![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দর্শন বিরাজমান; যেহেতু মানব-মনন সর্বদা এবং সর্বত্র দর্শনের অনুগামী। আমরা যখন একটা বককে ডানা মেলে উড়ে যেতে দেখি তখন তা চোখ দিয়ে দেখি কিন্তু যখন এই বককে জগতের আর সব বকের সাথে মেলাতে চেষ্টা করি তখন বক-সম্পর্কিত একটা ধারণা বা ধারণাগুচ্ছ গড়ে ওঠে আমাদের মনে। আবার প্রতিদিনকার জীবনযাপনের ভিতর দিয়ে অনেক সাধারণ বোধ (common sense) তৈরি হয় আমাদের। যেমন, কাউকে ধুলোমলিন ছিন্নবেশ দীর্ঘকেশ আর এলোমেলো রাস্তা ধরে হেটে যেতে দেখলে তাকে আমরা অনেকে পাগল বলে মনে করি; যদিও তিনি যে মানসিকভাবে সুস্থ না মানসিক ভারসাম্যহীন তার কোন সত্য প্রমাণ আমাদের হাতে নেই! অর্থাৎ, আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো দিয়ে যে জগতকে আমরা উপলদ্ধি করছি সে জগতের প্রতিটা-কিছু নিয়ে আমরা কিছু না কিছু ধারণা করছি - হোক তা অসত্য, হোক তা অযথার্থ! ‘আমাদের এই ধারণা এবং সাধারণ বোধগুলো, শিক্ষা-ভুলশিক্ষা, সংস্কৃতি, কল্পনা এসবের দ্বারা প্রভাবিত। অপরদিকে দর্শন এসব ধারণা বা বোধ বা আদর্শকে সমালোচনা সাথে সচেতনভাবে বিশ্লেষণ করতে সচেষ্ট। আর তাই দর্শনের জ্ঞান আত্মপ্রত্যয়ী এবং (অপরের সাথে) এর আলোচনা বিনিময় যোগ্য।
সাধারণ বোধ এবং দর্শন (Philosophy) মূলত এক। তারা মানব মনের স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধি থেকে উদ্ভুত। কিন্তু সাধারণ বোধ সমালোচনার দ্বারা নিজেকে পরিশীলিত করেনা বা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের (Scientific Reasoning) ধার ধারে না। অন্যদিকে দর্শন অনেকক্ষেত্রে সাধারণ বোধের বিরোধী। এবং এটি যৌক্তিক জ্ঞানের কথা বলে। সব বিষয়ে যেমন আমাদের সাধারণ বোধ রয়েছে তেমনি সব বিষয়ের রয়েছে দর্শন। অথবা বলা যায়, সব বিষয় বা সকল কিছুই দর্শনের অন্তর্গত; কারণ একজন দার্শনিক সকল বাস্তবতা বা সকল সত্যের পশ্চাতে যে প্রধান বাস্তবতা (First principal of being) রয়েছে সেটির অনুসন্ধানে রত। আবার সাধারণ বোধের সার্বজনীনতাকে (Universality) এটি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে দর্শন বাস্তব ভূবনের একটি সাধারণ ও সত্যনিষ্ট ধারণা গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়। অবশ্য অনেক সময় আমাদের সাধারণ বোধ সঠিক থাকে না কিন্তু দর্শন সর্বদা আমাদেরকে সঠিক জ্ঞান বা ধারণার সন্ধান দিতে আগ্রহী।
আমাদের অনেকের কাছে ‘দর্শন’ জ্ঞানের একটি দুর্বোধ্য শাখা হিসাবে পরিগণিত। আমরা অনেকে একে ধাধার মতো মনে করি। অনেকের কাছে এটি আবার যাদুর থেকে যাদুকরী। এ কথা সত্যি যে প্রতিদিনকার অর্থনৈতিক রাজনৈতিক বা নৈতিক এবং বাস্তব জীবনের যত কিছু ক্রিয়াকান্ড তার ভিতর কোন দর্শন নেই কিন্তু এসবের পিছনে যে অনুপ্রেরণা বা যুক্তিবোধ আছে সেগুলো দর্শন। যেমন, কোন একজন মানুষ ডাকাতি করার থেকে দিনমজুর হয়ে অর্থোপার্জন করাটাকে সঠিক ভাবছেন। অথবা, কোন একটি রাষ্ট্র রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা না নিয়ে গণতন্ত্রকে গ্রহণ করেছে। অর্থাৎ, ‘দর্শন হচ্ছে জ্ঞানের সেই শাখা যেটি মানুষকে তার জীবনের যথার্থ পথের সন্ধান দেয়,৩ হতে পারে সে পথ ভালো অথবা মন্দ অথবা অকল্যাণকামী।
দর্শনের দুর্বোধ্যতা গণমানুষের মনে ব্যাপক ও গভীর। দার্শনিকদের বিষয়ে এই দুর্বোধ্যতা ব্যাপকতর ও গভীরতর। অনেকের কাছে তারা কর্মহীন অলস ভবঘুরে। কারও কাছে আবার অকাজের কাজী। কিন্তু প্রকৃত অর্থে ‘তারা সত্যের অনুসন্ধানী। এবং সত্য হচ্ছে প্রত্যেক মানুষের জীবনের স্তম্ভস্বরূপ, যদি তিনি যথার্থ মানুষের মতো বেঁচে থাকতে চান। আর তাই একজন দার্শনিক তার জীবন নিবেদন করেন সত্যের উদ্ঘাটনে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অন্য মানুষ এবং সমাজ তাকে বুঝতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু তিনি তার কর্মে চির প্রত্যয়ী কারণ দর্শন মানব জাতি এবং মানব সভ্যতাকে যতটা দিয়েছে মানুষের আর কোন কর্ম এতটা দিতে পারেনি।’৪
মহাচরাচর বা নক্ষত্রপুঞ্জ হতে পৃথিবীর অতিক্ষুদ্র ধূলিকণা সব কিছু সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত । সত্যই যথার্থ জ্ঞান। কোন বিষয়ের সঠিক সত্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হলে সে বিষয়ে আমাদের যথার্থ জ্ঞান হয় না। যথাযথ জ্ঞানে উপনীত হবার জন্য তাই সত্যই এক এবং অদ্বিতীয় পথ। ‘দর্শন হচ্ছে সেই জ্ঞান-প্রেম। দর্শন হচ্ছে জ্ঞানের পথে মানুষের অনিঃশেষ যাত্রা।’৫ মানুষ জানতে সচেষ্ট হাজারটা ’কিভাবে’ এবং ‘কেন’র উত্তর। স্বভাবগতভাবে ‘মানুষ তাই দার্শনিক৬ (Thus man is, by his very nature philosophical)। ‘মানব মন সর্বদা সত্যের জন্য এবং সত্যের প্রতি নিবেদিত। তার এই সত্যস্পৃহা মানব মনের ও মানবজীবনের সকল দর্শনের উৎস।’
দর্শনের প্রথাবদ্ধ সংজ্ঞাঃ
বাংলায় ‘দর্শন’ এর ইংরেজী প্রতিশব্দ ‘ফিলোসোফি’ (Philosophy) যেটি এসেছে গ্রীক ফিলোসোফিয়া থেকে (Philo-Sophia) থেকে যার অর্থ জ্ঞান-প্রেম (Love of wisdom)। প্রকৃতপক্ষে ‘দর্শন হচ্ছে সেই জ্ঞান যা অস্তিত্ব এবং বাস্তবতার রহস্য উন্মোচন করতে চায়। এটি সত্য ও জ্ঞানের স্বরূপ উদ্ঘাটন করার সাথে জীবনের জন্য যা কিছু মূল্যবান এবং গুরুত্বপূর্ণ তার অনুসন্ধান করে। ব্যক্তি ও সমাজের ভিতরকার সম্পর্ককে দর্শন পর্যবেক্ষণ করে। এর উদ্ভব মানুষের বিস্ময়, কৌতুহল এবং জানা ও বোঝার বাসনার মধ্যে। দর্শন তাই এক ধরণের অনুসন্ধিৎসা পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ, সমালোচনা এবং ব্যাখ্যাকরার এক ধরণের পদ্ধতি।’৮ ‘দ্য পেগুইল ডিকশনারী অভ ফিলোসফি বলে যে এটি সেই বিষয় ’যা মানুষের চিন্তা ক্রিয়াকর্ম এবং বাস্তবতার সব থেকে মৌলিক এবং সার্বজনীন ধারণা ও আদর্শের সমন্বয়’।৯ এটি আরও বলে যে ‘দর্শন বিজ্ঞানের থেকে আলাদা এ কারনে যে দার্শনিক-প্রশ্নগুলোর উত্তরে পর্যবেক্ষনলদ্ধ (empirical) তথ্য বা উপাত্ত দেয়া সম্ভব নয়। অপরদিকে ধর্মের সাথে এর ব্যবধানের কারন হচ্ছে এটি বিশ্বাস বা ঐশীবাণীর সত্যতাকে স্বীকার করে না।’১০ ডিকশনারী অব অক্সফোর্ড ফিলোসফির মতে, ‘বিশ শতকের পরবর্তী দার্শনিক ....... চিন্তাগুলো যে কোন ক্ষেত্রে মানব মণীষার শ্রেষ্ঠ অনুসন্ধিৎসু প্রয়াস।’১১ ’কার্যত প্রাকৃতিক দর্শনের ওপর অনেক অনুসন্ধিৎসা বর্তমান বিজ্ঞানের অনেক শাখার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের ভিত্তি প্রস্তুত করে দিয়েছে।’১২
তবে প্রথাগত নিয়মকে না মানলে বলা যায় যে, ‘কোন একটি দর্শন ইঙ্গিত করে যে কোন বিষয়ে আমাদের ধারণা বা নির্দিষ্ট কোন নীতিশাস্ত্র অথবা বিশ্বাসের দিকে।১৩ দর্শনের ধারণা এবং সংজ্ঞাকে আরও সহজ করতে ফিলিপ এটকিনসন (Philip Atkinson) বলেন, ‘দর্শন হচ্ছে আমাদের বুঝতে চাওয়ার প্রয়াস (Philosophy is the study of understanding)।’ ১৪ এসবের পাশাপাশি দর্শন বিষয়ে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অনেক দার্শনিকের সংজ্ঞা। যেমন দার্শনিক-শ্রেষ্ঠ প্লেটো বলেন, দর্শন হচ্ছে ‘সত্য-দৃষ্টি’ (Vision of truth)।১৫ বাট্রান্ড রাসেলের মতে, ‘দর্শন হচ্ছে বিজ্ঞান ও ধর্মশাস্ত্রের মধ্যবর্তী একটা বিষয়। ধর্মশাস্ত্রের মতো সুনির্দিষ্টভাবে জানা সম্ভব নয় এমন সব বিষয়ে এটি অনুসন্ধানের আশ্রয় নেয়। আবার বিজ্ঞানের মতো এ ঐশীবাণী বা এ জাতীয় কোন অস্তিত্বের নিকট আবেদন না জানিয়ে মানুষের যুক্তিবোধের নিকট আবেদন জানায়।’১৬ অন্যদিকে দর্শনশাস্ত্রের ইতিহাসকার উইল ডুরান্ট (Will Durant) মনে করেন, ‘দর্শন হচ্ছে না জানা অথবা অযথার্থরূপেজানা সত্য নির্ধারণের একটি পরিখা বিশেষ।’১৭
প্রাচ্যের দার্শনিক কৌটিল্য (জন্ম: আনুমানিক ৪র্থ খৃষ্ট পূর্বাব্দ) আবার ভাবতেন, ‘দর্শন হচ্ছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সব শাখাকে আলোকিত করার মতো একটা পাদপ্রদীপ। এটি সকল কর্মের হাতিয়ার এবং কল্যাণের স্তম্ভস্বরূপ।’১৮ এসব ছাড়াও কালপরম্পরায় মনীষী ও চিন্তাবিদেরা দর্শনকে আরও অনেক ভাবে বিবৃত এবং ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন । তবে তাদের এসব চেষ্টায় এটা স্পষ্ট যে দর্শনের রয়েছে দুই ধরণের পরিচয়। এর প্রথমটি হচ্ছে, দর্শন জ্ঞানের একটি শাখা বিশেষ, এবং সম্ভবত তা প্রাচীনতম। অন্যটি হচ্ছে, দর্শন সঠিক জ্ঞানে পৌঁছাবার একটি পদ্ধতি বিশেষ। এখানে ‘সঠিক জ্ঞান’ হচ্ছে মানব বোধ ও মেধার পক্ষে সর্বোচ্চ যতটুকু সত্য এবং সঠিক ধারণায় পৌঁছান সম্ভব ঠিক ততটুকু।
জ্ঞানের একটি শাখা হিসাবে কোন কোন বিষয় দর্শনশাস্ত্র হিসাবে পরিগণিত হতে পারে সে বিষয়ে কোনো সার্বজনীন ঐকমত্য নেই। তবে উইল ডুরান্টের মতে, ’সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে দর্শন পাঁচটি বিষয়ের ওপর জ্ঞান চর্চার সমন্বয়। এগুলো হলো, ন্যায়শাস্ত্র বা যুক্তিবিদ্যা (Logic) নন্দন তত্ত্ব (esthtics) নীতিশাস্ত্র (ethics) রাজনীতি (politics), এবং অধিবিদ্যা (metaphysics)।’২০ যেখানে ‘অধিবিদ্যা’ হচ্ছে বস্তুর স্বরূপ (ultimate reality) সম্পর্কিত বিদ্যা।২১ আবার অপেক্ষাকৃত পরের কালের চিন্তাবিদেরা বলছেন যে দর্শনের রয়েছে ছয়টি প্রধান শাখা; অধিবিদ্যা, জ্ঞানতত্ত্ব (epistemology), ন্যায়শাস্ত্র, নীতিশাস্ত্র, নন্দন তত্ত্ব এবং ভাষা-দর্শন (The Philosophy of Language)।২২ এসবের মধ্যে ভাষা-দর্শন বর্তমানকালে ভাষাবিজ্ঞান (Linguistics) নামে আত্মপ্রকাশ করেছে এবং জ্ঞানচর্চার একটা প্রতিষ্ঠিত ও স্বতন্ত্র শাখায় পরিণত হয়েছে। এই আলোচনায় তাই এটিকে বাদ রেখে দর্শনের অপর পাঁচটি শাখার ওপর অল্পবিস্তর আলোকপাত করা হলো-
অধিবিদ্যা (Metaphysics)ঃ অধিবিদ্যা হলো অস্তিত্ব এবং বাস্তবতার যেসব ধরণ রয়েছে সে বিষয়ক বিদ্যা। এটি বস্তুর মৌলিক গুণাবলী নিয়েও আলোচনা করে। অধিবিদ্যা আবার দুই ভিন্ন বিদ্যা বা বিষয়ের সমন্বয় বলে মনে করা হয়। এর একটি স্বত্ত্বা (ontology) এবং অপরটি বিশ্ববিদ্যা (cosmology)। এখানে স্বত্ত্বা তত্ত্ব হচ্ছে অস্বিত্ব বিষয়ক বিদ্যা।২৩ অস্তিত্বের বিষয়ে এরিস্টটল দুই ধরণের স্বত্তার কথা বলেছেন, বিশেষ স্বত্ত্বা এবং নির্বিশেষে স্বত্ত্বা। ‘তাঁর মতে বিশেষ হচ্ছে খন্ডিত স্বত্ত্বা। সমস্ত বিশেষ নিয়ে অখন্ড নির্বিশেষ স্বত্ত্বা । কিন্তু তাই বলে বিশেষের সমাহার মাত্র নির্বিশেষ নয়। পরন্তু নির্বিশেষের একাশেই বিশেষ এবং বৈচিত্র্য।১৪ অপরদিকে ‘বিশ্ববিদ্যা বিজ্ঞানের একটি শাখাও যেখানে মহাবিশ্বের গড়ন, ইতিহাস এবং তার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হয়।২৫
জ্ঞানতত্ত্ব (Epistemology)ঃ ‘জ্ঞানতত্ত্ব অনুধাবন করতে চায় জ্ঞানের ভিত্তি, প্রকৃতি এবং পরিধিকে। এটি জ্ঞানার্জনের নানাবিধ উপায়, সত্যের প্রকৃতি এবং জ্ঞান ও বিশ্বাসের ভিতরকার সম্পর্ককে জানতে প্রয়াসী।২৬
‘দার্শনিকেরা সাধারণত দুই ধরণের জ্ঞান, যথা: অভিজ্ঞতাপূর্বজ্ঞান (a priori) এবং অভিজ্ঞতালদ্ধ জ্ঞান (empirical)-এর ভিতর পার্থক্য করে থাকেন।২৭ যেখানে অভিজ্ঞতাপূর্বজ্ঞান কোন অভিজ্ঞার সাহায্য ছাড়াই কেবল চিন্তার মাধ্যমে আমরা অর্জন করে থাকি। যেমন: ১ মিনিটে ৬০ সেকেন্ড। আমরা মিনিট ও সেকেন্ডের অর্থ জানলেই বিষয়টা জানতে পারি।২৮ অন্যদিকে ‘অভিজ্ঞতলদ্ধজ্ঞান কেবল পর্যবেক্ষণ এবং অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই অর্জন করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, অভিজ্ঞতাপূর্বজ্ঞান দ্বারা আমরা জানি কী বোর্ডে কয়টা হরফ আছে এবং অভিজ্ঞতার দ্বারা জানতে পারি কোন কী কোন কোন হরফ বা বর্ণ লেখে।’ ২৯
ন্যায়শাস্ত্র বা যুক্তিবিদা (Logic)ঃ ‘যে বিদ্যা যুক্তির নিয়মকানুন নিয়ে আলোচনা করে এবং যুক্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার প্রসঙ্গে কথা বলে সেটি যুক্তিবিদ্যা।৩০ যথা: আরোহী (Inductive) এবং অবরোহী (Deductive)।
আরোহী পদ্ধতি (Inductive Method)ঃ যে যৌক্তিক বা ন্যায়িক পদ্ধতিতে আমরা কোন সুনির্দিষ্ট বিষয়ের অভিজ্ঞতা দিয়ে সার্বজনীন কিছু বলি তাকে আরোহী পদ্ধতি বলে। যেমন, এক ঝুড়ি আমের একটা বা কয়েকটা খেয়ে আমরা ধারণা করি যে ঝুড়িটির অন্য আমগুলো মিষ্টি না টক-যদিও ঝুড়িতে কিছু আম টক এবং কিছু আম মিষ্টি হতে পারে। আরোহী পদ্ধতি তাই নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারে না, এটি সম্ভাবনার (Probability) কথা বলে।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা সচরাচর আরোহী পদ্ধতি প্রয়োগ করে থাকি যদিও আমরা অনেকেই তা জানিনা।
অবরোহী পদ্ধতি (Deductive Method)ঃ অবরোহী পদ্ধতির মাধ্যমে আমরা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনীত হই। এ পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জিত সিদ্ধান্ত সঠিক কিন্তু সেটা যে সত্যি তা সব সময় নিশ্চিত নয়। সাধারণত গণিত এবং যুক্তিশাস্ত্রে অবরোহী পদ্ধতির বহুল প্রয়োগ ঘটে থাকে। এ পদ্ধতি প্রয়োগের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হচ্ছে ইউক্লিডের এলিমেন্টস (The Elements)। সর্বপোরি ‘অধিবিদ্যার কাছে আমরা প্রশ্ন করতে পারি কি বাস্তব’? ‘যা কিছু আমাদের মনে হয় এবং যা কিছু বাস্তবতা তার মধ্যে ব্যবধান কি?৩১ ইত্যাদি।
আরোহী যুক্তির মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্ত কখনো সঠিক হয় আবার কখনো হয় না, কারণ এক্ষেত্রে আমাদের গৃহীত সিদ্ধান্ত পূর্ব প্রতিজ্ঞা (premises) অনুসারে হয় না। অপরদিকে অবরোহী যুক্তির দ্বারা লদ্ধ সিদ্ধান্ত সর্বদাই সঠিক হবে যদি পূর্বপ্রতিজ্ঞা সঠিক থাকে। অবরোহী সিদ্ধান্তের সব সময় প্রতিজ্ঞা-র হতে হয়, অন্যথায় অবরোহী যুক্তির যৌক্তিকতা নষ্ট হয়।
বর্তমান কালে যুক্তিবিদ্যা বা ন্যায়শাস্ত্র প্রধানত ব্যবহৃত হয় যুক্তির যৌক্তিকতা বা নায্যতা যাচাই করার জন্য। এছাড়া যুক্তিগুলোকে প্রতীক আকারে প্রকাশের জন্যও এটি ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে এক বা একাধিক পদের পরিবর্তে একটি প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়, যেমনঃ
[প্রথম প্রতিজ্ঞা] আমি মানুষ ( x = y)
[দ্বিতীয় প্রতিজ্ঞা] মানুষ বেওকুফ (y = z)
[গৃহীত সিদ্ধান্ত] আমি (ও) বেওকুফ (x = z)
নীতিশাস্ত্র (Ethics)ঃ নীতিশাস্ত্র মানুষের নৈতিকতা অর্থাৎ, আচার-আচরণ, স্বভাব-চরিত্র এবং মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করে। এটি ন্যায়-অন্যায় এবং ভালো-মন্দের বাছ-বিচার করে। ন্যায় এবং ন্যায়পরায়ণ সমাজের বিষয়ে নীতিশাস্ত্র বক্তব্য রাখে। অন্য মানুষ ও সমাজের প্রতি প্রতিজন মানুষের যে দায়বদ্ধতা রয়েছে সে বিষয়ে কথা বলে।৩৩ নীতিকথা শাস্ত্র হয়ে ওঠার অনেক আগে পৃথিবীর প্রতি প্রান্তে নৈতিক বক্তব্যের উদ্ভব ঘটে এবং প্রচার পায়। প্রাচীনকালের যেসব নীতিকথার সদ্ধান আজও আমরা পাই তা সাধারণত সেসব কথার প্রচারকের নামে পরিচিত। যেমন, মোজেসের (নবী মুসা (আ) ঐশী প্রত্যাদেশ (Ten Commandments), কনফুসিয়াসের এনালেক্টস (The Analects), বুদ্ধদেবের ’ধর্মপদ’ ইত্যাদি। এছাড়া ইউরোপীয় দার্শনিকদের মধ্যে এ বিষয়ে জোর-বক্তব্য রাখেন স্পিনোজা (Spinoza)।
ভাষা বিজ্ঞান বা ভাষাতত্ত্ব (Linguistics)ঃ ‘ভাষা বিজ্ঞান হচ্ছে ভাষার বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠ। এটা আমাদের জানাতে চায় ভাষা কী এবং ভাষা কিভাবে আমাদের মনের সাথে সম্পৃক্ত। ভাষা বিজ্ঞানীরা দৃষ্টি দেন ভাষা বর্ণনা এবং ব্যাখ্যার ওপর-গুরুত্ব আরো করেন না। একজন ভাষা বিজ্ঞানীর তাই অনেকগুলো ভাষা জানবার বা দোভাষী হবার কোন প্রয়োজন হয় না।’৩৪ যেমন, বিশ-একুশ শতকের অন্যতম ভাষা বিজ্ঞানী নোয়াম চমস্কি জানেন একটিমাত্র ভাষা। একজন ভাষা বিজ্ঞানী চেষ্টা করেন ভাষার সার্বজনীন সত্য উদ্ঘাটনের।৩৫
ভাষাবিজ্ঞান মনোবিজ্ঞান, নৃতত্ত্ববিজ্ঞান, প্রতœতত্ত্ব বা সমাজ বিজ্ঞানের (sociology) মতো একটি সামাজিক বিজ্ঞান (social science)। ভাষাবিজ্ঞানের রয়েছে বেশ কিছু শাখা-প্রশাখা। এর গুরুত্বপূর্ণ শাখাগুলোর মধ্যে রয়েছে ধ্বণিবিদ্যা (Phonetics), কথার ধ্বণি কিভাবে উৎপন্ন হয় এবং অর্থধারণ করে সে বিষয়কে বিদ্যা। বাচনবিদ্যা (Phonology), একটি ভাষার বাচনিক ধ্বণিগুলো কিভাবে বিন্যস্ত থাকে এটি সে বিষয়ে বলে। রূপতত্ত্ব (morphology), ভাষার রূপমূলকগুলো কিভাবে সংযুক্ত হয়ে শব্দ গঠন করে সে বিষয়কে বিদ্যা। বাক্যরীতি (syntax), শব্দার্থ বা বাগার্থবিজ্ঞান (semantics) ইত্যাদি।
দর্শনের প্রয়োজনীয়তা (The Necessity of Philosophy)ঃ কেন দর্শন? এ প্রশ্নের জবাবে স্ট্যাগিরার দার্শনিক, অতি বিজ্ঞ এরিস্টটল বলেন, ‘একজন মানুষ স্বেচ্ছায় দার্শনিকীকরণ করেন বা না করেন, প্রত্যেককেই দার্শনিকীকরণ করতে হয়। অর্থাৎ, ঘটনা যাই হোক, প্রত্যেকের জন্য দার্শনিকীকরণ করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।’৩৬ [“Either one pholosophies or does not philosophise, one has to philosophise. So, whatever the case may be, one needs to philosophise”] কারন দর্শনের মাধ্যমে মানুষ মানব জীবন এবং প্রকৃতি জগতের সব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করে। কার্যত, দর্শন হচ্ছে কোন ধারনাকে তার সত্য-অবয়ব সমেত খুঁজে পাওয়ার দক্ষতা। আর এ কারণে ‘বিজ্ঞানের দর্শন’ ‘শিক্ষার দর্শন’ জীবনের দর্শন’... এতসব দর্শনের উদ্ভব হয়েছে।
দর্শনের কাজ যেন বাগানের কোন মালির কাজ। নতুন নতুন চিন্তার চারা যেমন এখানে তৈরি করতে হয় তেমনি পুরনো চিন্তার ডালপালা ছেটে নতুন রূপে তার পরিচর্যা করাটাও এর অংশ। আবার দর্শনকে কোন গাছের সাথে তুলনা করলে এর শাখাগুলোকে আমাদের বলতে হবে জ্ঞানপ্রেম (Love of wisdom)। গাছটি অনেক ফল দেয়। যখন কোন ফল এর থেকে পরিপক্ক হয়ে নিচে খসে পড়ে তখন তা এক সময় মাটিতে মিশে একটা ভিন্ন ও স্বতন্ত্র গাছ হিসাবে গজিয়ে যায়। পরে সে নিজেই হয়ে ওঠে একটা বিশেষ ধরণের জ্ঞান বা বিজ্ঞান। দর্শন তাই সকল বিজ্ঞানের জননী, যদিও নিজে সে বিজ্ঞান নয়।
এই ফল থেকে গজিয়ে ওঠা বৃক্ষটা যদি হয় সুনির্দিষ্ট কোন জ্ঞান-শাখা বা বিজ্ঞান তবে এর প্রতিটা ফলের অর্ন্তগত বীজ যেন এক একটি ধারণা বা অন্তর্দৃষ্টি (insight)। “আমাদের প্রায় সবার মনে সারা জীবনে এমন অনেক অর্šÍদৃষ্টি বা ধারণার উদয় হয়। কিন্তু আমরা অধিকাংশ মানুষ তার মূল্য বুঝতে পারি না। আর তাই ধারণার সুস্বাদু ফল খেয়ে এর বীজটাকে তিক্ত ভেবে পরিত্যাগ করি। হয়ত আমাদের সেই ব্যক্তিগত ধারণা কোন জ্ঞানের জন্ম দিতে সক্ষম ছিল। একটি অন্তর্দৃষ্টি বা ব্যক্তিগত ধারণাকে যদি অপর মানুষের শ্রদ্ধা অর্জন করতে হয় বা জ্ঞানে পরিণত হতে হয় তবে ধারণার সেই বীজটিকে বপন করতে হয়। চারা রূপে গজিয়ে ওঠার পর তাতে পানি দিতে হয়, তার যতœ নিতে হয়।৩৭ বিচক্ষণ এ্যরিস্টটল যথার্থই বলেছেন যে সব মানুষকেই দার্শনিকীরকণ করতে হয়। তাহলে কেন অল্পকিছু মানুষকে কেবল আমরা চিনি দার্শনিক হিসাবে? কারণ, দার্শনিকীকরণ করবার দক্ষতাটা সাধারণ মানুষের অর্জন করেন না। কেবল জীবনযাপন করবার জন্য যতটুকু প্রয়োজন কেবল ততটুকু ধারণা, মতামত এবং বিশ্বাস তারা তৈরি ও প্রকাশ করেন।
অনেকে প্রশ্ন এবং অভিযোগ করতে পারেন, কেন আমরা কোন কিছুর দর্শন জানতে যাব যেখানে পুরো বিষয়টাই আমরা জানতে পারি? এর উত্তর হলো, বৈজ্ঞানিক সত্য আমাদেরকে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের পথে নিয়ে যায় কিন্তু প্রযুক্তির এই অগ্রগতি কি বিজ্ঞানের দর্শন-এর অবদান নয়? ৩৮ আরও ভালোভাবে বললে বলতে হয় প্রাচীন কালের সেই চীনা দার্শনিকের কথা যার নাম ছিল চুয়াং জু (Chuang Tzu)। তিনি দর্শনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলেন, ‘একটা গাছের কথা ধরি যেটি শক্ত; তাহলে এটিকে আমরা কোনকিছু তৈরিতে ব্যবহার করতে পারব। যদি গাছটি হয় নরম তাহলে এটির ওপর কিছু খোদাই করে রাখতে পারব। যদি এর থাকে সুগন্ধ, ব্যবহার করতে পারি একে আমাদের সাজ-সজ্জায়। আর গাছটি যদি হয় অকাজের তাহলে এটিকে আমরা তার নিজের মতো থাকতে দিই যা গাছটিকে করে দীর্ঘজীবী।’৩৯ যা আর কিছু না করলেও আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবে। যারা দর্শনকে অকাজের কাজ বলে মনে করেন নিশ্চিতভাবে এটি তাদের উদ্দেশ্যে বলা।
এবার যদি ভাবি, গড়পড়তা সাধারণ মানুষ দার্শনিকীরকণ কিভাবে করেন? আমরা প্রতিদিনকার জীবনে জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে, সকাল, বিকেল, ধর্ম, ইহকাল, পরকাল, ন্যায়, অন্যায় মন্দ এসব অজস্র কথা বলি। এসব শব্দের বিপরীতে আমাদের মনে এক বা একাধিক ধারণা রয়েছে। যেমন, বিকেল বললে বুঝি সূর্য মধ্যগগন থেকে হেলে পড়েছে পশ্চিমে, আলোর তেজ গেছে কমে, খানিক বাদে নামবে সন্ধ্যা। হয়ত একজন বিজ্ঞানী বিকেলকে সংজ্ঞায়িত করবেন অন্য ভাবে। এবং একজন লেখাপড়া না জানা গাঁয়ের কৃষক হয়ত কোনদিনই ‘বিকেল’-কে সংজ্ঞায়িত করবেন না। কিন্তু জীবনে অনেক বিকেল তিনি কাটাবেন এবং বিকেলের ধারনাটাও থাকবে তার। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে প্রতিদিনকার জীবনে হাজারটা মতামত প্রকাশ করি আমরা, এবং প্রকাশিত সব মতামতের থেকে যুক্তি বা বিচার-বিবেচনার দ্বারা বেছে নিই কোন একটা। সহজ ভাষায় এটিই হচ্ছে দর্শন। তবে একজন দার্শনিকের দর্শন এর থেকে বেশি কাজ করে। একজন দার্শনিক তার চিন্তামালাকে একটা পদ্ধতির ভিতর দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যান এবং হাজির করেন জগতের সামনে। অপরদিকে একজন সাধারণ কৃষক আপন স্বভাবে ভাবেন বলেন বা করেন। বড়জোর চারপাশের কারও কারও সাথে যুক্তিতর্কে অবতীর্ণ হন তিনি কিন্তু তার ভাবনার জগতকে পরিশীলিত উপায়ে বিশ্বলোকের সামনে হাজির করেন না। দর্শন এবং দার্শনিকীকরণ তাই মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের বাইরের ভূবন যেমন আলো হাওয়া জলে আচ্ছন্ন আমাদের ভিতরের জগত বা অর্ন্তলোকও তেমনি দর্শনে আচ্ছন্ন, যদিও খুব কম সময় আমরা তা অনুধাবন করতে পারি।
তথ্য সূত্র:
১. দ্রষ্টব্য: Dolhenty, Jonathan. ‘Philosophy and Commonsense’. http://radicalacademy.com
২. প্রাগুক্ত
৩. দ্রষ্টব্য: ‘Philosophy and Life’. http://radicalacademy.com
৪. প্রাগুক্ত
৫. দ্রষ্টব্য: ‘The Roots of Life’. http://radicalacademy.com
৬. প্রাগুক্ত
৭. প্রাগুক্ত
৮. দ্রষ্টব্য: The world Book Encyclopedia, Volume:15. Page-383 Pblished by world Book, Inc, 1980, USA.
৯. দ্রষ্টব্য: http://wikipedia.com
১০. প্রাগুক্ত
১১. প্রাগুক্ত
১২. প্রাগুক্ত
১৩. প্রাগুক্ত
১৪. দ্রষ্টব্য: http://www.ourcivilisation.com/
১৫. দ্রষ্টব্য: Russel, Bertrand. ’History of Western Philosophy’. Routledge, London. 1995, page-138.
১৬. প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-১৩
১৭. দ্রষ্টব্য: Durant, Will. ‘The Story of Philosophy’, 1903, Page-xxvi
১৮. দ্রষ্টব্য: Kautilya. ‘The Arthashastra’- Page-106, Edited & Transleted by Rangariajan, L.N. Penguin Classics (1992).
১৯. http://wikipedia.com
২০. Durant, Will, ‘The Story of Philosophy, 1933. Page-xxvii
২১. প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-xxviii
২২. The World Book Encyclopedia.Volume:15. World Book, Inc. 1980. USA.Page-384
২৩. প্রাগুক্ত
২৪. করিম, সরদার ফজলুল। ‘দর্শন কোষ’ বাংলা একাডেমী ঢাকা, ১৯৯৫,। পৃষ্ঠা-৩৬৭
২৫. 25. The World Book Encyclopedia, Volume:15. World Book. Inc. 1980, USA, Page-384.
২৬. প্রাগুক্ত
২৭. প্রাগুক্ত
২৮. প্রাগুক্ত
২৯. প্রাগুক্ত
৩০. প্রাগুক্ত
৩১. প্রাগুক্ত
৩২. প্রাগুক্ত
৩৩. দ্রষ্টব্য. http://www.geocitics.com/College Park/3920
৩৪. প্রাগুক্ত
৩৫. 35. Conceptions of Philosophy. Ancient and Modern Ionia Publications, Athens 2004, PP.416 (http://www.hri.org/iagp/books/vol45.html)
৩৬. দ্রষ্টব্য http://www.hkbu.edu.hk/~ppp/top/top16
৩৭. প্রাগুক্ত
৩৮. প্রাগুক্ত
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:০০
আবু সিদ বলেছেন: ধন্যবাদ, মামুন ভাই।
২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:০২
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল পোষ্ট । কষ্ট করাকে সাধুবাদ ।
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৭
আবু সিদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৮:২৪
ওমার হক বলেছেন: আগ্রহী হলাম
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৫৭
আবু সিদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫২
মামুন রশিদ বলেছেন: সুন্দর আলোচনা । ভালো লেগেছে ।