নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমিও একদিন লাশ হব, সেই লাশ মাটির নিচে থেকে রোদ বৃষ্টিতে ভিজে অংগার হবে। বৃষ্টি ভিজা কাদায় শরীর ভিজে যাবে, শুধু অনুভবে নিথর লাশ হয়ে রয়ে যাব শেষ বিচারের অপেক্ষায়.......

ফেনা

মুক্ত ও সাদা মনের মানুষ হতে আগে চাইতাম। এখন আর চাই না। এখন একটু মুক্তি চাই, চাই জীবনটা শেষ হবে এই অপেক্ষার অবসান। [ মৃত্যুটা খুব স্বাভাবিক; বেঁচে থাকাটা অস্বাভাবিক।]

ফেনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্রোত ( পর্ব – ২)

২০ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:০১

স্রোত ( পর্ব – ০১)


আমার বাবা মারা গেছেন প্রায় বছর ছয়েক হল। বাবা-মার সন্তান বলতে আমি একাই। কিন্তু ইদানিং মার শরীরটাও খুব একটা ভাল যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে খুব ভয় হয়। আমার তো এই এক মা ছাড়া আর কেউ নাই। থাকার মধ্যে এক চাচা চাচী ও ছোট ছোট দুই চাচাত বোন আছে। কিন্তু মা বাপ তো মা বাপই। আবার মার প্রতি আমার দূর্বলতা একটু বেশি। মার শরীরটা একটু খারাপ হলেই আমার বুকটা কেমন যেন মুচড়ে উঠে।
আজ সকালে মার শরীরটা একটু খারাপ দেখে কলেজে গেলাম না। সারাদিন মার সাথে থাকলাম। বিকাল বেলা মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়েগেলাম। ডাক্তার তেমন কিছু বলল না। শুধু রেষ্টে থাকতে বলল। আর চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বললেন। আমি একটু ঘাবড়ে গেলাম। বাবা না থাকায় সংসারে উপার্জন নাই। বাবা আমাদের জন্য যা রেখে গেছেন তা দিয়েই ঘসে মেঝে চলছি। সামনে কলেজে পরীক্ষা। ফি কোথা থেকে দিব চিন্তায় পরে গেলাম। এ দিকে মার চিকিৎসা করাতে হবে। মনের মধ্যে একটা অস্থিরতা কাজ করছে। ভাবছি মৌমিতা আপুর কাছে প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দিব।
টানা পাঁচ মাস মৌমিতা আপুর কাছে প্রাইভেট পরার পর গত প্রায় এক মাস ধরে যাচ্ছি না। ইদানিং জলেজে যাওয়াটাও বন্ধ। মার শরীরটা বেশ খারাপ। প্রতি মুহুর্তে কলিজা ছিড়ে কান্না বেরিয়ে আসতে চায়। কাদতে পারি না।
হঠাত এক দিন মার শরীরটা বেশি খারাপ হয়ে গেল। মা নরাচরা করতে পারছে না। তারাতারি ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার অনেক পরীক্ষা নীরিক্ষা করে হাস্পাতালে ভর্তি করতে বলল। ঘন্টা খানিক পর ডাক্তার তার চেম্বারে আমাকে ডাকলেন। বললেন – আপনার মার কিডনির যা অবস্থা তাতে এখন যদি অপারেশন না করান তাহলে মৃত্যুর আসংকা করতে হবে। আমি ডাক্তারকে কি বলব বুঝতে পারছিলাম না। আমার বুকে একটা ব্যাথা অনুভব করলাম। আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। মাথাটা সোজা করে ডাক্তারকে শুধু বললাম – স্যার অপারেশনের খরচ কত লাগবে? ডাক্তার কিছুক্ষন চুপ থেকে – তেমন বেশি না প্রায় হাজার পঞ্চাশেক লাগবে। আর কিডনি যদি বদলাতে হয় তখন খরচ অনেক বেড়েযাবে। কথাটা শুনেই আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।
মাকে হাস্পাতালে রেখেই বাড়ি আসলাম। চাচাকে ডেকে বললাম মার অবস্থা ভাল না। খুব দ্রুত অপারেশন করাতে হবে। হাজার পঞ্চাশেক টাকা লাগবে। চাচা সাথে সাথে বলে দিলেন- আমি নিজের সংসার চালাতে পারছি না। এত টাকা আমি পাব কই? কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আমি চাচার পা ধরেফেললাম। চিৎকার করে কাদছি আর বলছি- চাচা আমারত এই মাটা ছাড়া আর কেউ নাই, আমার সামনের জমিটা নিয়া আমার মারে বাচাও। এই মা মইরা গেলে আমি কি নিয়া থাকব। আমার মা... আর মুখ দিয়া কথা কইতে পারলাম না। শুধু চিৎকার বের হচ্ছে। কিন্তু চাচার কোন পরিবর্তন হল না।

বিকাল বেলা হাসপাতালে মা-র পাশে বলে আছি। চেষ্টা করছি নিজেকে স্বাভাবিক রাখার। কিন্তু পারছি না। বার বার দু-চোখ কষ্টের নোনা জলে ভরে উঠে। নিজেকে অনেক অসহায় লাগছে। কি করব কিছু বঝতে পারছি না।
হঠাত মনে হল আমাদের গ্রামের মেম্বার চাচার ছেলে সুদে টাকা দেয়। তার কাছে একবার যেতে হবে।
একজন নার্সকে ডেকে মার কাছে দিয়ে চলে আসলাম। কিন্তু গ্রামে এসে মেম্বার চাচার ছেলে মামুন মোল্লারে ত আর খুজে পাইনা। আমার টেনশন বাড়তে লাগল। কাল হাসপাতালে হাজার বিশেক টাকা জমা দিতে হবে। কি করব… মনে হচ্ছে বুকে হালকা একটা ব্যথা। আমি বাদে সারা দুনিয়াটা ঘুরছে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৩৭

কাইকর বলেছেন: অনুতপ্ত। খুব ভালো লিখেছেন। খুব গুছিয়ে লিখেছেন। এগিয়ে যান, লিখে যান। আমিও গল্পকার। গল্প লিখি, গল্প বুনি।সময় পেলে আমার ব্লগে ঘুরে আসবেন। ধন্যবাদ ও ভালোবাসা রইলো

২০ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৪২

ফেনা বলেছেন: ধন্যবাদ জনাব কাইকর। আমি চেষ্টা করি হয় কি না জানি না।
জি আপনার ব্লগে ঘুরে আসব।
ভাল থাকবেন সবসময়।

২| ২০ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব না গল্প?

২০ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৪

ফেনা বলেছেন: গল্প। তবে শুরুটা কিছু সত্যি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.