নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ;/ আমরা বলিব সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ।/ উহারা চাহুক সংকীর্ণতা, পায়রার খোপ, ডোবার ক্লেদ,/ আমরা চাহিব উদার আকাশ, নিত্য আলোক, প্রেম অভেদ।_কাজী নজরুল ইসলাম
ক্রিকেট প্রেমী হয়েও ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড়ের বাবা তার খেলা দেখতে তেমন আসতো না কারণ তিনি ভাবতেন তার ছেলে তার বাবাকে ভিআইপি গ্যালারিতে দেখলে সে প্রেসার অনুভব করবে যার প্রভাব তার খেলায় পরবে!
.
তারপরও উনি যখন খেলা দেখতে আসতেন তখন ভিআইপি গ্যালারিতে না বসে সবার পেছনে বসতেন,
.
আপনার জীবনেও এমন কিছু মানুষ আছে যারা এভাবে ঠিক আপনার পেছনে বসে সবার চেয়ে বেশী আপনার মঙ্গল কামনা করে যাচ্ছে, যাবে!
.
সৌরভ গাঙ্গুলির বাবাও পচন্ড ক্রিকেট পাগল ছিলেন, কিন্তু সৌরভ তা বুঝেছিলো যখন তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে দুঃসময় চলছিলো তখন
.
ঠিক এভাবে যখন কেউ পাশে থাকে না তখন আড়ালে লুকিয়ে থাকা এমন মানুষগুলো বের হয়ে সদ্য ভেঙ্গে যেতে থাকা গাছটিতে কাঁধ এগিয়ে দিয়ে হেলান দিয়ে রাখে,
.
আমার এক আপুকে জানি, সে যখন তার প্রিয় মানুষ যার সাথে বিয়ে হয়নি তবুও ছেলেটির কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ায় চুপিসারে একটি কিডনি দান করতে চেয়েছিলো, ছেলেটি মারা যাওয়ায় যদিও কিডনি শেয়ার করতে হয়নি!
.
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের গল্প শুনেছিলাম যে খুব স্ট্রাগল করে পড়াশুনা করা নাতি নাতনী আত্মীয়দের তাদের বাবার পড়াশুনা করানোর অনীহা সত্ত্বেও সবার অগোচরে তাদের পড়াশুনার খরচ বহন করে যাচ্ছে, গল্পগুলো কেউ জানেনা!
.
ভাইরাল হওয়ার পর জানলাম, ছেলেমেয়ে, আত্মীয় স্বজন সবার অগোচরে হাতিরঝিলের ল্যাম্পপোস্টের আলোতে ঘোমটা দেয়া বয়স্ক এক নারী দীর্ঘ দিন ধরে নিজের হাতে বানানো চুড়ি-মালা, কানের দুল বিক্রি করে চলছেন, অচেনা দুস্থ রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য!
.
সত্যি কেউ জানতো না পলান সরকার নামক একজন লোক মাত্র চতুর্থ শ্রেণী পাশ যে কিনা আলোর ফেরি করতে করতে 'বইওয়ালা দুলাভাই' খ্যাতি লাভ করেছিলেন, বেণুপুর, হরিপুর, দীঘা, হাটপাড়া, পূর্বপাড়া, সরকারপাড়া, মাঠপাড়া, ঠাকুরপাড়ার মতো গ্রামে বছরের পর বছর কাঁধে বই নিয়ে সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন!
.
গহের আলী ভিক্ষুকের কথা ই বা কে জানতো, যে দুই কিলোমিটার জায়গায় বারো হাজার তালগাছ লাগিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলো!
.
আড়ালের মানুষগুলো হুট করে সামনে এলে, মুখ লুকাতে থাকে!
.
তবুও রোজ সকালে উঠে দেখি বারো জন দাতা মিলে একটি কম্বল সম্বলহীনকে দান করার ছবি,
.
একটি তালগাছের চারাতে বৃষ্টির মধ্যেও পানি দিয়ে পরিবেশ উদ্ধার করে চলছে জনৈক পরিবেশ বান্ধব মানুষরা!
.
একটি বই কয়েকজন মিলে ছুঁয়ে ক্যামেরার সামনে পোজ দিয়ে অনেকে ভাবে তারা সমাজের আলোকবর্তিকা,
.
সফল হলে অনেকে সামনে থেকে হাততালি দিতে দিতে বলতে থাকে, আমি অনুপ্রেরণা না দিলে সে আজ এমন খেল্ দেখাতে পারতো না!
.
সামান্য একটা ছবি তুলে যারা ক্রেডিট না দিলে তুলোধুনো করে ছাড়ে তাদের বলছি অনেকে থাকে অগোচরে,
.
মার্ক জুকারবার্গ সমাবর্তন বক্তব্যে একবার তার সহধর্মিনীর দিকে তাকিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে গিয়েছিলো, কন্ঠরোধ হয়ে যাচ্ছিলো আর বলতে চেষ্টা করছিলো, ফেসবুকের পিছনের অবদানে দুঃসময়ে সঙ্গ দিয়ে তুমিই ছিলে,
.
বারাক ওবামা তো সরাসরি বলেই দিয়েছিলো, আজকের ওবামা সৃষ্টির পিছনেও একজন আছে, সে ছিলো, থাকবে!
.
সেসব পেছনের মানুষগুলো সামনে আসুক কিংবা না আসুক, তারা প্রকৃত হিরো! দৃশ্যপটের হিরো তো কেবলি অভিনয় করে!
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২২
রাজীব নুর বলেছেন: এরকম হিরো হতে মন চায়।