নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

https://www.facebook.com/allen.saiful

অ্যালেন সাইফুল

An inhuman never explain himself.

অ্যালেন সাইফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

তেলা মাথায় আর কত তেল দেবেন?

২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:০৮


আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী উদ্দেশ্যহীন ভাবে হাটাহাটি করাই
অপরাধ।
সেখানে রাতে হাটা অনেক বড়সড় অপরাধই বলা যায়।
কিন্তু মনের খোরাক জোগাতে বারবার এই আইন ভঙ করে অপরাধী
হতে
হয়েছে।
সাজা যে পাইনি তেমনটাও নয়। এই পাগলামির জন্য জিবনের মূল্যবান
১১
টি ঘন্টা কাটাতে হয়েছে পুলিশি হেফাজতে।
অবশ্য ধরে নিয়ে যাবার সময় পুলিশের হাতের মধ্যে সামান্যতম কিছু
টাকাও যদি গুজে দিতে পারতাম তবে, ওই ১১ ঘন্টা জিবন থেকে
হারিয়ে
যেত না কিন্তু একটা মূল্যবান অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হতে হত।
ভবঘুরে মানুষ, পকেটে সবসময় টাকা থাকে না বলেই হয়ত ওই
অভিজ্ঞতা
থেকে বঞ্চিত হতে হয়নি।
শালার খারাপ মানুষগুলো পুলিশ হয় না পুলিশগুলো খারাপ হয় তা
এখনো
ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি।
ওদের মনে কোন দয়ামায়া নেই। না খেয়ে কষ্ট পাচ্ছিলাম বলে ওসি
স্যার খাবার আনার জন্য যে টাকা দিয়েছিল তাও হাবিলদার মেরে
দিয়েছিল।
হায়রে পুলিশ তোমরা আজিব জিনিস মাইরি!!!
ছেড়ে দেবার আগে ওদের কাছে ওয়াদা করতে হয়েছিল যে, আর
কোনদিন রাতে বাহিরে থাকব না। যদি আবার ধরা পরি তবে সোজা ৮১
ধারায় চালান।
নেশাখোর যতই ওয়াদা করুক না কেন নেশা করা কি ছাড়তে পারে???
পারে না। খোলা আকাশের নিচে সারারাত হাটাহাটি করাও যে আমার
নেশা হয়ে গেছে। আমি যে রাতের নীরবতার প্রেমে পড়ে গেছি। কেন
জানি রাতের অন্ধকার আমায় বারবার কাছে টানতে চায়। এমন এই টান
যে এর দুর্বার আহবান আমি আর ফেলতে পারিনা। ছুটে যেতে হয় ডাক
পেলেই। আর তাইত সময় সুযোগ করে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে এখনও
হুট
করে বেরিয়ে পরি।
সেদিনও হুট করেই বেরিয়ে পরেছিলাম তবে একা নয় কাছের এক বন্ধুর
সাথে। প্রথমত উদ্দেশ্য ছিল একটা চায়ের দোকান। চায়ের দোকানের
জন্য যেতে হল একটা বাসস্ট্যান্ড (নাম বলতে চাচ্ছি না)।
হাতেগোনা
কয়েকটা চায়ের দোকান খোলা। এক দোকানদারকে চা দিতে বলে
বেঞ্চে বসে পরলাম। এমন সময় একলোককে বলতে শুনলাম, "শালার
পাগলের উৎপাতে স্ট্যান্ডে পা ফেলাই কষ্টকর হয়ে উঠছে।"
কথাটা কেমন যেন খটকা লাগল। ঘুরে পিছনে তাকাতেই দেখলাম
কয়েকটা পাগল রাস্তার উপর শুয়ে ঘুমাচ্ছে। (পূর্বপুরুষদের সবাই
পাগলদের
কয়েকটা পাগল বলেই সম্বোধন করত।
কয়েকজন পাগল বলত না, কেননা তাতে তাদের সম্মান ক্ষুন্ন হবে।
পূর্বপুরুষদের সম্মান রক্ষার্থে আমিও কয়েকজন পাগল না বলে
কয়েকটা
পাগল বললাম)
আসলে কেউ না দেখলে বুঝতেই পারবেন না যে, ময়লা রাস্তার উপর,
ময়লা পোশাক পরে, ডাস্টবিনের পচাঁ খাবার খেয়ে পরে পরে এই
ঘুমানোটা কত আরামের। কিছুক্ষনের জন্য নিজেকে মহাপুরুষদের
তালিকায় নিয়ে গেলে দেখবেন, আপনার আর আমার মত মানুষ যেখানে
নরম বিছানায় গড়াগড়ি করেও ঘুম নামক বস্তুটার সন্ধান পায়না।
সেখানে
পাগল ছদ্দনামে আপনার আমার মতই রক্ত মাংসে গড়া একজন মানুষ
সারাদিনের ক্লান্তির শেষে রাস্তার ময়লাকে বিছানা করে
শান্তির
ঘুম ঘুমাচ্ছে। এটাই সৃষ্টিকর্তার নিষ্ঠুরতম খেলা।
পাগল বলে একশ্রেনীর মানুষদের শরীরে লাথি দিয়ে আরেকশ্রেনীর
মানুষদের জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মধ্যাহ্নভোজের,
নৈশভোজের
আয়োজন করি। আমরা আসলে "তেলা মাথায় তেল দিতে খুব পছন্দ
করি।"
যাদের বাসায় ফ্রিজ ভর্তি সুখাদ্য আছে কিন্তু খাবার মানুষ নেই
আমরা
বেছে বেছে তাদের খাওয়ানোর জন্যই উঠে পরে লাগি।
দেখতে সুন্দর ফুটফুটে,ভাল জামাকাপড় পরা, বাবা শিক্ষাবোর্ডের
সিনিয়র অফিসার বলে অপরিচিত বাচ্চাকেও কোলে নিয়ে ইচ্ছেতর
খাবার, খেলনা কিনে দেই। অথচ রাস্তার পাশে অসুস্থ বাচ্চাটাকে
ধুকে
ধুকে মরতে দেখেও সামান্য কটা টাকার ওষুধ কিনে দেবার প্রয়োজন
মনে করিনা।
ওদের জায়গায় নিজেকে ২ মিনিটের জন্য কল্পনা করে দেখুন। ওদের
জন্য ভাবুন, ওদের বাঁচতে দিন, ওদেরকে ওদের মৌলিক অধিকার
থেকে
দয়া করে আর বঞ্চিত করবেন না। তেলা মাথায় আর কত তেল দেবেন?
আসুন সবাই মিলে শপথ নেই যাতে
করে অসহায় মানুষগুলোকে আর ধুকে ধুকে মরতে দেখতে না হয়।
আমরাই
পারি ওদের মুখে হাসি ফুটাতে।
লেখা: অ্যালেন সাইফুল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.