নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একদিন অনেক বড় হব আমার সীমানা ছাড়িয়ে [email protected]
কয়েকদিন আগে গুরুতর অসুস্থ ছোট ভাইকে সিলেট নিয়ে যাচ্ছি এম্ব্যুলেন্সে করে, আমার জীবনে এটা দ্বিতীয় বার এম্ব্যুলেন্সে উঠা। এর আগে উঠেছিলাম প্রায় ১২ বছর আগে মামীর জন্য, যিনি আমার আরেক মা, এপ্যোলো হসপিটালে মামীর অপারেশনের পরে একবার অবস্থা চরম মাত্রায় খারাপ হয়ে গিয়েছিল তখন সে এম্ব্যুলেন্সে আমি ও ছিলাম। কতটা আতঙ্কের হতে পারে সময়টা তা যাদের অভিজ্ঞতা আছে বুঝতে পারেন। যাই হোক এর পর মামী আল্লাহর রহমতে সহি সালামতে এখনো সুস্থ আছেন।
সকাল থেকেই আমার ভেতরে উৎকণ্ঠা যেভাবেই হোক আমি এম্ব্যুলেন্সে যাবনা, মামা আর আমার খালাত ভাইকে দিয়ে পাঠিয়ে দেব আর আমি বাসে করে যাব। এম্ব্যুলেন্সে আমার বিরাট ভয়। মনে মনে এই পরিকল্পনাই করতেছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর তা হয়নি, আমি সেই এম্ব্যুলেন্সেই যাচ্ছি, অগোছালো ভাবে যাত্রা। বাসা থেকে পানি ও নিইনি, গাড়ি ছাড়ার একটু পরে মামা বলল পানি নেয়া দরকার, তাই এক জায়গায় দোকান দেখে থামাতে বললাম, এক বোতল পানি নিয়ে পাঁচশ টাকা ভাংতি দিল দোকানদার, আবার জিজ্ঞেস ও করল রোগীর কি অবস্থা, যাই হোক পানি নিয়ে এম্ব্যুলেন্সে উঠতে যাব দেখি এক খোঁড়া ভিক্ষুক দাঁড়িয়ে আছে পাশে, আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করল, অনেক অসুস্থ কি? বললাম হ্যা, ভাবলাম ভিক্ষা চাইবে, কিন্তু না সে আমকে অবাক করে দিয়ে বলল, দোয়া করি যেন সুস্থ হয়ে যায় বলে সে ক্রাচ দিয়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে চলে গেল।
ভাল লাগল এই আন্তরিক নিঃস্বার্থ মমত্ববোধ।
রাস্তার অন্যান্য যানবাহন যে যেভাবে পারে সাইড দিল। আমরা তখন নবীগঞ্জের রাস্তায় এদিক সেদিক গাড়ি, একটা কলেজের ছাত্র সামনে দাঁড়িয়ে গেল কিছু গাড়ি থামিয়ে কিছু পাস করে আমাদের রাস্তা করে দিল, হাতের ইশারায় যেতে বলল, তারপর আর পেছন ফিরে তাকালো না।
ভাল লাগল মানব সেবার এই মানসিকতা।
এই পথ জুড়ে কত মায়া মানবিকতা আর ভালবাসা এতচ এ পথেই প্রাণ যায় বেঘোরে, আরও সচেতনতা দরকার আমাদের, জীবন অনেক মূল্যবান।
আমাদের গাড়ি মোটামুটি গতিতে চলছে, ড্রাইভার কিছুটা সচেতন, তবে ফোন আসলেই কিছুটা সচেতনতার অভাব দেখা দিচ্ছে সেটা প্রকট না হলেও এমন টা করা উচিত না, একটু পর পর তার কল আসছে সবই হাসপাতাল রোগী সম্পর্কিত। কল আসতেই রিসিভ করেনা, রাস্তা একটু ফাঁকা দেখে তখন রিসিভ করে, যাই হোক দুর্ঘটনা বেশি সময় নিয়ে আসেনা, কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার মাত্র, বেশি জরুরী হলে একটা হেডফোন ব্যবহার করলেই হয়, কিছুটা হলেও রক্ষা হবে, একহাতে তো আর ড্রাইভিং করা লাগবেনা, কয় টাকাই বা লাগে একটা হেডফোন কিনতে। নয়তো দেখা যাবে সেও কোন একদিন এম্ব্যুলেন্সের শায়িত যাত্রি।
সামনে দিয়ে একটা বাইক যাচ্ছে, চালক পড়ন্ত বয়সী এক মুরুব্বী। লুঙ্গি পরে বাইক চালাচ্ছেন, ভাল কথা, উনি ঘাড় বাকা করে চালাচ্ছেন কারন ফোনে কথা বলছেন। পিচ রাস্তা ছেড়ে ঘাসের মোলায়েম রাস্তায় নেমেছেন দু একবার ছাগলের সংসার ধ্বংস করতে করতে করেন নি ছাগলগুলো ম্যাহম্যাহ করতে করতে দৌড়। কতটা জরুরী এসব কল রিসিভ করা। সময় কম হিসেব করে আমরা জীবনের আগামী সময় নষ্ট করে দিচ্ছি তা টেরই পাইনা।
যে পথ গিয়েছে জীবিকার সন্ধানে, যে পথ গিয়েছে মায়ের ঠিকানায়, যে পথ গিয়েছে বন্ধুর আড্ডায়, যে পথ গিয়েছে সন্তানের হাসি মাখা মুখে, সে পথ হোক আনন্দের সে পথ হোক নিরাপদের।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: হাজারো অপূর্ণতার মাঝে বেঁচে থাকার নিঃশ্বাসে কিছু বিশ্বাস আর প্রেরণা যোগায় এই সব ভাল মানুষ গুলো, যাদের সাথে কোনদিন দেখা হয়নি কথা হয়নি অতচ কত মমতায় পাশে এসে দাঁড়ায়।
ড্রাইভার দের পাশাপাশি সাধারন মানুষের ও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। সবচেয়ে বাজে ব্যাপার হচ্ছে রাস্তায় যানবাহনের প্রতিযোগিতা, এইটা মহামারী।
যাই হোক, আমার ছোট ভাই এখন আল্লাহর রহমতে ভাল আছে।
ভাল থাকবেন।
২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১১
রেইড ইন স্কাই বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই। সময়ের দাম দেয়ার মত মানুষের বড্ড অভাব আমাদের দেশে। যে কার আগে ছুটতে পারে, কি লাভ এসব করে কেউ ভাবেনা।
এক সময় নিজের প্রাণ রাস্তায় দিয়ে ঘরে ফেরে। কেউ লেইন মানেনা, সিগন্যাল মানেনা, জেব্রা ক্রসিং পর্যন্ত মানে না, জানিনা কিসের এত তাড়াহুড়ো।
ভাল থাকুক সবাই, নিরাপদে বাড়ি ফিরুক প্রতিটি মানুষ।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৯
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: স্পীড লিমিটের কোন বালাই নেই। রাস্তার লেইন গুলো যে কি জন্য তা মনে হয় কোন ড্রাইভার ই জানেনা। লাইসেন্স তো মধুর জিনিস, চাকে গুতা দিলেই পাওয়া যায়।
৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩১
আহমেদ জী এস বলেছেন: মাহবুবুল আজাদ ,
রেইড ইন স্কাই বলেছেন - কেউ লেইন মানেনা, সিগন্যাল মানেনা, জেব্রা ক্রসিং পর্যন্ত মানে না, জানিনা কিসের এত তাড়াহুড়ো।
আসলেই তাই । যে পথ গিয়েছে মায়ের ঠিকানায়, যে পথ গিয়েছে জীবিকার সন্ধানে , যে পথ গিয়েছে বন্ধুর আড্ডায় সে পথ তাই নিরাপদ হয়না ।
যে পথ গিয়েছে জীবিকার সন্ধানে, যে পথ গিয়েছে মায়ের ঠিকানায়, যে পথ গিয়েছে বন্ধুর আড্ডায় সে পথ আনন্দের না হোক , হোক নিরাপদ ।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৪
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: সহমত পোষণের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
আসলেই আনন্দের না হোক অন্তত নিরাপদ হোক আমাদের পথ চলা।
সামান্য অবহেলায় কত প্রাণ ঝড়ে পরে, শুধু কি তাই তাদের সাথে সে পরিবার ও হয়ত একদম অকুল পাথারে পরে। যার থেকে কোন পরিবার আবার ঘুরে দাঁড়ায়, কোন পরিবার দেখা যায় একদম ধুকেধুকে জীবনের দিন গোনে অসহায় নিঃস্ব দিন।
৪| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫৬
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: সাথে থাকার জন্য আন্তরিক শুভ কামনা রইল।
নিরাপদ থাকুন, ভাল থাকুন নিরন্তর।
৫| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪৯
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ এখনো অনেক মানবিক। শুধু ক্ষমতার আশে পাশে থাকা লোকজন দুর্নীতিবাজ ও অসৎ...
১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:১৯
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: কিছু করার নেই। আমরা শুধু চেয়ে দেখি। কবে যে উনারা দেশ টাকে নিজের বলে মনে করবেন আশায় বসতি।
৬| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫৭
ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: আমাদের কিছুই করার নেই। তবে আমরা চেষ্টা করলে আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে বিশুদ্ধ থাকতে পারি। আপনার পোষ্ট অনেক ভালো হয়েছে।
১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:১২
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: অনেক অনেক ভাল লাগা জানবেন।
৭| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৮:৫১
সুমন কর বলেছেন: লেখায় অনেকগুলো বিষয় সুন্দর করে তুলেছেন। আমাদের মানবতা অনেক কমে গেছে।
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৮:৪২
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন সুমন ভাই। তারপরেও সাধারন মানুষের জীবনে মায়া মমতার কমতি নেই। এই অনুভুতি ই হয়ত এক ভাল লাগার যোগান দেয়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫১
মলাসইলমুইনা বলেছেন: আপনার লেখাটা খুব ভালো লাগলো I এই এতো সুন্দর লেখায় দুই ঘন্টাতেও কেউ কমেন্ট করেনি !
দেশের খুব সাধারণ যে লোকগুলো -তাদের ভালোবাসা আর দায়িত্ববোধের কারণেই দেশটা আমাদের এপিক রাজনৈতিক ব্যর্থতার মধ্যে দিয়েও একটু একটু করে সামনে যেতে পারছে I বেশির ভাগ সময়েই সাধারণ মানুষের ব্যবহার বিশেষ করে রাস্তায় রুগীদের, এক্সিডেন্টের সময় খুবই মানবিক I প্রিয় ব্লগার খায়রুল আহসান ভাই মনে হয় কিছু দিন আগে ঢাকারই একটা এক্সিডেন্টের সময় সাধারণ মানুষের দাযিত্ববোধ নিয়ে এমন একটা লেখা লিখেছিলেন I আমি অনেক দিন দেশের বাইরে I কিন্তু যখন দেশে ছিলাম তখনও এই মানবিক দিকটা দেখেছি I শধু যারা এই রাস্তার মালিক মানে ওপরওয়ালা যাদের দায়িত্ব ভালো কিছু পরিকল্পনা করে রাস্তাটাতে যাতায়াত আরেকটু নিরাপদ রাখা তাদের দায়িত্বহীনতাই রাস্তাগুলোকে মরণ ফাঁদ বানিয়ে ফেলেছে I
ছোট ভাই এখন কেমন আছে ? আশাকরি আপনারা সবাই ভালো আছেন |