নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন জেনারেল ব্লগারের নিজের সম্পর্কে বলার কিছু থাকে না ।

আবদুর রব শরীফ

যদি তোর লেখা পড়ে কেউ না হাসে তবে একলা হাসো রে!

আবদুর রব শরীফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি ভুল সিদ্ধান্ত অতপর ঘূর্ণিঝড়\'৯১

১৯ শে মে, ২০২০ বিকাল ৪:২৬

আমার জন্ম নব্বইয়ে কিন্তু একানব্বইয়ের ঘূর্ণিঝড়ে আমি কিংবা আমরা সন্দ্বীপ টিনের ঘরে থেকেও বেঁচে যায়, রাখে আল্লাহ মারে কে?
.
১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিল চট্টগ্রামে কেনো ১,৩৮,০০০ মানুষ মারা যায় জানেন, কারণ ২০ লাখ মানুষ অবজ্ঞাবশত সাইক্লোন সেন্টার কিংবা নিরাপদ আশ্রয়ে যায়নি ৷
.
সেদিন আমরাও কেউ যায় নি, সে অনেক ইতিহাস, তবে পরের ইতিহাস আরো করুণ,
.
আমার পরিবার এক বছর শুধু ভাত আর আলু খেয়ে ছিলো, প্রায় দ্বীপের সব লোক ই তখন এক দেড় বছর টানা আলু খেয়েছে ৷
.
এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, কেনো তারা আলু খেয়ে ছিলো ৷ আশেপাশে কত পুকুর, সাথে সমুদ্র!
.
জানেন চারপাশে শুধু ছিলো লাশ আর লাশ ৷ পুকুর নদী নালা খাল বিল সমুদ্রে কেবলি লাশের গন্ধ, সংখ্যাটা আপনি ই অনুমান করে নেন্
.
মাসের পর মাস পানির সাথে একাকার হয়ে ছিলো এসব মৃত দেহগুলো, মাঝে মাঝে জীবন কতটা নির্মম হতে পারে এগুলো মুরুব্বিদের কাছ থেকে না শুনলে বুঝা যায় না ৷
.
নতুন করে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান আসতেছে, হাজার মানুষ এক একটা সাইক্লোন সেন্টারে সেখানে কিভাবে তারা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখবে?
.
২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছিলো উপকূলের বাসিন্দারা, ভাবা যায়?
.
একটা সময় আমাদের পরিবারের সব সদস্য একসাথে ছিলাম কিন্তু একসময় যে যার মতো করে ভেসে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিলো না,
.
বাবা ভেসে যায় পিতলের কলস নিয়ে, যে যেভাবে পারছে ভেসে আছে, আমার দাদী আমরা দুই ভাই আর ফুফুর মেয়েকে বেঁধে রেখেছিলো একাই তার শাড়ির আঁচল দিয়ে, কঠিন পরিশ্রমী আর সংগ্রামী মহিলা, এখনো ঘরের সব কাজ একাই সামলে রাখেন ৷
.
এক পর্যায়ে ঘরের টিনের জোড়া সব খুলে দেওয়া হয়েছিলো, বাতাস প্রবাহ যাতে বিঘ্নিত না হয় ৷ সেই টিনের স্তুপে চাপা পরেও মারা গেছে আমার এক আত্মীয় ৷
.
কঠিন সেই যুদ্ধে একে একে পরাজিত হতে থাকে আমার রক্তের সম্পর্কের এক তৃতীয়াংশ মানুষ,
.
তবে একটা জিনিস আপনাকে মানতে হবে, এসব দুর্যোগে অনেক শিশু বেঁচে যায় অথচ শক্ত সামর্থ্য জোয়ান অনেকে আর ফিরে না,
.
সেদিন চট্টগ্রাম বন্দরে রাশিয়া থেকে সদ্য আমদানিকৃত চারটি বাক্স ভর্তি হেলিকপ্টার জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ভেসে রাস্তার উপর চলে এসেছিলো ৷
.
ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বিমান বাহিনীর ৩০-৩৫টার মতো যুদ্ধ বিমান,
.
মৃত্যুর এখানে শেষ নয়, বন্যার পর শুধু পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছিলো হাজার হাজার মানুষ ৷
.
শুধু একটু ঘাড় ত্যাড়া মনোভাব আর অবহেলার কারণে, কি আর হবে, যাবো না নিরাপদ আশ্রয়ে ৷
.
অনেক মানুষ আছে তাদের আপনি আড়কোলে করেও সাইক্লোন সেন্টার কিংবা পাকা বাড়িতে নিতে পারবেন না!
.
এই যে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় এতো প্রচারণ, সতর্কতা, ভয় ভীতি, লক ডাউন তবুও কিছু মানুষ তো ঠিকি ঈদের জন্য নতুন জাইঙ্গা কিনতে মার্কেটে গেছে, দেদারছে ঘুরছে ৷ অনেক মানুষ আছে এমনি,
.
ওদের সফটওয়ারে সেট্ করা থাকে, কিচ্ছু হবে না ৷ এতো দিন মরে নাই সে আজকে কেনো মরবে, এমন ভাব ৷
.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পাহাড় ধ্বসে নিজে চোখে মানুষ মরতে দেখেছি অনেক, তবুও কিছু মানুষ ডেম্ কেয়ার ৷ আরো চিপায় গিয়ে বাসা বাঁধে, ওদের জোর করে উচ্ছেদ অভিযান ছাড়া যেনো বের ই হবে না ৷
.
আমি আবারো বলছি, এই জিনিসটা মাথায় ঢুকিয়ে রাখুন ৷ এতো মানুষ ঘূর্ণিঝড় কিংবা যদি করোনায়ও মরে তবে তা অসাবধানতার কারণে,
.
একমাস কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম ৷ তারপর বের হয়েছি ৷ যেদিকে যায় সবাই আমার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে ৷ একটাই প্রশ্ন, এতোদিন কোথায় ছিলেন! কিসের করোনা! তাই বলে কি বাসায় বসে থাকবেন ৷ আমরাতো সারাদিন দিব্যি ঘুরেও করোনা মুক্ত আছি ৷ কিচ্ছু হবে না আমাদের ৷
.
জ্বি, নিরাপদ আশ্রয়ে না গিয়েও ৯১ সালের ২৯ এপ্রিল আমরাও অনেকে বেঁচে গেছি কিন্তু আমরা যায় নি বলে দেখাদেখি যারা যায়নি তারা আজ বেঁচে নেই ৷
.
কে পালন করলো, আর কে গেলো না, সেদিকে তাকিয়ে লাভ নেই, আপনি নিজেকে আগে রক্ষা করুন ৷ সতর্ক থাকুন ৷ আল্লাহর মালিক ৷

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:০৬

কল্পদ্রুম বলেছেন: নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে পড়ে থাকবে।এদিকে সারা জীবনের সংসার ভেসে যাবে।এই চিন্তা তাদের কষ্ট দেয়।

১৯ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:২৩

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: সেটা তো আর চাইলেও ঘরে থেকে ধরে রাখতে পারবে না ৷

২| ১৯ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: চাইছি বৃষ্টি ঝরুক ৷ বেশি বেশি বৃষ্টি ঝরিয়ে শক্তি হারাক এই ঝড়। মানুষ বাঁচুক।

১৯ শে মে, ২০২০ বিকাল ৫:২৪

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: সবার ই এটাই কাম্য, সীমিত পরিসরে ঝড় হয়ে চলে যাক্ ৷

৩| ১৯ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন:
সাইক্লোন স্থলভাগে আঘাত করার আগেই কিভাবে নিষকৃয় করা যায়,এটা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করা প্রয়োজন।৭০এর সাইক্লোনতো আমাদের চোখের সামনে হল।৫লক্ষ লোক মারা যায় সেই সাইক্লোনে।সমগ্র ভোলাই তলিয়ে যায়।সমগ্র প্রশাসনকে প্রস্তুত রাখা দরকার মোকাবেলার জন্য।

১৯ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৭

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: একটি সাজানো অঞ্চল, সাথে স্বপ্ন, কিভাবে তছনছ হয়ে যায় ৷

৪| ১৯ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫০

আলোকরশ্মি22 বলেছেন: আমাদের দেশের মানুষ গুলোর মধ্যে এক ধরনের পালোয়ান গিরি কাজ করে , কোথায় আছে পারুক আর না পারুক নাম রাখতে হবে ফারুক , নিজেতো মেনে চলবেই না অন্য কেউ মেনে চললে তাদের উৎসাহ না দিয়ে তাদের সাথে আরও ঠাট্টা বিদ্রুপ করে ।

১৯ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৮

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: আমি সব বুঝি, আমি একটা কিছু, আমিই মোড়ল, আমিই ঠিক এমন একটা মিথ্যে অহংকার ৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.