![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ক্লাস থ্রিতে পড়ি তখন। সরাসরি টু থেকে পড়াশোনা শুরু করায় দেখতে ক্লাসের তুলনায় অনেক ছোট্ট ছিলাম। গল্পের নেশাটা ধরিয়ে দিয়েছিলেন বাবা । কারেন্ট চলে গেলে যখন বাবার মুখে অসাধারন সব গল্প শুনতাম তখন আমার মুগ্ধ চোখ দুটো অন্ধকারেও যেন চক চক করত। একটা ফুরালেই লোভীর মত আরেকটা শোনার বায়না করতাম। ধীরে ধীরে গল্পেরা পুরনো হয়ে গেল... একই গল্প ঘুরে ফিরে বারবার আসা শুরু করল। কিন্তু আমার তো তাতে মন ভরে না। কান জুড়ায় কেবল। বাবা তো তার এই পুচকে মেয়েকে নিয়ে ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলেন। শেষমেশ ভেবে চিন্তে একটা উপায় বের করে ফেললেন।
একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে আমার জন্য রঙ্গিন ছবির একটা গল্পের বই নিয়ে এলেন বাবা। মোড়ক খুলে বইটা দেখে খুশিতে আমি আত্মহারা। আমার ছোট্ট হৃদয়টায় এতোগুলো আনন্দ কোথায় রাখব ভেবে পেলাম না। কি করি আজ ভেবে না পাই অবস্থা। সেই থেকে আমার গল্পের বই পড়ার আনুষ্ঠানিক সূচনা। একটা বই পড়তে পড়তে মুখস্ত করে ফেলছি দেখে বাবা আরও বই এনে দিলেন। তবু যেন দিন দিন লোভী হয়ে উঠছিলাম। নতুন বই দেখলেই পড়ে ফেলতে ইচ্ছে হয়।
এমন সময় একদিন মায়ের সঙ্গে এক বাসায় গেলাম। সেই বাসার বড় ছেলে মেরিনে পড়ে। ছুটিতে বাসায় এসেছে। তার বইয়ের টেবিলের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে করতে চোখ আটকে গেলো একটা বইয়ের দিকে। ''ব্যাগ ভর্তি ভূত''। নামটা দেখেই কৌতূহলে ভেতরটা ফেটে যাচ্ছিলো আমার। বইটা ওই বড় ছেলের ছোট বেলার যত্ন করে রাখা বই। আমি বুঝলাম এখন পড়তে শুরু করলেও শেষ করতে পারব না। বেশ মোটাসোটা বই। নিয়ে যাওয়ার চিন্তাটা তখন অপরাধ মনে হয়নি। মা তো এই বাসায় প্রায়ই আসে। এক ফাকে এসে রেখে গেলেই হবে। স্কুল থেকে ফেরার পথে ওই বাসায় যাওয়ায় যেন আরও সুবিধা হল। চট করে বইটা ব্যাগে ঢুকিয়ে পাংশু মুখে মায়ের কাছে গিয়ে বসে রইলাম। চিন্তা হচ্ছিল আবার মা কবে আসে।
বাসায় ফিরে টান টান উত্তেজনা নিয়ে বইটা পড়ে শেষ করলাম ঠিকই কিন্তু মায়ের চোখ ফাকি দিতে পারিনি। পরদিন আমাকে সহ মা বইটা ফেরত দিতে নিয়ে গেলেন। সেই ভাইয়ার হাতে বইটা তুলে দিতে গিয়ে অপমানে, অনুশোচনায় চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি গড়িয়ে পড়ল।
কিচ্ছুক্ষন পর নিজেকে আবিষ্কার করলাম সেই ভাইয়ার কোলে। তার সেদিনের কথাগুলো আমার কষ্টগুলো একদম হাওয়ায় উড়িয়ে দিল। ''কাঁদছ কেন বোকা মেয়ে। তুমিতো এটা পড়তে নিয়েছিলে তাইনা? এখন যদি আমি এটা তোমাকে দিয়ে দেই তাহলে কেমন হয়? এই বইটা এখন থেকে তোমার।'' হেসে আলতো করে একটু আদর করে দিলেন। বিনিময়ে মিষ্টি একটা হাসি উপহার দিয়ে বাসায় ফিরে এলাম । এর থেকে বেশি আর কিইবা দিতে পারতাম...
২| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২
আফরীন সুমু বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫২
আফরীন সুমু বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৫৮
গর্বিত মুসলিম বলেছেন: সুন্দর হয়েছে