নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুব সাধারণ একজন মানুষ। বিনয়ে বলা সাধারণ নয়, সত্যিকারের সাধারণ। রূঢ় ভাষায় বললে \"গুড ফর নাথিং\"।

বিষাদ সময়

বিষাদ সময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

A BRIEF HISTORY OF TRAIN

৩০ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৮



শেষ কবে রেলগাড়িতে চড়েছি মনে নেই। তবে ১৯৮৩ সালে সর্বশেষ বাষ্পীয় ইঞ্জিন চালিত রেলগাড়িতে চড়েছি সেটা মনে আছে। রেলগাড়িতে চড়েননি এ রকম ব্যক্তি পাওয়া দুস্কর। কিন্তু রেলগাড়ির ইতিহাস আমরা কতটুকু জানি। আজ আসুন রেলগাড়ির ইতিহাসের পথে কিছুটা হেটে আসি। যদি বলি প্রথম বাস্পীয় রেল ইঞ্জিন কে আবিস্কার করেন? আমি জানি এটা সবারই জানা এবং বেশিরভাগ ব্যক্তিই উত্তরে বলবেন Robert Stephenson, আসলে এটা করেন Richard Trevithick . রবার্ট স্টিফেনসন প্রথম যাত্রীবাহি রেল ইঞ্জিন তৈরি করেন ১৮২৫ সালে। এর কিছুদিন পরে ১৮২৯ সালে রবার্ট স্টিফেনসনই তার কোম্পানী Robert Stephenson and Company এর মাধ্যমে প্রথম ”রকেট” নামের বাণিজ্যিক রেল ইঞ্জিনটি তৈরি করেন। শুরু হয় মানুষের রেল চলা। এর আগে রেল ইঞ্জিন না থাকলেও রেললাইন ছিল, তবে তাতে মূলত ঘোড়া দিয়ে ওয়াগন টেনে মালামাল পরিবহন করা হতো। যাহোক ইংল্যাণ্ডের লিভারপুল ম্যনচেস্টার রেললাইন দিয়ে শুরু হলো মানুষের রেলপথ চলা। নিশ্চয় কারও কারও ইচ্ছে করছে দুনিয়ার প্রথম সেই রেল ইঞ্জিনটি দেখার। তাদের জন্যই নিচের ছবিটি -


যাত্রীবহনে সক্ষম প্রথম রেল ইঞ্জিন

প্রথম বাণিজ্যিক রেল ইঞ্জিন

নুরেমবার্গ এর যাদুঘরে রক্ষিত এই ট্রেন ইঞ্জিনটি চলতো কয়লায়, ওজন ছিল ৪.৩ টন আর চলতে পারতো সর্বোচ্চ ৪৫ কিঃমিঃ/ঘন্টা গতিতে।এই ট্রেন ইঞ্জিনের ডিজাইনটি এতটাই আধুনিক ছিল যে পরবর্তীতে প্রায় ১৫০ বছর যারা বাস্পীয় ইঞ্জিন তৈরী করেছেন তারা এটিকে রোল মডেল মানতেন। তারপরও এর ছোটখাট ত্রুটির কারণে ১৯৩০ সাল থেকে শুরু হয় এর মডিফিকেশন। এরপর রেলযাত্রা ছড়িয়ে পড়তে থাকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।

১৮৬২ সালে ১৫ই নভেম্বর চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত ৫৩ কিলোমিটার ব্রডগেজ লাইন দিয়ে শুরু হয় বাংলাদেশের প্রথম রেলযাত্রা।

যাহোক পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রেলসার্ভিস ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিযোগীতা শুরু হয় বাস্পীয় ইঞ্জিন এর উৎকর্ষতা সাধনের। ফলে দ্রুত উন্নত থেকে উন্নততর হতে থাকে বাস্পীয় ইঞ্জিন, বৃদ্ধি পেতে থাকে এর গতিবেগ।

পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত গতির বাস্পীয় ইঞ্জিন

মালার্ড নামের ১৬৭ টন ওজনের এই রেল ইঞ্জিনটি ১৯৩৮সালে বৃটেন তৈরী করে, এর সর্বোচ্চ গতি উঠেছিল ২০৩ কিঃ মিঃ/ঘন্টা।

বাস্পীয় ইঞ্জিন এর পরিবেশ দূষণ।

কিন্তু বাস্পীয় ইঞ্জিন এর বেশ কিছু অসুবিধা ছিল। এই ইঞ্জিন গুলো বহির্দাহী( External Combustion ) হওয়ায় এর দক্ষতা ছিল অত্যন্ত কম, দুরপাল্লার যাত্রার অনুপযোগী এবং মোট সময়ের প্রায় ৬৫% সময় এদের মেইনটেনেন্সের জন্য ব্যয় হতো, পরিবেশ দূষিত করতো অতিরিক্ত এ ছাড়া গতির ক্ষেত্রেওে এর ছিল সীমাব্ধতা। এ কারণে ধীরে ধীরে মানুষ রেলগাড়ির জন্য অন্য কোন ধরনের ইঞ্জিন তৈরীর প্রচষ্টা শুরু করে।

রেলপথে এসে যায় আন্তর্দাহী ডিজেল ইঞ্জিন ( Internal Combustion Diesel Engine)।


প্রথম ডিজেল ইঞ্জিন

১৮৯২ সালের পরে রেলপথে শুরু হয় ডিজেল ইঞ্জিন এর যাত্রা। প্রথম দিকের এই ইঞ্জিন গুলোর নানা অসূবিধা থাকায় জনপ্রিয় হয়নি। পরে এই ইঞ্জিন গুলোর অসুবিধা দূর করে তৈরী হতে থাকে নতুন নতুন ইঞ্জিন, বাড়তে থাকে এর জনপ্রিয়তা। ধীরে ধীরে ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হতে থাকে বাস্পীয় ইঞ্জিন।

ডিজেল- চালিত ট্রেন
১৯৭৬ থেকে ১৯৮২ মধ্যে নির্মিত এই বৃটিশ এইচ,এস,টি ট্রেন গুলো সর্বোচ্চ ২৩৮কিঃমিঃ/ঘন্টা গতি তুলতে সক্ষম।
তারপরও পরিবেশ দুষণ এবং গতির সীমাবদ্ধতার কারণে মানুষ খুঁজতে থাকে নতুন প্রযুক্তি ।


প্রথম ইলেক্ট্রিক ট্রেন
১৮৭৯ সালে জার্মানির বার্লিন এ প্রথম চালু হয় ইলেক্ট্রিক ট্রেন। কিন্তু এ ট্রেনের গতি ছিল খুবই কম মাত্র ১৩ কিঃমিঃ/ঘন্টা সেই সাথে ছিল নানান অসুবিধা। তবু রেল ভূবনে পরিচয় ঘটে নতুন প্রযুক্তির। উৎকর্ষতার জন্য চলতে থাকে নিরন্তর প্রচেষ্টা। বর্তমানে উন্নত বিশ্ব এমনকি ভারতে যেখানে দূরপল্লা আর দ্রুত গতির প্রয়োজন সেখানেই ব্যবহৃত হচ্ছে ইলেক্ট্রিক ট্রেন।

দ্রুত গতির ইলেক্ট্রিক ট্রেন -সি,আর,এইচ ৩৮০ এ
চিনে চলাচলকারী -সিআরএইচ ৩৮০ এ ট্রেনগুলো ৩০০কিঃমিঃ/ঘন্টা গতিতে যাত্রী বহন করে এবং সর্বোচ্চ ৪৮৬ কিঃমিঃ/ঘন্টা গতি ওঠাতে সক্ষম। এটিকে তৃতীয় প্রজন্মের ট্রেন বলা যায়।

এত গতিতে চলেও মানুষ সন্তষ্ট থাকেনি সদা চেষ্টা করেছে আরও দ্রুত গতি সম্পন্ন ট্রেন নির্মানের। কিন্তু এই প্রচেষ্টাই সবচেয়ে বড় বাধা হয়েছে ঘর্ষণ জনিত বাধা (frictional resistance )। গতি যত বেশি হয়েছে এই বাধা তত বেশি হয়ে দেখা দিয়েছে। ফলে একটি নির্দিষ্ট গতির বেশি গতিসম্পন্ন ট্রেন তৈরি সম্ভব হয়নি। এ সময় বিজ্ঞানের দুটো আবিস্কার রেল যাত্রায় আশীর্বাদ হয়ে আসে-১) linear induction motor ২) Magnetic river। মানুষ পেয়ে যায় ঘর্ষণ জনিত বাধাকে (frictional resistance ) অতিক্রম করার নতুন হাতিয়ার, তৈরী হয় ম্যাগলেভ (magnetic levitation) ট্রেন। যা চুম্বকিয় শক্তির দ্বারা একটি ট্রেনকে শুন্যে ভাসিয়ে চালনা করে, থাকেনা তেমন কোন ঘর্ষণ বাধা, ফলে এই ট্রেনের সর্বোচ্চ ৬০৩ কিঃমিঃ/ঘন্টা গতি উঠনো সম্ভব হয়েছে। সত্যিই এ এক অন্যন্য প্রযুক্তি। পৃথিবীর প্রায় সব ট্রান্সপোর্টই ঘুর্ণন গতিকে সরল রৈখিক গতিতে পরিণত করে চলে। কিন্তু এই ট্রেনে বিদুৎ শক্তি সরাসরি সরল রৈখিক গতি প্রদান করে, এতে থাকেনা কোন চাকা, এ যেন ডাঙ্গায় বসে উড়ার অনুভুতি।

চিন সর্বপ্রথম জার্মান প্রযুক্তির সহায়তার তৈরী করে দ্রুত গতির ম্যাগলেভ ট্রেন।

বিশ্বের প্রথম দ্রুত গতির ম্যাগলেভ ট্রেন
২০০৪ সালে চিনের সাংহাইয়ে চালু হয় বিশ্বের প্রথম দ্রুত গতির ম্যাগলেভ ট্রেন। ৪৩১ কিঃমিঃ/ঘন্টা গতিতে চিনের সাংহাইএ যাত্রী পরিবহন করে এই ট্রেন। এটি সর্বোচ্চ ৫০০ কিঃমিঃ/ঘন্টা গতিবেগ তুলতে সক্ষম। এই ট্রেনে একবার ৩০ কিঃমিঃ যাত্রার জন্য আপনাকে খরচ করতে হবে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা।

বর্তমানে (২০১৭ সালে) সবচেয়ে দ্রুত গতির ট্রেন তৈরী করেছে জাপান-


জাপানের এই ট্রেনটি সর্বোচ্চ ৬০৩ কিঃমিঃ/ঘন্টা গতি তুলতে সক্ষম।

আমরা অবশ্য এখনও ৬০-৭০ কিঃমিঃ/ঘন্টার ডিজেল ইঞ্জিনে আছি। সবচেয়ে দুঃখ জনক হল আমাদের ইস্টিশনের রেলগাড়িটার, ঠিক ঠিকানা নাই ঘড়ির কাটার।

এই হল বাংলাদেশের রেল
তবু্ও আমার দেশই আমার অহংকার।

১৮২৯ থেকে ২০১৭ - এই হল A BRIEF HISTORY OF TRAIN

তথ্য এবং ছবি ইন্টারনেট থেকে

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:০৯

বর্ষন হোমস বলেছেন:
গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট।পড়ে উপকৃত হলাম।এবং আপনার দেওয়া তথ্য গুলোও সঠিক।গুগল থেকে দেখলাম।

ধন্যবাদ।শুভকামনা রইলো।

৩০ শে জুন, ২০১৭ রাত ৯:৪০

বিষাদ সময় বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। গুগল করে তথ্য গুলো সঠিক পাওয়ায় আশ্বস্ত হলাম যে ভুল কিছু লিখি নাই।
ভাল থাকুন সব সময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.