নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফের গল্পগুচ্ছ

মন নামের ডাকবাক্সে বদ্ধতালা ঝুলিয়ে, একা পথে হেঁটে চলা মরুভূমির খোঁজে

অদিতি মৃণ্ময়ী

যুগ যুগান্তরে চলে এসেছি প্রথার বিপ্রতীপে, বসবাস তাই আগুনের বিপরীতে।।

অদিতি মৃণ্ময়ী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভ্রাম্যমান

২৮ শে জুলাই, ২০১৪ ভোর ৪:২২

ধরে নেই সেই চিরচেনা চোখে লেখা একটি গল্প অথবা টুকরো জীবনের অক্ষাংশে গড়া ছোট্টো একটু বাস্তবতা......ভার্সিটি জীবনের শুরুর সময়কার মহাক্রান্ত অবাস্তব স্বপ্ন দেখার গল্প এবং অবশ্যই একটি স্বল্প একেবারে কমন ভাংচুর থিওরীর গল্প......



কোচিং-এ নতুন। শুরুর দিনেই প্রেমে পরে যাই এক হ্যান্ডসাম ৬ ফুট লম্বা ভাইয়ের! আহ কি আবেগ! রাতে ঘুমতে গেলেও তাকে দেখি, খাতার পৃষ্ঠায়ও তাকেই দেখি, সিগারেটের ধোয়ায় তাকেই দেখি! প্রতিদিন ক্লাসে যাওয়া শুরু করি আমার স্ব-উচ্চারিত অতিমানবের দেখা পাবার উসিলায়। ক্লাসরুমে সবাই যখন পড়ালেখার খুনসুটি নিয়ে ব্যস্ত, আমি দেখি তার চুলের পাশে প্রজাপতি উড়ে! আমি জ্ঞান হারাই সজ্ঞানে!



কোনো এক পড়ন্ত বিকেলে আবিস্কার করলাম স্ব-উচ্চারিত অতিমানবের প্রতি আর কোনো আকর্ষণ খুঁজে পাচ্ছিনা। সব পানসে লাগে! বয়সের দোষে হাত ধরে ফেললাম ঐদিনি এক উসকোখুসকো ছেলের। আমি নিজেও বুঝে উঠিনি আমি একটা সীমাবদ্ধতায় বেঁধে পড়েছি! একা শহরে আমার সমস্ত ক্লান্তির অবসরে একটুখানি মাটি খুঁজে পাওয়ার অবকাশে তাকে ডেকেছিলাম "আমার সীমাবদ্ধ ডানা"! আমার সবটুকু নিষেধাজ্ঞা, ক্লান্তিময়তার শিকলে বেঁধে তার ডানায় উড়েছি দিকদিগন্তের পথে......সে যে কত কথা! তবু মন যে আমার পাখির ভাঙ্গা খাঁচা! একদিন স্বেচ্ছায় মুক্তি দিলাম তাকে। ছিঁড়েও যেন ছিঁড়েনা ডানা!



ক্লাসে আর মন বসেনা... দু'তিনটে দিন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম দমবন্ধকর কেটেছিলো। ঘরে বাইরে। ক্লাসে গেলেই ছুঁতো ধরে চলে আসবে একমুখে হাসি লেগে থাকা "কালপ্রিট"। এই কালপ্রিটের আমাকে নিয়েই পৃথিবীর সমস্ত সমস্যা। উনি আমাকে পড়াতে চাইতেন নাকি জেলখানায় আটকে রাখতেন, আজ এতবছর পরে এসেও আমি সন্দিহান! বহুদিন গেছে তাকে দেখে লুকিয়ে ফেলেছি নিজেকে, লুকিয়েছি হাতের তালুতেম নিষিদ্ধ কিছু......একটা সময় মনে হয়েছে উনাকে আমার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক! এতগুলো ছেলেমেয়ে, বকাটা শুধু আমার কপালে? আর তাও কেন ছোটছোট ব্যাপারে? এত অপমান! কিছুতেই হতে পারে না! না না না! চান্স পেয়েই ছাড়ব। এই কালপ্রিটের খবরদারীর উপযুক্ত জবাব দিতে হলেও......



এক বন্ধুর হাতে কবিতার প্লট দেখা শুরু করেছি সবে...... তার কথা, হাসি, হাঁটাচলা, চুল, ঠোঁট, চোখ নিয়ে লিখে ফেলতে পারতাম অযুতখানেক কাব্য...... কারণে অথবা একেবারে অকারণে...... কালপ্রিটের জেলখানায় একমাত্র শান্তির ঘুম ছিল কবিতার প্লটকে ঘিরে। কত আবছায়া দিন! আহ মেমোরিজ!



আমার ভ্রাম্যমান মন নিয়ে আমি তখন হাওয়ায় উড়ছি। মন ওরে আমার সাথে। সে ফিরে যায় এর ওর কাছে, ফিরে আসে আমার ঘরে। এদিকে কালপ্রিটকে এতটা বিরক্ত লাগা শুরু করেছিলো যে সারাদিন ফেসবুকে বসে খুঁজতে চাইতাম তার খুঁত। বন্ধুদের আড্ডায় হাসাহাসি করতাম তার গোলকধাঁধায় আটকা পড়া ফেসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে। রেগে ফেলতাম তার বদঅভ্যাসে। ক্যারিকেচার করে বিরক্ত কমিকে কাঁদিয়ে ফেলতাম তাকে...একসময়ে এমন অবস্থা-রাস্তাঘাটেও তারমত টি-শার্ট পড়া, চুলকাটা কাউকে দেখলেই ভাবি- এই বুঝি কালপ্রিট! এইরে! এবার কি হবে!



কোনো এক রোদঝড়া দুপুরে আবিস্কার করেছিলাম-কালপ্রিটের হাসিটা এতটাও খারাপ না। বিড়াল অবশ্য এরচেয়ে বাজে হাসত, যদি হাসতে পারত! আমার ভ্রাম্যমান মন আটকে যেতে চাইলোতীব্র বাতাসে। আমি বিধ্বস্তের মত ভাবতে বসলাম-শেষ পর্যন্ত উনাকে...!!!



ইমফ্যাচুয়েশন! বয়সের দোষ! কেটে যাবে! কতবার যে বুঝিয়েছি নিজেকে! উহু... মন নারাজ। হারিয়েছে তার উড়ার ক্ষমতা। আর আমি জর্জরিত বাতাসের আওয়াজে! যেন কালো ক্যানভাসে আঁকা কোনো ছবিতে।



ফার্স্ট ইয়ারের তৃতীয় ক্লাস... এই ক্যাম্পাসেই। যেখানে আমার মন আটকে আছে... একটা কালপ্রিটের হাসিতে আমার ভ্রাম্যমান মন জড়ো হয়ে জমে গেছে!



ক্লাস শেষে সবাই যখন গল্পের ঘোরে মগ্ন, আমি তখন অবচেতন আমার আটকে থাকা মন নিয়ে! আনমনে হেঁটে পার করছিলাম এলোপাথাড়ি রাস্তাটুকু... চোখ আটকালো রাস্তার ওপারে বসে সিগারেটের ধোঁয়ায় কালপ্রিটের দিকে... মুহূর্তেই দৃষ্টিভ্রমের কল্পনা! না না... সে আছে এখানেই! এগিয়ে যেয়ে ভয়ে ভয়ে বললাম, "ভাইয়া একটা কথা ছিল। বলি?"



কালপ্রিটের হা হা ধাঁচের সজারু হাসির দিকে তাকিয়ে আমি আর কিছুই বলতে পারি নি... শুধু মনে আছে একটা হাত আমার হাত চেপে ধরেছিল... যে ছিল জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহূর্তগুলোর একটি! এরপর কি হল?......এসব নাহয় পরেই বলব। যার শুরু আছে তার শেষ তো হবেই!

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ ভোর ৪:৫৩

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: এমনই হয়! সব বয়সের দোষ :)

২৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:১৬

অদিতি মৃণ্ময়ী বলেছেন: পি

২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ ভোর ৪:৫৭

রাজিব বলেছেন: আসলেই বয়সের দোষ। তারপর সব কেটে গেলে নিজেকে বোকা মনে হয় আর সব দোষ ঐ পক্ষের বলে মনে হয়। তবে যারা নিজেদের দোষ গুলো ধরতে পেরে বদলাতে পারে তারা জীবনে অনেক সুখী হবে এমন সম্ভাবনা থাকে। সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:০৬

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
প্রজাপতি মন!

২৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:২৪

অদিতি মৃণ্ময়ী বলেছেন: -_-

৪| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:১১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: দারুন লিখেছেন।

৫| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:১৫

অদিতি মৃণ্ময়ী বলেছেন: ধন্যবাদ :-)

৬| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৯

অদিতি মৃণ্ময়ী বলেছেন: :)

৭| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৪

পার্থ তালুকদার বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

৮| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৬

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: এতগুলো ছেলেমেয়ে, বকাটা শুধু আমার কপালে? আর তাও কেন ছোটছোট ব্যাপারে? এত অপমান! [/sb

এটা একধরনের ট্রিক্স। কাউকে দূর্বল করার এই ব্যপারটা প্রত্যক্ষভাবে দেখেছি; মনে হয় আপ্নিও। এমন চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন :-P :-P :-P

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৩৬

অদিতি মৃণ্ময়ী বলেছেন: :)

৯| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:০৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বয়েসি গল্প!

২৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:২৩

অদিতি মৃণ্ময়ী বলেছেন: আমার বয়সী একটি মেয়ের মনের অবস্থা চিন্তা করেই লেখা। হয়ত আর দশ বছর পর লিখলে এতটা গুছিয়ে লিখতে পারতাম না!

১০| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৪২

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: :P :P :P

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৩৭

অদিতি মৃণ্ময়ী বলেছেন: :পি

১১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:২৪

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: golpo ta valo

১২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:২৪

বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: golpo ta valo

১৩| ২৮ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৩১

মামুন রশিদ বলেছেন: বাহ, উড়ু দিনের গল্প ।

১৪| ৩০ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: গল্প? বটে।
অল্প। ঘটে
স্বল্প , রটে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.