নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নমস্কার পাঠক, সামহোয়্যারের এই ব্লগে ঐশিকা আপনাকে স্বাগত জানায়। জীবনের নানা হাসি-কান্না, দুঃখ-বেদনার ইতিহাসে লেগে থাকে কতই না কাহিনী। সেসব কিছু নিয়েই আমার এই ব্লগ। সত্য-কল্পনার মিশেলে কিছু গল্পের ব্লগ। যদি পাঠকের ভাল লাগে। নিজেকে সার্থক বলে মনে করব।

ঐশিকা বসু

নমস্কার পাঠক, সামহোয়্যার ব্লগে ঐশিকা বসু আপনাকে স্বাগত জানায়। জীবনের নানা হাসি-কান্না, দুঃখ-বেদনার ইতিহাসে লেগে থাকে কতই না কাহিনী। সেসব কিছু নিয়েই আমার এই ব্লগ। সত্য-কল্পনার মিশেলে কিছু গল্পের ব্লগ। যদি পাঠকের ভাল লাগে। নিজেকে সার্থক বলে মনে করব। অনেক গল্পসল্প লিখুন, আর পড়ুন। বাংলা সাহিত্যকে টিকিয়ে রাখতে দেশ-কাল নির্বিচারে সকলেরই সাহায্য প্রয়োজন। তাই আমি এক ভারতীয় হয়েও আপনাদের সঙ্গী হতে হাত মেলালাম। আশা করি আপনাদের প্রত্যুত্তরও হবে ইতিবাচক। ধন্যবাদ।

ঐশিকা বসু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোভিডের অভিজ্ঞতা

০৮ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:৪০

মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা আমার হয়নি, তবে তাকে দূর অতিথির মত অনুভবে পেতে পেরেছি। গত কুড়িদিন যাবৎ যেভাবে কোভিড আমাদের আচ্ছন্ন করে রেখেছিল, আমার জীবনে কোনো রোগ এতোদিন ধরে এভাবে আমার শরীরকে দূর্বল করে রাখেনি। টানা চার-পাঁচদিন যে ভয়াবহ দূর্বলতা ছিল, তাতে মনে হচ্ছিল আমি যেন নিজেকে নিজে হারিয়ে ফেলছি। শরীরে শক্তি ছিল না, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছিল, কোন কাজ করা দূরস্থ, কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করাও আমার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। শুধুমাত্র বাড়িতে শুয়ে থাকা ছাড়া আর কোন কাজই ভালো লাগছিল না।

গত ১৭ই মে, ২০২১ থেকে আমাদের জ্বর। প্রথমে জ্বর এলো আমার মায়ের, তারপর একে একে বাড়ির সকলের। আর জ্বরের সাথে গায়ের ব্যথা, আর প্রচণ্ড ক্লান্তি। ফলে লেখালিখি কেন, সামান্য পড়াশুনোটাও করতে এতোদিন আমার ইচ্ছে করেনি। এর মধ্যে আমার মা-বাবা দুজনেই বয়স্ক। মা যদিও বা নিজেকে ঠিক করে সামলে নিতে পেরেছে, বাবার অক্সিজেন লেভেল ক্রমাগত নেমে যাচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, ততই বাবার অক্সিজেন লেভেল কমে যাচ্ছে, আর দূর্বলতা বেড়েই যাচ্ছে। আমরা যদিও বা মাথা তুলে স্নান আর খাওয়াদাওয়া করতে পারছি, বাবা সেটুকুও পারছে না। এমনভাবে দিন কয়েক চলার পর বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হল। ডাক্তারই বললেন, বাবার বয়স বেশি, হার্টের রোগ আছে, আর এমনভাবে অক্সিজেন লেভেল কমে যাওয়া ভালো লক্ষণ নয়। তাই হাসপাতালে ভর্তি না করে উপায়ও ছিল না।

বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করায় একটা লাভ হল। বাড়িতে তাকে পরিচর্যা আর শুশ্রূষা করতে আমাদের যে পরিশ্রম হচ্ছিল সেটা এবার বন্ধ হল। বাবাকে খাবার খাওয়ানোটা ছিল একটা বড়ো কাজ। বাবা খেতে চাইতো না, মেজাজ খিটখিটে হয়ে গেছিল। তুচ্ছ কারণে/অকারণে আমাদের ওপর রেগে যাচ্ছিল। এতে আমাদের দূর্বল শরীরের ওপরে আরো চাপ পড়ছিল। আর অন্যদিকে বাবার দূর্বলতা বেড়েই চলেছে আর পালস অক্সিমিটারে স্যাচুরেশন লেভেল কমেই চলেছে। ফলে আমরা মানসিকভাবেও যথেষ্ট উদ্বেগের মধ্যে ছিলাম, যা নেওয়ার মত মানসিক পরিস্থিতিও আমাদের ছিল না। হাসপাতালে ভর্তি করার ফলে বাবার দায়িত্ব আর আমাদের হাতে রইল না। ফলে শারীরিক ও মানসিকভাবে আমরা একটা বড়ো মুক্তি পেলাম। আর এতে আমাদের রোগের নিরাময়ও অনেক দ্রুত হতে লাগল। ওদিকে বাবাও হাসপাতালের চিকিৎসায় দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছিল। তবে শারীরিক দূর্বলতা আমাদের তখনও যথেষ্ট ছিল।

যতদূর সম্ভব কম কাজ করে, কোনোরকমে দিনগুলো কাটিয়ে ৪ঠা জুন শুক্রবার আমরা বাবাকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসি। এখন আমরা মোটামুটি সুস্থ। শারীরিক দূর্বলতা আগের থেকে কমলেও এখনও আছে। কাশি হচ্ছে। বাবার শরীরে দূর্বলতা আমাদের তুলনায় অনেক বেশি। তবে বাকী সবই ভালো আছে। ২রা জুন পর্যন্ত বাবার কোভিড টেস্ট পজিটিভ এসেছে। দিন পনেরো অপেক্ষা করে আবার পরীক্ষা করাতে হবে।

এই কোভিডে ভুগে একটা বিষয় বুঝলাম। যারা এটাকে ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় জ্বরের সাথে তুলনা করে, তারা ভুল ভাবে। হয়ত কারুর ক্ষেত্রে এটা অল্পের ওপর দিয়ে যায়। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই তা হয় না। আমাদের ক্ষেত্রেও হয়নি। কোভিড আমাদের যেভাবে ভুগিয়েছে। বাবা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় আমাদের যেভাবে অর্থ ব্যয় হয়েছে তা কোনোপ্রকার সাধারণ জ্বরের সাথে তুলনীয় নয়। তাই আমার মনে হয় এই রোগকে লঘু করে দেখার কোনো জায়গাই নেই। সাবধানে থাকতে হবে, আমাদের প্রত্যেককে সচেতন থাকতে হবে। আমরা যেভাবে এই রোগে ভুগলাম (বলা ভালো এখনও ভুগছি), চাই না আর কাউকে এভাবে ভুগতে হোক। ভালো থাকুন সকলে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুন, ২০২১ রাত ১০:৫২

খায়রুল আহসান বলেছেন: স্বস্তির কথা, আপনারা সবাই আরোগ্য লাভ করেছেন/আরোগ্যের পথে আছেন। অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার বাবাসহ আপনারা দ্রুত সম্পূর্ণ আরোগ্যলাভ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুন, এ শুভকামনা রইলো।

২| ০৮ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:৩৯

শেরজা তপন বলেছেন: এ রোগকে যারা বেশী হালকাভাবে নিবে তাদের কপালে ভোগান্তি আছে।
রোগ চলে গেলেও দীর্ঘদিনের জন্য উপসর্গ রেখে যায়। শরির এত দুর্বল লাগে যে, পৃথিবীর সব কিছুই মুল্যহীন ও বিরক্তিকর মনে হয়।
যাহোক ভারতের এই দুরবস্থায় আমরা সবাই উদ্বিগ্ন- আপনাদের জন্য রইল সহমর্মিতা।
আপনি ও আপনার পরিবারের সবাই সুস্থ্য হয়েছেন জেনে ভাল লাগল।
ভাল থাকুন নিরন্তর

৩| ০৮ ই জুন, ২০২১ রাত ১১:৫৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: কোভিড চিরতরে দূর হয়ে যাক এই কামনা করছি। সারা পৃথিবীতে একসাথে মহামারী আমার মনে হয় এটাই প্রথম। ভারতের অবস্থা আশা করি আগের চেয়ে ভালো। আপনার বাবার ফুসফুসে সংক্রমণের মাত্রাটা গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় নেগেটিভ হওয়ার পরও ফুসফুসের অতি মাত্রার সংক্রমণের কারণে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়। তাই ওনাকে কিছুদিন সতর্ক থাকতে হবে। এই রোগ অবহেলার নয়। যার হয় সেই শুধু বোঝে।

৪| ০৯ ই জুন, ২০২১ দুপুর ২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: বড় কঠিন সময় পার করেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.