![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am a man with too many dreams; I know all of them could not come to the light but my process are continuous.
গত ১৩, ১৪ ও ১৫ জুলাই ২০১২ তারিখে বাংলাদেশ পুলিশে এস আই ( উপ-পরিদর্শক) পদে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠানের প্রায় সাড়ে চার মাস পর একই বছরের ২রা ডিসেম্বর এর ফল প্রকাশ করা হয় । উল্লেখ্য লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ণ করা হয় সাধারণ ও মুক্তিযুদ্ধা কোঠার আলোকে পৃথক পৃথকভাবে । লিখিত পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ণ শেষে প্রাপ্ত ফলাফলে সারা দেশ থেকে প্রায় চার হাজার চাকরি প্রার্থী পরবর্তী মৌখিক পরীক্ষার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হন । নিয়োগ পরীক্ষায় ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি ফণীভূষণ চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত ভাইবা বোর্ডের মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহন করা হয় চলতি বছরের পুরু জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাস জুড়ে । কিন্তু মৌখিক পরীক্ষা সমাপ্তির পাঁচ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় চাকরি প্রার্থীদের মাঝে হতাশা লক্ষ্য করা যাচ্ছে ।
অনেক প্রার্থীর সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে তাদের মাঝে হতাশা ও আশংকা পরিলক্ষিত হয় । তারা প্রত্যেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার এই দীর্ঘ সূত্রিতা নিয়ে সকারের সমালোচনার পাশাপাশি বিরক্তি প্রকাশ করেন ।
ব্রাহ্মণ বাড়িয়া থেকে এক চাকরি প্রার্থী জানান, একেত দেশে চাকরির আকাল তার উপরে এক নিয়োগের ফল প্রকাশে যদি বছেররও অধিক সময় লাগে তাহলে প্রশিক্ষণই বা শুরু হবে কখন আর শেষ হবে কখন নিয়োগই বা সম্পন্ন হবে কখন ? তিনি এ ব্যপারে তার হতাশা ব্যক্ত করেন । অন্যদিকে একাধিক চাকরি প্রার্থী ভাইবার পূর্বে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এন এস আইর লোকজন কর্তৃক প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচিতি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাদের বাড়িতে তদন্ত কার্য পরিচালনা কথা বলেন আবার ভাইবা শেষে পুলিশের জেলা গোয়েন্দা শাখা কর্তৃক একই ধরনের তদন্তের অভিযোগ আনেন । এতে করে তারা নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা নয় বরং রাজনৈতিক পরিচিতিকে মূল্যায়নের আশংকা ব্যক্ত করেছেন । চট্টগ্রামের এক চাকরি প্রার্থী বলেন; শুনেছি পুলিশের এই পদে প্রায় তের’শর মত লোক নিয়োগ দেয়া হবে কিন্তু এ পরিমান নিয়োগের বিপরীতে প্রায় বাইশ’শ সুপারিশ নাকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে তাই মন্ত্রণালয় কাকে রেখে কাকে বাদ দিবে এই চিন্তায় ধীরে চল নীতি অবলম্বন করেছে । তার অভিযোগের সত্যতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান ভাইবা পরীক্ষার সময় তার জেলার অনেক প্রার্থীর কাছে স্থনীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশ সংক্রান্ত ডিও লেটার তিনি প্রত্যক্ষ্য করেছেন । অনেকের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলে তার বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে । সুনামগঞ্জের এক প্রার্থী জানান; বর্তমান সরকার তার নির্বাচনী ইশতেহারে ঘরে ঘরে চাকরী দেয়ার অঙ্গীকার করেছিল কিন্তু পুলিশে এ নিয়োগ প্রক্রিয়ার দীর্ঘ সূত্রিতা আমরা যারা চাকরি প্রত্যাশী তাদের কাছে তার সে অঙ্গিকারকে ম্লান করে দিয়েছে । সরকারকে বুঝতে হবে চাকরিটা আমাদের খুবি প্রয়োজন তিনি আরো যোগ করেন । এ নিয়ে তাদের সবার মাঝে হতাশা সত্ত্বেও তারা প্রত্যকেই সরকারের কাছে কাল বিলম্ব না করে পুলিশের এই নিয়োগটিতে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে দ্রুত ফল প্রকাশের দাবী জানান ।
বিশ্ব যেখানে কল্পনাতীত গতিতে সামনে অগ্রসরমান সেখানে বাংলাদেশের মত দরিদ্র ও বেকারত্বের চাপে জর্জরিত একটি দেশের সরকারী চাকরিতে নিয়োগের এই দীর্ঘসূত্রীতা কোন অবস্থাতেই কাম্য হতে পারেনা । এমনিতেই দেশে জনসংখ্যার তুলনায় পুলিশের সংখ্যা অপ্রতুল তার উপরে একটি নিয়োগেই যদি বছর পার হয়ে যায় তাহলে সময় ও বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা রক্ষায় কাংখিত লক্ষ্য অর্জন কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয় । একেত সরকারী চাকরীতে নিয়োগে দূর্নীতি ও রাজনৈতিক প্রাধান্য, বেতন রেশনের অপ্রতুলতা থেকে সৃষ্ট অনাগ্রহ তার উপরে নিয়োগের এই দীর্ঘ সূত্রীতার কারনে অনেক প্রার্থী অপেক্ষা না করে অন্যকোন চাকরিতে যোগ দিয়ে দেন কিন্তু পরবর্তীতে তিনি বিবেচিত হলেও উক্ত চাকরিতে আর যোগদান করেন না ফলে তার আসনটি খালি পড়ে থাকে যা বেকারত্ব হ্রাসে মোটেই সহায়ক নয় । আধুনিক সরকার ব্যবস্থা হচ্ছে কল্যান মূলক সরকার ব্যবস্থা যেখানে জনগণের সেবাকে সর্বোচ্ছ গুরুত্ব দেয়া হয় এখানে যতটা সম্ভব দ্রুততার সাথে সেবাকে জনগণের কাছে পৌছানো সরকারের দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়, বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান করাটাও এর গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ । সরকারের উচিত পুলিশসহ যাবতীয় সরকারী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখার পাশাপাশি দীর্ঘ সূত্রীতা হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা ।
©somewhere in net ltd.