নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বাগতম অদৃশ্যের এই ব্লগে।।আসবেন , দেখবেন , ঘুরবেন ,বুঝবেন - হারিয়ে যাবেন এই তো দুনিয়ার খেলা। আমি শুধু রুপক মাত্র ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭

সবাইকে একদিন এই মায়া ছেড়ে হতে হবে অদৃশ্য।স্বাগতম অদৃশ্যের এই রহস্যময় ব্লগে্‌।জাতিকে লেখনীর মাধ্যমে সঠিক পথ দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস আমার এই ব্লগ।

অদৃশ্য পথিক ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ বৈশাখ (হিমু সিরিজ)

২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:১৯

পহেলা বৈশাখটা ঘুমিয়ে কাটালাম৷ অন্য দিনের

চেয়ে এই দিনটাতে ভাল ঘুম হলো৷ মেসে দুপুরের

খাবার শেষ৷ এখন সময় বিকাল

৪টা বেজে ১২মিনিট৷ খিদেই পেট চো চো করছে৷

অবশ্য দোষটা আমার৷ মেস ম্যানেজারকে আমিই

মিল অফ করতে বলেছিলাম৷ ইচ্ছা ছিল রাত ১১টায়

উঠবো৷ কিন্তু মশারা যে আকার প্রকারে কানের

কাছে এই দিনটার গুনগান শুরু করছে তাতে আর ঘুম

হলো না৷ পেটে কিছু যোগান দিতেই

বেরিয়ে পড়লাম৷ উদ্দেশ্য খালার বাসা.....

বাদল আমাকে দেখে 'হিমু ভাই, হিমু ভাই'

করতে করতে এগিয়ে আসল৷ সবাই ব্যাস্ত৷ খালার

হাব-ভাবে বুঝলাম সবাই কোথাও বের হচ্ছে৷

একজন আমার দিকে কেমন রুক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে৷

বাদলের ফুফাতো বোন৷ নাম নাঈমা৷ এসব তথ্য

আমি বাড়ি ঢুকার সাথে সাথেই বাদলের কাছ

থেকে পেয়েছি৷ তাকে দেখে মনে হচ্ছিল যে,

সে আমার দিকে যেমন রুক্ষভাব

নিয়ে তাকিয়ে আছে তা আমার বর্তমান

চেহারা অপেক্ষাও রুক্ষ৷ আমি হয়তো অবাস্তব

কোন কিছু৷

খালা ব্যাস্ত৷ যে কোন কাজে মেয়েরা যত

ব্যাস্ততা দেখায় তা অন্য কোন

প্রানী দেখাতে অক্ষম৷ তবে তারাই পিছে৷ এত

ব্যস্ততার মাঝে আমি খাওয়ার

কথা বলতে বিব্রতবোধ করছিলাম৷

খালা ব্যাস্ততার মাঝে আমার দিকে নজর দিলেন৷

-গোসল-টোসল করে রেডি হয়ে নে৷ আমাদের

সাথে বাইরে যাবি৷

-গোসল করতেছি৷ তবে তোমাদের

সাথে যেতে পারব না৷ আমার কাজ আছে৷

আমার কথা শুনে বাদলও যাবে না বলে হাত-

পা সবগুলো উপর দিকে দিয়ে নাচতে শুরু করলো৷

খালার ক্লিয়ার কাট কথা, "তোরা না যাস থাক,

আমি তোর খালু আর নাঈমাকে নিয়ে যাব"৷

নাঈমা মেয়েটা যেন এখন একটু সস্তিতে৷

-খালা, গোসল করব৷ বাথরুমে কে ঢুকেছে?

-তোর খালু ফ্রেশ হচ্ছে, তুই বাদলের বাথরুমে যা৷

বাথরুমে গেলাম৷ বাথট্যাবে ঠান্ডা পানি রাখা ছিল৷

পানি নিয়ে খেলতে শুরু করলাম৷ দিন

শেষে গোসলের মজাই আলাদা৷ গায়ে সাবান

মাখালাম৷ সুন্দর এক বোতলে শ্যাম্পু দেখালাম৷

"নাম নয়, ফলেই পরিচয়" কথাটির সত্যতা যাচাই

করতেই এর পরিচয় না জেনেই মাখতে শুরু করেছি৷

ফল পেতে শুরু করলাম৷ মাথা ঠান্ডা হয়ে আসছিল ৷

চোখ বন্ধ করে বসে ছিলাম৷ দেখি, শেষ পর্যন্ত

কি হয় (!!!)

হঠাৎ খালার কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলাম৷

একটা তোয়ালে পরে ঝটপট এগিয়ে গেলাম৷

নাঈমা আমার দিকে কেমন দৃষ্টিতে তাকাচ্ছিল৷

পুরুষ মানুষের লজ্জা থাকতে নেই, তাই পাচ্ছিলাম

না৷ খালা কান্না করতে করতে বলল, তোর খালু

আরও একঘন্টা আগে বাথরুমে ঢুকছে৷ এখনও বের

হচ্ছে না৷

বাদল কেমন একটা বিদ্রোহী ভাব নিয়ে ওর মায়ের

দিকে তাকিয়ে থাকলো৷ বলতে শুরু করল৷

-তোমার জন্যই বাবার এমন অবস্থা৷

এবার আমার দিকে ফিরে টলমল চোখে বলতে শুরু

করল৷

-জানো হিমু ভাই, এক সপ্তাহ হলো বাবার

চাকরিটা চলে গেছে৷ কি এক দুর্নীতির

কারনে বাবা ফেসে গেছে৷ আর করবেই বা না কেন?

মায়ের এত আবদার পুরন করতে হলেতো একটু

আধটু এরকম হবেই৷ তারপর

থেকে মা বাবাকে উঠতে বসতে বকে৷

বেচারা হয়তো সেই জন্যই বাথরুমে ঢুকে হার্ট

এটাক হইছে৷

আমি বুঝলাম৷ এই জগতে সবাই নির্যাতিত৷

নারীরা ঘরের বাইরে আর পুরুষরা ঘরের ভেতরে৷

খালা চেচিয়ে উঠে বাদলকে বলে উঠল, এইসব

ফালতু কথা রাখ৷ তোর বাবাকে বের করার

চেষ্টা কর৷

-হিমু ভাই, কিছু একটা করো৷

-চাইনিজ কুড়াল আছে?

-না নাই৷ কুড়াল দিয়ে কি করবা?

-তালা ভাঙব৷ আর তুই 'কারার ওই লৌহ কপাট'

গানটা ধর৷ এই সময় বিদ্রোহী একটা গান

ভালো পরিবেশ সৃষ্টি করবে৷

আমার সবকিছুতেই যেন নাঈমা হচকিয়ে যাচ্ছিল৷

বাদল গান গাইতে গাইতে চাইনিজ কুড়ালের

পরিবর্তে কিচেন থেকে বটি নিয়ে আসল৷

বাথরুমের দরজা ভাঙ্গার সাথে সাথে সবাই

লজ্জায় লাল হয়ে গেল৷ শুধু লজ্জা নাই আমার

শ্রদ্ধেয় খালুর৷ উনি কমোডের উপর

ন্যাংটা অবস্থায় বসে একধ্যানে উপরের

দিকে তাকিয়ে ছিল৷ খালা আরও কান্না শুরু করল৷

আমরা তাকে ধরাধরি করে বিছানায়

নিয়ে শুইয়ে দিলাম৷ ভাগ্যিস তিনি কমোডের উপর

বসে ছিল৷ এবং বসেই ছিল৷ তিনি তখনও কি এক

গবেষনায় ব্যাস্ত৷ আমি কাছে যেতেই তিনি আমার

হাতটি ধরে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল৷

-আচ্ছা হিমু, রাতে আমাকে তোর

সাথে হাটতে নিবি?

খালুর কথায় আমার চমকে ওঠা উচিত ছিল৷

আমি চমকালাম না৷

-খালু, এই হিমু জীবনের জন্য দরকার পুর্ন

স্বাধীনতা৷ পারিবারিক মায়া মমতা কিচ্ছু

থাকতে নেই৷ যা আপনি অনেক আগেই হারিয়েছেন৷

-আমি এই সব কিছু ছেড়ে দিয়ে তোর

সাথে হাটতে বের হবো৷

-সেটা এখন আর সম্ভব না৷ তবে কিছুদিন

হেটে দেখতে পারেন৷

-চল তাহলে বেরিয়ে পড়ি।

-আজ না৷ অন্য দিন৷ হাটার জন্য যে চিন্তামুক্ত

মন দরকার তা আজ আপনার নেই৷

আপনি দুশ্চিন্তায় আছেন৷

অবশেষে খাওয়া-দাওয়া করলাম৷

রাত ৮টা বেজে ৪৫মিনিট৷ খালার মন খুব খারাপ৷

এই সুন্দর দিনটা তার উপভোগ করা হলো না৷

নাঈমার মন ভালো না খারাপ বোঝা যাচ্ছে না৷

আসার সময় ওর মুখের

দিকে তাকিয়ে একটা রোমান্টিকতা সৃষ্টি করতে

গেলাম৷ হলো না৷ আসলে বিধাতা সবাইকে এই

কঠিন কাজটা করার যোগ্যতা দেন নি৷

আজ জোছনা থাকা সত্তেও প্রকৃতিতে কেমন এক

বিষাক্ত বাতাস বইছে৷ রাত গভীর হচ্ছে৷

আমি হাটছি.....(!!!)

কিছু কথাঃ

হিমু নিয়ে এটি আমার প্রথম লেখা৷

কিছু চরিত্র হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাস

থেকে নেওয়া হলেও এই 'হিমু' হুমায়ুন আহমেদের

হিমু না৷ এই 'হিমু' এক অন্য হিমু৷

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:২১

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: প্রজন্মে শেয়ার করেছেন বুঝি

২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩০

ডার্ক ম্যান বলেছেন: পুরোটা তো মিল।

৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:১৩

অদৃশ্য পথিক ০০৭ বলেছেন: হুম,আমার ঈ লেখা

৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:১৩

অদৃশ্য পথিক ০০৭ বলেছেন: হুম,আমার ই লেখা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.