নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ;/ আমরা বলিব সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ।/ উহারা চাহুক সংকীর্ণতা, পায়রার খোপ, ডোবার ক্লেদ,/ আমরা চাহিব উদার আকাশ, নিত্য আলোক, প্রেম অভেদ।_কাজী নজরুল ইসলাম
বাড়িতে আমার দাদীর একটা লেবু আরেকটা পেয়ারা গাছ আছে ৷ বাসা তালা মেরে আসার সময় গুণে এসেছে ৩৫ টা লেবু ধরেছে ৷ দূরের জিনিস ঝাপসা দেখে তাই পেয়ারা গুণতে পারেনি ৷
.
সেদিন বললো, চশমাটা ভেঙ্গে গেছে থাকলে পেয়ারাগুলোও গুণে রেখে আসতে পারতাম ৷
.
সন্দ্বীপ থেকে প্রায় সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ফোন আসে দাদু দুইটা লেবু লাগবো, ছিঁড়ে নিয়ে যাইতেছি কিন্তু
.
একদিন মাঝরাতে একজন ফোন করে বলে, আপনার দাদীকে একটু দেন্ তো ৷ 'কেউ মারা গেছে? এতো রাতে ফোন ৷' বললো, 'আরে না, আমার মাইয়াটার খুসখুসে কাশি ৷ দুইটা লেবু লাগবো ৷' বললাম, 'দাদীর হয়ে আমি অনুমতি দিয়ে দিলাম ৷'
.
সেদিন সন্দ্বীপে তুমুল বৃষ্টি শুনে আমাকে বললো তাড়াতাড়ি তোর নাসির কাক্কুর বউরে কল্ দে ৷ আমি বললাম, সবাই ভালো অাছে ৷ বললো, তুই ফোন দে ৷ দিলাম, আড়ালে গিয়ে ফিসফিস করে বললো, 'লেবু গাছের কি অবস্থা রে?'
.
লেবু গাছটি দেখে রাখার জন্য আমার নাসির কাক্কুর বউকে প্রধান করে দাদী তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে দিয়ে এসেছে ৷ কমিটির মেম্বাররা এমন গুরু দায়িত্ব পেয়ে সত্যি গর্বিত ৷
.
যারা কমিটিতে আসেনি তারা আবার বর্তমান কমিটির উপর অনাস্থা জ্ঞাপন করে নিন্দা প্রস্তাব দেয় বারবার ৷
.
সেদিন একজন ফোন করে বলে, 'দাদী দায়িত্বটা আমারে দিলে লেবু গাছে পোকাও টাচ্ করতে পারতো না ৷'
.
দাদীর গাছে বাতাবী লেবুর বাম্পার ফলন হয়েছে বিটিভিকে দিয়ে এমন একটি সংবাদ করতে পারলে কলিজাটা ঠান্ডা হতো ৷
.
শাইখ সিরাজকে সরজমিনে লেবু গাছটির ভবিষ্যত প্রকল্পে একটি প্রতিবেদন করে নিতে পারলে হয়তো লেবু গাছটি আরো স্বার্থক হতো ৷
.
তবুও, পরশু বললাম, 'দাদী আপনার লেবু খেয়ে একজন দাঁত মুখ কেলিয়ে বলে, লেবুগুলো বেশী টক্ ৷ খাইছে তো খাইছে আবার মিষ্টি না বলে টক্ ও বলে' ৷ তারপর থেকে দাদী দৌড়ানোর উপ্রে রাখছে ৷
.
মৃদু একটা হুমকিও দিয়েছি, 'তুই আমার লেবু গাছ নিয়ে কিছু লিখবি না বলিবও না' ৷ সত্ত্বেও না লিখে কি আর পারি ৷
.
দাদীর মাহফুজুর রহমানের মতো অবস্থা,ঘুম হয়না সারারাত ধরে ৷ ঝড়ে লেবু গাছটা এদিকে কাইত ওদিক হয়ে পড়ে ৷
.
লেবু কত বড়, জিজ্ঞেস করলে দাদী হাত দিয়ে এমন ভাবে দেখায় লেবু না তরমুজ সেটা ভেবে টাশকি খেয়েছি অনেকবার ৷
.
একদিন বললো, চিপলে হেব্বী রস্ বের হয় ৷ এমনভাবে বললো, মনে হলো লেবু পানি না যেনো ডাবের পানির মতো করে রস্ বের হচ্ছে ৷ শুনে বললাম, লেবু বেশী চিপলে তিতা বের হয় আর আমার দাদীর গাছের লেবু বেশী চিপলে বন্যা বের হয় ৷
.
আবারো দৌড়ের উপর ছিলাম ৷ ভাবগো ভাবা ৷ যেনো গাছের প্রতি ভালবাসা নাতীর চেয়ে বেশী ৷
.
আজকে দাদীকে বললাম, সন্দ্বীপে আমাদের বাড়িতে কোন করোনা রোগী নেই কেনো জানেন? বললো, কেনো নাতী? বললাম, 'এমন একটা গাছের লেবু পানি সকাল বিকাল খেলে কারো কি করোনা টিকতে পারবে?' বললো, 'খেয়ে সবাই দোয়া করুক ৷ আমি থাকলে সব ঘরে আরো দুই চারটা করে দিতাম ৷'
.
তা শুনে বললাম, 'তারপর খেয়ে ভ্রু কোঁচকে দাঁত মুখ খিঁচে বলবে ধুত্তরি দাদীর লেবু বেশী টক্!' অতপর দরজা বন্ধ করে আপাতত ঘরে সামাজিক দূরত্ব পালন করছি ৷
২| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:১০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: রম্য লিখে ধন্য হউন আপনি
৩| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ সকাল ১১:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা কি আগে একবার পড়েছি?
৪| ২০ শে জুলাই, ২০২০ সকাল ১০:৩১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখাটা ভালো ছিল। দাদিকে কি দেখিয়েছেন, তাকে এবং তার লেবুগাছ নিয়া পত্রিকায় লেখা ছাপা হয়েছে?
৫| ৩১ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:৪৫
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: িখে চলুন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুলাই, ২০২০ ভোর ৪:০৭
এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: অভিনন্দন।
আপনি এভাবে ফোঁটাফুঁটি দিয়ে বাক্য পৃথক করেন কেন? লেখার প্রবাহ নষ্ট হয়, মনে হয় বৃক্ষের বিচ্ছিন্ন শাখাপ্রশাখা পড়ে আছে। এ বিষয়টি পরিবর্তন করে দেখতে পারেন পাঠকের স্বার্থে।