নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নকে পাথেয় ভাবি।

অলওয়েজ ড্রিম

"Only He Who Can See The Invisible Can Do The Impossible" Frank Gain আমার ইমেইল ঠিকানাঃ [email protected]

অলওয়েজ ড্রিম › বিস্তারিত পোস্টঃ

যৌনমন কিংবা অলিগলি-অন্ধকার!!! - ৩

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৭

প্রিয় পাঠক/পাঠিকা, এর আগে একটি গল্প লেখার সময়েই আমার মাথায় আসে, আমি তো অনেকের অনেক যৌনবাস্তবতা ও যৌনফ্যান্টাসির কাহিনী জানি। সেগুলির সাথে লেখকসুলভ একটু কল্পনার নুড়ি পাথর মিলিয়ে দিলেই তো গল্পের ইমারত গড়ে উঠতে পারে। সুতরাং শুরু করলাম যৌনমন কিংবা অলিগলি-অন্ধকার!!! সিরিজের গল্পগুলি লেখা। এই সিরিজের অধীনে যে গল্পগুলি আসবে সবই আমাদের যৌনতা নিয়ে। বিভিন্ন কোণ থেকে আমি যৌনতাকে দেখার চেষ্টা করেছি। পরোক্ষে মনোস্তাত্বিক বিশ্লেষণের চেষ্টাও ছিল। বরং বিশ্লেষণ না বলে বিশ্লেষণসহায়ক ইঙ্গিত বলতেই আমি স্বস্তি বোধ করব। কোনো কোনো গল্প থেকে আপনি সচেতনতার বীজ সংগ্রহ করতে পারবেন। কিন্তু যারা রসময় গুপ্তের কাহিনী পড়তে চান তারা নিঃসন্দেহে হতাশ হবেন। যৌনতার রগরগে বর্ণনা নেই। যতটুকু এসেছে তা কাহিনীর প্রয়োজনে। প্রায় প্রতিটি গল্পই বাস্তবতার নিরিখে লেখা। চলেন তবে শুরু করা যাকঃ-









বাড়ির রাস্তায় পা দিয়েই আমি প্রচণ্ড চমকে উঠি। গা ছমছম করে ওঠে। সমস্ত শরীরের লোমগুলি দাঁড়িয়ে যায়। এই সাতসকালে, যখন একটা-দুটা পাখি আড়মোড়া ভেঙে কেবল হাই তুলছে, তখন আমার বাড়ির রাস্তায় একটা শুয়ার! হোঁৎকা একটা শুয়ার! আমি হতভম্ব হয়ে পড়ি।

ঢাকায় আসার পর থেকে গ্রামে খুব কম যাওয়া হয়। গ্রামের খবরাখবরও তাই সব জানা হয় না। হঠাৎ কিছুদিন আগে বাড়ি যেতে হল। খুব ভোরেই বাস থেকে বড় রাস্তায় নামি। গ্রামের রাস্তায় ঢুকতেই মনটা আর্দ্র হয়ে ওঠে। আহ, কতদিন পরে এলাম। রাস্তার দুধারে নানাজনের লাগানো চারা গাছগুলি বেশ ডাঙ্গর হয়ে উঠেছে। হাঁটতে হাঁটতে আমাদের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে গেলাম। আমার নিজের হাতে লাগিয়েছিলাম যে চারাগাছগুলি – এখন আমার মাথা ছাড়িয়ে বৃক্ষ হওয়ার পথে। মনটা আরও ভাল হয়ে যায়। ফূর্তি-ফূর্তি লাগে। জোরে জোরে বুক ভরে শ্বাস নেই। এটা ঢাকার বিষাক্ত বাতাস নয়। এটা আমার গ্রামের প্রিয় গাছেদের ছেড়ে দেওয়া টাটকা অক্সিজেন। যত পারি বুক ভরে টাটকা অক্সিজেন নিতে থাকি। আহ ----



কিন্তু আমাকে ভয়ানকভাবে চমকে উঠতে হয়। এই সাতসকালে আমাদের রাস্তায় হোৎকা একটা শুয়ার! আমি হতবাক হয়ে যাই।



আমার গ্রামে কোনো বন নেই। খালের পাড়ে, রাস্তার ধারে মাঝেমাঝে ঝোঁপঝাড় আছে। তাতে দুয়েকটা হয়ত বেজি, খাটাশ থাকতে পারে। এমন কি খেঁকশিয়াল থাকার মতো জঙ্গলও এখন আর নাই। তাহলে ওরকম একটা বন্য শুয়ার এলো কোত্থেকে? আশেপাশে দুই-চার-দশ-বিশটা গ্রামে কেউ শুয়ার পোষে বলেও তো কোনোদিন শুনি নাই।



আমি আরও সামনে আগাই। কিছুটা দ্বিধায়। কিছুটা সংশয়ে। এবার স্পষ্ট হয় অনেকটা। না ওটা তো শুয়ার না। বিশাল একটা হোঁৎকা কুকুর। আমার গা ছমছমে ভাবটা কেটে যায়। দ্রুত হেঁটে সামনে যাই। আরও স্পষ্ট হয়।

না শুয়ারই তো!

না কুকুরই তো!





আচানক নাজমা ভাবির কথা মনে পড়ে। আমার চাচাত ভাইয়ের বৌ – কুঁদুলে মুরগির ছানা! কোন্দল থেকে কুঁদুলে। ঝগড়ুটেও বলতে পারতাম। কিন্তু আমার কুঁদুলে মুরগির ছানা বলতেই ভাল লাগে। ডাকটার মধ্যে একটু আদুরে ভাব আছে। যেহেতু ভাবি, আদরটাও হয়ে যায়, বাদরামিটাও হয়ে যায়।

তার সবচেয়ে বড় দোষ – পেটে কথা পঁচে না। আমার মায়ের কাছে আসবে, আরাম করে বসবে, তারপর বলবে, “চাচি আম্মা, একটা পান খাওয়ান তো, মুখটা কেমন কেমন করে”।



মুখের কেমন কেমন দূর করার জন্য সে পান খাবে; আর পেটের ভিতর জমে ওঠা কথার যে গুরগুরানি সেটা দূর করার জন্য সে গোপন কথা ফাঁস করে দেবে। আমি আপনি বা আরেকজন যে বিষয়টা লুকিয়ে রাখব মান-সম্মান বজায় রাখার জন্য, তার কাছে ওসবের বালাই নাই, নির্দ্বিধায় সে সেগুলি প্রকাশ করে দেবে। এমন কি নিজেদের কোনো স্পর্শকাতর বিষয়ও সে লুকাতে পারে না। অবলীলায় বলে বেড়ায়। মহিলারা আর যাই হোক বাপের বাড়ির কুৎসা গায় না কিংবা কোনো হীনতা প্রকাশ করে না। কিন্তু তার কাছে সবই যেন সমান। সে যেমন ঝগড়াতেও ব্লাকবেল্ট, কথা ফাঁস করাতেও তার মুনশিয়ানা তুলনাহীন।



আমি আরও সামনে আগাই। আমার কৌতূহল বাড়তে থাকে। না-কুকুর, না-শুয়ার সেই অদ্ভুত জন্তুটির অবয়ব স্পষ্ট হতে থাকে। দেখতে পাই এক শুয়ারমুখো হোঁৎকা কুকুর! আমি হতবাক হয়ে পড়ি। ঘৃণায় সমগ্র শরীর রি-রি করে ওঠে। পৃথিবীর সবচেয়ে কুৎসিত এই জন্তুটা আমাদের রাস্তায় এল কিভাবে? কোনো কারণেই তো ঐ শুয়ারের শুয়ার, কুত্তার কুত্তা কুৎসিত জীবটার আমাদের বাড়ির রাস্তায় আসার কথা না। আশ্চর্য লোকালয়ে আসার সাহস কিভাবে পেল? মানুষজন কি জানোয়ারটারে দেখে নাই?



ভাবির বাবা আঃ সাত্তার মেয়া দীর্ঘ বার বছর মধ্যপ্রাচ্যে কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন। টাকাপয়সা ভালই কামিয়েছেন। আরব দেশের উট-দুম্বার মাংস খেয়ে পাহাড়ের মতো স্বাস্থ্য বানিয়ে এনেছেন। কথা যখন বলেন, যেন মাইকের আওয়াজ। গমগম করে বাজে। আর ভাবির মা চিরদিনের রুগ্ন। দুগাল দাঁতের ভিতরে ঢুকে গেছে। বাঁশ পাতার মতোই পাতলা। দেখলেই মনেহয় বুড়িয়ে গেছে। তাকে বরং ভাবির দাদী হিসাবেই মানায় ভাল।



আঃ সাত্তার মেয়া যখন বিদেশ যান তখন তার সবচেয়ে ছোট মেয়ে লায়লার বয়স মাত্র চার বছর। বিদেশ যাওয়ার আগে কোথায় যেন চাকরি করতেন। কদাচিৎ বাড়ি আসতেন। সুতরাং ছোট মেয়ের সাথে তার বাৎসল্য-রসটা কম হয়েছে। বাবা-মেয়ের সম্পর্কটা গাঢ় হওয়ার সুযোগ কম পেয়েছে। তাই দীর্ঘ বছর পরে দেশে ফিরে উচ্ছল উজ্জ্বল ষোড়শী লায়লাকে দেখে তিনি বেশ চমকেই উঠলেন। লায়লাও বাপকে কেমন শরম-শরম করে। পর-পর লাগে। সহজে সে বাপের কাছে যায় না।

একদিন আঃ সাত্তার মেয়া মেয়েকে কাছে ডাকেন। বৌকে বলেন, তোমার এই মাইয়াডা কি আমার মাইয়া না? আমি তার বাপ না? আমারে ও পর-পর মনেকরে ক্যা? লায়লা দরজার কাছে এসে দাঁড়ালে তিনি হাত বাড়িয়ে বুকে টেনে নেন। আদর করেন। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলেন, আমার এই মাইয়া তো পরীর নাহান সুন্দর হইছে।

বৌ তাড়াতাড়ি বলেন, মাশাল্লাহ কন।

- হ-হ মাশাল্লাহ। আমার কি মনেকয় জানো?

- কী? বৌ গদগদ হয়ে জিজ্ঞেস করেন।

- পরী তো দেহি নাই। তয় আমার মনেকয় এই মাইয়া পরীর চাইতেও সুন্দর।



লায়লা খুশিতে ডগমগ করতে থাকে। তার যেন পাখনা গজায়। সারাদিন উড়ে বেড়ায়।

টুনটুনির মতো ফুড়ুৎফাড়ুৎ করে।

এ ঘর থেকে ও ঘরে।

ও ঘর থেকে এ ঘরে।

আর কিছুক্ষণ পর-পর বাপের কাছে যায়। বাপকে তার অনেক ভাল লাগে। বাপের সাথে তার দূরত্ব ঘুঁচে যেতে থাকে। তাকে অনেক আপন মনে হতে থাকে। বাপ তারে কত আদর করে!



আঃ সাত্তার মেয়া টের পেয়ে যান ছোট মেয়ে তাকে আর পর-পর মনে করে না। সে এখন আব্বা বলতে অজ্ঞান। বাইরে থেকে এলে তার গামছা এগিয়ে দেওয়া, বাতাস করা, পানি ঢেলে দেওয়া সব এখন লায়লার দায়িত্ব। বাপও তার প্রতিদান দিতে কসুর করেন না। মেয়েকে বুকে টেনে আদর করেন। ঘাড়ে মুখে হাতে চুমু খেয়ে বলেন, আমার পরীর চাইতেও সুন্দর মাইয়া। ইচ্ছা করে সারাক্ষণ বুকের মধ্যে নিয়া আদর করি।



সবাই খুশি হয়। বাপ মাইয়ারে অনেক সোহাগ করে। ভালবাসে। বাপসোহাগী মাইয়া।



ভাবি অনুযোগ করে, হ, মাইয়া তো এখন একটাই। আমি তো আর মাইয়া না। আঃ সাত্তার মেয়া হাসেন। কিছু বলেন না।



আমি আরও কাছে পৌঁছে গেলাম শুয়ারমুখী কুকুরটার। রাগে শরীরের ভিতর রক্ত টগবগ টগবগ করে ফুটতে শুরু করে দিয়েছে অনেক আগেই। আমার বিখ্যাত প্রবাদ বাক্যটি মনে পড়ে যায়। যেমন কুকুর তেমন মুগুর। সুতরাং আমি মুগুর খুঁজতে শুরু করে দেই।



মাস কয়েক যেতে না যেতেই সেই উচ্ছল-উজ্জ্বল, টুনটুনির মতো সদাচঞ্চল লায়লা একদম ঠাণ্ডা মেরে গেল। কারও সাথে কথা বলে না। ডাকলেও পাওয়া যায় না। একা-একা থাকে। দূরে-দূরে থাকে। খুঁজলে পাওয়া যায় কোথায় ঘাটপাড়ে বসে আছে, কিংবা বাড়ির দক্ষিণধারে মাচানে বসে দূর-দিগন্তে হারিয়ে গেছে।



ব্যাপার কি? ব্যাপার তো সন্দেহজনক। প্রেমেটেমে পড়ে নাই তো? এই বয়সে এইডা তো খুবি দস্তুর।



সুতরাং শুরু হল তদন্ত। কিন্তু সেই তদন্তের ফল হল লবডঙ্কা। বেশি কিছু জিজ্ঞেস করলে, চাপাচাপি করলে নীরবে কাঁদতে থাকে। অতএব বড় বোন নিঃসন্দেহ হলেন ব্যাপারটা প্রেম সংক্রান্ত। এবং আদরের বোনটা স্যাকামাইসিন খাইয়াছে।



বাপের বাড়িতে গেলেই ইদানিং মায়ের সব নালিশ লায়লার বিরুদ্ধে। কোনো কাজে-কর্মে পাওয়া যায় না। বাপ এত ভালবাসে, আদর করে, না চাইতেই কত কিছু আইনা দেয়; মা-মা আমার ছোট্ট মা বলতে বাপে অজ্ঞান, অথচ সেই বাপের ধারও ধারে না। বাপের কথাই শুনতে পারে না।



- হোন নাজমা, কাইল গো তোর বাপে এই মাডিফাডা রোদ্দুরে বাজারে গোনে হাঁইট্টা বাড়ি আইছে। আইয়া বাপসোহাগী মাইয়া, জানের জান, পরাণের পরাণ (একটু ঠেস দিয়েই বলেন) লায়লারে ডাকছে হাত-পাখাডা লইয়া। কিন্তুক তোর বুইনে কী করল, হাঁইটা আরেকদিগে চইল্লা গেল! আমি কত কইলাম, যা বাপেরে একটু বাতাস কইরা আয়। এই গরমে হাঁইট্টা আইছে। ইস, জানডা তামাতামা হইয়া গেছে। যা মা একটু বাতাস কইরা আয়। কিন্তু হুনল না মার কতা! এত্ত বড় বেত্তমিজ হইছে। চুলের মুটকি ধইরা কবে যে ছ্যাচা দিমু, কইতারি না।

- দাঁড়াও মারণ লাগবে না। বুঝাইয়া কমুহানে।

- হ, মা তুই একটু বুঝাইয়া যাইস।



কিন্তু কোনো বুঝানোতেই কাজ হয় না। লায়লা দিন-দিন আরও অন্তর্মুখী, আরও নীরব, আরও উগ্র হতে থাকে। কথায়-কথায় ছ্যান-ছ্যান করে ওঠে। একা-একা কাঁদতে দেখা যায়। কিন্তু কোনো কারণ কেউ খুঁজে পায় না।





লায়লার প্রাকবাছনিক পরীক্ষার ফলাফল দিয়েছে। ভাল ছাত্রী লায়লা তিন বিষয়ে ফেল! সবাই অবাক। কিন্তু কেউ কিছু বুঝতে পারে না। রাতারাতি চোখের সামনে লায়লা পালটে গেল। বদমেজাজি! খারাপ ছাত্রী! এবং কামচোরা! সবার প্রিয়পাত্রী থেকে হয়ে উঠল যারপরনাই অপ্রিয়। সুযোগ পেলেই এখন যে যেখান থেকে পারে তাকে বকে। শুধু লায়লার বাপ কিছু বলে না। সে এখনও লায়লাকে ভালইবাসে। কিন্তু লায়লা যার কাছে সব চেয়ে বেশি আশ্রয় পাচ্ছে সেই বাপকে সহ্যই করতে পারে না। বাপের কথা শুনলেও তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে। বাপ তারপরও কিছু বলে না। শুধু আফসোস করে। মেয়েকে সে এত ভালবাসে, এত আদর করে, মেয়ে তার বুঝল না।



লায়লাকে মায়ে বকে, চাচা-চাচীরা বকে, চাচাত ভাইবোনেরা বকে, বড় বোন যখন বাড়িতে আসে বকে যায়; স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও বকে। কিন্তু কেন লায়লার এই রূপান্তর কেউ তা নিয়ে মাথা ঘামায় না। সবাই শুধু বকাবকি করেই খালাস। আর সাথে মাগনা উপদেশ বিলায় অকাতরে।



মাঝখানে একবার কথা উঠেছিল, জ্বিনের আছর নিয়া। আরেকবার, কেউ ক্ষতি করল কিনা তা নিয়েও কিছুটা বাষ্প উঠে মিলিয়ে গেল। আঃ সাত্তার মেয়া আবার এইসব বিশ্বাস করেন না। তিনি বলেন, আরে ধৈর্য ধর। পড়াশুনার টেনশনে এই রকম হইছে। পরীক্ষা শেষ হইলে ঠিক হইয়া যাইবে।



আমি হাঁটতে থাকি। খুঁজতে খুঁজতে একটা লাঠি পেয়ে যাই। ধ্যাত্তেরি এই লাঠিতে কি হবে। আমার তো দরকার শক্ত-পোক্ত মুগুর। এক বাড়িতেই কাজ শেষ। সুতরাং আমি মুগুরের তালাশে সামনের দিকে হাঁটতে থাকি। আমাকে একটা মুগুর পেতেই হবে। শক্ত-পোক্ত, সাইজ মতো। এক আঘাতেই কর্ম কাবার! অতএব আমি আমি মুগুরের খোঁজে এদিকে-ওদিকে তাকাই। সামনের দিকে হাঁটতে থাকি। হাঁটতে হাঁটতে জঘন্য জানোয়ারটার অনেক কাছে পৌঁছে যাই। আমার সমগ্র অস্তিত্ব ঘৃণায় রি-রি করে ওঠে। একটা বাঘ ভিতরে গর্জন করতে থাকে।

একটা মুগুর!

স্রেফ একটা মুগুর!

দশাসই একটা মুগুর!



লায়লার চোখের নিচে কালি পড়ে। শুকিয়ে কাঠ হতে থাকে। কিচ্ছু খেতে চায় না। খাওয়ার কোনো রুচিই হয় না। দিন যায় রাত আসে। পুনরায় আলো ফোটে। কিন্তু লায়লার মনেহয়, তার অস্তিত্বে যে অন্ধকার মিশে গেল তা আর ঘুচবে না। সে আর কোনো দিন আলোর মুখ দেখবে না। কাকে বলবে সে এই কথা? কাউকে কি বলা যায়? কেউ কি বিশ্বাস করবে? মরে যেতে পারলেই এখন বাঁচে সে। তার মন ইদানিং এই একটি বিষয়েই সায় দিচ্ছে। যে কোনো একদিন সে মরে যাবে। তারপর তার মুক্তি!



কিন্তু সেই কাঙ্ক্ষিত মুক্তি আসার আগেই আবার সেই ঘটনা। ইদানিং রাতে সে ঘুমাতে পারে না। কিছুতেই ঘুম আসে না। ভয়ে-ভয়ে থাকে। না-জানি কখন তার জীবন থেকে সকল আলো কেড়ে নেয়া সেই ঘটনা ঘটতে শুরু করে। বিছানায় সে কুঁকড়েমুঁকড়ে পড়ে থাকে। সামান্য একটু শব্দেই চমকে ওঠে। ঐ বুঝি অদ্ভুত জন্তুটা এল। ঐ বুঝি তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।



সে চমকে ওঠে।

কেঁপেকেঁপে ওঠে।

তার কিছুতেই ঘুম আসে না।

মনেমনে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করে, তুমি আমারে বাঁচাও খোদা। আমার আর এই দুনিয়ায় বাঁচনের সাধ নাই। তুমি আমারে নিয়া যাও খোদা, তুমি আমারে নিয়া যাও।



তার নীরব কান্নায় গাল ভেসে যায়। বালিশ ভিজে যায়। বুকটা ফেটে যেতে চায়। গলার ভিতর কারও কাছে কিছু না বলতে পারার অসম্ভব কষ্টটা লটকে থাকে। দম আটকে আসে। মনেহয় একেবারে দম বন্ধ হয়ে গেলেই তো সব ল্যাঠা চুকে যেত। সে বেঁচে যেত। এই জনমের জন্য সে চিরমুক্তি পেয়ে যেত।



কিন্তু হয় না। ইচ্ছে মতো এ পৃথিবীতে সব কিছু হয় না। রাতের পর রাত সে বেঁচে থাকে। এবং প্রতি রাতে অজস্রবার সে মরতে থাকে। তার ঘুম আসে না।

ইঁদুর যায়!

চিকা দৌড়ায়!

সে ভয়ে চমকে ওঠে।

ঐ বুঝি লোমশ জন্তুটা আসে।

খোদা, তুমি আমারে বাঁচাও! খোদা!

তার গাল ভেসে যায়। বালিশ ভিজে যায়। আর চমকে চমকে ওঠে।



শেষরাতের দিকে হয়ত একটু সে তন্দ্রার মতো পড়েছিল। আচমকা তার তন্দ্রা ছুটে যায়। সেই শুয়ারের মুখ তার মুখের উপর ক্রমশ নেমে আসতেছে! সে বরফের মত জমে যায়। বুকের স্পন্দন যেন থেমে যায়। নড়াচড়া করার শক্তি সে হারিয়ে ফেলে। একদম ফ্রিজ হয়ে যায়।

নিশ্চল!

নিস্পন্দ!



তার বুকের প্রিয় আপেল সেই শুয়ারের থাবায় লণ্ডভণ্ড হতে থাকে। দুটি হোঁৎকা ঠোঁট তার নরম ঠোঁটদুটি চুষে ছিবড়ে দিতে থাকে। কিন্তু সে কিছুই টের পায় না। তার শরীর অবশ হয়ে গেছে। অনুভূতিহীন! শুয়ারমুখী কুত্তাটা পাজামার রশি খুলে নিচে নামিয়ে দেয়। খাবলে খাবলে তার প্রজাপতির ডানাগুলো ছিঁড়েখুঁড়ে নিতে থাকে। কিন্তু সে কিছুই টের পায় না। চোখ বন্ধ করে মরার মতো পড়ে থাকে।

নিশ্চল!

নির্বাক!

অবশ!

অনুভূতিহীন!



সালমা বেগমের হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায়। স্বামী বিছানায় নাই। সে উঠে বসে। মনেহয় বাইরে গেছে। ছোট মেয়ের কথা মনে পড়ে। আহারে তার এত ভাল মেয়েটা। কী যে হয়ে গেল। তার মন কেমন করে ওঠে মেয়েটার জন্য। সে বিছানা থেকে নামে। হেঁটে হেঁটে ছোট মেয়ের কামরায় যায়।

- ও আল্লাহ গো!

এক বিকট চিৎকার দিয়ে সে ছিটকে বের হয়ে আসে। ঘর থেকে এক দৌড়ে বের হয়ে যায়। পাশেই ভাশুরের ঘর। ছুটে গিয়ে তার দরজায় আঘাত করে।

ভাইজান! ভাইজান!



আরেক পাশে দেবরের ঘর। সে পাগলের মতো ছুটে যায়। আঘাত করে দরজায়।

ছোট্ট ভাই! ছোট্ট ভাই!



সবাই ধড়মড় করে ঘুম থেকে জাগে। শুয়ারমুখী কুত্তাটারে পাকড়াও করে। কিন্তু কারও হতভম্বভাব আর কাটে না। কারও মুখে কোনো কথা নাই। বোবা দৃষ্টিতে এ ওর মুখের দিকে তাকায় শুধু। কী করণীয় কেউ ঠাউরে উঠতে পারে না। বাড়ির মহিলারা ফিসফিস করে। তাদের ফিসফিসানি বাড়তেই থাকে। হঠাৎ ছোট ভাই বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে শুয়ারমুখী কুত্তাটার উপরে। বড় ভাইও যেন করণীয় কী বুঝতে পারে। সেও বাঘ হয়ে ওঠে। দুই বাঘ মিলে ভয়ংকর আক্রোশে শুয়ারমুখী কুত্তাটারে ফালাফালা করতে থাকে। ফালাফালা করতে থাকে।



আর লায়লা? অনেক অনেক কাল পরে তার চোখে তীব্র ঘুম নেমে আসে। অন্য কামরায় কী ঘটছে সে কিছুই টের পায় না। বড় শান্তিতে ঘুমাতে থাকে।



সেই ঘটনার পর পাঁচ বছর কেটে গেছে। লায়লার বিয়ে হয়ে গেছে গত বছর। ঘটনার পরপরই সেই শুয়ারমুখী কুত্তাটারে গ্রামছাড়া করা হয়েছিল। সব মহিলাকে ঘরের বার করে দিয়ে ছোট ভাই কুত্তাটারে বলে দিয়েছিল, যদি আলো ফোটা পর্যন্ত ও এই বাড়িতে থাকে তবে খুন করে ফেলা হবে।



তাহলে সেই শুয়ারমুখী কুকুর আজ আমাদের বাড়ির পথে? এই সাতসকালে? আমার মাথায় খুন চেপে যায়। আমি দ্রুত হাঁটতে থাকি আর আশেপাশে মুগুরজাতীয় কিছু খুঁজতে থাকি।



হাঁটতে-হাঁটতে, খুঁজতে-খুঁজতে আমার প্রাথমিক চমক কেটে যায়। উত্তেজনার আগুন নিভে যায়। শুয়ারমুখী কুকুরটাকে পাশ কাটিয়ে নীরবে এগিয়ে যাই। নিজের দিকে তাকাই। বুঝতে পারি সমাজ কিভাবে সব ভুলে যায়। প্রচণ্ড ঘেন্না হয় নিজের প্রতি। মনেমনে বিকট চিৎকার করে বলি, “ আমি তোরে ঘেন্না করি! ঘেন্না করি”!





এই রকম নির্যাতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে পড়তে পারেনঃ



নিজ ঘরেই যৌন নিপীড়নের শিকার বাংলাদেশের শিশু মেয়েরা

মন্তব্য ৪৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৪৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩১

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: এই ধরণের শুয়োরমুখী কুকুরের অপরাধ ভুলে যাওয়া চলবে না। তাকে যেখানে যে অবস্থায় পাওয়া যাবে, শাস্তি দিতে হবে। কী জঘন্য লালসার শিকার হলো লায়লা। আর কী অদ্ভুত সুন্দর করে পুরো ঘটনাটি ফুটিয়ে তুলেছেন চোখের সামনে। এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪১

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: স্বাগতম, প্রিয় অর্থনীতিবিদ। আমি চাচ্ছি এই সিরিজের মাধ্যমে সমাজের এই অন্ধকার দিকটাকে তুলে ধরতে। অন্তত আমার পাঠক/পাঠিকারা জানুক, সচেতন হোক।

ভাল থাকবেন। আর সব সময় বেশি বেশি স্বপ্ন দেখবেন। স্বপ্নই সম্ভাবনা।

২| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বুঝতে পারি সমাজ কিভাবে সব ভুলে যায়। প্রচণ্ড ঘেন্না হয় নিজের প্রতি। মনেমনে বিকট চিৎকার করে বলি, “ আমি তোরে ঘেন্না করি! ঘেন্না করি”! +++

অন্ধকারের এমন কত শত লায়লারা ঝড়ে পড়ছে। নিরবে নিভৃতে নিজেকেই দোষী ভেবে নিজেকে নিঃশেষ করছে তর ইয়ত্তা নেই।

যাই, বাকী গুলো পড়ে আসি :)

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: স্বাগতম প্রিয় বিদ্রোগী ভৃগু। আপনার সুন্দর মন্তব্যে অনেক ভাল লাগা।

ভাল থাকবেন। আর সব সময় বেশি বেশি স্বপ্ন দেখবেন। স্বপ্নই সম্ভাবনা।

৩| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

হাসান মাহবুব বলেছেন: কুৎসিততম বিষয়ের রূপকচিত্রন আর সমান্তরালে গল্প বলা ভালো হয়েছে।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ হাসান ভাই।

ভাল থাকবেন। আর সব সময় বেশি বেশি স্বপ্ন দেখবেন। স্বপ্নই সম্ভাবনা।

৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৩৭

মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌ বলেছেন: আপনার লেখনীর অসাধারণ নৈপুন্যে মুগ্ধ!!! বিশেষ করে রূপককে এত চমৎকারভাবে উপস্থাপন করাটা অসাধারণ লাগলো।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২০

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: প্রিয় খালিদ ভাই, আপনাকে আবার আমার বাড়িতে পেয়ে যারপরনাই ভাল লাগছে। আপনি আমার প্রথম গল্পের প্রথম মন্তব্যকারী। আর সে মন্তব্যটাও ছিল কী যে অনুপ্রেরণাদায়ক! মনে পড়লেই মনটা অনেক বড় হয়ে যায়।
আপনাকে আবারও মুগ্ধ করতে পেরে তাই অনেক অনেক ভাল লাগছে।
ভাল থাকবেন সব সময়।

৫| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৪১

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ভাল হইছে গল্প। বলার ধরনতা বিশেষ করে ভাল লাগছে!

কিন্তু সম্পূর্ণ গল্পটা দুবার চলে আসছে । একটু করে নিয়েন।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: স্বাগতম। আমার বাড়িতে আজ তাহলে আরেকজন ভাল গল্পকারকে স্বাগত জানানোর সৌভাগ্য হল। খুব ভাল লাগছে আপনাকে পেয়ে।
ভাল থাকবেন সব সময়। আর বেশি বেশি স্বপ্ন দেখবেন। স্বপ্নই সম্ভাবনা।

কাল আপনার মন্তব্যের পর থেকে সারা রাত ধরে চেষ্টা করেছি এডিট করার কিন্তু স্পিড এত কম ছিল পারি নি। মাত্র ঠিক করতে পারলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৪১

গোর্কি বলেছেন:
-আমাদের পুরুষতান্ত্রিক শাসিত সমাজে এ জাতীয় ঘটনাগুলো সাধারণত লোক চক্ষুর অন্তরালেই থেকে যায়।
-রুপকশোভিত লেখার মাধ্যমে সত্য ঘটনা উন্মোচনের সাহসী প্রয়াস এর জন্য উত্তম সাধুবাদ।
-পোস্টে লেখাটির পুনরাবৃত্তি ঘটেছে মনে হয়।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২৩

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: প্রিয় গোর্কি, স্বাগতম আমার ব্লগবাড়িতে। আপনার চমৎকার মন্তব্য আমার ভাললাগার মাত্রাটা অনেক বাড়িয়ে দিল।
ভাল থাকবেন সব সময়। আর স্বপ্ন দেখবেন ইচ্ছে মতো। যত বেশি পারা যায়। কারণ স্বপ্নই সম্ভাবনা।

৭| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৫:৫৯

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: সুন্দর গল্প, লায়লারা ভালো থাকুক, শুয়োরগুলো যেন মনুষ্যসমাজে ঠাঁই না পায় ।
গল্পটা দুবার চলে এসেছে।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২৫

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: প্রিয় রেজওয়ানা আলী তনিমা , স্বাগতম আমার ব্লগবাড়িতে। আপনার চমৎকার মন্তব্য আমার ভাললাগার পরিমাণ আরও অনেক বাড়িয়ে দিল।

ভাল থাকবেন সব সময়। আর স্বপ্ন দেখবেন ইচ্ছে মতো। যত বেশি পারা যায়। কারণ স্বপ্নই সম্ভাবনা।

৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:৩১

নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ বলেছেন: ভাল্লাগছে গল্প।

লিখতে থা্কুন।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২৭

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: স্বাগতম এবং ধন্যবাদ।

ভাল থাকবেন। আর বেশি বেশি স্বপ্ন দেখবেন। স্বপ্নই সম্ভাবনা।

৯| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব সাবললীল ভাবে বর্ননা করেছেন!! গল্পটা পড়ে নিজের মধ্যে এক অদ্ভুত ক্রোধ হচ্ছে, ঘৃনা হচ্ছে। আর লেখাটা দুই বার চলে এসেছে। কষ্ট করে ঠিক করে নিয়েন।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩১

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: প্রিয় কা_ভা, ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য। আমার যদি ক্ষমতা থাকত তাহলে সেই শুয়ারমুখী কুত্তাটারে চামড়া ছিলে লবণ দিয়ে শুকা দিতাম।

১০| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: দুনিয়ার জঘন্যতম ব্যাপার এইটা! এরকম কাহিনী আশেপাশে খুব রেয়ার হলেও এইসব গোপনে গোপনে ঘটে তার চেয়েও বেশি। ঠিক ঘটে বললে ভুল হবে ঘটানো হচ্ছে, স্বীকার হচ্ছে মেয়ে তার ঘৃণ্য মানসিকতার পিতা দ্বারা ! কলিগদের কাছে শোনা দুই একটা ঘটনা মনে পড়ে গেলো।

এদের চাবকে মেরে ফেলা উচিত !

গল্পটা দুইবার এসেছে, এডিট করে নিয়েন।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩৮

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। আসলে পরিবারের সকলের সচেতনতাই পারে এই সব জঘন্যতা থেকে মেয়েদেরকে নিরাপদে রাখতে। কারও মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ দেখলেই আমাদের সজাগ হওয়া উচিত। এর পিছনে হয়ত কোন অন্তর্নিহিত গুরুতর কারণ আছে - এটা প্রথমেই ভাবা উচিত। এবং মেয়েটির সাথে বন্ধুভাবাপন্ন আচরণ করা উচিত।

এদের চাবকে মেরে ফেলা উচিত ! তার চেয়েও কোনো কঠিন শাস্তি যদি থাকে সেটা দেওয়া উচিত।

ভাল থাকবেন।

১১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৯

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: আপনার লেখনীর অসাধারণ নৈপুন্যে মুগ্ধ!!! বিশেষ করে রূপককে এত চমৎকারভাবে উপস্থাপন করাটা অসাধারণ লাগলো।
আমি যা বলতে চেয়েছি খালিদ সাইফুল্লাহ তা বলে দিয়েছেন !

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: প্রিয় অভি, আপনাদের বলার ভঙ্গিতেও আমি যারপরনাই মুগ্ধ।

ভাল থাকবেন।

আর আপনি কি ঢাকায় নেই? আমাদের গ্রুপটাকে তো এগিয়ে নেয়া দরকার। আপনাকে ছাড়া যে সেটা হবে না সেটা কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি। এখন আপনি বুঝতে পারলেই আমি স্বস্তি পেতে পারতাম।

১২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৩২

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এই সিরিজের সর্বোত্তম গল্প।

ঘৃণ্য একটা বিষয় শব্দের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন, সাবলীলভাবে। সিরিজ চলুক।

শুভকামনা রইল।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০৫

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রিয় প্রোফেসর শঙ্কু। ইনশাআল্লাহ, সিরিজ চলবে এবং আশা করি আপনাকে নিয়মিতই পাশে পাব।

নিরন্তর শুভেচ্ছা।

১৩| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আপনি তো আপনার গল্প এডিট করে নিয়েছেন। কিন্তু আমি মন্তব্য করেই দেখি দুইটা বানান ভুল। মন্তব্য তো আর এডিট করা যায় না। মেজাজ যা গরম হচ্ছিল :(

২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:১৯

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: প্রিয় নাজিম ভাই, আপনার শুধু এই বানান ভুলের ভুলটা জানানোর জন্য আবার আমার বাড়িতে আগমনের কারণে আমি আপনার প্রেমে পড়ে গেলাম। আপনার এই আগমনের মানেই হচ্ছে আপনি বানানসচেতন। ব্লগে আপনার মতো এরকম বানানসচেতন ব্লগারের খুবি প্রয়োজন। ব্লগিংয়ে যেভাবে বানান-স্বেচ্ছাচারিতা হয় আর কোথাও সম্ভবত সেভাবে হয় না। কেউ কেউ তো দেখি বানান ভুলের ব্যাপারে আবার ওকালতিও করে। তাদের বক্তব্যঃ বানান ভুল কোনো ব্যাপার না; দেখতে হবে লেখার মান, বিষয়, উদ্দেশ্য, প্রকাশভঙ্গি ইত্যাদি। আমি তাদের সাথে একমত না। আমার কথা হল লেখার মান, বিষয়, উদ্দেশ্য, প্রকাশভঙ্গি ইত্যাদি তো দেখতেই হবে, কিন্তু বানান ভুলকে আদৌ উপেক্ষা করা যাবে না। যিনি নিজেকে লেখক হিসাবে পরিচয় দিতে পারলে খুশি হবেন, কিংবা যিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্লগার, কিংবা স্বপ্ন দেখেন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্লগার হওয়ার তাকে অবশ্যই বানানসচেতন হতে হবে। কারণ ব্লগে যারা লেখালেখি করে তাদের অনেকেই অভিধান ঘাঁটাঘাঁটি করে না। তারা প্রতিষ্ঠিত কারও ব্লগকেই অভিধান হিসাবে ব্যবহার করে। অর্থাৎ সেসব ব্লগের ভুল বানানটাকেই তারা শুদ্ধ ধরে নিয়ে নিজেদের লেখায় সেই ভুলেরই প্রয়োগ করতে থাকে। এই শ্রেণির কারও কারও মধ্যে এমন ভণ্ডামিও আছে যে, তারা আসলে কেউ সাহিত্যিক হতে চায় না। শুধু নিজের ভাল লাগার জন্য লেখে। তাহলে নিজের ভাল লাগাটা নিয়ে ঘরেই থাকেন না, এই ব্লগে এসেছেন কেন? আপনি লিখতে পারেন, সেটা সবাইকে জানানোর এত আগ্রহ তাহলে কেন? কারণ তো এটাই - সবাই আপনাকে জানুক, চিনুক, বুঝুক; আপনি যা বলতে চান সেটা সবাই শুনুক অর্থাৎ নিজেকে প্রকাশের তীব্র ইচ্ছাই আপনাকে ব্লগে টেনে এনেছে। একজন কবি কিংবা একজন লেখকের সাথে তাহলে আপনার ফারাকটা কোথায়, আমি তো খুঁজে পাই না। পৃথিবীতে এমন কোনো সাহিত্যিক নেই যিনি অনুরূপ ইচ্ছা ধারণ করেন না। আমি এই ভণ্ডামি করি না। আমার সহজ-সরল কথাঃ মনের ভিতর তো এই সুপ্ত ইচ্ছা আছেই যে আমি লেখক হিসাবে পরিচিতি অর্জন করি। এই স্বপ্ন দেখছি বলেই তো কষ্ট করে লিখছি, পোস্ট করছি, একটা চমৎকার লাইনের জন্য নির্ঘুম রাত কাটিয়ে দিচ্ছি, কখনো দিনের পর দিন পার করে দিচ্ছি একটা ভাল প্লট খুঁজে পেতে। কারণ ঐ একটাই লেখক হিসাবে পরিচিতি পাওয়ার স্বপ্ন। এ নিয়ে আমি মনের ভিতর কোনো ভণ্ডামিকে প্রশ্রয় দেই না। হতে পারে হয়ত কোনো দিনই লেখকদের কাতারে দাঁড়াতে পারব না, কিন্তু স্বপ্ন তো দেখছি। এটা সত্যি।

ধান ভানতে হয়ত শিবের গীত হয়ে গেল। যা বলছিলাম, বানান নিয়ে এই যে এত লেকচার ঝাড়লাম আমার কি বানান ভুল হয় না?
হয় না মানে, বহুৎ হয়। কিন্তু নিজের সেই সব ভুল নিয়ে আমার লজ্জা আছে। এমন কি নিজের চোখেও যখন নিজের একটা বানান ভুল ধরা পড়ে লজ্জিত হই। সেটা সংশোধন না করা পর্যন্ত শান্তি পাই না। একজন প্রতিষ্ঠিত ব্লগারকে আমি জানি, যাকে বানান ভুল ধরিয়ে দিলে বিরক্ত হন। ধিক!

ভাষার চর্চা করবেন আর বানান ভুল করলে লজ্জিত হবেন না, এটা মোটেই ভদ্রলোকের আচরণ হতে পারে না। ভাষাকে শুদ্ধভাবে লেখার স্পৃহা আমাদের সবার থাকা উচিত। এই স্পৃহা না থাকাটা অপরাধ।

আপনি নিজের মন্তব্যের যে বানান ভুলের কথা উল্লেখ করা করেছেন সেটা তো বোঝাই যায় যে, স্রেফ বেখেয়ালের ভুল। এটা মারাত্মক কিছু নয়। গুরুতর হচ্ছে আপনি যদি ষত্ব বিধান, ণত্ব বিধানের ভুলগুলি করেন। শ, ষ, স এর ভুল করেন। র, ড়, ঢ় এর ভুল করেন। ন, ণ এর ভুল করেন। কিংবা আরও যে গুরুতর ভুলগুলি আছে সেগুলি করেন।

আরেকটা ব্যাপার যিনি মন্তব্য করবেন তার মন্তব্য সম্পাদনার সুযোগও থাকা উচিত বলে আমি মনে করি।

অনেক বক-বক করে ফেললাম। দুঃখিত।

১৪| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:১১

রোমেন রুমি বলেছেন:

আমি নির্বাক !

২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:২১

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আমিও ভাষাহীন হয়ে পড়েছিলাম।

১৫| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৫:০২

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ;) ;) ;) ;) ;)
ঢাকায় আছি , একটু মাইঙ্কার চিপায় ! ঠিক আছে , কাল ফেবুতে কথা হবে !

২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:২০

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ঠিকাছে প্রিয় স্বপ্নবাজ। তবে আমার চেয়ে এই মুহূর্তে মাইনকা চিপায় খুব কম লোকই আছে মনে হয়। আমার কাহিনী শুনলে আপনি বলবেন.... না থাক নিজের দুঃখ-কষ্টের কথা লেখকদের বলতে নাই। তাহলে অন্যের দুঃখ-কষ্ট আর নিজের কলমে উঠে আসবে না।

১৬| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৫:০৮

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: সমস্যা এটাই, আমাদের সমাজ সব কিছুই ভুলে যায়। কখনো বা ভান করে ভুলে যাওয়ার। কিন্তু যে দু একজন ভুলতে পারে না, তাদের নিয়েও তৈরি হয় আরেক সমস্যা। সমাজ তখন বিব্রত হয়। আরো নীরব থাকার চর্চা করে।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৫৫

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনার এই কথার সাথে আমি জোরেসোরে মহব্বতের সাথে সহমত।

ধন্যবাদ, বড়ভাই। আপনি অল্পের মধ্যে সমাজের স্বভাবের সারাংশটাই বলে দিলেন।

শুভেচ্ছা জানবেন।

১৭| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৪৬

ভিয়েনাস বলেছেন: গল্প পড়ে কি বলবো বুঝতে পারছিনা। ভাষাহীন আর অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে......

এসব শুয়োমুখো কুকুরদের একটু একটু করে অংগ কেটে তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে মেরে ফেলা উচিত....

২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: সহমত, প্রিয় ভিয়েনাস।

১৮| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:০০

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ভাল লেগেছে গল্প বলার ধরণ , কথা ভাষায় প্রচলিত কিন্তু লিখায় তেমন একটা
ব্যবহৃত না হওয়া শব্দপ্রয়োগের ব্যবহার ( যেমন ঠেস ) ভাল লেগেছে ।

ইঁদুর যায়!
চিকা দৌড়ায়!
সে ভয়ে চমকে ওঠে।
ঐ বুঝি লোমশ জন্তুটা আসে।
খোদা, তুমি আমারে বাঁচাও! খোদা!
তার গাল ভেসে যায়। বালিশ ভিজে যায়। আর চমকে চমকে ওঠে।


এভাবে এই স্টাইলে লিখাগুলো জহির রায়হানের কথা মনে করিয়ে দিল ।
এই সিরিজের সর্বোত্তম গল্প । চলুক সাথে আছি । +++++++++++++++্

২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৪০

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: স্বাগতম, প্রিয় মাহমুদ০০৭ আপনার মন্তব্যটা বেশ একটা ভাল লাগার ঝিরিঝিরি বাতাস নিয়ে এল।

শুভেচ্ছা জানবেন।

১৯| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৩

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: আচ্ছা, এই ধরণের ঘটনা বাংলাদেশে কি খুব বেশী ঘটে? পরিসংখ্যান কি বলে?

ABC রেডিওতে "যাহা বলিব সত্য বলিব" নামে একটি অনুষ্ঠান হয়। আমি ইন্টারনেট থেকে নামিয়ে শুনি। ওখান থেকে জানা যায় বাংলাদেশের সমাজের অন্ধকার অনেক খবর, বিস্মিত হয়ে যাই মাঝে মাঝে !!

৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৬

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: না জহিরুল ভাই, খুব বেশি ঘটে না। আবার যাও ঘটে তা প্রকাশ হয় কম। বলেন এই রকম ঘটনা কেউ কি প্রকাশ করতে চায়? পারিবারিক মানসম্মানের কথা চিন্তা করেই সবাই চেপে যায়। এই সিরিজে আমার আরও একটা ঘটনা লেখার ইচ্ছা আছে। যেটা আমার এক ছাত্রীর জীবনে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা।

কত ঘটনা, আসলে দুর্ঘটনা বলা উচিত, আমি জানি যা বিস্ময়কে হার মানায়। সেগুলো সব লিখতে গেলে হয়ত একঘেয়েমি চলে আসবে। তাই ব্যতিক্রমগুলিই শুধু গল্পে পরিণত করব।

ভাল থাকবেন।

২০| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৮

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: পরের পর্বে যাই...

৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৭

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: হ্যাঁ অন্যগুলোতেও ব্যতিক্রমের স্বাদ পাবেন। একটার সাথে আরেকটার মিল নাই।

২১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০৩

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


লেখনীর অসাধারণ নৈপুন্যে মুগ্ধ!!! ++++ রইল

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০০

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় কাণ্ডারি ভাই।
ভাল থাকবেন।

২২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০২

মহাকাল333 বলেছেন: ++++

১২ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: !!!

২৩| ১৩ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৫০

মহাকাল333 বলেছেন: অলওয়েজ ড্রিম, যৌনমন কিংবা অলিগলি-অন্ধকার!!! - ৩ লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো।

১৪ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:০২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনার মন্তব্যেও ভাললাগা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.