নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু সিদ

আবু সিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষা - ১. শিক্ষা ও মনুষ্যত্বের পথে কতিপয় সমস্যা

১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:১০

“Education then, beyond all other devices of human origin, is the great equalizer of the conditions of men, the balance-wheel of the social machinery”. — Horace Mann, 1848

”শিক্ষা মানব জীবনের উন্নয়ন ও মানব সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে কার্যকরী হাতিয়ার।”
- হোরেস মান (Horace Mann), মার্কিন শিক্ষা সংস্কারক, ১৮৪৮।

১. শিক্ষা ও মনুষ্যত্বের পথে কতিপয় সমস্যা

একটা শিশু হাঁটতে গিয়ে আছাড় খেলে আমরা বলি যে শিশুটা হাঁটা শিখছে। এভাবে বার বার আছাড় খেয়ে সে হাঁটতে শেখে, বড় হয়, বয়স্ক হয়। তার হাঁটতে শেখা থেকে বয়স্ক হওয়ার মধ্যে অন্য সবার মতো সেও খায়, খেলে ও ঘুমায়। এগুলো সে করেই, জগতের যেখানে সে জন্মাক না কেন। তবে এগুলো তাকে শিখতে হয়। বাংলাদেশের মতো গরীব দেশে জন্মালে সে শেখে হাত দিয়ে খাওয়া। ধনী কোন দেশে জন্মালে শেখে চামচে খাওয়া। আবার এদেশের কোন অবস্থাপন্ন বা শিক্ষিত পরিবারে জন্মালে সে শেখে খাওয়ার আগে হাত ধোয়ার নিয়ম। এগুলো মানুষ শিখে ফেলে নিতান্ত ছোট বেলায়। এভাবে খাওয়া বা ঘুমের মতো জীবন যাপনের সব কিছু ছোট বেলা থেকে শিখতে থাকে মানুষ। এর বেশির ভাগ সে শেখে নিজের অজান্তে। অর্থাত, শৈশব শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশু জানেনা যে সে শিখছে। কিন্তু সে শেখে। জন্মের পর সব শিশুই তার জন্মগত পরিবেশকে মেনে নেয় এবং সেখান থেকে শেখা শুরু করে। মানুষের সমস্ত জীবনে এই শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

শৈশব শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশু জানেনা যে সে শিখছে। ওই বয়সে তার ইচ্ছা অনিচ্ছা, ভালো লাগা মন্দ লাগা তেমন গুরুত্ব পায়না। তার কাছে তখন খালি হাতে খাওয়া আর চামচে খাওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য থাকেনা। তবে তার বয়স আরেকটু বাড়লে সে তার ইচ্ছা অনিচ্ছাকে ব্যক্ত করতে শুরু করে। এ থেকে বোঝা যায় যে বয়স বাড়ার সাথে তার ভিতর এক ভিন্ন ধরনের নিজস্বতা জন্ম নেয় যা আগে দেখা যায়নি। অবশ্য জন্মের পর থেকেই সে কাঁদত, হাত-পা ছুড়ত। অর্থাৎ, কোন কোন বিষয় তার খারাপ লাগত এবং সে তা প্রকাশ করত।

এবার শিশুর পরিবার, অর্থাৎ, মাতা-পিতার দিকে তাকালে দেখব সেখানে তার শিক্ষার শুরু। আমরা নিশ্চিত জানি, কোন মাতা-পিতাই তাদের শিশুর খারাপ চান না। তাহলে সব শিশু কেন শিক্ষিত হয়ে উঠছে না? এর উত্তর আছে শিশুর পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা, সামাজিক পরিবেশ, তার মা-বাবার জীবন যাপন পদ্ধতি এসবের মধ্যে। তবে শিশুর পরিবার ও পারিপাশ্বিকতা যাই হোক, লেখাপড়া-না-জানা কোন পরিবারের সন্তানও তো স্বশিক্ষিত একজন মানুষ হয়ে উঠতে পারেন! আর তা করতে হলে আমাদেরকে শিশুর আত্মবোধ কাজে লাগাতে হবে।

একটু আগে আমরা বলেছি যে শৈশবে শিশু তার জন্মগত পরিবেশ মেনে নেয়। এরপর যখন সে কৈশরের দিকে যাত্রা করে তখন সে সচেতন হয়ে উঠতে থাকে। সে তার চারপাশ সম্পর্কে নিজস্ব মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি কৈশর মানুষকে প্রথম আত্মবোধ শেখায়। তার এই আত্মবোধকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। তাকে জানাতে হবে, জীবন নিছক খেয়ে পরে বেঁচে থাকা নয়। ’শিক্ষা’ মানব জীবনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

আমরা আশা করি, শৈশব পেরনোর সাথে একজন কিশোর বা কিশোরী প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেছেন। অবশ্য গরীব দেশের গরীব শিশুদের জন্য কথাটা খাটে না। হয়ত পরিবারের ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে ওই শিশুকে কাজ করতে হয়। হয়ত ওর বাবা নিরুদ্দেশ, তিন চার সন্তান নিয়ে মায়ের সংসার। হয়ত ওর মা বাবা কেউ নেই। তাহলে এখন আমাদের সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে সেই বিপুলায়তন সমস্যা: জাতি ধর্ম বর্ণ ও আর্থিক অবস্থা নির্বিশেষে আমরা কিভাবে প্রতিটি শিশুর মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াব?

সমস্যার ওই বিপুলায়তনে যাবার আগে এটা বলা দরকার যে ’শিক্ষা’ বলতে আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা কী বোঝাতে চাচ্ছি। এক্ষেত্রে শিক্ষিত বলতে আমাদের দেশে কী বোঝানো হয় সে দিকে দৃষ্টি দেয় যাক। আমাদের এখানে এ ধারনা জনপ্রিয় যে, যে-মানুষ বিদ্যালয় মহাবিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ি দিয়েছেন তিনিই শিক্ষিত। অন্যভাবে বলা যায়, যে মানুষের হাতে কতগুলো পরীক্ষা পাশের সার্টিফিকেট আছে তিনি শিক্ষিত। এ আলোচনায় শিক্ষিত বলতে এরকম কিছু বোঝানো হচ্ছে না। একজন মানুষ জগতের সব শিক্ষায়তনের সব সার্টিফিকেট হাতে পেয়েও যদি তিনি অন্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠেন তবে সে-শিক্ষা অশিক্ষার শামিল। সহজ কথায়, শিক্ষা হলো নিরন্তর মনুষ্যত্বের চর্চা এবং মানবিকতার বিকাশ।

এবার মনুষত্ব্যের চর্চা বা মানবিকতার বিকাশের দিকে আমরা দৃষ্টি দিতে পারি। মনুষত্ব্যের চর্চা বা মানবিকতার বিকাশ এক প্রকারের সহিঞ্চুতা সহমর্মিতা। অন্যভাবে, এ হলো পরমতসহিঞ্চুতা এবং অন্যের প্রতি সহমর্মিতা। আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ মত বিশ্বাস ও আদর্শ নিয়ে কোন একটি সমাজ রাষ্ট্র বা সভ্যতার ভিতর বসবাস করি, একে অন্যের পাশপাশি থাকি। মানবিক জীবন যাপনের অর্থ হলো আমরা প্রত্যেকে যার যার মত বিশ্বাস বা আদর্শ অনুসারে যেন জীবন যাপন করতে পারি। আমাদের জীবন যাপন এমন হবে যেন তা অন্যের ক্ষতির কারন না হয়। হতে পারে আমার পরিচিত বা প্রতিবেশি কেউ তার খারাপ অভ্যাসের কারনে কষ্টে আছেন। আমরা তখন তাকে সাহায্য করতে পারি সুন্দর আর কার্যকরী সব পরামর্শ দিয়ে। কিন্তু আমাদের পরামর্শ গ্রহণ বা বর্জনের অধিকার তার রয়েছে। তিনি যদি আমাদের কোন ভালো পরামর্শও বর্জন করেন তবে তাকে বাধ্য করার কোন এখতিয়ার আমাদের নেই। তবে তিনি যদি অন্যের ক্ষতির কারন হন সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

অর্থাৎ, আমরা কারও উপকারে আসতে না পারলেও যেন অন্যের ক্ষতির কারন না হই। আর এই বোধটুকুর জন্য একজন মানুষের খুব বেশি স্কুলে যাওয়ার দরকার হয় না। এমনকি অনেক মানুষের ক্ষেত্রে সে দরকার একেবারে হয় না। যাইহোক, লক্ষ্য করলে দেখব এই পৃথিবীর যত লোক স্কুলে পড়েছেন তার থেকে অনেক কম লোক, প্রকৃত অর্থে, মানবিক। এছাড়া আমাদের দেশের শহরে গ্রামে স্কুলে হাসপাতালে প্রায় সর্বত্র মানবিকতাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। কেউ যদি একজন ভালো মানুষ হিসাবে জীবন যাপন করেন, যদি অন্যের ক্ষতির কারন না হন, যদি অন্যের ভালো করেন তবে আমরা সবাই তাকে ঠকাবার চেষ্টা করি। আড়ালে আবডালে কিংবা সামনা-সামনি বলি, বোকা! অর্থাৎ, এখানে মানবিক হওয়াটা খুব একটা সহজ নয়। অধিকাংশ সময় তা বেশ কঠিন। মানুষ তো কিছু শিখে পৃথিবীতে আসে না বরং এখানে এসে শিখতে শুরু করে। সে যখন দেখে তার চারপাশ অমানবিকতায় ভরা তখন সে কী করে মানবিক হবে! সে তো অমানবিকই হবে! কিন্তু আশাহীন হওয়া স্বভাব নয় মানুষের। আমরা যেন অতটা আশাহীন না হই। পরিশেষে প্রয়াত এক মনীষীর কথার সূত্র ধরে বলতে পারি, যে দেশে মানবিকতার কদর হয় না সে-দেশে মানবিকতার বিকাশও হয় না।
একটা শিশু হাঁটতে গিয়ে আছাড় খেলে আমরা বলি যে শিশুটা হাঁটা শিখছে। এভাবে বার বার আছাড় খেয়ে সে হাঁটতে শেখে, বড় হয়, বয়স্ক হয়। তার হাঁটতে শেখা থেকে বয়স্ক হওয়ার মধ্যে অন্য সবার মতো সেও খায়, খেলে ও ঘুমায়। এগুলো সে করেই, জগতের যেখানে সে জন্মাক না কেন। তবে এগুলো তাকে শিখতে হয়। বাংলাদেশের মতো গরীব দেশে জন্মালে সে শেখে হাত দিয়ে খাওয়া। ধনী কোন দেশে জন্মালে শেখে চামচে খাওয়া। আবার এদেশের কোন অবস্থাপন্ন বা শিক্ষিত পরিবারে জন্মালে সে শেখে খাওয়ার আগে হাত ধোয়ার নিয়ম। এগুলো মানুষ শিখে ফেলে নিতান্ত ছোট বেলায়। এভাবে খাওয়া বা ঘুমের মতো জীবন যাপনের সব কিছু ছোট বেলা থেকে শিখতে থাকে মানুষ। এর বেশির ভাগ সে শেখে নিজের অজান্তে। অর্থাত, শৈশব শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশু জানেনা যে সে শিখছে। কিন্তু সে শেখে। জন্মের পর সব শিশুই তার জন্মগত পরিবেশকে মেনে নেয় এবং সেখান থেকে শেখা শুরু করে। মানুষের সমস্ত জীবনে এই শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

শৈশব শিক্ষার ক্ষেত্রে শিশু জানেনা যে সে শিখছে। ওই বয়সে তার ইচ্ছা অনিচ্ছা, ভালো লাগা মন্দ লাগা তেমন গুরুত্ব পায়না। তার কাছে তখন খালি হাতে খাওয়া আর চামচে খাওয়ার মধ্যে কোন পার্থক্য থাকেনা। তবে তার বয়স আরেকটু বাড়লে সে তার ইচ্ছা অনিচ্ছাকে ব্যক্ত করতে শুরু করে। এ থেকে বোঝা যায় যে বয়স বাড়ার সাথে তার ভিতর এক ভিন্ন ধরনের নিজস্বতা জন্ম নেয় যা আগে দেখা যায়নি। অবশ্য জন্মের পর থেকেই সে কাঁদত, হাত-পা ছুড়ত। অর্থাৎ, কোন কোন বিষয় তার খারাপ লাগত এবং সে তা প্রকাশ করত।

এবার শিশুর পরিবার, অর্থাৎ, মাতা-পিতার দিকে তাকালে দেখব সেখানে তার শিক্ষার শুরু। আমরা নিশ্চিত জানি, কোন মাতা-পিতাই তাদের শিশুর খারাপ চান না। তাহলে সব শিশু কেন শিক্ষিত হয়ে উঠছে না? এর উত্তর আছে শিশুর পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা, সামাজিক পরিবেশ, তার মা-বাবার জীবন যাপন পদ্ধতি এসবের মধ্যে। তবে শিশুর পরিবার ও পারিপাশ্বিকতা যাই হোক, লেখাপড়া-না-জানা কোন পরিবারের সন্তানও তো স্বশিক্ষিত একজন মানুষ হয়ে উঠতে পারেন! আর তা করতে হলে আমাদেরকে শিশুর আত্মবোধ কাজে লাগাতে হবে।

একটু আগে আমরা বলেছি যে শৈশবে শিশু তার জন্মগত পরিবেশ মেনে নেয়। এরপর যখন সে কৈশরের দিকে যাত্রা করে তখন সে সচেতন হয়ে উঠতে থাকে। সে তার চারপাশ সম্পর্কে নিজস্ব মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি কৈশর মানুষকে প্রথম আত্মবোধ শেখায়। তার এই আত্মবোধকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। তাকে জানাতে হবে, জীবন নিছক খেয়ে পরে বেঁচে থাকা নয়। ’শিক্ষা’ মানব জীবনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

আমরা আশা করি, শৈশব পেরনোর সাথে একজন কিশোর বা কিশোরী প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেছেন। অবশ্য গরীব দেশের গরীব শিশুদের জন্য কথাটা খাটে না। হয়ত পরিবারের ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে ওই শিশুকে কাজ করতে হয়। হয়ত ওর বাবা নিরুদ্দেশ, তিন চার সন্তান নিয়ে মায়ের সংসার। হয়ত ওর মা বাবা কেউ নেই। তাহলে এখন আমাদের সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে সেই বিপুলায়তন সমস্যা: জাতি ধর্ম বর্ণ ও আর্থিক অবস্থা নির্বিশেষে আমরা কিভাবে প্রতিটি শিশুর মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াব?

সমস্যার ওই বিপুলায়তনে যাবার আগে এটা বলা দরকার যে ’শিক্ষা’ বলতে আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা কী বোঝাতে চাচ্ছি। এক্ষেত্রে শিক্ষিত বলতে আমাদের দেশে কী বোঝানো হয় সে দিকে দৃষ্টি দেয় যাক। আমাদের এখানে এ ধারনা জনপ্রিয় যে, যে-মানুষ বিদ্যালয় মহাবিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ি দিয়েছেন তিনিই শিক্ষিত। অন্যভাবে বলা যায়, যে মানুষের হাতে কতগুলো পরীক্ষা পাশের সার্টিফিকেট আছে তিনি শিক্ষিত। এ আলোচনায় শিক্ষিত বলতে এরকম কিছু বোঝানো হচ্ছে না। একজন মানুষ জগতের সব শিক্ষায়তনের সব সার্টিফিকেট হাতে পেয়েও যদি তিনি অন্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠেন তবে সে-শিক্ষা অশিক্ষার শামিল। সহজ কথায়, শিক্ষা হলো নিরন্তর মনুষ্যত্বের চর্চা এবং মানবিকতার বিকাশ।

এবার মনুষত্ব্যের চর্চা বা মানবিকতার বিকাশের দিকে আমরা দৃষ্টি দিতে পারি। মনুষত্ব্যের চর্চা বা মানবিকতার বিকাশ এক প্রকারের সহিঞ্চুতা সহমর্মিতা। অন্যভাবে, এ হলো পরমতসহিঞ্চুতা এবং অন্যের প্রতি সহমর্মিতা। আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ মত বিশ্বাস ও আদর্শ নিয়ে কোন একটি সমাজ রাষ্ট্র বা সভ্যতার ভিতর বসবাস করি, একে অন্যের পাশপাশি থাকি। মানবিক জীবন যাপনের অর্থ হলো আমরা প্রত্যেকে যার যার মত বিশ্বাস বা আদর্শ অনুসারে যেন জীবন যাপন করতে পারি। আমাদের জীবন যাপন এমন হবে যেন তা অন্যের ক্ষতির কারন না হয়। হতে পারে আমার পরিচিত বা প্রতিবেশি কেউ তার খারাপ অভ্যাসের কারনে কষ্টে আছেন। আমরা তখন তাকে সাহায্য করতে পারি সুন্দর আর কার্যকরী সব পরামর্শ দিয়ে। কিন্তু আমাদের পরামর্শ গ্রহণ বা বর্জনের অধিকার তার রয়েছে। তিনি যদি আমাদের কোন ভালো পরামর্শও বর্জন করেন তবে তাকে বাধ্য করার কোন এখতিয়ার আমাদের নেই। তবে তিনি যদি অন্যের ক্ষতির কারন হন সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

অর্থাৎ, আমরা কারও উপকারে আসতে না পারলেও যেন অন্যের ক্ষতির কারন না হই। আর এই বোধটুকুর জন্য একজন মানুষের খুব বেশি স্কুলে যাওয়ার দরকার হয় না। এমনকি অনেক মানুষের ক্ষেত্রে সে দরকার একেবারে হয় না। যাইহোক, লক্ষ্য করলে দেখব এই পৃথিবীর যত লোক স্কুলে পড়েছেন তার থেকে অনেক কম লোক, প্রকৃত অর্থে, মানবিক। এছাড়া আমাদের দেশের শহরে গ্রামে স্কুলে হাসপাতালে প্রায় সর্বত্র মানবিকতাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। কেউ যদি একজন ভালো মানুষ হিসাবে জীবন যাপন করেন, যদি অন্যের ক্ষতির কারন না হন, যদি অন্যের ভালো করেন তবে আমরা সবাই তাকে ঠকাবার চেষ্টা করি। আড়ালে আবডালে কিংবা সামনা-সামনি বলি, বোকা! অর্থাৎ, এখানে মানবিক হওয়াটা খুব একটা সহজ নয়। অধিকাংশ সময় তা বেশ কঠিন। মানুষ তো কিছু শিখে পৃথিবীতে আসে না বরং এখানে এসে শিখতে শুরু করে। সে যখন দেখে তার চারপাশ অমানবিকতায় ভরা তখন সে কী করে মানবিক হবে! সে তো অমানবিকই হবে! কিন্তু আশাহীন হওয়া স্বভাব নয় মানুষের। আমরা যেন অতটা আশাহীন না হই। পরিশেষে প্রয়াত এক মনীষীর কথার সূত্র ধরে বলতে পারি, যে দেশে মানবিকতার কদর হয় না সে-দেশে মানবিকতার বিকাশও হয় না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.