগ্রতা ছড়াচ্ছে অন্যদিকে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। হেফজত জামায়াতের মতো এরাও ধর্ম বেশ্যা ব্যাতিত আর কিছুই নয়। অথচ আশ্চর্য হলেও সত্য সরকার কোনোরূপ এদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিচ্ছেনা।
একটি জিনিস আমাদের প্রায়ই শুনতে হয়, মায়ানমারে মুসলমানদের উপর অত্যাচার, পুড়িয়ে হত্যা, মসজিদে অগ্নিসংযোগ কিংবা ভারতে গরু জবাইয়ের জন্য মুসলমানকে খুন করা হবে আর আমরা কেনো চুপ্ থাকবো। দেখুন মায়ানমার কিংবা ভারত আমরা দেশ নয়, আমার দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশে কি হবে সেটি আমি প্রথমে দেখবো। আজ মায়ানমার দুর্নীতির শীর্ষ চূড়ায় পৌঁছুলে কিংবা মায়ানমারে ভুমিকম্পে ৫০০ মানুষ মারা গেলে আপনি যতটুকু ব্যাথিত হন একই ঘটনা যদি বাংলাদেশের বেলায় ঘটে আপনি কি করেন।
হ্যাঁ মানবিকতা এখানে ভিন্ন। মায়ানমারে কিংবা ভারতে হত্যা হয়েছে সে ক্ষেত্রে আপনি প্রতিবাদ জানাবেন কিন্তু তাই বলে আপনার ভাইয়ের উপর কেনো ভিন্ন একটি ঘটনার প্রতিশোধ নিবেন? এখানে আপনার পাশের ভাইটির দোষ কোথায়? সেকি ওই মুসলমানদের মেরেছে? এখানে ভুলটা কোথায় আমাদের?
এখানে একটি জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের কয়েকজন মন্ত্রী হিন্দুদের ভারতে আশ্রয় দেয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এখন যদি স্রেফ একজন মানুষ যদি ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন সেটি আমাদের জন্য প্রচণ্ড লজ্জাজনক। তার মানে আমরা তাঁকে তাঁর মাতৃভূমিতে নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ হয়েছি। অথচ বাংলাদেশ তাঁর। আমার যেমন তেমনি তাঁরও মাতৃভূমি। আমাদের নাগরিকদের দায়িত্ব কম নয়। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কিন্তু অসন্তোষ থেকেই সৃষ্টি হয়।
সাম্প্রতিক নয় বরং গত বিশ বছরে ভিন্ন ধর্মালম্বীদের বাড়িতে হামলা, মন্দিরে মূর্তি ভাঙ্গা, পুরোহিত কে জবাই করে হত্যা, বাড়িতে অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনা অহরহ হচ্ছে। অথচ আমরা প্রতিনিয়ত এটি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হিসেবে চালিয়ে আসছি। আমার মনে হয় আমরা এই বিষয়গুলো যদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতাম অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবস্থার সাক্ষী আমাদের হতে হতোনা।
গেন্ডারিয়ার ঘটনা সুষ্ঠু সমাধানে আসুক।নিপাত যাক সাম্প্রদায়িকতা নামের বিষ। দিনশেষে আমাদের পরিচয় আমরা বাংলাদেশী! এদেশ আমাদের।একজন নাগরিক ও যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে তার দায় আমাদের। ভালো থাকুক বাংলাদেশ!
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:১১
অেসন বলেছেন: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ অবশ্যই সাম্প্রদায়িক সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠন না। এটা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষা করার জন্যই গঠিত হয়েছে। রাজনীতি বা ক্ষমতা দখলের জন্য গঠিত হয় নাই। গেন্ডারিয়ার মসজিদের ঘটনা আমি জানি না, তাই মন্তব্য করলাম না। তবে লিজ নেয়া জমিতে মসজিদ নির্মাণ করার আইনগত বৈধতা কি আছে ? সরকারের এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া বা জনগনের সামনে পরিস্কার করা জরুরি। কারন আপনি ঠিক বলেছেন, একটি মহল এই নিয়ে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামা বাধানোর চেষ্টায় লিপ্ত।