![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চির বিদ্রোহী রণক্লান্ত... আমি সেই দিন হবো শান্ত...
ধানমন্ডিতে গিয়েছিলাম কিছু কাজে। বাসায় ফিরব বলে অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে আছি, রিকশা পাচ্ছিলাম না। যে রিকশাই দেখি, রিকশাওয়ালা ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ চেয়ে বসে। মেজাজটা এমনিতেই খারাপ কারণ সহ্যের সীমা অতিক্রম করে ফেলছিলাম। হঠাৎ একজন হ্যাঙলা পাতলা মতন ছেলে আমার সামনে রিকশা নিয়ে এসে বলল, “স্যার কোথায় যাবেন?” আমি একটু অবাক হলাম, কারণ রিকশাওয়ালারা সচরাচর স্যার বলে না, “মামা বলে”; আমি তাকে বললাম বকশিবাজার যাব, বোর্ড অফিসের পাশে। সে আমার কাছে ঠিক ঠিক ভাড়া চাইল। আমি মোটামুটি আকাশ থেকে পড়লাম, মনে করলাম এতক্ষণ পরে মনে হয় আধ্যাত্নিক সাহায্য এসে হাজির হয়েছে। যাইহোক বেশি চিন্তা না করে তাড়াতাড়ি রিকশাই উঠে পড়লাম। মনে মনে বললাম “আহ্! এখন একটু শান্তিমত মানুষ দেখতে দেখতে বাসায় যাওয়া যাবে”; ঢাকা কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে রিকশায় যাওয়াকে অনেক এনজয় করি। তবে সেদিনের রিকশা ভ্রমনটা একটু আলাদা ছিল। খেয়াল করছিলাম রিকশাওয়ালা অনেক সাবধানে চালিয়ে যাচ্ছিল। কাউকে গালি দিচ্ছিল না। অন্যের রিকশার সাথে লাগিয়ে দেওয়ার আগেই ব্রেক করছিল। কেউ তাকে গালি দিলে সে কিছু না বলে মাথা নিচু করে নিজের রিকশা চালানোতে ব্যস্ত ছিল। কিছুক্ষন পরে একটু অবাক হলাম, রিকশা যখন ঠিক ঢাকা কলেজের সামনে আসল, তখন রিকশাওয়ালা মুখে কাঁধের গামছাটা ভাল করে পেচিয়ে নিল। তার চেহারা ঠিকমত দেখা যাচ্ছিল না। ভেতরে ভেতরে একটু ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম, ভাবছিলাম এইবুঝি ছিনতাইকারী ধরবে। নিজেকে সামলিয়ে নিতে রিকশাওয়ালার সাথে কথা বলা শুরু করে দিলাম। সেই একই রকমের প্রশ্ন দিয়ে শুরু করলাম, “মামা বাড়ি কোথায়?” সে একিরকম উত্তর দিল, রংপুর। পরের প্রশ্ন করার আগেই বলল “স্যার বেশিদিন হয়নাই রিকশা চালাই”; স্বভাবতই জিজ্ঞাসা করলাম ঢাকা আসছ কবে? সে উত্তর দিল, “দুই বছরের কিছু বেশি হয়ছে”; এভাবেই অনেক কথা হল। একসময় হঠাৎ চালাতে গিয়ে আমার পায়ে টাচ্ লাগায় সে বলল, “সরি স্যার”; একটু অবাক হলাম তার ম্যানার দেখে। তাকে প্রশ্ন করতে দেরি করলাম না, “বললাম তুমি কি পড়ালেখা কর?” সে বলল, “স্যার অনার্স সেকেন্ড ইয়ার, ঢাকা কলেজে”; হতভম্ব হয়ে গেলাম। তার পোশাক আশাক চলন গড়ন আবার নতুন করে দেখা শুরু করলাম। দেখলাম পড়নে একটা প্যান্ট অনেক ময়লা, শার্টের কিছু জায়গায় ছেঁড়া। স্বাস্থ্য এতই কম যে মনে হয়, অনেক দিন না খেয়ে আছে। কৌতুহলবশত প্রশ্ন করলাম তুমি রিকশা চালাও কেন? সে বলল, তারা তিন বোন, এক ভাই। তার বাবা কিছুদিন আগে মারা গিয়েছে, মা ছোট থেকেই নেই। আগে বাবা দেশে দিনমজুর ছিল। এখন বাবা মারা যাওয়ার পরে তার তিন বোনকে সে ঢাকায় নিয়ে এসেছে, স্কুলে ভর্তি করিয়েছে, থাকে কামরাঙ্গির চরে, একটি রুম ভাড়া নিয়ে। কিছুদিন আগে তার দুইটি টিউশনি ছিল এখন একটিও নেই। সংসার চালানোর জন্য টাকা নেই যথেষ্ট, তাই উপায় না পেয়ে রাতের বেলা রিকশা চালাতে বের হয়েছে। মাঝে মাঝেই বের হয় এমন। তবে অনেক ভয়ে থাকে, যখন সে ঢাকা কলেজের পাশে দিয়ে যায়। পরিচিত কেউ দেখে ফেললে ক্লাস করাটা মুশকিল হয়ে যাবে। নিজে থেকেই বলল, “আমাকে হয়তো বলবেন অন্য কিছু করোনা কেন?” তারপর নিজে থেকেই উত্তর দেওয়া শুরু করল, পোলাপাইন অনেকে দেখি রাজনীতি করে, অনেক টাকা পায়, আবার অনেকে প্রতিদিন একটা করে মোবাইলের মালিকও হয়। কিন্তু আমার এমন কিছু করতে মন চায় না। সবসময় মনে করি একটা কথা, এই দেশকে কিছু না দিতে পারি কিন্তু এই দেশের কাছে থেকে জোর করে কিছু কেড়ে নিব না। আমার কাছে দেশ মানে আপনারা সবাই। আপনাদের সাথে কোন বেয়াদবি করা মানে দেশের সাথে নিমকহারামি করা। এই যে দেখেন আপনারা আছেন বলেই তো আমি এখন রিকশা চালায়ে কিছু টাকা আয় করতে পারছি। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে তার কথা শুনছিলাম। হঠাৎ সে আমাকে বলল স্যার চলে আসছি। আমি তাকে কিছু বেশি টাকা জোর করেই হাতে ধরিয়ে দিলাম। মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল। বাসায় এসে কোন কথা না বলেই শুয়ে পড়লাম বিছানায়।
মনে মনে ভাবছিলাম দেশপ্রেমটা আসলে কি? আমরা যখন অনেক বড় বড় কথা বলি, অনেক অনেক বড় বড় লোকের উদাহরণ দেই, বলি যে, “কি বিশাল দেশপ্রেমের উদাহরণ” কিন্তু আজকে যা দেখলাম, তা থেকে আমার মাথায় প্রোগ্রাম করা দেশপ্রেমের সংজ্ঞাটা বদলে গেল এবং কিছুটা অবাকই হলাম এইটা ভেবে, পাঠ্যবইয়ে কোথাও দেশসেবার কোন বিশদ উদাহরণ দেখিনাই বাস্তব ক্ষেত্রে। যা পড়েছি সবই তো এখন ইতিহাস। এখন অনেক বড়, দেশের সেবা করতে গেলে আসলে আমাদের কি করা উচিৎ? ব্যাপারটা নিয়ে অনেক ভাবার পরে ছোট মস্তিস্ক থেকে কিছু ছোট ছোট উত্তর মিলেছেঃ
আমার কাছে মনে হয়েছে দেশপ্রেম মানে দেশের মানুষকে ভালবাসা, আর দেশের সেবা মানে দেশের মানুষের সেবা করা।
অনেকের কাছে দেশের সেবা করা মানে হল শুধু গ্রামে গিয়ে গরিব শ্রেনীর মানুষকে সাহায্য করা, স্কুল তৈরি করে দেওয়া, রাস্তার পাশে খেতে না পারা ছেলেমেয়েকে খাওয়ানো, পড়ানো, শীতবস্ত্র বিতরণ ইত্যাদি। এইসব অবশ্যই ভাল কাজ, দেশের সেবা, কিন্তু একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে বোঝা যায়, এইরকমের কাজ আমরা প্রতিনিয়ত করতে পারিনা। তারমানে কি আমরা প্রতিনিয়ত দেশের সেবা করতে পারব না? আরেকটু চিন্তা করে উপলব্ধি করা যায় যে, আমরা প্রতিনিয়ত যা করছি আমাদের কর্মজীবনে, সেটাকে ঠিকমত করাটাই হল দেশপ্রেম।
আমাদের মহান মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের দেশকে স্বাধীন করে আমাদের কাছে আমানত হিসেবে রেখে গিয়েছেন, এই আমানতকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখাটায় হচ্ছে দেশপ্রেম, দেশের সেবা । এই সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বিভিন্নজনের দায়িত্ব বিভিন্নরকম। কেউ ডাক্তার, কেউ প্রকৌশলী, কেউ শিক্ষক, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ ঠিকাদার, কেউবা ঝাড়ুদার। কারও অবদান কোন দিক থেকে কোন অংশে কম না। তাই নিজের দায়িত্বকে কোন অংশে বড় করে না দেখে চিন্তা করা উচিৎ আমরা সবাই দেশের সেবা করছি, দেশ আমাদের সবার। মাকে যেমন তার ছেলেমেয়ে সবাই সমান ভালবাসতে পারে, তেমনি দেশ, যার ছেলে মেয়ে আমরা সবাই, আমরা চাইলেই সবাই নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করে, নিজেদের কাজ ছেড়ে না দিয়ে, বরং নিজেদের কাজ যথাযথভাবে করেই দেশের সেবা করতে পারি...
কৃতজ্ঞতাঃ Dhaka College Journalist Association(DCJA)
২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:১৭
আমার দেশ আমার গর্ব বলেছেন: মাঝে মাঝে বাস্তবতা আমাদের মুভির কাছেও হার মানে
২| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:১৭
আবিরে রাঙ্গানো বলেছেন: সত্যই কান্না পাচ্ছে। চোখে পানি এসেছে। অনেক ভাল ছেলেটি। অনেক ভাল ছেলেটি। আমরা ওর চেয়ে অধম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এমন চিন্তা করার তৌফিক দান করুন।
২৯ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৩
আমার দেশ আমার গর্ব বলেছেন: আমাদের দেশে সেই ছেলে হবে কবে,কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে
৩| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:২২
রাকীবের প্রেতবান্ধবসকল বলেছেন: অসাধারণ!!
২৯ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩৮
আমার দেশ আমার গর্ব বলেছেন: কোনটি কে বললেন??
৪| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:২৪
রঙ্গভরা বঙ্গদেশী বলেছেন: দেশের মাটির প্রতি মমতা আর দেশের মানুষের প্রতি মমতা জিয়ে রাখার চাইতে বড়ো কিছু আছে বলে মনে হয়না।
তবে দেশপ্রেম নিয়ে সুশীলগিরিটা ও ভালো লাগেনা।
১২ ই জুলাই, ২০১২ রাত ২:৩৬
আমার দেশ আমার গর্ব বলেছেন: নিজেকে মাঝে মাঝে অনেক অপরাধী মনে হয়
৫| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:২৪
ছারমী বলেছেন: এই পোস্ট স্টিকি করা যায়।
১২ ই জুলাই, ২০১২ রাত ২:৩৭
আমার দেশ আমার গর্ব বলেছেন: স্টিকি দরকার নেই,আপনারা দেখছেন সেটাই অনেক কিছু
৬| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:২৭
কামাল২০১০ বলেছেন: আবিরে রাঙ্গানো বলেছেন: সত্যই কান্না পাচ্ছে। চোখে পানি এসেছে। অনেক ভাল ছেলেটি। অনেক ভাল ছেলেটি। আমরা ওর চেয়ে অধম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এমন চিন্তা করার তৌফিক দান করুন।
৭| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:২৭
কামাল২০১০ বলেছেন: এই পোস্ট স্টিকি করা যায়।
৮| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:২৯
বহুরুপ বলেছেন: ....
,,,,
.....
..., মাঝে .....
......
.....
৯| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:৩০
বাজেকাম বলেছেন:
ছেলেটির মঙ্গল কামনা করি।
দোয়া করি সে যেন জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়।
গলাবাজী নয়,
দেশের উন্নতির জন্য চাই কর্মীর হাত।
১০| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:৩৪
গোলাম মোর্শেদ বলেছেন: কিভাবে জেন চোখের কোণেই পানি চলে আসলো ...।
১১| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:৩৭
এস এম ফারুক হোসেন বলেছেন: এরকম মানুষ আছে বলেই দেশটা এখনো টিকে আছে। সত্যিই অবাক হওয়ার মত !
দেশকে কিছু দিতে না পারি, আমাদের কি লুটে নেবার অধিকার আছে ? ধন্যবাদ সেই ছাত্রকে। ধন্যবাদ আপনাকেও এমন একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত তুলে ধরার জন্য।
১২| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:৩৯
যাযাবরমন বলেছেন: এই লেখাটা একজন নতুন ব্লগার মাসখানেক আগে লিখেছিলেন
১৩| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:৪৩
চাণক্য হিম বলেছেন: ছেলেটির জন্য খারাপ লাগছে।
১৪| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:৪৩
ময়ূখ বলেছেন: খোদা...মাটি দুই ভাগ করে দাও, নিচে চলে যাই...এই লজ্জা কোথায় রাখি...ভাই...উনাকে অথবা এই রকম কাউকে আবার পেলে প্লিজ আমাকে কষ্ট করে একটা মেইল করবেন এবং তাঁর সাথে যোগাযোগ এর একটা পথ জেনে রাখবেন...আমার সাধ্যমত আমি করার চেষ্টা করব...ই-মেইল: [email protected] ...অনেক ধন্যবাদ আপনাকে...
১৫| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:৪৬
ইলুসন বলেছেন: এই লেখাটা আগেই পড়েছি অনেকবার। এই ছেলেটার জন্য কিছু করার উচিৎ আমাদের।
১৬| ২৯ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৭
মোঃ আরিফ উদ্দিন বলেছেন: বাস্তবতা আসলেই অনেক কঠিন...
১৭| ২৯ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৭
ইন্সিত বলেছেন: কামাল২০১০ বলেছেন: আবিরে রাঙ্গানো বলেছেন: সত্যই কান্না পাচ্ছে। চোখে পানি এসেছে। অনেক ভাল ছেলেটি। অনেক ভাল ছেলেটি। আমরা ওর চেয়ে অধম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এমন চিন্তা করার তৌফিক দান করুন।
------------ দু ফোটা চোখের জলের চাইতে আসুন আমরা ওদের পাশে গিয়ে দাড়াই। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি মণ্ত্রীদের চুরির টাকা জোগানোর জন্য ট্যাক্স না দিয়ে আল্লাহ আমাকে যে সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন তার কিছুটা হলেও তাদের সাথে শেয়ার করি।
১৮| ১৩ ই জুন, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৬
রকিবুল আলম বলেছেন: আগেই এইটা পড়েছিলাম।
১৯| ১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১০:৪৫
পড়শী বলেছেন: অসাধারণ।
২০| ১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১০:৫৮
বাঁধ ভেঙে যাই....... বলেছেন: is it real? oh my god!!!!!
২১| ১২ ই জুলাই, ২০১২ রাত ২:৪০
এসএন রিলোডেড ✈ বলেছেন: মনটা এমনিতেই ভারাক্রান্ত হয়ে গেলো
২২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:০৬
হাবিবুল্লাহ শোয়েব বলেছেন: চোখে পানি এসেছে। বাকরুদ্ধ
২৩| ২৩ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:২৫
মেহবুবা বলেছেন: শ্রদ্ধা ওই ছেলেটি জন্য ।
২৪| ২৮ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৪২
আমরা তোমাদের ভুলব না বলেছেন: চোখে পানি এসেছে। +
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৫:১৪
কৌশিক বলেছেন: বাকরুদ্ধ