নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা সবাই কমবেশী ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লিঙ্গ বা জাতীয়তা দ্বারা প্রভাবিত হই। প্রতিটি মানুষের উপর এর প্রভাব থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে কোন মানুষ যত বেশি এ সবের প্রভাবমুক্ত থাকতে পারবেন তিনি ততই মুক্তমনের এবং যুক্তিবাদী মানুষ হবেন। এর বিপরীতে একজন ব্যক্তি যত বেশী এর দ্বারা প্রভাবিত হবেন তিনি ততই সংকির্ণ এবং অযৌক্তিক মানুষে পরিণত হবেন।
প্রত্যেক ব্যক্তিরিই নিজস্ব ধর্ম, বর্ণ বা জাতীয়তার প্রতি ভালবাসা থাকা বা টান অনুভব করাটা স্বাভাবিক। এই স্বাভাবিকতা ততক্ষণ পর্যন্ত অন্যায় হবে না যতক্ষণ তিনি এসবের প্রভাবে সার্বজনিন ন্যায় অন্যায় বা হিতাহিত জ্ঞান হারাবেন।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমাদের উপমহাদেশে সার্বজনিন ন্যায় অন্যায় বোধ বা হিতাহিত জ্ঞান শুন্য লোকের স্ংখ্যাই বেশি, এরা নিরপেক্ষভাবে কোন কিছু চিন্তা করতে পারেন না বা এদের ন্যায় অন্যায় বোধ অথবা হিতাহিত জ্ঞান এদের নিজস্ব ধর্ম, বর্ণ বা জাতীয়তা দ্বারা প্রভাবিত বা বায়াস্ড। ন্যায়, অন্যায় ভাল ,মন্দ যুক্তি বা অযুক্তি এরা নিজেদের ধর্ম বা জাতীয়তার কোষ্টি পাথরে যাচাই করে প্রকাশ করে থাকেন, সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য চিন্তা ভাবনা করতে এরা অক্ষম। সব সময় এরা নিজের ধর্ম, বর্ণ, জাতীয়তা কে শ্রেষ্ঠ এবং অপরের ধর্ম, বর্ণ বা জাতীয়তাকে নিকৃষ্ট মনে করে থাকেন । ধর্ম দ্বারা এরা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত।
এ সব ব্যক্তিরা যদি নিরপেক্ষভাবে অনুসন্ধাণ বা বিচার বিশ্লেষণ করে এ ধরণের সিদ্ধান্তে উপনিত হতেন তবে কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এরা তা করেন না। তারা যে ধর্ম, বর্ণ বা জাতীয়তা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেন সে ধর্ম, বর্ণ বা জাতীয়তাকে তারা জন্ম থেকে উৎকৃষ্ট এবং অন্য ধর্ম, বর্ণ বা জাতীয়তাকে নিকৃষ্ট ভাবতে শেখেন বা পরিবার এবং সমাজ তাদের সেটা ভাবতে শেখায়। পরবর্তিতে যখন তারা বড় হন, যুক্তি বুঝতে বা বিচার বিশ্লেষল করতে শেখেন তখন তারা এ প্রভাব বলয়ের ভিতরে থেকেই নিজের ধর্ম, বর্ণ বা জাতীয়তার ভাল দিক গুলো খুঁজতে থাকেন এবং নিজেদের মন্দ দিক গুলোকে কোন ধরণের কু যুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করে নিজেদের জয়গান গাইতে থাকেন। খুব কম ব্যক্তিই এ প্রভাব বলয় থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেন। এ বলয় থেকে বের হয়ে আসার জন্য যে শিক্ষা এবং চেতনা দরকার হয় তা আমাদের এ উপমহদেশে খুব বেশি পরিমানে নিরুৎসাহিত এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে নিষিদ্ধ। তাই এরা ভারতে হিন্দু পরিবারে জন্মালে ভারত আর হিন্দুত্বের গুণ কীর্তন করেন আর বাংলাদেশের মুসলমান পরিবারে জন্ম নিলে বাংলাদেশ আর মুসলমানদের জয়গান গান। ভুলেও নিজের দেশ বা ধর্মের দোষটা আর অন্যের ধর্ম বা দেশের গুনটা দেখার চেষ্টা করেন না। যুগে যুগে দেশে দেশে এদের দ্বারাই মূলত অন্য ধর্ম, বর্ণ বা গোত্রের মানুষরা নির্যাতিত হন।
কিন্তু যারা নিজের ধর্ম বা দেশকে নিরপেক্ষভাবে বিচার বিশ্লেষন করে শ্রেষ্ট মনে করেন বা যারা নিজ ধর্ম, বর্ণ বা জাতীয়তা শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে মনে সন্দেহ পোষণ করেন তাদের দ্বারা ভিন্ন ধর্ম, বর্ণ বা জাতীয়তার মানুষেরা কম নির্যাতিত হন।
সাম্প্রতিক আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িক দল ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। এবার সেখানে শুরু হয়েছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। এখনকার সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মুল চালিকা শক্তি হচ্ছে গরু বা গো-হত্যা। সাম্প্রদায়িক শক্তির মদদ পুষ্ট সে দেশের সরকার সহিংসতা বন্ধের কার্যকর কোন ব্যবস্খা তো গ্রহন করছেই না বরং বিষয়টিকে জিইয়ে রেখে ফায়দা লুটছে। কারণ সাম্প্রদায়িকতাই সে দেশের বর্তমান সরকারের সফলতার চাবিকাঠি। যত সাম্প্রদায়িকতা বৃদ্ধিপাবে ততই সরকারে শক্তি সুসংহত হবে।
গো হত্যা ইস্যুতে যে সব হিন্দুরা সহিংসতা করছে তাদের বেশির ভাগই অশিক্ষিত এবং দরিদ্র। দারিদ্রতা এবং অশিক্ষার বা কু-শিক্ষার কারণে এরা নিজ ধর্ম এবং বর্ণের প্রতি অন্ধভাবে আসক্ত অপরদিকে অন্য ধর্ম বা বর্ণের প্রতি এদের রয়েছে অন্ধ আক্রোশ। এরা বহু স্থানে গো হত্যা বা গো মাংস খাওয়ার জন্য বেশ কিছু মুসলিমকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের মোটিভ কতটা গরুর জন্য ভালবাসা বা শ্রদ্ধা আর কতটা আজন্ম পুষে রাখা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ তা মনে হয় ক্ষতিয়ে দেখা দরকার। তবে আমার মনে হয় গরুর প্রতি ভালবাসার চেয়ে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ এখানে বেশি কাজ করে। এ ধরণের মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি উপমহাদেশের প্রায় সবদেশে রয়েছে। এরা ভারতে মুসলিম হত্যা করে গো হত্যার অজুহাতে, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন করে ইসলাম অবমাননার কারণে বা পাকিস্তানে শিয়া হত্যা করে গোত্র প্রীতি থেকে। এ হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা নামের নেশা যা শুধু ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন প্যকেটে আবৃত।
আমাদের পার্শবর্তী রাষ্ট্রে গো হত্যার অজুহাতে যে নৃশংসতা হচ্ছে তার প্রতিবাদ করা উচিত সব দেশের সব বিবেকবান মানুষের। কিন্তু তা কি আমারা দেখতে পাচ্ছি, পাচ্ছি না। বিশেষ করে পার্শবর্তী রাষ্ট্রে এর বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। কারণ যারা দরিদ্র ও অশিক্ষিত তাদের সাম্প্রদায়িকতার প্রকাশ উলঙ্গভাবে হচ্ছে আর যারা তাথাকথিত ভদ্র বা কু-শিক্ষিত তাদেরও অনেকের বিবেক সাম্প্রদায়িকতার বিষে বিষাক্ত। তারা নগ্ন হতে লজ্জা করেন, তবে ভদ্রলোকের মুখোশ পরে খেলা উপভোগ করতে তাদের আপত্তি নাই।
বাংলাদেশে এর প্রতিবাদ হচ্ছে তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিবাদ হচ্ছে মিথ্যা এবং সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাষ্প ছড়িয়ে, যা ওখানকার হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার আরেকটি রূপ। গো হত্যা বা গো মাংস ভক্ষণ যেহেতৃ ভারতে আইন দ্বারা নিষিদ্ধ নয় সেহেতু ভারত সরকারে দায়িত্ব মুসলমানদের সে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করা। যদি নিষিদ্ধও হয় তারপরও কারও অধিকার নেই আইন হাতে তুলে নেয়ার। সে প্রেক্ষিতে আমরা এর প্রতিবাদ করতেই পারি বা মুসলমানদের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে গো মাংস খাওয়ার অতএব এর বিরুদ্ধে কোন আইন না করারও দাবী জানাতে পারি। কিন্তু ”গরু আবার মা হয় কেমনে?”, “ তাগো কোন ধর্মগ্রন্থে গরু খাইতে না করছে।” , ”মুসলমানরা গরু খাইলে ওদের এত জ্বলে ক্যন?” ধরনের কথা প্রতিবাদের ভিত্তিকে শুধু দুর্বল করে না, বরং আরেক ধরণের সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দেয়।
আবার অনেকের কাছে মুসলমানরা গো জবাই করলে বা গো মাংস খেলে হিন্দুদের কি অসুবিধা এটা বুঝতে পারেন না। তাদেরকে একটা কথা বলা প্রয়োজন, আমাদের দেশে তো শুকর জবাই করা বা শুকরের মাংস বিক্রি করার উপর নিষেধাজ্ঞা নাই (আমার জানা মতে)। এখন আপনার বাসার সামনে যদি কেউ একটা শুকরের মাংসের দোকান দিয়ে মাংস বেচাকেনা শুরু করে আর সেখান থেকে হিন্দু, খৃস্টান বা উপজাতীরা মাংস কিনে খায় তাহলে তারা আশা করি কিছু মনে করবেন না।
মনে করা তো সামান্য ব্যপার সম্ভবত এরা ঐ মাংস বিক্রেতার আবস্থা তাই করবেন ভারতের উগ্রবাদী হিন্দুরা গো মাংস বহন বা গো হত্যার দায়ে কিছু অসহায় মুসলমানের যা করেছেন।
আসলে আমরা নিজের গুণ আর অন্যের দোষ দেখতে অভ্যস্ত এর বিপরীতটা খুব কম ক্ষেত্রে করি। ধর্ম, বর্ণ বা স্থান ভেদে যতই ভিন্ন চেহারা হউক না কেন সব সাম্প্রদায়িক ব্যক্তির পরিচয় একই, এরা সঙ্কীর্ণ মনের, অশিক্ষিত বা কুশিক্ষিত , ব্লক হেডেড ব্যক্তি।
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:০৮
বিষাদ সময় বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, প্রথম হওয়ায় বিশেষ বিশেষ অভিনন্দন আর এখন পর্যন্ত একমাত্র মন্তব্যকারী হওয়ায় কৃতজ্ঞতা।
২| ২৭ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৯
গেম চেঞ্জার বলেছেন: আমি সেকেন্ড হইসি! আমাকে কি সাধারণ অভিনন্দন দেওয়া যায়?
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৩১
বিষাদ সময় বলেছেন:
আমি এত ছোট মনের মানুষ না যে আপনি সেকেন্ড হওয়ায় আপনাকে সাধারণ অভিনন্দন জানাবো। আপনাকেও বিশেষ বিশেষ অভিনন্দন…………
৩| ২৭ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩৯
তারেক ফাহিম বলেছেন: আমি মন্তব্যে ৩য় স্থান লাভ করছি, বিশেষ বিবেচনায় অভিনন্দন দেওয়া যায়??
২৭ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৩৬
বিষাদ সময় বলেছেন: বিশেষ বিবেচনার কি আছে! তৃতীয় স্থান অধিকার করায় আপনার এমনিতেই ব্রোঞ্জ অভিনন্দন প্রাপ্য………. আপনাকে ডায়ামন্ড অভিনন্দন জানালাম…..
৪| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:০৬
নাগরিক কবি বলেছেন: আমি কি চতুর্থ হইলাম তাইলে?
২৮ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৫
বিষাদ সময় বলেছেন: আপনাকে এবং তারেক ফাহিমকে যৌথভাবে তৃতীয় ঘোষণা করলাম। আর যৌথ ভাবে তৃতীয় স্থান অধিকার করায় আপনাকেও ডায়মন্ড অভিনন্দন।
(কিন্তু মনে হচ্ছে পড়া লেখা না করে (পোস্ট না পড়ে) ফাঁকি দিয়ে আপনারা তৃতীয়, চতৃর্থ হচ্ছেন!!!! )
৫| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:৫২
অর্ক বলেছেন: পঞ্চমের জন্য কিছু কি নেই!
হা হা হা।
২৮ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৫১
বিষাদ সময় বলেছেন: আরে কি যে বলেন! দশম স্থান পর্যন্ত সবাই স্ট্যান্ড করা ছাত্র, আপনাদের কি বিশেষ বিশেষ অভিনন্দন না জানিয়ে পারা যায়!!!!
তবে মনে হচ্ছে পড়া লেখায় (ব্লগ পড়ায়) আপনারা একটু ফাঁকি দিচ্ছেন...................হাঃ হাঃ হাঃ
৬| ২৮ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:২৬
কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: গেমুর পরামর্শে আমি ষষ্ঠ
পোষ্টে ভালো লাগা.................
২৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:০৭
বিষাদ সময় বলেছেন: ষষ্ঠ হওয়ায় অভিনন্দন। পোস্ট ভাল লেগেছে জেনে অত্যন্ত আনন্দিত হলাম। ভাল থাকুন সব সময়।
৭| ২৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৪৬
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: একদম ঠিক শুধু রাজনৈতিক স্বার্থে বিভিন্নরূপ ধরে।। আর আমরা, এই সমর্থকাও "ভেস্তে" যাই!!
২৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:১৭
বিষাদ সময় বলেছেন: একদম ঠিক শুধু রাজনৈতিক স্বার্থে বিভিন্নরূপ ধরে।। আর আমরা, এই সমর্থকাও "ভেস্তে" যাই!!
ঠিকই বলেছেন।নেতারা রাজনৈতিক স্বার্থে সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিদের লালন, পালন এবং ব্যবহার করেন। আর আমরা ব্যবহৃত হয়ে পুলকিত হয়।
ভাল থাকুন সব সময় সেই কামনা।
৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৫০
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট! সুন্দর আহবান !!
২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৩৮
বিষাদ সময় বলেছেন: স্বাগতম ভাই গিয়াস উদ্দিন লিটন । পোস্টে এসে উৎসাহ দেয়ায় অসংখ্য ধন্যবাদ।
৯| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪০
বিজন রয় বলেছেন: এটা মানুষের মজ্জাগত। কিভাবে তাহলে পরিত্যাগ করবে।
২৯ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৫৫
বিষাদ সময় বলেছেন: প্রতিটি প্রাণীরই অনেক আদি-বর্বর বিষয় তার জিনের মধ্যে থেকে গেছে, কিন্তু মানুষ হচ্ছে একমাত্র প্রাণী যে সুশিক্ষা এবং চর্চার মাধ্যমে তার মজ্জাগত বা জেনেটিক বদ অভ্যাস গুলো ত্যাগ করে সভ্যতার পথে হাটছে।
পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।