নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল-আমিন হাসনাত

আল-আমিন হাসনাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

*ব্রেকআপ করেই ফেললাম, এত্ত ঝামেলা আর ভাল লাগে না*

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৩

*ব্রেকআপ করেই ফেললাম, এত্ত ঝামেলা আর ভাল লাগে না*

আফরিনের সাথে ব্রেকআপ করেই ফেললাম । শালার প্রতিদিন
প্যানপ্যানানী আর ভাল লাগে না ।
সব কিছুর একটা লিমিট থাকে , লিমিট ক্রস করলেই সেটা আর
সহ্য হয় না ।
এটা করলা কেন ?
কেন করলা ? কেন করবা না ?
তুমি বদলে গেছ !
তুমি এটা !
তুমি সেটা !
তুমি ... ব্লা ব্লা ব্লা ।
শালার সব দোষই আমার ? প্রেম করেছি বলে তো আর নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতা বিষর্জন
দেই নি । কিন্তু আফরিনের সাথে প্রেম করে এমন
একটা স্টেজে পৌছেছি যে সেখানে আমার ইচ্ছার কোন মূল্যই
নেই ।
আফরিন যা বলবে তাই ! আর প্রতিদিন হাজারটা কৈফৎ
দিতে দিতে আমি ক্লান্ত । ঘটনার সূচনা খুব সাধারন ভাবে । গত দুই দিন আমার কোন কাজ
ছিল না । আমি ওকে ফোন করে বললাম যে যদি দেখা করতে চাও
দেখা করতে চাও তবে আমি আসতে পারি ।
আফরিন বলল যে না, সে দেখা করতে পারবে না । তার
ব্যস্ততা আছে । যাক ভাল কথা । মানুষের কাজ থাকতেই পারে ।
আজ আমার কাজ ছিল অনেক গুলো । মোটামুটি সারাদিনই বিজি থাকবো ।
আর সন্ধ্যা বেলা বন্দুদের সাথে কাজ আছে । আফরিন দুপুর বেলা ফোন
করে বলল যে আজ দেখা করবে ।
-শোন আজ সন্ধ্যায় একটু দেখা করতে হবে । জরুরী ।
-না সোনা আমার কাজ আছে আজ ।
-না দেখা করতেই হবে । - আফরিন বোঝার চেষ্টা কর । আমার বন্দুদের সাথে কাজ আছে । দুদিন যাই
নি আজকে ফোন করেছে । যেতেই হবে ।
-তুমি আসবে না ?
আফরিন গলায় কেমন একটা অভিমানের সুর ।
-না আফরিন । আমি আসবো না ।
-আমার থেকে তোমার কাছে তোমার বন্দু বড় হয়ে গেল । -দেখ, এসব ফালতু কম্পারিজম করবা না । তুমি এক জায়গায় আর
বন্দুরা এক জায়গায় । আর আমি গত দুদিন তোমাকে ফোন
দিয়ে দেখা করতে বলেছি তখন কোথায় ছিলে ?
-আমার কাজ ছিল ।
-তোমার কাজ ছিল এখন আমার কাজ আছে । আজ দেখা করা সম্ভব
না । আফরিন আর কোন কথা খুজে পেল না । জানি এখন ও
রেগে যাবে এখন । বলল
-তুমি আসবা কিনা বল ?
-না আসবো না ।
-তা আসবা কেন ? এখনতো আর আমাকে ভাল লাগবে না । নতুন
একজনকে পেয়েছ না ! -মানে ? কি ফালতু কথা বলছো ?
-এখন তো ফালতু কথাই মনে হবে ! আমার সব কথাই এখন ফালতু
কথা । আর ঐ সূবর্ণার কথা খুব মিষ্টি তাই না ?
- আফরিন তুমি কিন্তু ঠিক করছো না ।
-আমি ঠিক করছি না ? আমিতো ঠিক করবোই না । তোমার
সাথে রিলেশন করা টাই আমার ভুল হয়েছে । আমার আগেই বোঝা উচিত ছিল যে ছেলে আমার জন্য অন্য
একটা মেয়েকে ছেড়ে দিতে পারে সেই ছেলে অন্য আর
একটা মেয়ের জন্যও আমাকে ছেড়ে দিতে পারবে ।
-তুমি কি বললে ?
-কেন শিখার সাথে তোমার রিলেশন ছিল না ?
- আফরিন ফর গডসেক এই কথাটা আবার তুমি তুলেছ ? আমি তোমাকে হাজার বার বলেছি শিখা কেবল আমার বন্দু ছিল । আর কিছু না ।
-কিন্তু ও তো এই কথা বলে না । ও তোমাকে ভালবাসে ।
-ও আমাকে পছন্দ করতে পারে বাট আমি এমনটা করিনি ।
-অনেক হয়েছে । তোমার মত একটা চরিত্রহীন লুচ্চার
সাথে আমি আর রিলেশন রাখবো না । তারপর আফরিন আরো গালাগালী করতে লাগল ।
এই মেয়েদের প্রবলেম কি ?
কথা হচ্ছিল আমি আসতে পারবো না আর সেই কথা ঘুরে চলে আমার
চরিত্রের দিকে । আশ্চার্য পাবলিক ।
আমি সারা জীবন সব কিছু সহ্য করেছি কিন্তু
যা আমি না কিংবা যেকাজ আমি করি নি সেই কাজের অপবাদ দিলে আমার মেজাজ গরম হয়ে যায় । বললাম
-ঠিক আছে । আমার সাথে রিলেশন রাখবে না, রেখো না ।
তোমার মত প্যানপ্যানানী মেয়ের কাছ থেকে মুক্তি চাই আমি ।
অনেক সহ্য করেছি আর না । আজকের পর থেকে তোমার
সাথে আমি আর নাই । ভুলেও তুমি আর আমারে ফোন দিবা না । আর
একটা বললা না যে সুবর্ণার কথা । এতো দিনতো করিনি, দেখবা ওর সাথেই আমি রিলেশন করবো ।
ফোন রেখে দেই আমি । আমি জানি আফরিন মনে হয় অবাকই
হয়েছে । যে ছেলে কোনদিন ওর কথার প্রতিবাদ করেনি ওর
সাথে ব্রেকআপ করে ফেলল !
ফোন রাখার পর একটু হালকা হালকা লাগল । মন কি একটু খারাপ
হল ? যা হয় হোক !
আজ থেকে আমি মুক্ত । কারো কথা শুনতে হবে না ।
কারো কাছে কৈফত্ৎ দিতে হবে না কোন !
আফরিনের রিলেশন করে আমি যেন আমার
ব্যক্তি স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছিলাম ।
আমাকে কত রকম হাজার কথা শুনতে হত । কত কাজ করতে হত ইচ্ছের বিরুদ্ধে ।
সব থেকে ঝামেলা সৃষ্টি হত ওকে নিয়ে বাইরে বের হলে ।
যদি কোন মেয়ের দিকে আমি তাকিয়েছি তাহলে যেন আমাকে আর
আস্ত রাখত না । আরে বাবা আমি তো কেবল সুন্দর মেয়েকে একটু
দেখতেও পারব না ?
আমার মতে সুন্দরী একটি মেয়ের দিকে যদি না তাকানো হয় তাহলে তার সৌন্দর্যকে অপমান করা হয় । আর একজন সৌন্দর্যের
পূজারী হয়ে কি আমি এমনটা করতে পারবো ।
যাক ভাল হয়েছে । কাল আজ থেকে আমার আর কোন বাধা নাই ।
কোন কৈফত্ৎ কাউকে দিতে হবে না ।
রাতে আনন্দ নিয়েই ঘুমাতে গেলাম । কিন্তু কেন
জানি ঘুরে ফিরে আফরিনের কথাই মনে আসতে লাগল । আফরিন হাসিটা অনেক সুন্দর ছিল । ও যখন হাসতো কেমন
জানি একটা আলো ছড়াতো ওর চোখ দিয়ে । আর চোখের
মনিটা কেমন নড়াচড়া করতো ।
আমি অদ্ভুদ ভাবে দেখতাম ! কাল থেকে আর দেখতএ পারবো না ঐ
হাসি !! সকালবেলা বেলা করেই ঘুম ভাঙ্গল । মনটা খারাপ হল আর একটু
। আফরিন আর যাই করতো না কেন প্রতিদিন সকালবেলা খুব সুন্দর
করে আমার ঘুম ভাঙ্গাতো ।
কেমন একটা অভ্যাসের মত হয়ে গেছিল । আফরিন কি চমৎকার
ভাবেই না গুড মর্নিং বলতো !
হাহ ! মানুষের মনটা কি অদ্ভুদ !
কালকে আফরিন ছেড়ে দিয়ে নিজেকে হালকা লাগছিল আর এখন
আমার খারাপ লাগছে ! মেয়েটাকে এই সকালবেলা মিস
করছি আমি ।
হাত মুখ ধুয়ে আসার পর এলাকার এক ছোট ভাই খবর দিয়ে গেল
যে আমার নাকি গেস্ট অপেক্ষা করছে পার্কে । পার্কে গিয়ে চমকাতে হল ।
আফরিন বসে আছে জড়সড় হয়ে । চেহারা কেমন বিষন্ন আর চোখ
গুলো কেমন ফোলা ফোলা । কাল রাতে নিশ্চয় কেঁদেছে !
আমার মনের মধ্যে কেমন একটা অনুভূতি হতে লাগল ।
কষ্টের অনুভূতি । মেন হচ্ছে আমি ই এর জন্য দায়ী ।
কি ঝামেলায় পরলাম। এমন কেন মনে হচ্ছে!! আমার দোষ কোথায়?
আমি আফরিনের পাশে গিয়ে বসলাম । ও বসেই রইল মাথা নিচ
করে । একটু পর একটা প্যাকেট আমার দিকে এগিয়ে দিল । খুব
নিচু স্বরে বলল
-কাল এটা দেবার জন্য তোমাকে ডেকেছিলাম । আমি ...
আফরিন চুপ করে গেল । খানিকটা যেন কেঁপে উঠল । আমি জানি ও কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে ।
আমি প্যাকেট টা খুলে আরো বেশি অবাক হলাম । একটা ঘড়ি ।
টাইটানের ঘড়ি ।
ঘড়িটা আমি চিনি । মাস দুয়েক আগে টাইটানে গেছিলাম ।
ঠিক এই ঘড়িটাই আমার পছন্দ হয়েছিল । কিন্তু দাম দেখে আর
কেনা হয়নি আর । আফরিন পাশে ছিল ।
ও মনে রেখেছে ।
আমার মনটাতে কষ্টের অনুভূতিটা যেন আরো একটু বেড়ে গেল ।
আফরিন বলল
-আমি যাই ।
বলে ও হাটতে লাগল । আমি ওর পিছন পিছন বের হয়ে এলাম । বললাম
এখনই যাবে ? ঐ পুকুর পাড় টাতে একটু বসি ? দুজন চুপচাপ বসে আছি । আফরিন অন্য দিকে তাকিয়ে আছে । একটু
একটু কাঁপছে ওর শরীর টা । আফরিন নিঃশব্দে কাঁদছে । আমার
নিজের কাছে খুব খারাপ লাগছে । মনে হচ্ছে ওর এই কান্নার
জন্য আমি দায়ী । একটা অপরাধ বোধ মনের
মধ্যে আস্তে আস্তে বাড়তে লাগল ।
মনে হল ও তো একটু এরকমই । আমি কেন ওর সাথে এমনটা করলাম ? কি হত ওর সাথে একটু
দেখা করলে ? কি শখ করেই না আমার জন্য ঘড়িটা কিনেছিল
আমাকে দেবার জন্য !! আমি জানি পার্কের লুকেরা আমাদেরকে দেখতে পেয়ে
মনে খানিকটা অবাক হচ্ছে কিংবা কৌতুহল হচ্ছে ওদের মনে ।
কেউ কেউ উকি দিচ্ছে এদিক ওদিক থেকে ।
আমরা পাশাপাশি আছি । আফরিন অন্য দিকে বসে আছে ।
আস্তে আস্তে ফোপানো বাড়ছে । সেই সাথে বাড়ছে আমার
অপরাধবোধ ! আমি আফরিন হাতটা ধরলাম । ঠিক তখনই আফরিন হুঁ হূণ
করে কেঁদে দিল । ফোঁপাতে ফোঁপাতে কেবল বলল
-তুমি......তুমি আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবে ? বল পারবে?
আমার বুকের ভিতর টাও হুঁ হুঁ করে উঠল । সত্যি কি পারবো?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.