নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। আমার ইচ্ছে করে একটা সুন্দর স্বপ্নের বাংলাদেশের ছবি আঁকতে, পাখির মতো উড়তে আবার কখনও রেলস্টেশনের মেঝেতে শুয়ে থাকা মানুষটি হতে। কখনও ইচ্ছে করে কোন যুদ্ধ বিদ্ধস্ত নগরীতে শান্তির যোদ্ধা হতে। ভাল লাগে একা থাকতে।

অভিরাম কর্মকার

আমি হলাম তারকাঁটা, নই রক্তজবা ফুল //// আমি সেই পথের মাঝে, তুই করবি যেথায় ভুল।।

অভিরাম কর্মকার › বিস্তারিত পোস্টঃ

“বাংলাদেশ- ইয়েচটারডে, টুডে এন্ড টুমোরো”

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪২

যখন চারপাশটা বুঝতে শিখেছি তখন সালটা ২০০২ কি ২০০৩ হবে। বন্ধুত্ব, ঘুরাফেরা, খেলাধুলা অথবা মারামারি যাই হোক না কেন ধর্ম জিনিসটা অপশোনাল হিসেবেই থাকত। এই ধর্মের ভিত্তিতে কিছুই বিচার করতাম না। ২০১২ সালের পর থেকেই বিষয়টা কেন জানি আর নরমাল হিসেবে মনে হতো না। যাই হোক ২০১৫ সালের ২৫ তারিখ পর্যন্ত শুধু শুনেই আসছি কিন্তু ২৬ তারিখ এটার মুখোমুখি হতেই হল।

খুব একটা গর্ব করতাম আমার এলাকাটা নিয়ে। পড়াশুনার সুবাদে ২০০৯ সাল থেকেই আমি এলাকার বাইরে থাকি। তাই কম বেশি শুনতাম এখানে-সেখানে সংখ্যালঘুদের এইটা-ওইটা হইছে। খুব খারাপ লাগতো। ভাবতাম আর যাই হোক এটলিস্ট আমার এলাকায় এসব অসম্ভব। আমরা সবাইকে নিয়ে বেশ সুখেই আছি। পূজা অথবা ঈদ, আনন্দ সবার। কিন্তু এবার বাসায় এসে আমার সব বিশ্বাস আর ভাবনা উলটপালট করে দিল আমার নিজের সম্প্রদায়ের উপর ঘটে যাওয়া ঘটনাটি।

তুচ্ছ একটা বিষয় নিয়ে যে এভাবে পুরো একটা সম্প্রদায়ের উপর আক্রমন করার পরিকল্পনা মাথার মধ্যে মানুষের আসতে পারে এবং তাও সেটা আমার এলাকায় জাস্ট ভাবতেও গা শিউরে উঠছে। তার থেকেও বড় বিষয় হচ্ছে পরিকল্পনাটা আমার এলাকার সব থেকে উপরের লেভেল থেকে আসছে এবং ঘটনাটা ঘটার আগেই কিছুটা আন্দাজ করতে পারায় খুব বড় একটা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলাম। কিন্তু জানিনা এভাবে আর কতদিন পারবো।

আরও অবাক হলাম যখন দেখলাম ছোট থেকে যাদের সাথে বড় হলাম সেই সব অকৃতজ্ঞ বন্ধুরা, যাদের দেখলে রাস্তা-ঘাটে সালাম দিতাম সেই সব মানুষেরা, যে সব বড় ভাইরা যেকোন অনষ্ঠানে এসে খাওয়া-দাওয়া করতো তারা, যে সব পোলাপান ভাই ভাই করতে করতে অস্থির থাকতো তারা, যেসব মানুষেরা বিপদে পরলে জান-প্রান দিয়ে এগিয়ে যেতাম সেই সব মানুষদের ক্ষিপ্রতা আর মুখের ভাষার ব্যবহার দেখে। এমনকি এই অসহায়ত্বটাকে পুজি করে পাশের বাসার মানুষগুলোর তাচ্ছিল্যও ছিল চোখে পড়ার মতো। মানুষগুলো যেন জীবন্ত জানোয়ারের রুপ নিয়েছিল।

আর যারা এসব করতে পারে তারা আর যাই হোক না কেন মুক্তিযুদ্দের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ হতে পারে না। তারা হল পাকিস্থানীদের বীর্যে জন্ম নেয়া জারজ সন্তান। তারা হল ডাস্টবিনের পচা আবর্জনায় জন্ম নেয়া কীট। ধীক্কার জানাই সেই সব অকৃতজ্ঞ কীটদের যারা আজ পাকিস্থানীদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্যে এহেন হীন কাজ করতেও দ্বিধা করে না।

মানুষ সুখে থাকলে কখনই তার আপন ভিটেমাটি ছেড়ে যেতে পারে না। ছোট্ট একটা সার্ভে থেকেই আমার সোনার দেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমনটা সহজেই বুঝা সম্ভব। উইকিপিডিয়ার থেকে বাংলাদেশের হিন্দু মানুষের সংখ্যাটা তুলে ধরলাম। The Percentage (%) of Hindu people in BD in 1941 was 28.0, in 1951 was 22.05, in 1961 was 18.5, in 1974 was 13.5, in 1981 was 12.13, in 1991 was 11.62, in 2001 was 9.6 and in 2011-15 is 8.2. সংখ্যাটা কেন হ্রাস পাচ্ছে খুব সহজেই বুঝা যায়। কিন্তু কোন সরকারই এর জন্যে সহায়ক কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

নিজের জায়গা, নিজের জমি, নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তারপরও কেন মানুষ আমাদের আক্রমন করছে, কেন দেশ ছাড়তে বাধ্য করছে কে দিবে এসব এর উত্তর? এসব যে ৭১ এর হেরে যাওয়া কোন পক্ষের পাল্টা প্রতিশোধ তা সহজেই অনুমেয়। যদি তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয় তাহলে তা হবে এই দেশটার প্রতিটা শান্তি প্রিয় মানুষের জন্যে অশান্তির অপেক্ষা। যদিও সাংবিধানিক ভাবে এই দেশটা অসাম্প্রদায়িক কিন্তু আচার-আচরনে এখন অনেকটাই সাম্প্রদায়িক তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধুই ঘোষনার বাকি।

যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে হয়তো ২০৪০-৪৫ সালে এদেশে আর সংখ্যালঘু বলতে কিছুই থাকবে না। আর যেদিন এই অবস্থা হবে সেদিন এই দেশ আর সোনার দেশ থাকবে না। এক ভয়ংকর মৃত্যুপুরীতে পরিণত হবে। কারন যে সব এলাকায় বা ঘটনায় সংখ্যালঘু শব্দটা নেই সেই সব জায়গায় সংখ্যাগুরুদেরই হানাহানি আর কাটাকাটি লেগেই আছে।

দেশটাকে খুব ভালবাসি আর তার থেকেও বড় কথা দেশটা যেন সাম্প্রদায়িক না হয়ে উঠে এই স্বপ্ন দেখি। আসলে আক্রান্ত সংখ্যালঘুরাই তাদের অসহায়ত্বটা বুঝতে পারে। আর যারা কোনদিন আক্রান্ত হয়নি তারা শুধু সর্বোচ্চ উপলধ্বিটা করতে পারে। দেশ ডিজিটাল অথবা দেশের মানুষ যতোই শিক্ষিত হোক না কেন যতো দিন মনুষ্যত্বের সঠিক বিকাশ না ঘটবে ততো দিন এসব এর সমাধান হবে না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৫

মহাকাল333 বলেছেন: কঠিন সত্য। আপনার লেখাটি পড়ে ভাল লাগল।

২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫১

অভিরাম কর্মকার বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ #মহাকাল৩৩৩

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.