![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফিউরাস নামক প্রানীর তাণ্ডবে ডিবাস্টেড গ্রহ বসবাস অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। ফলে সেখানকার বিজ্ঞানীরা চাচ্ছে তারা তাদের গ্রহের প্রানীদের বসবাস উপযোগী অন্য কোনো গ্রহে স্থানান্তর করবে। নানান গবেষনার পর ডিবাস্টেড গ্রহের বিজ্ঞানীরা পৃথিবী নামক গ্রহটাকে পছন্দ করেছে। কারন এখানকার মানুষের মধ্যে একতা নেই। এদের উপর হামলা করলে এরা কখনই একত্রিত হয়ে ডিবাস্টেড কে প্রতিরোধ করতে পারবেনা। যার ফলে খুব সহজেই পৃথিবীর মালিক হয়ে যেতে পারবে ডিবাস্টেড।
পৃথিবীর মাঝে বাংলাদেশের খুব ক্ষুদ্র একটা সংস্থা সার্চ এনিমির একজন ক্যাপ্টেন আমি। আমরাই প্রথমে বুঝতে পেরেছি যে, ডিবাস্টেড আমাদের গ্রহের উপর আক্রমন করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। সবাইকে সাবধান করে দিয়ে আমরা যখন এই খবরটা প্রথম আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করলাম তখন আমাদের দেয়া তথ্য ভুল বলে একটা আর্টিকেল প্রকাশ করলো সেইফ ওয়ার্ল্ড নামক আমেরিকান এক সংস্থা।
যেইখানে পৃথিবীর প্রানীদের একত্রিত হয়ে ডিবাস্টেড কে প্রতিরোধ করার কথা সেইখানে সেইফ ওয়ার্ল্ড আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক আর্টিকেল প্রকাশ করে যেতে লাগলো তাদের ওয়েবসাইটে। ওদিকে ডিবাস্টেড সবকিছু ঠিকঠাক করে প্রায় প্রস্তুত হয়ে আছে আমাদের উপর আক্রমন করার জন্য। পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের টিম সিদ্ধান্ত নিলো, ইনভেস্টিগেশনের জন্য খুব শীঘ্রই আমাকে আকাশপথে পাড়ি জমাতে হবে ডিবাস্টেড গ্রহের দিকে। ইনভেস্টিগেশনের জন্য আমাকে সিলেক্ট করার কারন, আমি ফিরে না এলে আমার জন্য কেউ চখের জল ফেলবে না। পৃথিবীতে আমার আপন বলতে কেউ নেই।
১০-১০-১৮৮১ তারিখে আমি পৃথিবী থেকে ডিবাস্টেড গ্রহে পাড়ি জমালাম। সার্চ এনিমি টিম থেকে আমাকে দেয়া হলো, অত্যাধুনিক এক স্পেশশিপ যেটা কোনো ধরনের শব্দ ছাড়াই চলতে পারে, আলফা নামক ছোট এক পকেট রোবট যেটা আমাকে মহাবিশ্বের সকল ধরনের প্রানীর ভাষা বুঝতে ও বলতে সাহায্য করবে এবং সেইফ ল্যান্ডিং লোকেশন সনাক্ত করতে সাহায্য করবে। আমার যাবার প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো ডিবাস্টেড এর বিজ্ঞানীদের বানানো সকল ধরনের আক্রমনের প্যাটার্ন ধ্বংস করা নয়ত সাথে করে নিয়ে ফিরে আসা। পৃথিবী ত্যাগ করার ৪৭.৪৯ ঘন্টা পর মহাবিশ্বের শেষ প্রান্তে আমি ডিবাস্টেড কে খুঁজে পেয়েছিলাম। এরপর আলফার মাধমে সেইফ লোকেশন সনাক্ত করে যখন আমি ল্যান্ড করলাম তখন ডিবাস্টেডে মধ্যরাত ছিলো। নতুন গ্রহে এসে অন্ধকারে নেমে পড়াটা ঠিক হবেনা বলে স্পেশশিপের মধ্যেই রাতটা কাটিয়ে দিলাম।
সকাল হয়েছে! নতুন এক গ্রহে নতুন এক সকাল। এই প্রথম পৃথিবীর বাইরে কোনো গ্রহের মাটিতে আমি পা রাখলাম। চারিদিকটা অদ্ভুত সুন্দর। এতো সুন্দর একটা গ্রহের প্রানীরা অন্য একটা গ্রহকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে এটা বিশ্বাস করতেই আমার ভীষন কষ্ট হচ্ছে! হঠাৎ আমার একটু সামনে কোনো প্রানের অস্তিত্ব উপলব্ধি করতে পেরে আমি আলফাকে নিয়ে হেঁটে যেতে থাকলাম। এরই মধ্যে কেউ একজন আমার বাম পায়ের হাটুর নিচে একটা বল্লম নিক্ষেপ করলো। তীব্র যন্ত্রনা শুরু হলো ক্ষনিকের মধ্যে। বুঝতে পারলাম আমি ধরা খেয়ে গেছি। মনে মনে ভেবে নিলাম হয়তো এখনই মেরে ফেলা হবে আমাকে।
আলতো করে চোখ খুললাম। চারিদিকে তাকানোর পরে মনে হলো আমি ডিবাস্টেডে আছি। কিন্তু আশেপাশে কেউ নেই কেন? আমি না ধরা পড়েছিলাম! উঠে দাঁড়াতে গিয়ে বুঝলাম আমার হাত পা বাঁধা। হ্যাঁ, ঠিকই আছে। আমি সকালে যাদের হাতে ধরা পড়েছিলাম তারাই আমাকে অজ্ঞান করে এখানে নিয়ে এসে বেঁধে রেখেছে। সময় সুযোগ করে সবাই এসে একত্রিত হয়ে আমার বিচার করবে। ডিবাস্টেডের প্রানীরা একতাবদ্ধ। এরা সবকিছুই মিলেমিশে করে। এদের মধ্যে কোন প্রকার ভেদাভেদ নেই। ইশ! পৃথিবীর মানুষগুলো যদি এমন একতাবদ্ধ হতো!
সন্ধ্যা নেমে এসেছে। কুপি হাতে নিয়ে কয়েকজনকে আমার দিকে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। এই প্রথম আমি ডিবাস্টেড গ্রহের কোনো প্রানীকে সামনাসামনি দেখতে পাবো ভাবতেই ভালো লাগছে। এদের সম্পর্কে আমার টিম আমাকে যা বলেছে তা হলো, এরা মানুষের মত দেখতে হলেও মানুষ না। কারন এদের শরীরের ক্রমোজোমের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।
মানুষের মত দেখতে ছোটবড় অসংখ্য প্রানী এখন আমার সামনে বসে আছে। কেউ কেউ দুই হাতে ঠোঁটের দুই প্রান্ত চেপে ধরে ঠোঁট বাকিয়া বাকিয়ে বাঁশি বাজাচ্ছে। এ বাঁশির সুর যেন মানুষের সব কিছু ভুলিয়ে দিতে সক্ষম। আমি সবকিছু ভুলে মুগ্ধ হয়ে বাঁশির সুর শুনছি। হঠাৎ একজন চিৎকার করে উঠল। থাম। থাম সবাই। মুহূর্তের মধ্যে পুরো ডিবাস্টেড যেন স্তব্দ হয়ে গেলো। বুঝতে বাকি রইলো না যে ইনিই এদের প্রধান। আমি বললাম,
-জনাব, আমি পৃথিবী থেকে এসেছি। আমাকে পাঠানো হয়েছে ফিউরাসের হাত থেকে আপনাদের রক্ষা করার জন্য।
রাজা হাসলো। ভয়ংকর শব্দ করে হেসে অবজ্ঞার সুরে বললো,
-ফিউরাসের হাত থেকে তুই আমাদের রক্ষা করবি?
-হ্যাঁ, জনাব। আমি ফিউরাসকে মেরে আপনাদের রক্ষা করবো এবং পৃথিবীকে ধ্বংস করার জন্য আপনারা যে প্যাটার্ন বানিয়েছেন সেটা নিয়ে গিয়ে পৃথিবীকেও রক্ষা করবো।
রাজা চিৎকার করে বললো, সবাই হাসো। মজা নাও সবাই এই কুলাঙ্গারের থেকে। এ তোমাদেরকে মজা দিতে এসেছে।
রাজার কথা শুনে পাশ থেকে আরেকজন বলে উঠল, পাথর ছুড়ে মারো এই বদমায়েশের দিকে। কথাটা বলার সাথে সাথে কমপক্ষে ৫০ টা পাথর এসে পড়ল আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায়।
এবার আমি রাজার কাছে হাত জোড় করে বললাম,
-দয়া করে আমাকে একবার সুযোগ দিন। হয়ত আপনার দেয়া এই একটা সুযোগের জন্য রক্ষা পেতে পারে মহাবিশ্বের দুইটা গ্রহ। দয়া করুন।
রাজা এবার অনেকক্ষন ভাবলেন এবং অবশেষে বললেন,
-ঠিক আছে। চেষ্টা করো, লড়াই করো ফিউরাসের সাথে। এখান থেকে সোজা ওই পাহাড়ের গুহায় আছে ফিউরাস। দেখা যাক, কেমন বীর তুমি। যাও, এক্ষনি যাও। সরো আমার চোখের সামনে থেকে।
রাজার আদেশ পেয়ে আমি দুটো গ্রহকে রক্ষা করার ব্রত নিয়ে ফিউরাসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে করতে একসময় হেরে গেলাম। পৃথিবী থেকে এসে ডিবাস্টেড গ্রহের এক পাহারের গুহায় মরে গেলাম আমি। কিন্তু জেনে যেতে পারলাম না, কে জিতেছিলো সেদিন। পৃথিবী, ডিবাস্টেড নাকি ফিউরাস নামক এক দানব!
তবে জয় যারই হোকনা কেন, আমিও হারিনি। হেরে তো গেছিলো পৃথিবীতে থাকা মানুষ নিয়ে গঠিত আমার টিম। কেননা পৃথিবী ছেড়ে চলে আসার পর তারা একবারও আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। এরা আসলেই একজন আরেকজনের থেকে বিচ্ছিন্ন। একতা নেই এদের মধ্যে। আর এই জন্যই এদের ধ্বংস অনিবার্য।
ডিবাস্টেড গ্রহের বিজ্ঞানীরা ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলো।
[জীবনে প্রথম সাইন্স ফিকশন লিখলাম। ভুল ত্রুটি ক্ষমার যোগ্য।]
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২০
অ্যালেন সাইফুল বলেছেন: শুভেচ্ছা জানবেন।
৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫০
সমূদ্র সফেন বলেছেন: আপনি কিভাবে হেরে গেলেন,? হাতে কি তলোয়ার না অন্য কিছু ?,নাকি বুধিমত্তার যুদ্ধ । আলফা রোবট কোথাই ,?।শুরুটা ভালো ছিল ।
একতা প্রকাশ করলাম ।কারণ প্রানী হিসবে আমরা একতাবদ্ধ।
৪| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৬
অ্যালেন সাইফুল বলেছেন: সফেন ভাই, এটা গল্প। মনে হয়নি যে এতো ব্যাখ্যা দেবার প্রয়োজন ছিলো। আমি একটা রহস্যের মধ্য দিয়ে শেষ করতে চেয়েছি।
গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৫| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৪
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: আর একটু বিষদ বর্ণনা করলে গল্পটা আরো উপভোগ্য হতে পারতো।
শুভকামনা রইল।
৬| ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৫৩
অ্যালেন সাইফুল বলেছেন: ভালবাসা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০১
তাওহিদ হিমু বলেছেন: প্রথমবার হলেও যথেষ্ট সুন্দর হয়েছে