নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিচার বহির্ভূত হত্মা বন্দ্ধ করতে এগিয়ে আসুন সবাই!

www.extrajudicialkilling.info

আনু দা বেস্ট

আমি খুব সাদা সিদে একজন মানুষ

আনু দা বেস্ট › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই দায় আমাদের!

২৩ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০৭



ব্যক্তির সমষ্টিই হচ্ছে রাষ্ট্র। আমরা মানুষ, প্রত্যেকেই যেমন ব্যক্তিগতভাবে ক্ষুধার্ত হই, ভালবাসার আবেগে তাড়িত হই, কামার্ত হই, লোভাতুর হই, ঠিক তেমনি রাষ্ট্রও তার চরিত্রের মধ্যে এইসব গুনাবলী ধারণ করে। জনগণ কিম্বা শাসক শ্রেনীর ব্যক্তিগত অথবা সামষ্টিক চরিত্রিক গুনাবলী কিম্বা বদগুনাবলী রাষ্ট্রের এইসব চারিত্রিক বৈশিষ্ট নির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করে কিম্বা নিয়ামকের ভূমিকা পালন করে। মানুষ ব্যক্তিগতভাবে যেমন ক্ষুধার্ত হয়, রাষ্ট্রও তেমিনি ভাবে ক্ষুধার্ত হয়। মানুষ ব্যক্তিগতভাবে যেমন মিথ্যা কথা বলে রাষ্ট্রও তেমিনি মিথ্যা কথা বলে, যেমন লোভাতুর হয় রাষ্ট্রও তেমিনি লোভাতুর হয়। মানুষ বা নাগরিকদের ব্যক্তি চরিত্র যেমন রাষ্ট্রের গুনাবলী নির্ধারণে নিয়ামক বা প্রভাব বিস্তারকারী, তেমনি রাষ্ট্রের চারিত্রিক বৈশিষ্টও এর ব্যক্তি বা নাগরিকের চরিত্র গঠনে ভূমিকা পালন করে।



সুইডেন, এমন একটা দেশ যেখানে 'নারী স্বাধীনতা' নামক শব্দটি খুবই অর্থবহ। নিজ দেশে নারীর ক্ষমতায়নই শুধু নয়, ৩য় বিশ্ব কিম্বা উন্নয়নশীল দেশ সমূহের বিভিন্ন কর্মকান্ডে নারীর ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে সুইডিশ সরকারের সহায়তা নজর কাড়ার মত। বিশ্বের অনেক দেশে পতিতাবৃত্তির পেশা অনুমোদিত থাকলেও সুইডেনে তা সম্ভব নয়। কথাটা নারীর ক্ষমতায়ন প্রসংগে সুইডিশ সরকার যতটা গর্ব করে বহি:র্বিশ্বে প্রচার করে আসলে ঠিক ততটা নয়। 'সুইডেনে পতিতাবৃত্তি নিশিদব্ধ', এইরকম একটা ধারনাই বিশ্বব্যাপী নির্মান করার চেষ্টা করে সুইডিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়! বেপারটা আসলে এত সহজ নয়! একটু জটিলই বটে! পতিতাবৃত্তি এইখানে নিশিদ্বধ নয়! যে কোনো নারী এখানে সেক্স বিক্রি করতে পারবে, যদি সে ঠিকমত কর পরিশোধ করে! সেইটা অনুমোদিত, কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু কোনো পুরুষ সেক্স কিনতে পারবে না! কিনলেই সমস্যা, কারন এটা বেআইনি কর্মকান্ড। একদিকে কর পরিশোধ সংক্রান্ত বেপারে রাষ্ট্রের লোভাতুর চোখ সদা জাগ্রত, অন্যদিকে মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রশ্নে রাষ্ট্রের সেই একই চোখ লজ্জাবনত কিম্বা সংকুচিত। আইনের মাধ্যমে পতিতাবৃত্তি নিশিদব্ধ করে রাষ্ট্র তার সেই চোখকে অন্ধ করে দেয়নি বরং সদা জাগ্রত লোভাতুর, কিম্বা মানবাধিকার প্রশ্নে সেই চোখকে ছানাবড়াও করে দেয়নি, লজ্জাবনত করে রেখেছে! সাপ ও মেরেছে লাঠি ও ভাঙ্গেনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রনালয়ের যে কোনো কর্মকর্তার বহি:র্বিশ্বে বলতে অসুবিধা হয় না যে,-'সুইডেনে পতিতাবৃত্তি নিশিদব্ধ'! রাষ্ট্রের আরেকটি 'দ্বৈত চারিত্রিক' বৈশিষ্ট আমরা খুঁজে পাই! আরো অনেক ঘটনা আছে কিম্বা আরো অনেক দেশ আছে যা দিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন রকম চারিত্রিক বৈশিষ্ট আলোচনা করা যেতে পারে!



বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ! নিজের, কিম্বা আমাদের সামষ্টিক, কিম্বা রাষ্ট্রের চারিত্রিক বৈশিষ্ট বিশ্লেষন করা অনেক বড় পরিসরের বেপার! অতবড় প্রেক্ষাপটে যাব না। সক্ষম হয়তবা(!) হয়েছি, কিন্তু সময়, ধৈর্য কোনোটাই নাই। একটা ঘটনা নিয়ে শুধু গত কয়েক দিনের সংবাদ শিরোনাম লিখলেই আমাদের অন্তত একটা চরিত্রিক বৈশিষ্ট চোখে পড়বে!



বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানব পতাকা গড়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা নেয়ার পর লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমেও রেকর্ড গড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ আয়োজনের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য গত ১৪ মার্চ গণভবনে বিভিন্ন টেলিকম প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি ব্যাংক এবং বীমা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তার চেক গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র সমালোচনার মুখে ইসলামী ব্যাংকের টাকা নিয়ে মিডিয়াতে দুই মন্ত্রী দুই কথা বলেন।



এ বিষয়ে মঙ্গলবার ১৮ মার্চ বাংলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, “আমি মনে করি টাকা ফেরত দেয়া উচিত। আমি জানি না আমার কী হবে; ইসলামী ব্যাংকের টাকা দিয়ে জাতীয় সংগীত হবে না। টাকা ফেরত দেয়া হবে।” তার কিছুক্ষণের মধ্যে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সংস্কৃতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান নূর। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার কর্মসূচির জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে কোনো টাকা বা অনুদান নেয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। নূর বলেন, “লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা অনুষ্ঠানের জন্য তাদের কাছ থেকে অনুদান নেয়া হয়নি। কারণ বিষয়টিতে আবেগ জড়িত।” মন্ত্রী বলেন, “গত বিশ্বকাপে ইসলামী ব্যাংক থেকে অনুদান নেয়ার কারণে বিতর্ক হয়েছিল। তাই বিতর্কে যেতে চাইনি বলে ইসলামী ব্যাংক থেকে কোনো অর্থ নেয়া হয়নি।”



সংস্কৃতিমন্ত্রী অস্বীকার করলেও এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে সরকারি ওই আয়োজনে তাদের পক্ষ থেকে ৩ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আতাউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত আয়োজনের জন্য ১৪ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তিন কোটি টাকা অনুদানের চেক তুলে দেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মুস্তাফা আনোয়ার।”



আজ ২৩ মার্চ, "ইসলামী ব্যাংকের দেয়া তিন কোটি টাকা ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ আয়োজনে নেয়া হবে না" বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকার। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন সংগঠনের তীব্র সমালোচনার মুখে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ রোববার এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়।



১৫ মার্চ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হলে আমাদের সামনে পরিস্কার হয়ে যায় যে টাকা নেয়া যে হয়েছিল। আজ সরকারী ভাবে সেটা স্বীকার করা হলো। তাহলে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আমাদের সংস্কৃতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান নূর কি মিথ্যা কথা বলেছিলেন? তিনি মিথ্যুক? একজন মন্ত্রী হয়ে তিনি সংবাদপত্রের সামনে দ্যার্থহীন ভাবে মিথ্যা কথা বলেছেন? 'বিজাতীয়' সংস্কৃতিতে, ইংরেজি ভাষায় একেই কি 'ডেলিবারেট লায়ার' বলা হয়?



সরকারের আজকের ব্যাখ্যায় অন্তত তাই প্রমাণিত হয়। আসাদুজ্জামান নূর, তিনি শুধু আওয়ামী লীগ নেতাই নন একজন মন্ত্রী, সংস্কৃতিমন্ত্রী! এবং তিনি একজন মিথ্যুক, একজন মিথ্যাবাদী! ডেলিবারেট লায়ার!! আমার ভাবতে লজ্জা হয় মুক্তিযুদ্ধ কি, এর চেতনা কি জিনিস, কত বিশাল তার ব্যাপ্তি, আর আমরা এই মহাকাব্যের চেতনা নিয়া কে কতভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছি! আরেকদিন না হয় লেখা যাবে তা নিয়ে!



এখন শুধু এত টুকুই বলতে চাই, আসাদুজ্জামান নুর, একজন মন্ত্রী আমদের সাথে মিথ্যা কথা বলেছেন! রাষ্ট্র আমাদের সাথে মিথ্যাকথা বলেছে! মিডিয়ার সামনে একজন মন্ত্রীর দ্যার্থহীন মিথ্যাবাদিতার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ভাবে আমাদের "মিথ্যাবাদী" চারিত্রিক বৈশিষ্ট ফুটে উঠেছে! এই দায় আমাদের!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.