নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নকে পাথেয় ভাবি।

অলওয়েজ ড্রিম

"Only He Who Can See The Invisible Can Do The Impossible" Frank Gain আমার ইমেইল ঠিকানাঃ [email protected]

অলওয়েজ ড্রিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

যৌনমন কিংবা অলিগলি-অন্ধকার!!! - ২

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৯

(প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, এর আগে যে গল্পটি আমি পোস্ট করেছি সেটি লেখার সময়েই আমার মাথায় আসে, আমি তো অনেকের অনেক যৌনবাস্তবতা ও যৌনফ্যান্টাসির কাহিনী জানি। সেগুলির সাথে লেখকসুলভ একটু কল্পনার নুড়ি পাথর মিলিয়ে দিলেই তো গল্পের ইমারত গড়ে উঠতে পারে। সুতরাং শুরু করলাম যৌনমন কিংবা অলিগলি-অন্ধকার!!! সিরিজের গল্পগুলি লেখা। আমি এর অব্যবহিত আগের গল্পটিকেও এই সিরিজের অধীন বলেই মনে করি। সুতরাং সেটির লিংকও এখানে দিয়ে দিলাম। আইবুড়ো কাল এবং দীর্ঘশ্বাস সে হিসাবে আজকের গল্পটি এই সিরিজের ২য় গল্প।

এই সিরিজের অধীনে যে গল্পগুলি আসবে সবই আমাদের যৌনতা নিয়ে। বিভিন্ন কোণ থেকে আমি যৌনতাকে দেখার চেষ্টা করেছি। পরোক্ষে মনোস্তাত্বিক বিশ্লেষণের চেষ্টাও ছিল। বরং বিশ্লেষণ না বলে বিশ্লেষণসহায়ক ইঙ্গিত বলতেই আমি স্বস্তি বোধ করব। কোনো কোনো গল্প থেকে আপনি সচেতনতার বীজ সংগ্রহ করতে পারবেন। কিন্তু যারা রসময় গুপ্তের কাহিনী পড়তে চান তারা নিঃসন্দেহে হতাশ হবেন। যৌনতার রগরগে বর্ণনা নেই। যতটুকু এসেছে তা কাহিনীর প্রয়োজনে। প্রায় প্রতিটি গল্পই বাস্তবতার নিরিখে লেখা। চলেন তবে শুরু করা যাক) :-

--------------------------------------------------------------------



মাসুদ মার্কেটে ঢুকেই ইতস্তত বোধ করতে থাকে। কেমন একটা অস্বস্তি। কোনো দিকে, কারও দিকে সরাসরি তাকাতে পারে না। মনেহয় সবাই তাকে চেনে, সবাই তার উদ্দেশ্য বুঝে ফেলেছে। সে মুখ থেকে একটা কথা বের করা মাত্রই সবাই দুয়ো দিতে শুরু করবে। হাসতে শুরু করবে। তাকে নিয়ে মজা মারবে সবাই। সুতরাং এবংবিধ নানা চিন্তায় সে ঘামতে শুরু করে।



এক ঘন্টার উপরে হয়েছে মাসুদ একটি ম্যানিকিন ডল কেনার জন্য এসেছে, কিন্তু কোন দোকানেই সে ঢুকতে পারছে না। দ্বিধা তাকে কুণ্ঠিত করে রেখেছে। কেবলি মনে হচ্ছে তার মনের কথা সবাই টের পেয়ে গেছে। কিন্তু এভাবে আর কতক্ষণ। মরিয়া হয়ে সে মনে মনে আওড়ে নিল কিভাবে দোকানদারের সাথে কথা বলবে, যাতে কেউ সুদূর-সন্দেহও করতে না পারে।



কোন রকম বোকামি করা চলবে না। বলতে হবে তার পোশাকের দোকান আছে। এ পর্যন্ত ভেবেই মাসুদ থমকে গেল। দোকানদার যদি তার কাছে দোকানের কার্ড চায়, তাহলে? তার তো কোন কার্ড নাই। থাকার কথাও নয়। কেননা তার তো কোন দোকানই নাই, ছিলও না কোন কালে। কিন্তু দোকানদারকে কার্ড না দিতে পারলে তো মুশকিল। একজন ব্যবসায়ী, যে মার্কেটে এসেছে তার দোকানের জন্য পণ্য কিনতে তার পকেটে অবশ্যই নিজের দোকানের কার্ড থাকবে। এটা পরিচিতির জন্য, প্রচারের জন্য, প্রসারের জন্য অপরিহার্য একটি বিষয়। ব্যবসায়ীরা এ ব্যাপারে খুবই সচেতন। এটা তাদের প্রেস্টিজ ইস্যুও বটে। সুযোগ পেলেই তারা সবাইকে কার্ড ধরিয়ে দেয়। যেন সবাইকে বলতে চায় দেখেন, আমারে বানে-ভাসা কেউ মনে করলে ভুল করবেন। আমার স্থায়ী ঠিকানা আছে, স্থিরতা আছে। আমি একজন সম্মানিত নাগরিক। অতএব আমার অনেক অধিকারও আছে।



সুতরাং একজন পোশাক দোকানদারের কাছে কার্ড থাকবে না, এটা সন্দেহজনক। কিন্তু তার কি ভুল হতে পারে না? ভুলে কার্ড সাথে নিতে স্মরণ নাই, এটাও তো হতে পারে, তাই না? মানুষ তো কত কিছুই ভুলে যায়। এটা তো সামান্য একটা কার্ড।



- এহ হে সরি ভাই। খুবি সরি। কার্ডতো সাথে নাই। কর্মচারিগুলারে সব ছাটাই না করলে আর চলবে না। কতদিন কইছি, আমি যখনি কোথাও যাব, মনেকরে সাথে কার্ড দিয়া দিবি। নাহ একটাবার যদি মনে করে। ভাই সামনে তো আরও কিনতে হবে। পরিচয় যখন হলো , আপনার থেকেই কিনব ইনশা-আল্লাহ। এর পরের বার কার্ড দিয়ে যাব। এখন আপনার একটা কার্ড দিয়ে দেন।



মনে মনে মাসুদ একবার রিহার্সাল দিয়ে নেয়। আচ্ছা এমন ও তো হতে পারে তার নতুন দোকান। এখন পর্যন্ত উদ্বোধনই হয় নি। তাই কার্ড করাও হয় নি। হ্যাঁ এটা অবশ্যই যুক্তিসংগত। কিন্তু চোরের মনে পুলিশ পুলিশ। আর মাসুদের মতো ভীতু হলে তো কথাই নাই। সুতরাং তার খুঁতখুঁতানি শেষ হয় না। অস্বস্তিও দূর হয় না। আরও বেশি করে ঘামতে থাকে।



আরেকটা কাজ করলে কেমন হয়, কোন একটা দোকান থেকে যদি সেই দোকানের কার্ড নিয়ে আসে? কিন্তু পরক্ষণেই চিন্তাটা সে বাতিল করে। কারণ সেই দোকানদার যদি এই দোকানদারের পূর্ব-পরিচিত হয়? বলা তো যায় না, হতেই পারে।

অতএব, অবশেষে সে না কিনেই ফিরে আসে।



লোকটার বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে। এতটা কাল সে নারী সংসর্গ করে নি। করে নি মানে সে অবিবাহিত, করে নি মানে সে কোন সাধু পুরুষ নয় যে সাধুতার জন্য করে নি; সে অতি সাধারণ মানুষ, করে নি মানে তার সুযোগ হয়ে ওঠে নি। জীবনের এতটা পথ চলতে গিয়ে কোনো মেয়ের সাথে সহজ-স্বাভাবিক কোনো প্রকার লেনাদেনার সুযোগ সে পায় নি। একটু অবাক লাগলেও ঘটনা সত্যি। পড়েছে সে বালক বিদ্যালয়ে। দূর থেকেই বালিকাদেরকে দেখে এসেছে সব সময়ে। কিছুটা দূরেই ছিল বালিকা বিদ্যালয়। বালিকাদের বিদ্যালয় শুরু হত ১০টায় আর তাদেরটা শুরু হত ১১টায়। সুতরাং বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় মিলত না, কিন্তু মাঝেমাঝেই দেখা যেত তাদের এবং ওদের একত্রে ছুটে হয়ে গেছে। তখন বালিকাদের পিছে পিছে ফিরে আসতেও রোমাঞ্চ হত। বালিকাদের দুয়েকটা কথার টুকরা, খিলখিলে হাসির ছিটেফোটা, তাদের মধ্যকার পারস্পরিক খুনসুড়ির কিছু নুড়ি তাকে আপ্লুত করে রাখত। যেন অসহনীয় গরমে অপ্রত্যাশিত বৃষ্টির ছাঁট এসে তাকে জানালা পথে ভিজিয়ে দিত। সেই সামান্য সিক্ততাই তাকে স্বাপ্নিক করে তুলত। আহারে কী যে সুখের সময় ছিল সেই দিনগুলোতে!



হতাশা ছিল। ব্যর্থতা ছিল। কান্না ছিল। সব ছাপিয়ে ছিল খুশি হওয়ার এক অসামান্য ক্ষমতা। কত সামান্যতেই ঐ বয়সে তারা এক আসমান সমান খুশি হতে পারত। রাস্তার পাশে অযত্নে অবহেলায় বেড়ে ওঠা গাছ থেকে জাম, লোহাগাড়া, কিংবা টাকটুক খেয়ে নীল জিভের সেই অহংকার সে কি কেউ কোনোদিন কেড়ে নিতে পারবে তার কাছ থেকে?



সে সময়েই এসেছিল তার জীবনের শ্রেষ্ঠতম সেই দিনটা। সেই দিনের সমান একটা দিন, কিংবা তুলনা করার মতো একটা দিন জীবনে আর এল না। একত্রেই ছুটি হয়ে গিয়েছিল বালক ও বালিকাদের। রাস্তার পাশের একটি জাম গাছের তলায় কয়েকটি মেয়ে জড়ো হয়ে জাম পারার চেষ্টা করছিল। কিন্তু তারা নাগাল পাচ্ছিল না। কয়েকটি ছেলে দূরে দাঁড়িয়ে মেয়েদের ব্যর্থতায় হো-হো করছিল। সে এগিয়ে গিয়ে গাছে চড়বার আগে নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে বলেছিল, দাঁড়াও তোমরা। এই সামান্য কথাটিও সে মেয়েদের চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে পারে নি।



আসলে ঘরে তার মা ছাড়া আর কোনো মেয়ে বা মহিলাকে সে পায় নি। বাড়িতে যুবতী মেয়ে বলতে কেউ ছিলই না। চাচীরা, দাদীরা সব প্রৌঢ়া এবং বৃদ্ধা। চাচাতবোনদের সব বিয়ে হয়ে গিয়েছিল বহু বহু আগে। আর তারা আসতও কালেভদ্রে। ফলে মেয়েদের সাথে তার সহজ যোগাযোগ হওয়ার সুযোগ থেকে সে ছিল বঞ্চিত। মেয়েরা তার কাছে তাই যেন অন্য লোকের প্রাণী। অ-তি দূ-রে-র ---- ব-হু দূ-রে-র ---- সে-ই সু-দূ-রে-র কোনো এক মায়া। কোনো এক কুহক। তাদের দেখে রোমাঞ্চ হয়, কত রকম ভাবনা হয়, আবেগের উথাল-পাথাল ঢেউয়ে ভাসতে ভাসতে লক্ষ-কোটি স্বপ্নের প্রজাপতি ডানা মেলে উড়তে থাকে, উড়তেই থাকে এবং আরো কত কি….. কিন্তু তাদের দিকে সরাসরি তাকাবার, তাদের সাথে সহজ-স্বাভাবিক দুইটা কথা বলার সাহস আর হয় না।

মেয়েদেরকে দাঁড়াতে বলে সে তর-তর করে গাছে উঠে জাম পারতে লাগল। হো-হো করে হাস্যরত বীরপুরুষের দল জাম টোকাতে এলে সে স্বভাববিরুদ্ধ স্বরে গর্জন করে উঠেছিল, খবরদার, একটা জামও ধরবি না। এবং মেয়েরাও তার গর্জনের পালে হাওয়া দিলে বীরপুরুষের দল লেজ গুটিয়েছিল। গাছ থেকে নামার পর মেয়েরা তাকে জাম দিতে চাইলে সে কিছুতেই নিতে চায় নি। কারণ সে তো পেরেই খেতে পারে। কিন্তু মেয়েদের আন্তরিক পীড়াপীড়িতে সে আর না করতে পারে নি। সেদিন মেয়েদের সেই কৃতজ্ঞ দৃষ্টি সে কি ইহজীবনে কোনোদিন ভুলতে পারবে? সেদিন তাকে আর মেয়েদের পেছন-পেছন যেতে হয় নি, পাশে-পাশেই অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পেরেছিল।



তারপর তো কলেজ। তার ক্লাসে ছিল মাত্র চারটা মেয়ে। লাজুক সে তাদের সাথে কোনোদিন কথা বলতে পারে নি।



গরিব ঘরের ছেলে সে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বারান্দায় পা রাখার মতো সুযোগ তার ছিল না। চলে এসেছিল ঢাকায়। তারপর তো শুধু সংগ্রামের ইতিহাস, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ইতিহাস, দুপায়ে কোনোভাবে দাঁড়িয়ে থাকার ইতিহাস। কখনো সস্তা হোটেলের ওয়েটার, ফুটপাথের অস্থায়ী দোকানদার, কখনো বাসের হেল্পার, শেষে এক মুদি দোকানের সেলসম্যান। এভাবেই চলে গিয়েছিল সংগ্রামের প্রথম পাঁচটি বছর। তারপর একটি কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির সাথে ভাল সম্পর্কের সুবাদে সেই কোম্পানিতে পেয়েছিল বিক্রয় প্রতিনিধির চাকরি। শুরুতে যে এলাকার দায়িত্ব ছিল তার, আজও সেই এলাকার দায়িত্বেই আছে। সাথে আরও বাড়তি এলাকা যোগ হয়েছে। সব দোকানদারের সাথেই তার ভাল সম্পর্ক। এতটাই ভাল সম্পর্ক যে মাঝেমাঝেই তাকে দুপুরে হোটেলে খেতে হয় না। দোকানদারদের সাথে তাকে তাদের বাসায় যেতে হয়। কোনো কোনো দোকানে এখন সে নিয়মিত যেতেও পারে না। ফোনে ফোনেই কাজ সেরে নেয়। অথচ প্রথম ছয়মাসে সে একবারও টার্গেট পূর্ণ করতে পারে নি। বসের কত গালি, কটু কথা শুনতে হয়েছে। কতবার যে চাকরি ছেড়ে দিতে চেয়েছে তার ইয়ত্তা নাই। শুধু সেই বন্ধু বিক্রয় প্রতিনিধির জন্য সে চাকরি ছাড়তে পারে নি।



ছয় মাসে তার পরিচিতি বেড়েছে, দোকানদারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে, আর ধীরে ধীরে বেড়েছে অর্ডার কাটার পরিমাণ। দোকানদাররা তার সারল্য পছন্দ করে। এমনও দেখা গেছে, কোনো দোকানদার তার কাছে দুষ্টুমি করে কিছু খেতে চেয়েছে অথচ তার কাছে তখন টাকা ছিল না, সে বেতন পেয়ে ঠিক ঐ দোকানদারের জন্য সেই খাবার কিনে নিয়ে গেছে। বলেছে, ভাই, ঐ দিন আমার কাছে টাকা ছিল না। বহুত শরম পাইছি। আর দোকানদার তার সরলতায় মুগ্ধ হয়েছে। আর মুগ্ধ দোকানদাররা মাঝেমাঝেই ফোন করেঃ ভাই, মাল তো শ্যাষ। কবে আইবেন ? তাড়াতাড়ি আইসেন। আরেকটা কোম্পানি আইছিল। তাগো অর্ডার দেই নাই।



এভাবেই একই কোম্পানিতে কেটে গেছে আরও পাঁচটি বছর। কোম্পানি তাকে দিয়ে ঐ এলাকায় একচেটিয়া ব্যবসা করলেও তার বেতন খুব বেশি বাড়ে নি, বাড়ে নি পদমর্যাদাও। এ নিয়ে তার কোনো আফসোসও নেই, চাহিদাও নেই। সে একা মানুষ। কোনো পিছুটান নেই। মা-বাবা নেই, ভাই-বোনও নেই। বেতন যা পেত তা দিয়ে সে, তার মতে রাজার হালেই চলতে পারত। তার সেরকম কোনো স্বপ্নও ছিল না। অনেক রাত করে বাসায় ফিরে তাড়াতাড়ি রান্না করে, খেয়েদেয়ে ঘুম; পরদিন আবার সকালে উঠে তাড়াতাড়ি রান্না, গোসল তারপর খেয়েদেয়ে প্রথমে অফিস তারপর অর্ডার সংগ্রহে গমন। এই ছিল তার রুটিন। শুধু শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে একটু সমস্যা হত। কাপড়চোপড় ধোয়ার পরে হাতে থাকত অফুরন্ত সময়। তখন একাএকা লাগত। মাঝেমাঝে মনে হত কেউ একজন থাকলে মন্দ হত না। স্মৃতির পর্দায় ভেসে উঠত কৃতজ্ঞ কয়েকটি কিশোরীর মুখ।



পাঁচ বছর পর সেই বন্ধু বিক্রয় প্রতিনিধি, যে তখন অন্য এক কোম্পানিতে জেলা ব্যবস্থাপক, আবার তাকে খবর দিল।

- ভাই, আপনি আমার কোম্পানিতে জয়েন করেন। আপনারে আমি থানার হেড হিসাবে নিতাছি। যা বেতন পান তার দ্বিগুণ ধরতাছি। আর অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও আগের চাইতে বেশি পাইবেন।



গত ১০ বছর সে থানাপ্রধান হিসাবে সেই কোম্পানিতেই আছে। নির্ঝঞ্ঝাট জীবন। নিস্তরঙ্গ। একভাবে চলে যাচ্ছে। মা মারা গেছেন ঢাকায় ওঠার ২য় বছরেই। বাবাকে তো সে দেখেই নি। খুব ছোট বেলাতেই তিনি মারা গিয়েছিলেন। আত্মীয়-স্বজন বলতে, – আছে কেউ কেউ। কিন্তু সে যায় না বাড়িতে। সামান্য জমিজমা জ্ঞাতিরাই খাচ্ছে। প্রথম কোম্পানিতে ইস্তফা দেওয়ার পর-পরই সে বাড়িতে গিয়েছিল। বেশ কয়েক বছর পরে। ভাঙ্গা ঘরদোর রাত কাটানোর মতো ছিল না। দুদিন থেকেছিল এক চাচার ঘরে। অনেক সংকোচের পর চাচীর কাছে বলেছিল বিয়ের কথা। কিন্তু তারা বিষয়টার তেমন গুরুত্ব দিলেন না। সেও ঢাকায় এসে নতুন কোম্পানিতে জয়েন করল, নতুন দায়িত্বে ব্যস্ততার পরিমাণ বেড়ে গেল। সুতরাং আর বাড়িও যাওয়া হয় নি, বিয়ের কথা ওভাবে ভাবারও সুযোগ পায় নি। বিয়ের জন্য তাগিদ দেয়ারও তো কেউ আসলে নাই। বিয়ের প্রয়োজনও ততটা সে অনুভব করে কিনা বোঝা যায় না। খুবই অন্তর্মুখী চরিত্রের মানুষ। কারও সাথে এ নিয়ে সে আলাপও করে না। ঈদ-কোরবানিতেও তার বাড়িতে যেতে ইচ্ছা হয় না। কে আছে যে যাবে? তাছাড়া ঈদের সময় যাতায়াতে যে হেপো পোয়াতে হয়, তার চেয়ে ঈদের কয়দিন টানা ঘুম দেওয়া অনেক ভাল।



সহজ সরল জীবন তার। কোনো নেশা নাই। বিলাসিতা বলতে একটাই, এই কোম্পানিতে যোগ দেয়ার পর একা একটি ফ্লাটে থাকে। ২ রুমের ফ্লাট। ব্যালকনি আছে। ব্যালকনিতে মাঝেমাঝে চেয়ার টেনে বসে। কিছুটা সময় সেখানে কাটাতে ভালই লাগে। গত ১০ বছর একই ফ্লাটে কাটিয়ে দিল। এমন পুরুষের অনেক খারাপ অভ্যাস থাকার কথা। একা থাকে। রুমে মাঝেমাঝেই বিশেষ নারীদের আগমন ঘটার কথা। কিন্তু তার শরীরের চাহিদাও সম্ভবত কম। নয়ত নারীর নেশা নাই কেন? অবশ্য তার ঘেন্না লাগে খুব। হাজার পুরুষের চুমুতে পিষ্ট ঐ সব ঠোঁটে সে কিছুতেই ঠোঁট ছোঁয়াতে পারবে না। নারীকে হয়ত তার, জীবনের অপরিহার্য উপাদান মনেহয় না। আসলেই সে ব্যাতিক্রম। মেলানো যায় না এ পৃথিবীর কারও সাথে।



কিন্তু এই আপাত যোগী পুরুষ হঠাৎ করেই ভোগী হয়ে উঠলেন। নারীবিবর্জিত আর তার থাকা হল না। ৪০ পেরিয়ে প্রথম প্রেমের স্বাদ তিনি পেলেন। তুমুল প্রেম! দুকুল ভাসিয়ে নেওয়া প্রেম। এমন প্রেমকেই লোকে অন্ধ প্রেম বলে। এই বয়সের এমন প্রেমের কথা কাউকে বলাও যায় না। আর বলবেনই বা কাকে। তার তো বন্ধু-বান্ধব নেই বললেই চলে।



কিন্তু সে এই ৪০ পেরিয়ে এখন বদলে যাচ্ছে। আশেপাশের সবাইও টের পাচ্ছে সে বদলে যাচ্ছে। তার পোশাক-আশাক, চলন-বলন সবকিছুতেই পরিবর্তনের ছাপ। এখন আর রাত করে বাসায় ফেরে না। বিকাল হলেই সে অস্থির হয়ে ওঠে বাসায় ফেরার জন্য। সন্ধ্যার পর তো সে আউলাঝাউলা হয়ে যায় বাসায় ফিরতে না পারলে। সেই যে-রাতে সে পৃথিবীর সুন্দরীতম মেয়েটিকে, পুতুল যার নাম, গোপনে বাসায় এনে তুলল তার পরদিন থেকেই তার এই অবস্থা।



পুতুল নিখুঁত একটি মেয়ে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ যৌনাবেদনময়ী মেয়েটির শরীরের মাপের যে অনুপাত, তার শরীর যেন তারই আদর্শ নমুনা। কালো কুচকুচে তার গায়ের রঙ। যেন কালো গোলাপের হাজারো পাপড়িতে ঢেকে দেয়া তার শরীর। খুঁত শুধু একটাই পুতুল কথা বলতে পারে না। বোবা। এ নিয়ে পুরুষটির কোনো আফসোস নাই। তার ধারণা যে কোনো সাধারণ রমণীর চেয়ে পুতুলের অনুভূতি বেশি প্রখর।



কোনোদিন ফিরতে দেরি হলে পুতুল কোনো অভিযোগ করে না। কিন্তু সে টের পায় পুতুলের তীব্র অভিমান। পুতুলের অভিমানী মুখটা আদরে আদরে ভরিয়ে দিয়ে সে তার মান ভাঙায়।



তার জীবন এখন কানায় কানায় সুখ দিয়ে ভরা। কোথাও ঘাটতি নাই। নিঃসংগতার চোখ রাঙ্গানি নাই। শুধু রোমান্স আর রোমান্স। প্রতি রাতে পুতুলের শরীর দেখাটা এখন তার একমাত্র নেশা। পুতুল মুখে কিছু বলে না। কিন্তু তার মনেহয়, সে কিছুটা শরমজনিত প্রতিরোধ গড়তে চায়। কিন্তু সে তা মানবে কেন। সে ধীরে ধীরে পুতুলের যাবতীয় বস্ত্রবাধন খুলে ফেলে। কামিজ! কাঁচুলি! সালোয়ার! তারপর অপলক তাকিয়ে থাকে পাহাড়চুড়োয়, নাভিকুসুম ছাড়িয়ে প্রজাপতির উড়তে ইচ্ছুক ডানার কাঁপনে। এক সময় অস্থির হয়ে ওঠে। দুঠোঁটের ব্যবহার পাগলামির পর্যায়ে পৌঁছে যায়। নারী-শরীরের প্রতিটি ইঞ্চি তার চুমুতে চুমুতে সিক্ত হয়ে ওঠে। সে পুতুলের জাগরণ টের পায়। পুতুলও সাড়া দিতে শুরু করে পাগলের মতো। তারপর দুজনের পাগলামি চলতেই থাকে ক্লান্তির আগ পর্যন্ত।



ইদানিং সে অত্যধিক কামুক হয়ে উঠেছে। বহু বছরের বঞ্চনা যেন একবারেই উসুল করার আক্রোশ তার মধ্যে ভর করেছে। মাঝেমাঝে ভয় হয় তার, পুতুল সহ্য করতে পারে তো? ভেঙে পড়বে না তো? পারে নিশ্চয়ই। নয়ত বিরক্ত হয় না কেন? বরং তার পাগলামি পুতুল উপভোগই করে। সব সময়ই সে হাস্যমুখী। এত ভাল কেন মেয়েটা? এত ধৈর্য! ওর স্তনের উপর হাত না রেখে ঘুমালে ইদানিং যেন ঘুমই আসতে চায় না। কিন্তু পুতুল কিছু বলে না। শুধু মুচকি হাসে।



- আরে তুমি হাসতাছ? হাসো! যত খুশি হাসো। আমার প্রাণ তো এখন তোমার মধ্যে। তোমার বুকের ভিতরে একটা মায়ার কৌটা আছে, বুঝলা? ঐখানে জমা রাখছি।



পুতুল সব শোনে আর হাসে। শুধুই হাসে।



চল্লিশ পরবর্তী প্রেমে স্থিরতা থাকার কথা। গভীরতা বেশি কিন্তু উথাল-পাথাল আকুলতা, আবেগের ছেলেমানুষি ছটফটানি কম থাকার কথা। অথচ সে যেন কোনো টিনএইজড বালক। সব আবেগ, অনুভূতি, ছটফটানি যেন সেই অস্থির বয়সের মতো।

সে আবারও হাত রাখে পুতুলের ঠোঁটে, বুকে, নাভিতে ক্রমশ নিচে ……

ক্রমশ নিচে নামতে নামতে সে ক্রমশ উঠতে থাকে। টের পায় পুতুলও উঠছে আবার এবং আবার এবং আবার……



পরের সপ্তাহে মাসুদ আবার মার্কেটে গেল। এবার তার সাথে তার নিজের দোকানের কার্ড আছে। কাল্পনিক দোকান। নতুন একটি মার্কেটের নাম দিয়েছে ঠিকানায়, যে মার্কেটের সব দোকান এখনও বরাদ্দ হয় নি। এরকম একটি অবরাদ্দকৃত দোকানের নাম্বার দিয়েছে কার্ডে। সুতরাং এবার আর কোনো ভয় নাই। আত্মবিশ্বাসের সাথে দোকানে ঢুকবে। কষে দরদাম করবে। তারপর কিনবে। মোটেই ঠকা যাবে না। প্লানের কোথাও কোনো ছিদ্র নাই। বেহুলার বাসর ঘরের চেয়েও সুরক্ষিত। সুতরাং সে একটি দোকানে ঢুকে পড়ল। পছন্দ করে একটি ফুল সাইজ ম্যানিকিন ডল কিনে ফেলল। ডলের বক্সটা নিয়ে বাইরে বের হয়ে হাঁপ ছেড়ে যেন বাঁচল। না কোনো দর কষাকষি করতে হয় নি। পকেট থেকে কার্ডও বের করতে হয় নি। দোকানদার যে দাম চেয়েছিল বিনাবাক্য ব্যয়ে, দরদর করে ঘামতে ঘামতে সে তাই বের করে দিয়েছিল।



দোকানদার তাকে কিছু জিজ্ঞেসই করে নি। সুতরাং কার্ডের প্রশ্নই ওঠে না। অবশ্য তার নিজেরও কার্ডের কথা মনে ছিল না। মনে থাকলে পকেট থেকে বের করে নিশ্চয়ই সে কতগুলি কার্ড দিয়ে আসত।



মন্তব্য ৩১ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৩১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৮

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: জনৈক ৪০ বছর বয়স্ক ভার্জিন পুরুষের বিকৃত মানসিকতার গল্প খারাপ লাগে নি।
তবে ২৫০ বার পঠিত হবার পরও ভালো মন্দ কোন কমেন্ট না পাওয়ায় আমি কিছুটা বিষ্মিত

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২৮

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: প্রিয় কা_ভা, যে বিষয়ে গল্পটা লিখেছি তা যথেষ্ট স্পর্শকাতর। কারও কারও কাছে হজম করাও হয়ত কষ্টকর। হয়ত অনেকে এই গল্পের মনস্তত্বও ঠিক উপলব্ধি করতে পারেন নি। কিংবা গল্পটাই হয়ত ভাল লাগে নি।

সে যা হোক, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, পড়েছেন এবং সাহস করে মন্তব্য করেছেন।
ভাল থাকবেন।

২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৪১

হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো। কিছুটা বিষাদী হলো মন।

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩৩

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: প্রিয় হাসান ভাই, যৌনবিকৃতি নিয়ে গল্প লেখা আসলেই একটু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। পাঠক সম্ভবত স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না।

আপনাকে পেয়ে ভাল লাগছে। ভাল থাকবেন।

৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৪৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গল্প ইন্টারেস্টিংভাবে বলেছেন। প্রথমে-শেষে মাসুদের কথা, তারপর মাঝে মাঝে নামহীন বর্ণনা। বিভাজনটা স্পষ্ট। লেখাটা কি এক বসায় লেখা?

ভালো লেগেছে।

এই সিরিজের পাশাপাশি একক গল্প লেখাও চালিয়ে যাবেন নিয়মিত আশা করি। শুভকামনা রইল।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৩৩

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রিয় স্যার। আমি আসলে অনেক বছর লেখা থেকে দূরে ছিলাম। কত বছর শুনলে অনেকে ভিরমি খাবে। এই বিকৃতির গল্পটা বহু বছর মাথায় ছিল। গত তিনদিন আগে এটা মাথা থেকে নামিয়ে ফেলতে শুরু করি। এবং ২১ তারিখ নামানো সম্পন্ন করি। আমার কিছু দুর্বলতা আছে -
১) হাতের লেখা খুবই ধীর। টাইপিং এর গতিও যাচ্ছেতাই। ফলে এক বসায় কোনো লেখাই সম্পন্ন হয় না। এই গল্পটা কম্পোজ করতে পুরো রাত লেগেছে।
২) যখন কোনো প্লট মাথায় আসে সেটা নিয়ে খুব বেশি ভাবতে পারি না। শুধু মূল বিষয়টা মাথায় থাকে। যখন লিখতে বসি তখন লেখার সাথে সাথে ভাবনা চলতে থাকে। তাই মনেহয় আমার ঘিলু সম্ভবত কলমের ডগায়।
৩) ভাবতে ভাবতে লিখি তো তাই লিখতে অনেক সময় লাগে।

লেখাটা পোস্ট করার পরে দেখলাম পাঠক হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ২৫০ জনে পড়ে ফেলল কিন্তু কোনো মন্তব্য নাই। তখন বুঝলাম পাঠক যৌনতার লোভে পড়েছে এবং তারা হতাশ হয়েছে যৌনতার ছড়াছড়ি না পেয়ে। আরও বুঝলাম এই গল্পের উদ্দেশ্যও আমার ব্যর্থ হয়েছে।

কিন্তু প্রাজ্ঞ তিনজন পাঠকের ভাল লেগেছে দেখে একটু সান্ত্বনা পেলাম। ভাল থাকবেন।

৪| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:২৬

মদন বলেছেন: +

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৪৫

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: স্বাগতম প্রিয় প্রেমের দেবতা। হিন্দু পুরান অনুযায়ী প্রেমের দেবতার নাম মদন।
কিন্তু প্রপিক অনুসারে মনেহচ্ছে, মদন = বান্দর!!! হা..হা..হা...

ধন্যবাদ গল্পটা পড়ার জন্য।

৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৪৪

ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: জনৈক ৪০ বছর বয়স্ক ভার্জিন পুরুষের বিকৃত মানসিকতার গল্প খারাপ লাগে নি।
তবে ২৫০ বার পঠিত হবার পরও ভালো মন্দ কোন কমেন্ট না পাওয়ায় আমি কিছুটা বিষ্মিত



আমিও...... ...

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৫৬

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আমার বাড়িতে স্বাগতম।

জ্বি, আমিও বেশ বিস্মিত হয়েছিলাম। তবে বিস্ময় ভাবটা কেটে গেছে। দোষ পাঠকের নয় আমার। আমি যে ম্যাসেজটা দিতে চেয়েছি তা ঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারি নি হয়ত। তাই পাঠক গল্পটা উপভোগ করতে পারেন নি।

তবে খারাপ লাগাটাও তো মন্তব্যে আসবে। সেটাও যখন আসল না তখন মনে হয়েছিল যৌনবিকৃতির গল্পে মন্তব্য করা সম্মানিত পাঠক/পাঠিকার রুচিবহির্ভুত।

ধন্যবাদ আপনি সাহস করে মন্তব্য দিলেন বলে। ভাল থাকবেন।

৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:৪১

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ব্যাটার যৌনকামনার ব্যাপারটা কেন বিকৃত হিসেবে দেখলেন কেউ কেউ বুঝলাম না। আমাদের দেশে না হোক অন্য দেশে ম্যানিকিন ডলের ব্যবহার আছে অনেক। এটা বিকৃতির পর্যায়ে পড়লে তা অবশ্যই গোপনে বিক্রি হতো।
গল্পের চিরবঞ্চিত লোকটির প্রতি সহানুভূতিই তো জাগার কথা।

যাই হোক, গল্পের জন্য লেখককে ধন্যবাদ অনেক।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:০৬

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: প্রিয় বড়ভাই, আপনি আমার বাড়িতে এলেই আমার আনন্দের পরিমাণটা বেড়ে যায়। আপনার মতামতকে আমি বিশেষ কিছু মনে করি। কারণ আপনি যখন ভাল বলেন তখন নিছক সৌজন্যবশত বলেন না। আবার খারাপ লাগাটাও জানিয়ে দিতে দ্বিধা করেন না। এজন্যই আপনার প্রতি আমার নিরন্তর ভাল লাগা।

এই গল্পে আপনার অনুমোদন পেয়ে অনেক ভাল লাগল।

ভাল থাকবেন সব সময়।

৭| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৫:৫৭

পড়শী বলেছেন: গল্প টা ভালো লেগেছে। যৌনতা-বর্জিত তারুণ্যের ফলাফল সম্ভবতঃ বিকৃতিতেই পরিসমাপ্তি।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২০

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: হ্যাঁ এই গল্পটা সেই অর্থে বিকৃতির গল্প যদি জমিতে জৈব সারের বদলে রাসায়নিক সার ব্যবহার করে চাষাবাদকে বিকৃত চাষাবাদ বলি। আমি এই ধরনের চাষাবাদ সমর্থন করি না। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মবিরুদ্ধ কোনো কিছুই আখেরে ভাল হয় না।

ধন্যবাদ আপনাকে। আর অবশ্যই-অবশ্যই বেশি-বেশি ভাল থাকবেন।

৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ৪৩৯ বার পঠিত ! যাই হোক , হয়ত গল্পের বা পোস্টের নামের কারণে এতবার প্রদর্শিত হচ্ছে পোষ্ট এ এসে কমেন্ট বা মতামত দেয়ার চেয়ে । কারণ ' যৌনতা' তো স্পর্শকাতর বিষয় এবং শব্দ !!

এই গল্পে মাসুদ এর কোন আচরণ আমার কাছে বিকৃত মনে হয় নাই। নির্দিষ্ট সময়ে বিয়ে না হবার বা করার কারণে তার শারীরিক চাহিদা একান্তেই নিজের মাঝে জেগে উঠেছে এবং কারো কোন ক্ষতি না করেই সে কোন ডল দিয়ে সেই আকাঙ্ক্ষার নিবারন করছে। এরকম আরও উপায় আছে এই অবদমিত চাহিদা নিবারনের ।

এই ব্যাপার গুলো মোটামুটি অনেকে জানলেও মুখে স্বীকার করে না , কিংবা নীরব অনুমদন আছে বলেই অন্যান্য দেশে ' সেক্স টয় ' এর ব্যবসা পর্যন্ত অনুমোদিত।

লেখার স্পীড ভালো লেগেছে। আর পুরো গল্পে মাসুদ কে বেশ নিরীহ আর সদাচারি মানুষ বলেই মনে হয়েছে আমার কাছে। অন্তত যৌনাকাঙ্ক্ষায় সে হিংস্র হয়ে ওঠেনি।

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৪৫

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: হয়ত গল্পের বা পোস্টের নামের কারণে এতবার প্রদর্শিত হচ্ছে পোষ্ট এ এসে কমেন্ট বা মতামত দেয়ার চেয়ে । কারণ ' যৌনতা' তো স্পর্শকাতর বিষয় এবং শব্দ !!
একদম ঠিক কথা আপু। যৌনতার লোভেই এত ভীমরুলের ভিড়। শুধু এই কারণে যারা পড়তে এসেছিলেন তারা হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। আশানুরূপ মালমসল্লা তারা পান নি। আপনাদের মতো হাতেগোনা কয়েকজন প্রকৃত পাঠক যাদের কাছে যৌনতা উপজীব্য নয়, যাদের কাছে গল্পের মান, উদ্দেশ্য ইত্যাদি আসল; আমি মূলত তাদের অপেক্ষাতেই ছিলাম। জানতে চাচ্ছিলাম তারা কি বলেন। তাদের অনুমোদন পাওয়া যাবে কি না।

আপনাদের অনুমোদন আমাকে এই বিষয়ে আরো লিখতে সাহস দিল। যে মেয়েটি আপন বাবা, মামা, চাচা আবারও বলছি লতায়-পাতায় প্যাচানো নয় আপন বাবা, মামা, চাচা কর্তৃক যৌন অশালীনতার কিংবা আরও তীব্রভাবে যৌননির্যাতনের শিকার হয়েছে তার মনের অবস্থা কী দাঁড়ায়। এই বিষয়টা তো সেই অসহায় মেয়েটি কারও সাথে শেয়ারও করতে পারে না। বাবার কথা কাউকে কি বলা যায়? আহারে সেই সব হারানো মেয়েটি, যে বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যায় সেটাই পরের গল্পে তুলে আনছি। আশা করি আপনাকে পাশেই পাব।

ভাল থাকবেন।

৯| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৪৪

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: আগেই পড়েছি , সময়ের অভাবে কিছু বলে যেতে পারিনি ! আপনার সাহসের তারিফ না করলে না হয় , নিদারুন বাস্তবতা তুলে ধরেছেন !

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৪২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ অভি।
সরল সাহস তার নেই হারিয়েছে জীবনের অকস্মাৎ বাঁকে
এখন হৃদয়জুড়ে দুঃসাহস, ভালবাসা রাখে।


জ্বি ভাই, গল্প লেখার প্রতি ভালবাসা জন্মেছে তো তাই দুঃসাহসী হয়ে উঠলাম। আমাদের দেশে আড়ালে-আবডালে যৌনতার অনেক অন্ধকার রয়েছে, আর আলো তো স্বাভাবিকভাবেই আছে। আপাতত আমি অন্ধকারটাকেই দৃশ্যায়িত করতে চাই। অন্তত আমার পাঠক/পাঠিকারা জানুক, সচেতন হোক।

ভাল থাকবেন অভি। স্বাপ্নিক কাউকে পেলেই আমার আপন-আপন লাগে। মনেহয় আমার সমগোত্রীয়। মনেহয় অনেকের চেয়ে সরল হবে, মোটেই জটিল হবে না, কুটিল হবে না। দেশকে ভালবাসবে। মোটেই দলকানা হবে না। এবং অতি অবশ্যই সৎ হবে। আপনাকেও আমার তাই মনেহয়। আবারও শুভেচ্ছা.।.।.।

১০| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৪

আমিনুর রহমান বলেছেন:




আমার ১৮ হয়নি তো তাই গল্পে কমেন্টস করতে ভয় লাগছে।
গতিময় ও দুর্দান্ত গল্পে +++

২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:২১

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আমিনুর ভাই, আপনার মন্তব্য পড়ে বেশ মজা পেলাম। ;) :-P

১১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১০

ভিয়েনাস বলেছেন: আমিও দু:সাহসিক একটা লিখা বলবো কারন এটা একটা কঠিন বাস্তবতা। যৌনবিকৃতির এর থেকে ভয়ংকর ভয়ংকর ঘটনা আমাদের সমাজে ঘটে যাচ্ছে। যৌনতার বলি হচ্ছে কত অসহায় নারী আর মুখোশের আড়ালে মানুষ হচ্ছে হিংস্র। লিখে যান সমাজের এই অন্ধকার দিক নিয়ে সেটা গল্পকারে হলেও ক্ষতি নেই।

পরের গল্প গুলোর অপেক্ষায় এই গল্পে ভালো লাগা জানালাম :)

২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩৬

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ ভিয়েনাস। এই বিষয়ে কত যে ঘটনা জানি। কিন্তু আমি হচ্ছি ভয়ানক স্লো। সেগুলোকে গল্পে রূপান্তর করতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।

তবে দুয়েক দিনের মধ্যেই আরেকটা শেষ করে ফেলব আশা করি। সেটা হবে আরও বেশি ভাবনা উদ্রেককারী।

আশা করি সাথেই থাকবেন।


১২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৪০

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: এই গল্পটা পড়ে জার্মান থেকে একজন ই-মেইল করেছেন। তার লেখা এবং আমার জবাব পাঠক/পাঠিকাদের সাথে শেয়ার করলামঃ



Assalamu-alaikum.

Wow!! I’ve read your today’s post in SAMU (যৌনমন কিংবা অলিগলি-অন্ধকার!!! - ২). It’s really realistic and heart touching. I think Mr. Masud is very innocent. In our society, we need more and more Masuds who control their sex like perfect humans. I believe, if you do not have wife, then never do anything like beasts. Control yourself.
Anyway, did you find anybody like Mr. Masud really?

I’m going on your other stories.

Thanks a lot.

Mit freundlichen Grüßen / Best regards

Syed Emran Ali

Bosch Engineering GmbH
Engineering Application Methods (BEG-PT/EAM1)
Postfach 13 50
74003 Heilbronn
GERMANY


প্রিয় ইমরান ভাই,
আসসালামু আলাইকুম। আপনার চিঠি পেয়ে কী যে ভাল লাগছে। অসাধারণ একটা অনুভূতি। এই প্রথম কারও কাছ থেকে আমার লেখার জন্য চিঠি পেলাম।

আমাদের এই দেশে অন্তরালে যৌনতার অনেক অন্ধকার ছড়িয়ে আছে, আমি সেগুলি তুলে আনতে চাই আমার গল্পে। উদ্দেশ্য একটাই প্রিয় পাঠক/পাঠিকাকে এ বিষয়ে সচেতন করা। ইতোমধ্যে একজন মা আমার আরেকটা গল্প, অস্বাভাবিক পড়ে মন্তব্য করেছেন, তিনি আরও সচেতন হবেন তার সন্তানের ব্যাপারে। তার মন্তব্য পেয়ে আমার মনে হয়েছিল, যাক গল্প লেখাটা তাহলে সার্থক হয়েছে।

আমার গল্পটা আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমার উৎসাহ আরও বেড়ে গেল। যৌনমন কিংবা অলিগলি-অন্ধকার!!! সিরিজের প্রতিটি লেখাই মূলত বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে লেখা। তবে হুবহু বাস্তব অনুসরণ করলে তা আর গল্প হয় না। তাই কল্পনার রঙ মিশাতেই হয়। আর মাসুদের মতো কাউকে পেয়েছি কি না সেটা বড় কথা নয় বড় হচ্ছে অনেকেই তার মতো আছে। যারা নানা রকম ফ্যান্টাসিতে ডুবে আছে।

ভাল থাকবেন। আর বেশি বেশি স্বপ্ন দেখবেন। স্বপ্নই সম্ভাবনা। এবং অবশ্যই নিজের দেশটাকে মনে রাখবেন। বড় দুঃখিনী এই বাংলাদেশ। আল্লাহ হাফিজ।

অলওয়েজ ড্রিম।

১৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:৪১

পড়শী বলেছেন: আমার ছোট্ট অনুসরণ লিস্টে আপনাকে যোগ করলাম।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:০২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্য হলাম প্রিয় পড়শী। ভাল থাকবেন।

১৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩

মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: অলওয়েজ ড্রিম ভাই, দুটি বানান ঠিক করেন নিন।

১) আমারে বাণে-ভাসা কেউ মনে করলে ভুল করবেন। এখানে বানে-ভাসা হবে।

২) কখনো শস্তা হোটেলের ওয়েটার। এখানে সস্তা হবে।

গল্প ভালো লেগেছে। গল্পটি বেশ বড়। তবে অযাচিত বড় কখনো মনে হয়নি।

২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:১১

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ, সজীব ভাই। বানান ভুল আমার দুচোক্ষের বিষ। তারপরও বেখেয়ালে কিছু ভুল হয়েই যায়। আর এমন ভুল যখন রয়ে যায় তখন খুব লজ্জা লাগে। ঠিক করে দিয়েছি।

ভাল থাকবেন।

১৫| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৫:২১

শান্তির দেবদূত বলেছেন: প্রিয়তে নিয়ে রেখেছিলাম পড়ে সময় করে পড়ব বলে, ইদানিং আমার এখানে নেটও বেস স্লো, লোড হতে সময় নেয়, প্লাস দেওয়া যাচ্ছে না।

যাই হোক, গল্পে আসি, সব মিলিয়ে বেশ ভাল লেগেছে। গল্পের উপস্থাপনা দারুন হয়েছে, চরিত্রটা সুন্দর ভাবেই ফুটে উঠেছে। কিন্তু বিয়ে না করার যে কারনটা বলা হয়েছে সেটা দূর্বল মনে হল, কারন পারিবারে দুরসম্পর্কের আত্মিয়র বিয়ের জন্য কোন তোড়জোড় করেনি ঠিক আছে, তবে কাস্টমাদের সাথে প্রায় ১৫ বছরের অন্তরঙ্গ সম্পক থাকার পর ওরাই কিন্তু সবচেয়ে কাছের বন্ধু হয়ে উঠাত কথা। গল্পেরর এক জায়গায় কিন্তু এটা উল্লেখও আছে। এসব ক্ষেত্রে এইসকল বন্ধুবান্ধবরাই কিন্তু মুল ভুমিকা পালন করতে পারে।
এমনিতে চমৎকার সাবলিল লেখা, বেশ ভাল লেগেছে।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় শান্তির দেবদূত। কেমন আছেন। বিয়ে না হওয়ার কারণ খুব জোরাল নয় সম্ভবত আপনার কথাই ঠিক। তবে মূল কথা হল যেটা আমি গল্পে ইঙ্গিত দিয়েছি, মাসুদের সেরকম বিয়ের প্রতি আগ্রহও ছিল না। তাছাড়া এখন আর বিয়ে শাদির ব্যাপারে খুব নিকটাত্মীয় ছাড়া কেউ ঝুঁকিও নিতে চায় না।

ভাল থাকবেন। শুভেচ্ছা।

আজকের গল্পটা কেমন হল জানাবেন।

১৬| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৩

মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌ বলেছেন: এই আপাত যোগী মানুষটার যৌনপ্রবৃত্তিকে আমি অস্বাভাবিক মনে করি না। প্রতিটা পুরুষের মধ্যে এই প্রবৃত্তি আছে। পরিবেশ পারিপার্শিকতার উপর অনেক খানি নির্ভর করে এর প্রকাশ ভঙ্গি। আপনার লেখা অনেক সাবলীল বিশেষ করে একজন যোগী মানুষের হঠাৎ যৌন ভাবে প্রবল উদ্দাম হয়ে ওঠার বর্ণনা খুব দ্রুত স্বল্প পরিসরে কিন্তু অত্যন্ত দক্ষভাবে উপস্থাপন করেছেন। মাসুদের মনস্তত্ব অত্যন্ত প্রাঞ্জল হয়েছে। আসলে পুরোটা পড়ার পর এটাকে গল্প মনে করার কোন অবকাশ ছিল না। মনে হল জিবনের একটা বাস্তব ঘটনা!

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫৭

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ খালিদ ভাই। আপনি এমনভাবে প্রশংসা করেন যে, আপ্লুত না হয়ে উপায় থাকে না।

শুভেচ্ছা জানবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.