নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সবাইকে একদিন এই মায়া ছেড়ে হতে হবে অদৃশ্য।স্বাগতম অদৃশ্যের এই রহস্যময় ব্লগে্।জাতিকে লেখনীর মাধ্যমে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার এই ব্লগ।
পহেলা বৈশাখটা ঘুমিয়ে কাটালাম৷ অন্য দিনের
চেয়ে এই দিনটাতে ভাল ঘুম হলো৷ মেসে দুপুরের
খাবার শেষ৷ এখন সময় বিকাল
৪টা বেজে ১২মিনিট৷ খিদেই পেট চো চো করছে৷
অবশ্য দোষটা আমার৷ মেস ম্যানেজারকে আমিই
মিল অফ করতে বলেছিলাম৷ ইচ্ছা ছিল রাত ১১টায়
উঠবো৷ কিন্তু মশারা যে আকার প্রকারে কানের
কাছে এই দিনটার গুনগান শুরু করছে তাতে আর ঘুম
হলো না৷ পেটে কিছু যোগান দিতেই
বেরিয়ে পড়লাম৷ উদ্দেশ্য খালার বাসা.....
বাদল আমাকে দেখে 'হিমু ভাই, হিমু ভাই'
করতে করতে এগিয়ে আসল৷ সবাই ব্যাস্ত৷ খালার
হাব-ভাবে বুঝলাম সবাই কোথাও বের হচ্ছে৷
একজন আমার দিকে কেমন রুক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে৷
বাদলের ফুফাতো বোন৷ নাম নাঈমা৷ এসব তথ্য
আমি বাড়ি ঢুকার সাথে সাথেই বাদলের কাছ
থেকে পেয়েছি৷ তাকে দেখে মনে হচ্ছিল যে,
সে আমার দিকে যেমন রুক্ষভাব
নিয়ে তাকিয়ে আছে তা আমার বর্তমান
চেহারা অপেক্ষাও রুক্ষ৷ আমি হয়তো অবাস্তব
কোন কিছু৷
খালা ব্যাস্ত৷ যে কোন কাজে মেয়েরা যত
ব্যাস্ততা দেখায় তা অন্য কোন
প্রানী দেখাতে অক্ষম৷ তবে তারাই পিছে৷ এত
ব্যস্ততার মাঝে আমি খাওয়ার
কথা বলতে বিব্রতবোধ করছিলাম৷
খালা ব্যাস্ততার মাঝে আমার দিকে নজর দিলেন৷
-গোসল-টোসল করে রেডি হয়ে নে৷ আমাদের
সাথে বাইরে যাবি৷
-গোসল করতেছি৷ তবে তোমাদের
সাথে যেতে পারব না৷ আমার কাজ আছে৷
আমার কথা শুনে বাদলও যাবে না বলে হাত-
পা সবগুলো উপর দিকে দিয়ে নাচতে শুরু করলো৷
খালার ক্লিয়ার কাট কথা, "তোরা না যাস থাক,
আমি তোর খালু আর নাঈমাকে নিয়ে যাব"৷
নাঈমা মেয়েটা যেন এখন একটু সস্তিতে৷
-খালা, গোসল করব৷ বাথরুমে কে ঢুকেছে?
-তোর খালু ফ্রেশ হচ্ছে, তুই বাদলের বাথরুমে যা৷
বাথরুমে গেলাম৷ বাথট্যাবে ঠান্ডা পানি রাখা ছিল৷
পানি নিয়ে খেলতে শুরু করলাম৷ দিন
শেষে গোসলের মজাই আলাদা৷ গায়ে সাবান
মাখালাম৷ সুন্দর এক বোতলে শ্যাম্পু দেখালাম৷
"নাম নয়, ফলেই পরিচয়" কথাটির সত্যতা যাচাই
করতেই এর পরিচয় না জেনেই মাখতে শুরু করেছি৷
ফল পেতে শুরু করলাম৷ মাথা ঠান্ডা হয়ে আসছিল ৷
চোখ বন্ধ করে বসে ছিলাম৷ দেখি, শেষ পর্যন্ত
কি হয় (!!!)
হঠাৎ খালার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম৷
একটা তোয়ালে পরে ঝটপট এগিয়ে গেলাম৷
নাঈমা আমার দিকে কেমন দৃষ্টিতে তাকাচ্ছিল৷
পুরুষ মানুষের লজ্জা থাকতে নেই, তাই পাচ্ছিলাম
না৷ খালা কান্না করতে করতে বলল, তোর খালু
আরও একঘন্টা আগে বাথরুমে ঢুকছে৷ এখনও বের
হচ্ছে না৷
বাদল কেমন একটা বিদ্রোহী ভাব নিয়ে ওর মায়ের
দিকে তাকিয়ে থাকলো৷ বলতে শুরু করল৷
-তোমার জন্যই বাবার এমন অবস্থা৷
এবার আমার দিকে ফিরে টলমল চোখে বলতে শুরু
করল৷
-জানো হিমু ভাই, এক সপ্তাহ হলো বাবার
চাকরিটা চলে গেছে৷ কি এক দুর্নীতির
কারনে বাবা ফেসে গেছে৷ আর করবেই বা না কেন?
মায়ের এত আবদার পুরন করতে হলেতো একটু
আধটু এরকম হবেই৷ তারপর
থেকে মা বাবাকে উঠতে বসতে বকে৷
বেচারা হয়তো সেই জন্যই বাথরুমে ঢুকে হার্ট
এটাক হইছে৷
আমি বুঝলাম৷ এই জগতে সবাই নির্যাতিত৷
নারীরা ঘরের বাইরে আর পুরুষরা ঘরের ভেতরে৷
খালা চেচিয়ে উঠে বাদলকে বলে উঠল, এইসব
ফালতু কথা রাখ৷ তোর বাবাকে বের করার
চেষ্টা কর৷
-হিমু ভাই, কিছু একটা করো৷
-চাইনিজ কুড়াল আছে?
-না নাই৷ কুড়াল দিয়ে কি করবা?
-তালা ভাঙব৷ আর তুই 'কারার ওই লৌহ কপাট'
গানটা ধর৷ এই সময় বিদ্রোহী একটা গান
ভালো পরিবেশ সৃষ্টি করবে৷
আমার সবকিছুতেই যেন নাঈমা হচকিয়ে যাচ্ছিল৷
বাদল গান গাইতে গাইতে চাইনিজ কুড়ালের
পরিবর্তে কিচেন থেকে বটি নিয়ে আসল৷
বাথরুমের দরজা ভাঙ্গার সাথে সাথে সবাই
লজ্জায় লাল হয়ে গেল৷ শুধু লজ্জা নাই আমার
শ্রদ্ধেয় খালুর৷ উনি কমোডের উপর
ন্যাংটা অবস্থায় বসে একধ্যানে উপরের
দিকে তাকিয়ে ছিল৷ খালা আরও কান্না শুরু করল৷
আমরা তাকে ধরাধরি করে বিছানায়
নিয়ে শুইয়ে দিলাম৷ ভাগ্যিস তিনি কমোডের উপর
বসে ছিল৷ এবং বসেই ছিল৷ তিনি তখনও কি এক
গবেষনায় ব্যাস্ত৷ আমি কাছে যেতেই তিনি আমার
হাতটি ধরে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল৷
-আচ্ছা হিমু, রাতে আমাকে তোর
সাথে হাটতে নিবি?
খালুর কথায় আমার চমকে ওঠা উচিত ছিল৷
আমি চমকালাম না৷
-খালু, এই হিমু জীবনের জন্য দরকার পুর্ন
স্বাধীনতা৷ পারিবারিক মায়া মমতা কিচ্ছু
থাকতে নেই৷ যা আপনি অনেক আগেই হারিয়েছেন৷
-আমি এই সব কিছু ছেড়ে দিয়ে তোর
সাথে হাটতে বের হবো৷
-সেটা এখন আর সম্ভব না৷ তবে কিছুদিন
হেটে দেখতে পারেন৷
-চল তাহলে বেরিয়ে পড়ি।
-আজ না৷ অন্য দিন৷ হাটার জন্য যে চিন্তামুক্ত
মন দরকার তা আজ আপনার নেই৷
আপনি দুশ্চিন্তায় আছেন৷
অবশেষে খাওয়া-দাওয়া করলাম৷
রাত ৮টা বেজে ৪৫মিনিট৷ খালার মন খুব খারাপ৷
এই সুন্দর দিনটা তার উপভোগ করা হলো না৷
নাঈমার মন ভালো না খারাপ বোঝা যাচ্ছে না৷
আসার সময় ওর মুখের
দিকে তাকিয়ে একটা রোমান্টিকতা সৃষ্টি করতে
গেলাম৷ হলো না৷ আসলে বিধাতা সবাইকে এই
কঠিন কাজটা করার যোগ্যতা দেন নি৷
আজ জোছনা থাকা সত্তেও প্রকৃতিতে কেমন এক
বিষাক্ত বাতাস বইছে৷ রাত গভীর হচ্ছে৷
আমি হাটছি.....(!!!)
কিছু কথাঃ
হিমু নিয়ে এটি আমার প্রথম লেখা৷
কিছু চরিত্র হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস
থেকে নেওয়া হলেও এই 'হিমু' হুমায়ুন আহমেদের
হিমু না৷ এই 'হিমু' এক অন্য হিমু৷
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০
ডার্ক ম্যান বলেছেন: পুরোটা তো মিল।
৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:১৩
অদৃশ্য পথিক ০০৭ বলেছেন: হুম,আমার ঈ লেখা
৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:১৩
অদৃশ্য পথিক ০০৭ বলেছেন: হুম,আমার ই লেখা
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:২১
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: প্রজন্মে শেয়ার করেছেন বুঝি