![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা সবাই জানি আজ দুপুরে এইচএসসি পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হবে। সবার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।
প্রতি বছর দেখে আসছি পরিক্ষার পরের কয়েকদিন পরিক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ার কারণে অনেকে আত্মহত্যা করেছে। প্রতিবার এই খবরটা দেখার পর আমার মনে হয়েছে এই মানুষগুলো জীবনকে ভয় পায়। কারণ অধিকাংশ আত্মহত্যা করে ফেল করার কারণে অথবা জিপিএ-৫ না পেয়ে। পরিক্ষায় পাশ ফেল দিয়ে জীবনকে মূল্যায়ন করা ঠিক নয়। কিন্তু এই সব ছেলেমেয়ে তাই করেছে।
গত বছর একটা ব্যাতিক্রম খবরও পেয়েছিলাম। ভুল ফলাফল শুনার পর আত্মহত্যা করেছে কিন্তু তারপর দেখা গেছে সঠিক খবরটা হচ্ছে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আত্মহত্যাকারীর পরিবারের এখন কি অবস্থা একটু চিন্তা করুন।
জীবনে জয় পরাজয় থাকবেই তাই বলে জীবন শেষ করে দিতে হবে??
একদিক দিয়ে ভালই করেছে এরা । এই সব ছেলেমেয়ে যারা জীবনকে ভয় পায় তারা জীবনকে নিয়ে এই কাজ ছাড়া আর কি-ই বা করতে পারবে। বরং মরে গিয়ে সমাজ থেকে ভীতুর সংখ্যাটা কমিয়ে দিচ্ছে।( এমন ক্ষোভ ছাড়া আমার কাছে আর কোন উপায় নাই ক্ষোভ প্রকাশ করার।)
এই সব আত্মহত্যার পিছনে আমাদের হাতও কম না। বরং আমরাই এদের আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছি। কিভাবে???
একটা ছেলে অথবা মেয়ে খুব ভাল রিজাল্ট করল আমরা তাকে মাথায় তুলে নাচব কিন্তু খারাপ করল ত হয়েছে। নানা ভাবে তাকে অপদস্ত করাই আমাদের কাছ। খুব অবাক লাগে এই সব কাজ কর্ম দেখে। একটা উদাহারণ দেই বিগত বছরের, বুঝতে সহজ হবে।
গত বছর আমার এক পরিচিত ছোট ভাই পরিক্ষায় ৪.৩২ পেয়েছে। পরিবারের কাছ থেকে দূরে থাকে কারণ ভাল একটা ভার্সিটিতে ভর্তি হবে এই আশায় কোচিং করার সুবাদে।
রিজাল্ট পাওয়ার পর এমনিতেই তাকে বিমর্ষ লাগছিল। সে আশা করেছিল তার রিজাল্ট এর চেয়ে ভাল হবে। এই রিজাল্ট শুনার পর তার বাবা মা ভাইবোন কেউ তার সাথে যোগাযোগ করেনি। দুখিঃত করেছে । তারা বাবা তাকে ফোন দিয়ে বলেছে বাড়ী আস তোমাকে আর পড়াশোনা করতে হবে না।
সেই ছেলের আরেক বন্ধু জিপিএ-৫ পেয়েছে। বন্ধুটি কোন দিন তার রিজাল্ট ছোট ভাইয়ের বাবাকে জানানোর প্রয়োজন বোধ না করলেও এই রিজাল্ট এর পরের দিন সেই প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল। আর খুব গর্ব করে শুনাল তার ফলাফল। একজন ব্যার্থ ছেলের বাবার কাছে এটা নিশ্চয় ভাল লাগার কথা নয়।
এখানেই শেষ নয় আরো আছে। তার আরো কয়েকটা বন্ধু ফোন দিলে বলল যা ফলাফল তাকে কোন ভাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাল বিষয়ে পরিক্ষা দিতে পারবে না। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানদন্ড আর বিষয় নিয়েও মানদন্ড করল। আমি এই বিষয়ে বলব না। যা বলছিলাম তাই বলি।
ত এই খবর তার বাবার কানেও গেল। তিনি আরো বিমর্ষ হয়ে পড়লেন ছেলের এমন ভবিষ্যত দেখে। এবার কোন কিছু যাছাই না করেই ছেলেকে দিলেন বকা। এখানেও শেষ হলেও পারত কিন্তু শেষ ত এখানেও না আরো আছে।
পাশের বাড়ীর আরো কয়েকজন পরিক্ষা দিয়েছিল। যাদেরটা এর তুলনায় ভাল হয়েছিল তারা শুরু করেছিল তাদের অত্যাচার। নানান কটুক্তি ছড়ানো শুরু হয়েছিল।
পরিক্ষার ফলাফলের পর আমাদের দেশে মিষ্টি খাওয়ানোর ধুম পড়ে। সেই মিষ্টি নিয়ে হাজির পাশের বাড়ীর আন্টিগুলো।
কোথায় একটু শান্তনা দিবে তা না করে শুরু করল নিজেদের প্রসংশা আর অন্যের কটুক্তি। আমার ছেলে/মেয়ে এই করেছে সেই করেছে তারটা পারেনি। ওমুক নকল করে পাশ করেছে, পরিক্ষার হলে এই করেছে সেই করেছে। অত্যাচারের মাত্রা আরো বাড়তে থাকে। আমার ছেলে/মেয়েকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এই সেই কতকিছু বানাব।
ভাবুন ত তখন এই ছেলেটার বাবা মায়ের মনের অবস্থা কি হয়???
মানুষের স্বভাবগত বৈশিষ্ট্যের কারণেই একজনের উপর রাগ করে অন্যের উপর রাগ ঝাড়বে। সোজা বাংলায় নিজের সন্তানের উপর গিয়ে পড়বে সেই রাগটা।
আরো অনেক আছে যেইগুলো নাই বা বললাম। এবার ভাবুন ত এই ছেলেটা কি করবে তখন। চোখের সামনে এমন অন্ধকার দেখার পর তার কি করা উচিৎ??
সবার সাথে তাল মিলিয়ে আমি নিজেও বলব ধের্য্য ধরতে। জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ের সাথে সংগ্রাম করার নামই জীবন। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে হয়ত সে আরা বিমর্ষ হয়ে পড়ে। আর এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতেই বেছে নেয় আত্মহত্যার মত ঘৃণিত কাজ।
আমি নিজেও এই অবস্থাটার মোকাবেলা করে এসেছি। আমি জানি কতটা যন্ত্রণাদায়ক এই অবস্থাটা।
কবে যে মুক্তি পাবে সমাজ আমাদের এই অবস্থা থেকে??
কত কাল কাদবে মানুষ এই অবস্থায়। কত কাল হারিয়ে যাবে এই ভাবে একটি পরিবারের স্বপ্ন।
আমরা যদি এই সব না করে বরং ছেলে/মেয়েটার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ীয়ে দিয়ে তাদের পাশে থাকতাম তবে কি এমন হত?
হয়ত হত তবে এত মহামারী আকারে না বরং তা অনেকাংশেই কম হত।
একটু ভাবুন আপনার কি করা উচিৎ এমন পরিস্তিতিতে?? সময় এখানেই শেষ নয় আপনার জীবনেও এমন সময় আসতে পারে।
একটা পরিক্ষার ফলাফল দিয়ে জীবন কে মূল্যায়ন না করে জীবনকে জীবন দিয়ে মূল্যায়ন করুন।
ভবিষ্যত ফলপ্রত্যাশীদের কাছে আমার অনুরুধ থাকবে তোমরা এমন ঘৃণিত কাজ করিও না।
২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৬:৩০
সজীব৬১৪ বলেছেন: এই রেজাল্ট অবশ্যই একটা ছেলেকে ভবিষ্যতে আরো ভালো করার জন্য অনুপ্রাণিত করে। কিন্তু এই রেজাল্টই জীবনে সব না। তুমি ভার্সিটি ভালো করতে পারলে, আগেরটা সবাই ভুলে যাবে। তাই বলবো রেজাল্ট যাই হোক না কেন, এটা নিয়ে বসে থেকো না তোমার। সামনে এগিয়ে যাও। সাফল্য তোমাদের একদিন আসবেই। কে কি বলল এটা নিয়ে বসে থেকো না। জয় তোমাদের হবেই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৫:৫০
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: সকল পরীক্ষার্থীর প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা
আমরা যদি এই সব না করে বরং ছেলে/মেয়েটার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ীয়ে দিয়ে তাদের পাশে থাকতাম তবে কি এমন হত?
ঠিক তাই
সুন্দর পোষ্ট